পৃষ্ঠাসমূহ

Showing posts with label অমর বাণী. Show all posts
Showing posts with label অমর বাণী. Show all posts

Wednesday, November 4, 2020

অমূল্য বচন ।। সত্য চিরদিন সুন্দর।।

জীবন এত ক্ষণস্থায়ী বলেই মাঝে মাঝে সবকিছু এমন সুন্দর মনে হয়। বেশি দিন ভালবাসতে পারে না বলেই ভালবাসার জন্য মানুষের এত হাহাকার। তুমি যদি কাউকে হাসাতে পার, সে তোমাকে বিশ্বাস করবে। সে তোমাকে পছন্দও করতে শুরু করবে। হৃদয়ের গভীরে যার বসবাস, তাকে সবকিছু বলতে হয় না। অল্প বললেই সে বুঝে নেয়। মানবহৃদয় আয়নার মত। সে আয়নায় ভালবাসার আলো পড়লে তা ফিরে আসবেই। কাগজে-কলমে কোন সৌন্দর্যের যথার্থতা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। সৌন্দর্যের মুখোমুখি গিয়ে দাঁড়াতে হয়। সুখী হওয়ার একটা অদ্ভুত ক্ষমতা আছে মানুষের। এ জগতে সবচেয়ে সুখী হচ্ছে সে, যে কিছুই জানে না। জগতের প্যাঁচ বেশি বুঝলেই জীবন জটিল হয়ে যায়। সব শখ মিটে গেলে বেঁচে থাকার প্রেরণা নষ্ট হয়ে যায়। যেসব মানুষের শখ মিটে গেছে তারা অসুখী। যার কাছে ঘুম আনন্দময় সে-ই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। অতি সামান্য জিনিসও মানুষকে অভিভূত করে ফেলতে পারে। খুব বেশি সুন্দর কোন কিছু দীর্ঘস্থায়ী হয় না। খুব ভাল মানুষরাও বেশি দিন বাঁচে না। স্বল্পায়ু নিয়ে তারা পৃথিবীতে প্রবেশ করে। যখন কেউ কারো প্রতি মমতা বোধ করে, তখনই সে লজিক থেকে সরে আসতে শুরু করে। মায়া-মমতা-ভালবাসা এসব যুক্তির বাইরের ব্যাপার। বেশি নৈকট্য দূরত্বের সৃষ্টি করে। প্রিয়জনদের থেকে তাই দূরে থাকাই ভাল। সম্পর্ক স্থির নয়, পরিবর্তনশীল। অতি দ্রুত যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, উষ্ণতা কমে যেতেও তার সময় লাগে না। স্মৃতি সুখ বা দুঃখের যাই হোক, সবসময়ই কষ্টের। দুঃখ-কষ্ট-বেদনা ছড়াতে হয় না। ছড়িয়ে দিতে হয় আনন্দ। দুঃখ ভুলে যাওয়া কঠিন। তবে সুখস্মৃতি মনে রাখা তার চেয়েও একটু বেশি কঠিন। মোহের কাছে পরাজিত হওয়া ঠিক নয়। কিন্তু খুব কম মানুষই মোহযুদ্ধে অপরাজিত থাকে। সুন্দর স্বপ্ন আফসোসেরও কারণ। বাস্তবতা যতই মধুরই হোক, স্বপ্নের মত হয় না। স্বপ্ন পূরণ হতেই হবে সেটা কিন্তু সত্যি নয়। স্বপ্ন দেখতে হয় আর সেটার জন্য কাজ করতে হয় - এটা হচ্ছে সত্যি। প্রতিজ্ঞা করার আগে তাই একটু হলেও ভাবা উচিত। মিথ্যা দিয়ে হাসানোর চেয়ে সত্য বলে কাঁদানোই শ্রেয়। চোখের জলের মত পবিত্র কিছু নেই। এই জলের স্পর্শে সব গ্লানি-মালিন্য কেটে যায়। কিছু কথা শুধু নিজের ভেতর রাখো। দ্বিতীয় কেউ জানবে না। কোনভাবেই না। দুই জন জানলে বিষয়টা গোপন থাকে। তিনজন জানলে নাও থাকতে পারে। আর চারজন জানা মানে সবাই এক সময় জেনে যাবে। রহস্য সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে। কৌতূহলেরও জন্ম দেয়। বলার আগে শুনে নাও, প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগে চিন্তা কর, সমালোচনার আগে ধৈর্য্য ধর, প্রার্থনার আগে ক্ষমা চাও, ছেড়ে দেয়ার আগে চেষ্টা কর। না চাইতেই যা পাওয়া যায়, তা সবসময় মূল্যহীন। পায়ের আলতা খুব সুন্দর জিনিস। কিন্তু আলতাকে সবসময় গোড়ালীর নিচে পড়ে থাকতে হয়, এর উপরে সে উঠতে পারেনা। অতিরিক্ত যেকোন কিছু পতন নিয়ে আসে। সবকিছু তাই নির্দিষ্ট সীমায় রাখাই শ্রেয়। চুপ থাকা খুব সহজ একটা কাজ। পারস্পরিক বহু সমস্যার সমাধান শুধু চুপ থাকলেই হয়ে যায়। কিন্তু মানুষের সবচেয়ে বড় অযোগ্যাতা হচ্ছে সে মুখ বন্ধই রাখতে পারে না, অপ্রয়োজনে অনর্গল বকে যায়। দুর্নামকারীরা সাধারণত আড়ালপ্রিয়। সামনে ভাল মানুষ সেজে বসে থাকে। বুদ্ধিহীনরা তর্কবাজ হয়। নিজের বুদ্ধির অভাব তর্ক দিয়ে ঢাকতে চায়। বিচার যখন থাকে না, সমস্যার সমাধানও হয় না। সব সমস্যা বরং পুঞ্জীভূত হয় আরও। আমাদেরও তাই হচ্ছে। পরিস্থিতিই মানুষকে তৈরি করে। পরিস্থিতি যখন বদলে যায়, মানুষও তখন পাল্টে যায়। মানুষ আসলে জলের মত। পাত্রের সঙ্গে সঙ্গে সে তার আকার বদলায়। এই পৃথিবীর প্রতিটি দিনই সম্ভাবনার। সম্ভাবনাময়ী এখানে আসলে আমাদের প্রতিটি মুহুর্তই। মানবজাতি ধীরে ধীরে সব সুযোগকেই উপলদ্ধি করবে। অবশ্যই সব সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিবে। উপকার করার পর 'করেছি' বলার চেয়ে সাহায্য না করাই শ্রেয়। জীবনের জটিল ও মূল বিষয়গুলো মানবজাতির কাছে রহস্যাবৃত হয়ে থাকে। এর চেয়ে সুন্দর আর কী হতে পারে? চলতে শুরু না করলে পথ হারাবার ভয় থাকে না। কিন্তু তাতে গন্তব্যে পৌছানোর আশাও ফুরিয়ে যায়। মৃত্যুপথযাত্রী মানুষ কারও কাছ থেকে বিদায় নেয় না। মায়া নামক ভ্রান্তি তাকে ত্যাগ করে। গ্রাস করে তখন ভয় নামক অনুভূতি। মৃত্যু ভয়াবহ নয়, কুৎসিতও নয়। এর সৌন্দর্য জন্মের চেয়ে আসলে কোন অংশে কম নয়। এই অংশের সাথে পরিচিত নই বলেই আমরা একে এত ভয় পাই। ভয়াবহ বিপদ কিংবা দুর্যোগের সামনে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। একে অন্যের কাছে আশ্রয় খোজেঁ, আশ্রয় খোঁজে প্রকৃতির কাছে। সবাই দাঁড়িয়ে যায় একই কাতারে। বৈষম্য ও অনাচার বেষ্টিত এই আবাসভূমি হয়ে যায় সাম্যবাদের উৎকৃষ্ট নিদর্শন। বড় ধরণের বিপদ-আপদের প্রয়োজন তাই পৃথিবীতে এখনও আছে।প্রতিটি বিপদের দুটি অংশ থাকে। বিপরীত অংশটি হল জীবন। নগদ টাকা আলাদীনের চেরাগের মত। হাতে থাকলে পৃথিবী নিজের হয়ে যায়। পথ কখনও শেষ হয় না। দীর্ঘ ভ্রমণের পর গন্তব্যে পৌছেও কেউ স্থির থাকে না। ছুটতে শুরু করে অন্য কাজে, অন্য পথে, অন্য আরেক লক্ষ্যস্থলে। এক একটি দিন শেষ করে আমরা এগুতে থাকি চুড়ান্ত যাত্রার পথে। মানবমৃত্যুই পথের সমাপ্তি। নিরন্তর ছুটে চলা মানুষের শেষ গন্তব্য। সবাই মারা যায়। কিন্তু সবাই চলে যায় না। নিঃস্বার্থ কর্মী মানুষরা মৃত্যুর পরও থেকে যায়, কর্মপূণ্যে থেকে যায় মানুষের মনে - যুগের পর যুগ ধরে। সৎ থাকো। অবশ্যই সুখী হবে। ***

কোন কিছু কি সহজ? আমরা কি কিছু করতে পারি?

কোন কিছু কি সহজ? আমরা কি কিছু করতে পারি? সবকিছুই তো কঠিন, যতক্ষণ না তিনি তা সহজ করে দেন, যতক্ষণ না তিনি আমার চারপাশকে একটা কাজের জন্য তৈরি করে দেন। আশেপাশের কতজন কী ভীষণ বদলে গেলো, সুন্দর থেকে সুন্দর মন-প্রাণের হয়ে গেলো। কেউ কেউ এত খারাপ হয়ে গেলো, সেই খারাপ কাজে মরেও গেলো। প্রায়ই ঘোরের মতন লাগে। এইতো সেদিন ছিলাম একসাথেই, একই আড্ডায়। আজ ছেলেগুলো নেই, আর কোনদিন পৃথিবীতে আসবে না। আমার নিজেরও অফিসে বের হবার সময় প্রায় প্রতিদিন সিঁড়ি বেয়ে নামার সময় মনে হয়, আজ কি বাসায় ফিরতে পারব দিনশেষে? আমরা তো ভীষণ দুর্বল সৃষ্টি। আমার দুর্বলতা আমি টের পেয়েছি যখন জ্বরে বিছানায় শুয়ে ঘোরে চলে গিয়েছি। অথবা অপারেশন থিয়েটারে ডাক্তারের সুঁই আর চাকুর নিচে গিয়ে মনে হয়েছিলো, আমার বিভ্রমের জীবনের সমাপ্তি কি তেমন কঠিন কিছু? যাদের চারপাশে বেঁধে রাখতাম, জুড়ে থাকতাম -- সবাই তো দূরেরই। কতই তো বদলে যেতে চাইলাম, কতখানিই বা পারি? তবে পরম আরাধ্য যা থাকে, তিনি সেই জিনিসগুলো সহজ করে দিতে থাকেন। পথপানে এগিয়ে গেলে সামনের পথ আলোকিত হয়ে দৃষ্টিসীমায় পথ প্রসারিত হতে থাকে। এই চাওয়া কতজনের কতরকম! যে যেমন জিনিসে মুগ্ধ হয়, ভালোবাসা কাজ করে যেদিকে, সে সেদিকেই ধাবমান হয়। ক্রমে তার প্রাপ্তিগুলোও ঐ কেন্দ্রিকই হয়। দুনিয়াতে ডুবে গেলে যাওয়াই হয়। আখিরাতের পথে কিছু চাইলে চাওয়ার গভীরতার উপরে হয়ত নির্ভর করে অর্জনের তীব্রতাও। তখন পথচলায় অনুভূতির জগতে কষ্টগুলোও হয়ত হালকা হয়ে যায়। সেটা তিনিই করে দেন। তিনিই তো সবকিছুর মালিক, যাকে ইচ্ছা দেন, যাকে ইচ্ছা বঞ্চিত করে কেড়ে নেন। মাঝে মাঝে দু'চোখে দেখে অসম্ভব লাগে আমার, আমি মুগ্ধ চোখে হয়ে বদলে যাওয়া অসাধারণ মানুষদের দেখি, হৃদয়ে নাড়া খাই। শুধু মনে হয়, এই পথযাত্রায় হয়ত থেমেই আছি, তবু তা হয়ত বসে থাকার চাইতে ভালো, জানিনা আমি। তিনি চাইলে সহজ হবে অনেক কিছুই, তার অপার রাহমাতের অপেক্ষাতেই রই। ফিরে তো যাব তার কাছেই, এসেছিলাম তার কাছ থেকেই। শাইখ হামজা ইউসুফের কথাটা স্মরণ হয়ে গেলো -- "আপনি যখন দরজায় দাঁড়িয়ে কড়া নাড়ছেন, তখন সেই কাজটিও দরজা খুলে যাওয়ার একটি অংশ; আপনি যখন কোন যাত্রাপথে তখন রওয়ানা হওয়ার মাঝেই আপনার যাত্রা শুরু হয়ে গেছে, যদি কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে না-ও পারেন তবু চিন্তিত হবেন না। সময় নষ্ট করা বন্ধ করুন, মৃত্যু আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। এটাই ছিলো ইমাম গাজ্জালীর মূল বার্তা।"

Friday, October 5, 2018

এড়িয়ে যেতে পারাই সফলতা

এগিয়ে যেতে হলে আপনাকে ছাড় দিতে হবে, অনেক কিছু না দেখার এবং না অনুভব করার চেষ্টা করতে হবে। সবকিছুকে গুরুত্ব দিয়ে আঁকড়ে ধরে থাকলে এগিয়ে যেতে পারবেন না, আপনাকে নিয়তই পরাজিত হতে হবে জীবনের বাঁকে বাঁকে.... . . . . . . .
দুশ্চিন্তা আপনার আগামীকালের সমস্যা দূর করতে পারবে না, বরং আজকের শান্তিটুকু দূর করে দিবে. .   .  

কোন কিছুর কারণে যদি আপনার মাঝে সুখ অনুপস্থিত থাকে, জেনে রাখুন তা পেলেও আপনি এমনই থাকবেন। একবার কোথায় যেন পড়েছিলাম, সুখ আসলে আমাদের মনের একটা পছন্দ, কোন অবস্থা নয়। কথাটা নিগূঢ় সত্য...
#কবিরাজ
#লকুফিশ

Saturday, August 25, 2018

কাজের মাঝে বেঁচে থাকতে হবে-- কল্যাণকর কাজ, ভালো কাজ, আনন্দময় কাজ

জীবনটার দৈর্ঘ্য খুবই কম। কেবল একটু পেছনে তাকিয়ে দেখবেন, মনে হবে যেন ৫ বছর আগের ঘটনাটা মাত্র অল্প ক'দিন আগের! আমাদের চারপাশে অনেক খারাপ মানুষ, প্রায়ই অনেক খারাপ ঘটনা ঘটে। আমরা যদি সেসবে আটকে যাই, শংকা-চিন্তা-হতাশা-দুঃখে পড়ে আমরা তখন আমাদের সত্যিকারের লক্ষ্যে পৌঁছতে আমরা বাধাগ্রস্ত হবো। ভালো চিন্তা, হৃদয়জোড়া ভালোবাসা, উচ্ছ্বাসভরা বুকে মানুষকে হাসিমুখ করে দেয়ার মতন কাজের বিকল্প নেই।
জীবনটা খুব ছোট। যে কোন ধরণের ক্ষুদ্র/খারাপ/মন্দ চিন্তা এবং দুশ্চিন্তা/শংকার মাঝে ডুবে থাকার মাঝে কোন ন্যুনতম কল্যাণ নেই। এগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে, কষ্টের মাত্রা, খারাপ লাগার মাত্রা যেমনই হোক না কেন। কাজের মাঝে বেঁচে থাকতে হবে-- কল্যাণকর কাজ, ভালো কাজ, আনন্দময় কাজ

দয়া আর মহত্বের স্পর্শে

শেষ কবে আপনি রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা দেখেছেন? আমরা যাদের জ্বলতে দেখি টিমটিম আলোয়, সেই মূহুর্তের সেই আলোটাও তো কত শত বছর আগে ওখান থেকে বিচ্ছুরিত হয়েছিলো তা হিসেব করার বিষয়, কিন্তু অমন নক্ষত্র, গ্রহ তো ওই আকাশে, এই মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে লাখে লাখে। ওদের একেকটার আকার আমাদের এই পৃথিবীর চেয়েও অনেক বড়। ওদের ওখান থেকেও আমরা একটা বিন্দুর মতই। এই বিন্দুতেই আমাদের সব। এই বিন্দুটুকুর আরো বিন্দু অংশ নিয়ে হাজার হাজার সৈনিক যুদ্ধ করেছে, সেনাপতিরা নিজেদের অমিত শক্তিশালী মনে করেছে হয়ত কোন একটা অংশ বিজয় করে। শাসকেরা নিজেদের ভাষ্কর্য উদ্বোধন করে, অফিসে অফিসে নিজের ছবি ঝোলায়; মনে করে তাদের এই শক্তি আর এই সময় হয়ত রয়ে যাবে। মহাবিশ্বের এইটুকু বিন্দুতেই শত-সহস্র ধর্ম রয়েছে যারা সবাই নিজেকে সঠিক মনে করে। এটুকুতেই রয়েছে অনিন্দ্য সুরের ঝংকার তৈরি করা লক্ষ লক্ষ সংগীতজ্ঞ, গভীর জীবনবোধ নিয়ে কবিতা ও গল্প লেখা হাজার-লক্ষ কবি আর ঔপন্যাসিক এসে চলেও গেছে। এটুকুর মাঝেই কত আঁকিয়ে যে এঁকেছেন ছবি, শিল্পে আর সংস্কৃতির চর্চার গভীরমূলে গিয়েছেন কত শত জন! এটুকুতেই রয়েছে কত প্রেমিক, কত প্রেমিকা। কত ভালোবাসা, কত টান আর কত আবেগ! কত অশ্রু আর কত হাসি। এখানেই রয়েছে হিংসা-বিদ্বেষ, কেউ কিছু পেলে অপরের জ্বালা ধরা মন্তব্য নির্নিমেষ। এটুকু জায়গায় কত মানুষের কত মত, কত ক্রোধ, কত অহং, কত ঘৃণা। অথচ এই সুবিশাল আয়োজন, এই অন্ধ ক্রোধান্ধ, আমিত্বকে জয় করার নিরুদ্দেশ যাত্রাপথে কারো কি তার ক্ষুদ্রতা নিয়ে আদৌ অনুভব হয়? এই টুকুন সৃষ্টির মাঝে, এই বিন্দুর মাঝে এত সিন্ধু যিনি স্থাপন করেছেন, তার বিশাল সৃস্টির দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে থেকে হয়ত আনমনেই অনুভব হবার কথা ছিলো, "হে আমাদের স্রষ্টা, আমাদের মালিক! আমাদের দয়া করুন। আমাদের চিন্তার আর হৃদয়ের সীমাবদ্ধতা ও ক্ষুদ্রতাকে সহ্য করতে না পারার এই জ্বালা থেকে মুক্তি দিন আপনার দয়া আর মহত্বের স্পর্শে।"

সমীকরণ


সব সমস্যার বেশি সরলীকরণ করলে সমস্যা। জটিল সমস্যার সরল সমাধান চাইতে গেলে সব হারাতে হয়। একই বুঝ দিয়ে সবাইকে বুঝতে গেলেও বিপদ।

কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়


সকল ক্ষতিই মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারে। মানুষ পরম অভিযোজন ক্ষমতার একটি প্রাণী। যাকে ছাড়া/যা ছাড়া জীবন কল্পনাও করতে পারেননি, তার বিদায়ের পরে আপনি দিব্যি খাবেন, ঘুমাবেন, হাসবেন। কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। দুঃখ নয়, গ্লানি হয়। এমনকি আনন্দের সময়ও নয়। দুনিয়া নিজেই অস্থায়ী। এর ভেতরের প্রতিটি প্রাণী, প্রতিটি সত্ত্বা, প্রতিটি কণা অস্থায়ী, নশ্বর। এমন কিছুর প্রতি কীসের এত আকাঙ্ক্ষা, এত স্বপ্ন আর কল্পনা-জল্পনা আমাদের যা কিছু সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে শেষ হয়ে যাবে?

Friday, August 24, 2018

প্রতিটি প্রাণী, প্রতিটি সত্ত্বা, প্রতিটি কণা অস্থায়ী, নশ্বর


সকল ক্ষতিই মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারে। মানুষ পরম অভিযোজন ক্ষমতার একটি প্রাণী। যাকে ছাড়া/যা ছাড়া জীবন কল্পনাও করতে পারেননি, তার বিদায়ের পরে আপনি দিব্যি খাবেন, ঘুমাবেন, হাসবেন। কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। দুঃখ নয়, গ্লানি হয়। এমনকি আনন্দের সময়ও নয়। দুনিয়া নিজেই অস্থায়ী। এর ভেতরের প্রতিটি প্রাণী, প্রতিটি সত্ত্বা, প্রতিটি কণা অস্থায়ী, নশ্বর। এমন কিছুর প্রতি কীসের এত আকাঙ্ক্ষা, এত স্বপ্ন আর কল্পনা-জল্পনা আমাদের যা কিছু সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে শেষ হয়ে যাবে?

Thursday, May 17, 2018

সুখে থাকা দুঃখে থাকা নিজের কাছে

জীবন কতনা অদ্ভূত! কখনও কতইনা সুন্দর আর আনন্দময়, আর কখনও কত কষ্টকর! আমাদের জীবনটাই যে এমন! কেউ তো জানিনা আমার যতি চিহ্ন কোথায়… কী নিয়ে দুঃখ করবো আমি? আজ হয়ত আমি অনেক সুখী, যদি আজই চলে যেতে হয় এই জগত ছেড়ে, তবে আমি কি প্রস্তুত যাওয়ার জন্য? আমি যতটুকু সুখে আছি, অনেকেই তো তার চাইতে খারাপ আছেন, তাইনা? জীবনটাই তো এমন! অনেক পাওয়া আর না পাওয়া দিয়ে ঘেরা… অনেক তৃপ্তি আর অতৃপ্তি মাখানো… তাকে তো আপন করে নিলে চলেনা! তাকে সাথে করে চলতে হতে হয়। এলোমেলো হয়ে গেলেও প্রস্তুত হতে হবে আখিরাতের জন্য… সেটাতে ভুলে গেলে চলবেই না!
একটা কথা শুনেছিলাম :
জীবনে যা ঘটেছে, তা ভালো হয়েছে। যা হচ্ছে, তা-ও ভালো হচ্ছে। আর ভবিষ্যতে যা ঘটবে, তা-ও ভালোই হবে।
ছেলেবেলায় শোনা সেই গল্পের কথা মনে পড়ে গেলোঃ
এক লোক মসজিদ থেকে বের হয়ে দেখেন তার জুতো জোড়া হারিয়ে গেছে। ভীষণ মন খারাপ করে তিনি পথ চলতে শুরু করলেন খালি পায়ে।
কিছুদূর যাবার পর তিনি দেখলেন একজন ভিক্ষুককে যার দু’টো পা-ই নেই…
তখন তার নিজের জুতো হারাবার দুঃখ ঘুচে গেলো… আমার তো অন্ততঃ দু’টো পা অক্ষত আছে! যাক না দু’জোড়া জুতো…
যা হারিয়ে গেছে আমার, তার চাইতে অনেক বেশি কিছু আমার কাছেই আছে। অনেকের কাছে সেটুকুও তো নেই! এটাই হয়ত আত্মিক শান্তি অর্জনের ভাবনা হওয়া উচিত। আর সেই শান্তির খোজেই তো আমরা ছুটে চলেছি জগতময়! যদি মনেই শান্তি পাওয়া যায়, তবে আর ক্ষতি কী?
আজ কিছু টিপস পেলাম ইন্টারনেটে, কীভাবে ভালো থাকা যায় সে বিষয়ে কিছু কথা, কীভাবে মনটাকে ভালো রাখা যাবে সে বিষয়ে কিছু কথা…
নিজেকে কখনও অন্যের সাথে তুলনা করবেন না।
নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা থেকে বিরত থাকুন। সবকিছুকে পজেটিভ ভাবে গ্রহন করতে চেষ্টা করুন।
নিজেকে নিয়ে এবং কাছের মানুষদেরকে নিয়ে অনর্থক বেশি দুঃচিন্তা করবেন না। মনে রাখবেন, দুঃশ্চিন্তা কখনোই সমস্যার সমাধান করবেনা।
নিছক আড্ডা দিয়ে সময়ের অপচয় করবেন না।
শত্রুতা এবং অন্যের প্রতি ঘৃণা বজায় রাখবেন না। এতে কেবল দুঃশ্চিন্তা বাড়ে এবং মানসিক শান্তি নষ্ট হয়, যা আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
নিজের এবং অন্যের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিন, শিক্ষাকে মনে রাখুন, ভুলকে ভুলে যান। অতীতের ভুল নিয়ে অতিরিক্ত ঘাটাঘাটি করে তিক্ততা বাড়িয়ে বর্তমানের সুন্দর সময়কে নষ্ট করবেন না।
মনে রাখবেন, জীবন একটি বিদ্যালয় যেখানে আপনি শিখতে এসেছেন। জীবনের যত সমস্যা তা এই বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত, এ নিয়ে তাই চিন্তা না করে বীজগণিতের মত সমাধানের চেষ্টা করুন।
প্রচুর পরিমাণে হাসুন এবং সবসময় হাসিখুশী থাকার অভ্যাস করুন। সেই সাথে অন্যদেরকেও হাসিখুশী রাখতে চেষ্টা করুন।
জীবনের সব ক্ষেত্রে জয় লাভ করা অসম্ভব। তাই হার মেনে নিতে প্রস্তুত থাকুন। এটাও আপনার একটা মানসিক বিজয়।
অন্যের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করুন।
অন্যেরা আপনাকে নিয়ে কি ভাববে তা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। নিজের কাজ করে যান আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
সময়ের কাজ সময়ে করুন, কিছুতেই এখনকার কাজ পরে করার জন্যে ফেলে রাখবেন না।
যেসব জিনিস চিত্তাকর্ষক ও আকর্ষণীয়, কিন্তু ও উপকারী নয়, তা থেকে দূরে থাকুন।
সুসময় বা দুঃসময় যাই হোক না কেন, সবই বদলাবে, এটাই চিরন্তন নিয়ম, তাই কোনো কিছুতেই অতিরিক্ত উৎফুল্ল বা অতিরিক্ত দুঃখিত হবেন না।
অনেক তো শুনলাম… এবার শুধু একটা কথা বলতে চাই… মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেছেনঃ
তোমরা ধৈর্য্য ও সালাতের সাহায্যে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে আছেন। (সূরা বাকারা: ১৫৩)
আর আরেকটা কথা বলেই শেষ করতে চাই আজকের মতন… এটাও পবিত্র কুরআন থেকে নেয়া। আমরা মানুষ। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চেষ্টার পর আর কিছুই করার থাকেনা আমাদের… হৃদয়ে একটা শূণ্যতা সৃষ্টি হয় চাওয়া-পাওয়া নিয়ে। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সেই জায়গায় কত সুন্দর করে তার অভিভাবকত্বের নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন!
… এতদ্দ্বারা যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। (সূরা তালাক: ২)
এই স্বল্প সময়ের পৃথিবীতে যেন আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে বিদায় নিতে পারি সেই প্রার্থনা আমার সবার জন্য রইলো। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন, সঠিক পথ প্রদর্শন করুন। সঠিক পথ তো সে-ই পায়, যে তার জন্য স্বপ্ন দেখে, চেষ্টা করে, হৃদয় যার লালায়িত থাকে মুক্তির প্রত্যাশায়……

Tuesday, May 15, 2018

ভালবাসার শেষ কথা


প্রিয়তমা,
"বেদনার বালুচরে দাড়িয়ে বুক ভরা হাহাকার আর আর্তনাদ নিয়ে বড় জানতে ইচ্ছে করছে,তুমি কেমন আছো? "
তেমনি আছো কি, যেমনটি ছিলে? নাকি চন্দ্র সূর্যের দিন রাত্রির চির আবর্তনে পাল্টে গেছে তোমার অবস্থান? তুমি কি শরতের নীল আকাশের তুলো মেঘের মত মাথার ঠিক উপরে যেভাবে ছিলে সেভাবেই আছো, না কি কুয়াশায় ঢাকা কোন হাড় কাঁপানো শীতের মধ্য দুপুরে সূর্য হয়ে দক্ষিন গোলার্ধ ঘেষে এগিয়ে যাচ্ছ অনাগত গ্রীষ্মের দিকে? সত্যিই খুব জানতে ইচ্ছে করছে।
জানো সোনা,
আজ আমার মনের আকাশটা বিরহের অমাবস্যার ঘুটঘুটে আঁধারে ঢাকা।স্বপ্নের জোনাকি গুলো ডানা ভেঙে লুটিয়েছে জমিনে। কষ্টের ঝিঝিপোকা গুলো আর্তনাদ করে চলেছে স্মৃতি গুলোর বুক জুড়ে।আমি না পেরেছি তাদের বুঝাতে, না পারি নিজেকে বুঝাতে।ব্যর্থতার এহেন পরিস্থিতিতে আমি আজ বোবা-কালা কিংবা, অন্ধ কিছু একটা হব হয়ত।
জানো,আর তাই
ভালোবাসার যে আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে তুমি ছিলে তা আজ আঁধারে ঢাকা। । ছোট ছোট স্বপ্ন আর সুখের স্মৃতিগুলো রাতের আকাশে যে তারা হয়ে জ্বলত,তারাও আজ নিভে গেছে প্রায়।অশরীরী স্বপ্নেরা মাঝে মাঝে সামনে এসে ভীর করে বটে,কিন্তু তাদের ধরা যায় না,ছোয়া যায় না।
সত্যি তুমি ছাড়া আমি আজ অসহায়। সত্যি আজ আমি সেই আমি আর নেই।।আমি মরে গেছি মন থেকে, শুধু অর্ধ মৃত খাঁচাটা পরে আছে মানুষের মাঝে একটা নাম নিয়ে!
আজ তুমি বললে,"কিছু একটা লিখো তো,তোমার লেখা কতদিন হল পড়িনা।"
আমি বললাম,"লেখার ভাষা হারিয়েছে তোমার সাথে সাথে।"
তবুও তোমার অনুরোধে মোবাইলের ডিসপ্লের উপর ঘন্টা চার কেটে গেলো শুধুই তাকিয়ে তাকিয়ে! কিন্তু
শেষ পর্যন্ত অনেক চিন্তাভাবনা করে একটা শব্দ বেরুলো না যা লিখা যায়। একটা বাক্য এলো না, যা দিয়ে মনের কথা গুলো তোমাকে জানাতে পারি। তাই এলোমেলো শব্দের বিন্যাসে অনর্থক কিছু কথা বলে গেলাম,যার হয়ত কোন মানে হয়না! তবুও লিখলাম, হয়ত এরই মধ্যে কোন শব্দের আড়ালে আমার লুকোনো বেদনার ছাপ তুমি খুঁজে পাবে বলে।হয়ত কোন অনর্থক শব্দের আড়ালে লুকিয়ে থাকা তোমাকে পাবার তীব্র বাসনা তুমি বুঝবে বলে।
আচ্ছা,
তুমি কি খুঁজে পেয়েছ সেরকম কোন কিছু? বুঝেছ কি শব্দের আড়ালে হৃদয়ের তীব্র আর্তনাদ??
জানিনা।
আর জানতেও চাই না।
লক্ষীটি,
শুধু একটা কথাই জানতে চাই,
তুমি কি এখনো ভালবাসো আমাকে? এখনো কি অমাবস্যার আধার ঠেলে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে আমার আকাশে উদিত হওয়ার তীব্রতা অনুভব কর তুমি? যেমনটি করতে!
এখনো কি মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে গেলে মোবাইলের ডায়াল প্যাডে আমার নাম্বার তুলো আনমনে? একলা ঘরে ভয়ে কাঁচুমাচু হয়ে, এখনো কি ইচ্ছে করে শক্ত করে জরিয়ে ধরে থাকতে?
হয়তবা!!
যদি এখনো হৃদয়ের কোন এক কোণে স্মৃতিগুলো জ্বলে উঠে হঠাৎ হঠাৎ, কিংবা চোখের কার্নিশে জমা হয় বিরহী লোনা জল, তবে চলে এসো।
চলে এসো চির উন্মুক্ত হৃদয়ের দরজা ঠেলে।আমি অপেক্ষায় থাকবো এভাবেই ।।
ভালো থেক।খুব বেশি মিস করলে আয়নায় নিজেকে দেখো।স্পর্শ গুনো একটা একটা করে। সেখানেই আমাকে খুঁজে পাবে!
#সেইলকুফিশ

ভাবনার জীবন

আমি এত এত ভাবি যে,ভাবতে ভাবতে ভাবনাগুলোও ভুলে যাই।
আমার গার্লফ্রেন্ড প্রায়শই বলে,"তুমি এত বেশি বুঝ ক্যান? এত বেশি ভাবো কেন? "
গার্লফ্রেন্ডকে কিভাবে বুঝাই,"সুস্থ মস্তিস্কই ভাবনায় ডুবে থাকে,একমাত্র পাগলের কোন ভাবনা থাকে না।"
কে যেন বলেছিলো, "যে কোন চিন্তা করে না বা যার কোন টেনশন নাই সেই একমাত্র সুখি। আর যে সবচেয়ে বেশি সুখি সে অবশ্যই পাগল নয়ত ভগবান। কারন,পাগলের কোন ভাবনা থাকে না।আর মানুষ যেহেতু ভগবান নয় তাই সে পাগলই।"
আমার মনে হয় যিনি এ কথাটি বলেছিলেন তিনি এরিষ্টটলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বলেছেন।এবং যা বলেছিলেন তা খাটি সত্য কথাই বলেছেন।
মানুষের ভাবনার ধারা বিচিত্র।একেক জনের একেক ধরনের ভাবনা।একেক বিষয়ে একেক জন ভাবেন। কিন্তু যেটা সবার ক্ষেত্রে কমন সেটা হলো,"সবারই ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু জীবন ও জগৎ। "
জীবনের ভাবনা গুলো আবার দুই রকমঃ
এক, ব্যবহারিক জীবন
এবং দুই, আধ্যাত্মিক জীবন
ব্যবহারিক জীবনের মধ্যে রয়েছে, দৈনন্দিন কর্মকান্ড, কল্পনা-জল্পনা,অতীত,বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। এক কথায় ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমরা যা কিছু ভাবি তা আমার মতে, "ব্যবহারিক জীবন ভাবনা"।
আর জন্মের পূর্বের এবং মৃত্যুর পরের ভাবনা গুলো হলো আধ্যাত্মিক জীবন ভাবনা।
মজার বিষয় হলো, আধ্যাত্মিকতা এবং ব্যবহারিক জীবন দু'টো পরস্পরের উপর নির্ভরশীল ।
আমরা জন্মের পর থেকেই এমন একটা আধ্যাত্মিক ক্ষমতা নিয়ে জন্মাই যা জন্মের পূর্বে আমরা মাতৃ গর্ভে ব্যবহার করতাম।আমার মনে হয়,মাতৃ গর্ভে শিশুরা যখন ধীরে ধীরে বড় হয় তখন বাহ্যিক পৃথিবী সম্পর্কে একটা কল্পনা করতে থাকে।আর তারা বাহিরের পরিবেশের সাথে সাথে নানাভাবে রিয়েক্ট করে এটা তো প্রমানিত সত্য।কিন্তু এসব রিয়্যাক্ট করার সাথে সাথে তারা পরিবেশ সম্পর্কে একটা কল্পনাও করে নেয়।
আর এই কল্পনা শক্তি বা আধ্যাত্মিক শক্তি আমরা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেও অনুভব করি।
কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে এসে আমরা যখন কোন বিষয়কে নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করি কিংবা আমাদের মন যদি কোন বিষয়ে একান্তভাবে সায়/সাপোর্ট দেয় তখন তা বাস্তব হয়।তবে বাস্তব অবস্থা কল্পনা করার জন্য আমাদেরকে মাতৃগর্ভে ফিরে যেতে হয়।অর্থ্যাৎ যে বিষয়টা আমাদের সাথে নেই বা যা আমরা দেখতে পাইনা কিন্তু তার অবস্থা কিংবা পরিবেশ বুঝতে চেষ্টা করি,তা বুঝতে হলে সেই বিষয়কে সেভাবে অনুভব করতে হয় যেভাবে মাতৃগর্ভে থেকে আমরা পৃথিবীকে অনুভব করি।
এজন্য ওই বিষয়ের প্রতি একটা গভীর ও নিস্পাপ ভালোবাসা থাকতে হয়,নিষ্পাপ শিশুর মত।
উদাহরণ সরূপঃ
ব্যবহারিক জীবনে আমরা অনেক সময় খুব প্রিয়জনদের অনুপস্থিতিতে তার মুভমেন্ট গুলো আন্দাজ করতে পারি। যা অনেক সময় ৭০-৮০% সত্য হয়।
কিন্তু, এটা কিভাবে সম্ভব?
এটা সম্ভব এই কারনে যে,আমরা যখন কোন কিছুকে গভীর এবং নিষ্পাপ মনে চাই/ ভালবাসি তখন আমাদের মধ্যে সেই স্প্রিচুয়াল পাওয়ারটা অনুভব করতে পারি।
কিন্তু বাস্তব জগতে এটাকে আমি সরাসরি আধ্যাত্মিক ভাবনা না বলে বলতে চাই,"অধি-কাল্পনিক অনুভব"।
#আর যখন আমরা আমাদের মৃত্যুর পরবর্তী জীবনকে কল্পনায় বা ভাবনায় নিয়ে আসি তখন তাকে আধ্যাত্মিক ভাবনা বলা যেতে পারে।মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে অবিনশ্বর আত্মার একটা সীমাহীন পথ যাত্রা শুরু হয়।সেই যাত্রা পথের সাম্ভাব্য বিষয়াবলী কে অনুভব করা বা উপলব্ধি করা হলো, "আধ্যাত্মিক জীবন ভাবনা"।
তাই শুধু জীবন নিয়ে আমরা যদি ভাবতে যাই তবে আজীবনেই জীবনের ভাবনা শেষ হবে না।
যে সৃষ্টির শুরু হয়েছে কোটি কোট বছর পূর্বে এবং যা অনন্ত কাল ধরে চলতে থাকবে তা মাত্র ৬০ কিংবা ৭০ কিংবা সর্বোচ্চ ১০০ বছরের ক্ষুদ্র জীবনে ভেবে শেষ করা কি সম্ভব?
না,কখনোই তা সম্ভব না।
তাই আমাদের ভাবতে হয় জগতের ভাবনা। কিন্তু বৃহৎ জগতের আদি ও অন্ত ভাবনা অনন্ত।তাই জগৎ এর আদি বা সৃষ্টি ভাবনা এবং অন্ত বা ধ্বংসের ভাবনাকে জীবনের আধ্যাত্মিক ভাবনার মধ্যে স্থান দিলে মানুষের আয়ুষ্কালে যে ক্ষুদ্র পরিসর পাওয়া যায় তাই টিকে থাকে জগৎ ভাবনা হিসেবে।
জগৎ ভাবনার বিষয়ের মধ্যে থাকে জীবনের লেনদেনের হিসেব,জগতে টিকে থাকার সংগ্রামের বিষয়বস্তু।
এটাকে ব্যবহারিক জীবন ভাবনার সাথে তুলনা করা যেতে পারে তবে ব্যবহারিক জীবন ভাবনা ও জগৎ ভাবনাকে এক বলা যাবে না।
ব্যাবহারিক জীবন ভাবনার বিষয়বস্তু গুলো হলো মানুষিক কিন্তু জগৎ ভাবনার বিষয়গুলো হলো বস্তুগত।
তবে সে যাই হোক,
জীবন ও জগতের মধ্যে ব্যবহারিক জীবন ভাবনা এবং জগৎ ভাবনাই হলো গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই দু'টি ভাবনাকেই আমরা বাস্তবে উপলব্ধি করতে পারি কিংবা বাস্তবে প্রয়োজন হয়।বাকি গুলোর অস্তিত্ব শুধুমাত্র মৃত্যুর পরেই উপলব্ধি করা সম্ভব।। তার আগে নয়।।

#আমিসেইলকুফিশ

Sunday, March 4, 2018

অনুবাদকরা মূল্যবান কিছু উপদেশ

পৃথিবীটা লবণাক্ত পানির মত। যতই তা পান করবে পিপাসা ততই বাড়বে।
•তুমি পাহাড়ের চুড়ার মত হইয়ো না। কারণ, এতে তুমি মানুষকে ছোট দেখবে আর মানুষও তোমাকে ছোট দেখবে।
•চিরকাল অন্ধকারকে গালমন্দ না করে ছোট্ট একটি বাতি জ্বালানো অনেক ভাল।
•সব কিছু জানা তোমার জন্য আবশ্যক নয়। কিন্তু যা কিছু বলছ তার সবটুকু সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
•কুপে থুথু ফেলনা। কারণ, হয়ত কখনো তোমার এ কুপ থেকে পানি পান করার প্রয়োজন হতে পারে।
•গাছ থেকে যখন আপেল পড়ল তখন সবাই বলল, গাছ থেকে আপেল পড়েছে। কিন্তু সব মানুষের মধ্যে এক ব্যক্তিই শুধু জানতে চাইল কেন আপেলটি পড়েছে?
(আর তার মাধ্যমেই আবিষ্কৃত হল মাধ্যাকর্ষণ শক্তি।)
•জীবন চলার পথে পড়ে আছে অসংখ্য পাথর। এতে তোমার চলার পথ যেন থেমে না যায়। বরং পাথরগুলো কুড়িয়ে তৈরি কর সাফল্যের সিঁড়ি।
•যে হিংসা করে সে সবার আগে নিজের ক্ষতি করে।
•আত্মতৃপ্তিতে ভোগা সংকীর্ণ জ্ঞানের পরিচয়।
•যে অল্পতে তুষ্ট থাকে তার কাছে এ পৃথিবীর সব কষ্ট সহজ হয়ে যায়।
•যদি নিজে নিজের ‘বিবেক’কে বড় মনে কর তবে শত্রু সৃষ্টি হবে আর যদি ‘হৃদয়’কে বড় কর তবে বন্ধু বৃদ্ধি হবে।
•যার ভুল হয় সে মানুষ আর যে ভুলের উপর স্থির থাকে সে শয়তান।
•বাকপটু ও নির্বোধের সাথে তর্কে যেও না। কারণ, বাকপটু তোমাকে কথায় পরাজিত করবে আর নির্বোধ তোমাকে কষ্ট দিবে।

অনুবাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী।

রবিক লকুফিশ
https://m.facebook.com/kobir.dekosta?fref=nf

জীবনের সঠিক সিদ্ধান্ত


স্বাধীন ইচ্ছা হল ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া এক উপহার। এটা না থাকলে আমরা রোবটের মতো হয়ে যেতাম এবং ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারতাম না। কিন্তু, এটা থাকায় আমাদেরকে অনেক কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। স্বাধীন ইচ্ছা থাকায় জীবনে চলার পথে আমাদেরকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

অবশ্য, এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয় যেগুলো খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু অন্যান্য সিদ্ধান্তগুলো যেমন, আমরা কোন্‌ পেশা বেছে নেব, বিয়ে করব নাকি একা থাকব, এগুলো আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের ওপর প্রভাব ফেলে। আবার কিছু সিদ্ধান্ত অন্যদের ওপর প্রভাব ফেলে। যেমন বাবামারা এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেন, যা তাদের সন্তানদের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলে। এছাড়া, এমন অনেক সিদ্ধান্ত আছে যেগুলোর জন্য আমাদেরকে ঈশ্বরের কাছে নিকাশ দিতে হবে।—রোমীয় ১৪:১২.

সাহায্য দরকার

সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে মানুষদের কোন সুনাম নেই। মানুষের সবচেয়ে প্রথম সিদ্ধান্তটাই ছিল ধ্বংসাত্মক। ঈশ্বর স্পষ্টভাবে যে ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন, হবা সেটা খাবে বলে ঠিক করেছিল। স্বার্থপর আকাঙ্ক্ষার জন্য সে যা বেছে নিয়েছিল, তা তার স্বামীকেও তার মতো ঈশ্বরের অবাধ্য হতে পরিচালিত করেছিল আর এর ফলে মানবজাতির জন্য চরম দুঃখকষ্ট এসেছিল। এখনও মানুষ অনেক ক্ষেত্রে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সঠিক নীতিগুলোর ওপর নির্ভর না করে বরং স্বার্থপর আকাঙ্ক্ষাগুলোর ওপর বেশি নির্ভর করে। (আদিপুস্তক ৩:৬-১৯; যিরমিয় ১৭:৯) আর তাই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময় প্রায়ই আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলো সম্বন্ধে সচেতন হয়ে যাই।

তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময় অনেকে সাহায্যের জন্য মানুষদের চেয়ে আরও বড় কোন উৎসের কাছে ছুটে যান। বাইবেলে একটা ঘটনার কথা পাওয়া যায় যখন যুদ্ধের সময় নবূখদ্‌নিৎসরকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। একজন রাজা হওয়া সত্ত্বেও, তিনি “মন্ত্রপূত করিবার” বা আত্মাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার দরকার মনে করেছিলেন। তাই বিবরণ বলে: “সে বাণ সকল সঞ্চালন করিল, ঠাকুরদের কাছে অনুসন্ধান করিল, ও যকৃৎ নিরীক্ষণ করিল।” (যিহিষ্কেল ২১:২১) ঠিক আজকেও, অনেকে গণক ও জ্যোতিষীদের কাছে যান এবং আরও বিভিন্ন উপায়ে আত্মাদের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু, এগুলো ভ্রান্ত করে ও বিপথে নিয়ে যায়।—লেবীয় পুস্তক ১৯:৩১.

কিন্তু এমন একজন আছেন, যাঁর ওপর পুরোপুরি নির্ভর করা যায় এবং ইতিহাস দেখায় যে তিনি মানুষদেরকে সঠিক সিদ্ধান্তগুলো নিতে সাহায্য করেছেন। হ্যাঁ, তিনি যিহোবা ঈশ্বর ছাড়া আর কেউই নন। উদাহরণ হিসেবে, প্রাচীনকালে ঈশ্বর তাঁর জাতি ইস্রায়েলকে ঊরীম এবং তুম্মীম, সম্ভবত পবিত্র বস্তু দিয়েছিলেন যেগুলো সেই জাতি যখন গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছিল, তখন দেওয়া হয়েছিল। ঊরীম এবং তুম্মীমের মাধ্যমে যিহোবা সরাসরি প্রশ্নের উত্তর দিতেন এবং ইস্রায়েলের প্রাচীনদের নিশ্চিত হতে সাহায্য করতেন যে, তাঁর ইচ্ছার সঙ্গে তাদের সিদ্ধান্তগুলোর মিল আছে।—যাত্রাপুস্তক ২৮:৩০; লেবীয় পুস্তক ৮:৮; গণনাপুস্তক ২৭:২১.

আরেকটা উদাহরণ বিবেচনা করুন। গিদিয়োনকে যখন মিদিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইস্রায়েলীয় সৈন্যদেরকে নেতৃত্ব দিতে বলা হয়, তখন তিনি এই মহান সুযোগ গ্রহণ করবেন কি না, সেই বিষয়ে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। যিহোবা যে তাকে সাহায্য করবেন, এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য গিদিয়োন অলৌকিক চিহ্ন চেয়েছিলেন। তিনি প্রার্থনা করেছিলেন যে, সারারাত বাইরে রাখা এক ছিন্ন মেষলোম যেন শিশিরে ভিজে যায় কিন্তু সেটার আশেপাশের মাটি যেন শুকনো থাকে। পরের দিন রাতে তিনি অনুরোধ করেছিলেন যে, ছিন্ন মেষলোম যেন শুকনো থাকে কিন্তু সেটার আশেপাশের মাটি যেন শিশিরে ভিজে যায়। গিদিয়োন যে চিহ্নগুলো দেখতে চেয়েছিলেন যিহোবা তাকে দয়ার সঙ্গে সেই চিহ্নগুলো দেখিয়েছিলেন। এর ফলে গিদিয়োন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং ঈশ্বরের সাহায্যে ইস্রায়েলের শত্রুদেরকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করেছিলেন।—বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ ৬:৩৩-৪০; ৭:২১, ২২.

আজকের দিন সম্বন্ধে কী বলা যায়?

ঠিক আজকেও, যিহোবার দাসদেরকে যখন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয়, তখন তিনি তাদেরকে সাহায্য করেন। কীভাবে? কোন্‌ সিদ্ধান্তটা ঠিক, সেটা দেখিয়ে দেওয়ার জন্য আমরাও কি গিদিয়োনের মতো যিহোবার কাছ থেকে ‘ছিন্ন মেষলোমের পরীক্ষার’ চিহ্ন চাইব? যেখানে রাজ্যের প্রচারকদের বেশি দরকার সেখানে সেবা করতে যাবেন কি যাবেন না, এই নিয়ে এক দম্পতি চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাহায্য পেতে তারা একটা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। একটা নির্দিষ্ট দামে তারা তাদের বাড়িটা নিলামে চড়ান। বাড়িটা যদি নির্দিষ্ট দিনে এবং নির্দিষ্ট দামে বা তারও বেশি দামে বিক্রি হয়, তাহলে তারা সেটাকে একটা চিহ্ন হিসেবে নেবেন যে, যিহোবা চান যেন তারা সেখানে যান। কিন্তু বাড়িটা যদি বিক্রি না হয়, তাহলে তারা মনে করবেন যে ঈশ্বর চান না যে তারা সেখান যাক।

শেষ পর্যন্ত বাড়িটা বিক্রি হয়নি। তাহলে কি এটা বুঝিয়েছিল যে, এই দম্পতি যেখানে বেশি দরকার সেখানে গিয়ে সেবা করুক, তা যিহোবা চান না? অবশ্যই, যিহোবা তাঁর দাসদের জন্য কী করেন বা কী করেন না, তা জোরগলায় বলা দুঃসাহসের কাজ হবে। আমরা বলতে পারি না যে, বর্তমানে যিহোবা আমাদেরকে তাঁর ইচ্ছা সম্বন্ধে জানানোর জন্য কখনও হস্তক্ষেপ করেন না। (যিশাইয় ৫৯:১) কিন্তু, বড় বড় সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময় এইধরনের হস্তক্ষেপ করা হবে বলে আমরা আশা করতে পারি না, আসলে সেটা আশা করার অর্থ হবে যে আমাদের সিদ্ধান্তগুলো যেন ঈশ্বরই নেন। এমনকি গিদিয়োনকেও তার জীবনের বেশির ভাগ সময়ে যিহোবার কাছ থেকে কোন অলৌকিক চিহ্ন ছাড়াই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল!

কিন্তু, বাইবেল বলে যে ঈশ্বরের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়া যায়। এটা আমাদের দিন সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করে: “দক্ষিণে কি বামে ফিরিবার সময়ে তোমার কর্ণ পশ্চাৎ হইতে এই বাণী শুনিতে পাইবে, এই পথ, তোমরা এই পথেই চল।” (যিশাইয় ৩০:২১) আমাদের যখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বেছে নিতে হয়, তখন ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে আমাদের সিদ্ধান্তগুলোর মিল আছে কি না এবং সেগুলো তাঁর মহান প্রজ্ঞাকে প্রকাশ করে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া একেবারে ঠিক। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? তাঁর বাক্য থেকে পরামর্শ নিয়ে এবং সেগুলোকে ‘আমাদের চরণের প্রদীপ, আমাদের পথের আলোক’ হতে দিয়ে আমরা তা করতে পারি। (গীতসংহিতা ১১৯:১০৫; হিতোপদেশ ২:১-৬) তা করার জন্য আমাদেরকে বাইবেল থেকে সঠিক জ্ঞান নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। (কলসীয় ১:৯, ১০) আর যখন কোন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন সেই বিষয়টার ওপর বাইবেলের সমস্ত নীতিগুলো খুব ভাল করে পরীক্ষা করে দেখা দরকার। এইধরনের পরীক্ষা আমাদেরকে “যাহা যাহা ভিন্ন প্রকার [“গুরুত্বপূর্ণ,” NW], তাহা পরীক্ষা করিয়া চিনিতে” সাহায্য করবে।—ফিলিপীয় ১:৯, ১০.

এছাড়াও, প্রার্থনায় যিহোবার সঙ্গে আমাদের কথা বলা দরকার এবং এই আস্থা রাখা দরকার যে, তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন। আমাদেরকে যে সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং এর বিকল্প যে বিষয়গুলো আমরা চিন্তা করছি, সেগুলো আমাদের প্রেমময় ঈশ্বরের কাছে বলা কত সান্ত্বনাদায়ক! তাহলে, সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা আস্থা রেখে সাহায্য চাইতে পারি। বেশির ভাগ সময়ই, পবিত্র আত্মা আমাদেরকে বাইবেলের সেই নীতিগুলোকে মনে করিয়ে দেয়, যা কাজে লাগানো যায় অথবা এটা আমাদেরকে আমাদের পরিস্থিতির সঙ্গে যে শাস্ত্রপদটা মেলে সেটা আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করে।—যাকোব ১:৫, ৬.

এছাড়া মণ্ডলীতে যিহোবা পরিপক্ব ব্যক্তিদেরকে দিয়েছেন, যাদের সঙ্গে আমরা আমাদের সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি। (ইফিষীয় ৪:১১, ১২) কিন্তু, অন্যদের কাছে পরামর্শ নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের কখনও তাদের মতো হওয়া উচিত নয়, যারা যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের মনমতো কথা বলেন এমন ব্যক্তিদেরকে খুঁজে পান, ততক্ষণ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে যেতে থাকেন। এরপর তারা তার পরামর্শ গ্রহণ করেন। এছাড়া, রহবিয়ামের সতর্কতামূলক উদাহরণও আমাদের মনে রাখা উচিত। তাকে যখন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, তখন তিনি প্রাচীন ব্যক্তিদের কাছ থেকে অপূর্ব পরামর্শ পেয়েছিলেন, যারা তার বাবার সঙ্গে কাজ করতেন। কিন্তু তাদের পরামর্শ না শুনে তিনি সেই যুবকদের কাছে পরামর্শ চেয়েছিলেন, যারা তারই সঙ্গে বড় হয়েছিলেন। তাদের পরামর্শ মতো কাজ করে তিনি বোকার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং এর ফলে তার রাজ্যের এক বিরাট অংশ হারিয়েছিলেন।—১ রাজাবলি ১২:১-১৭.

পরামর্শের জন্য এমন ব্যক্তিদের কাছে যান, যাদের জীবন সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা ও শাস্ত্র সম্বন্ধে খুব ভাল জ্ঞান আছে এবং যারা সঠিক নীতিগুলোর প্রতি গভীর সম্মান দেখান। (হিতোপদেশ ১:৫; ১১:১৪; ১৩:২০) যখন সম্ভব হয়, তখন এর সঙ্গে জড়িত সমস্ত নীতি এবং আপনি যে তথ্যগুলো জোগাড় করেছেন সেগুলোর ওপর ধ্যান করার জন্য সময় করে নিন। বিষয়গুলোকে যখন আপনি যিহোবার বাক্যের আলোয় দেখতে পাবেন, তখন সঠিক সিদ্ধান্তটা হয়তো আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে।—ফিলিপীয় ৪:৬, ৭.

যে সিদ্ধান্তগুলো আমরা নিই

কিছু সিদ্ধান্ত সহজেই নেওয়া হয়। প্রেরিতদেরকে যখন সাক্ষ্য দিতে নিষেধ করা হয়েছিল, তখন তারা জানতেন যে, যীশুর সম্বন্ধে তাদেরকে প্রচার করে যেতে হবে আর তাদের এই সিন্ধান্তের কথা তারা সঙ্গে সঙ্গে মহাসভায় জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তারা মানুষদের চেয়ে বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করবেন। (প্রেরিত ৫:২৮, ২৯) আবার কোন কোন সিদ্ধান্ত খুব ভেবেচিন্তে নিতে হয় কারণ সেই সম্বন্ধে বাইবেলে সরাসরি কোন নির্দেশনা নেই। তবুও সবচেয়ে ভাল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সাধারণত বাইবেলের নীতিগুলো সাহায্য করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আজকে যে বিভিন্ন আমোদপ্রমোদ দেখা যায় তা যদিও যীশুর সময়ে ছিল না কিন্তু বাইবেলের বিবরণ পরিষ্কার করে জানায় যে কী যিহোবাকে খুশি করে এবং কী তাকে তাঁকে অখুশি করে। তাই কোন খ্রীষ্টান যদি এমন কোন আমোদপ্রমোদের সঙ্গে জড়িত থাকেন, যা দৌরাত্ম্য, অনৈতিকতা অথবা বিদ্রোহকে জাগিয়ে তোলে, তাহলে তিনি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।—গীতসংহিতা ৯৭:১০; যোহন ৩:১৯-২১; গালাতীয় ৫:১৯-২৩; ইফিষীয় ৫:৩-৫.

কখনও কখনও দুটো সিদ্ধান্তই ঠিক হতে পারে। যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে গিয়ে কাজ করা অনেক ভাল সুযোগ এবং তা অনেক আশীর্বাদ নিয়ে আসে। কিন্তু কোন কারণে একজন ব্যক্তি যদি তা না করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তিনি নিজের মণ্ডলীতে থেকেও ভাল কাজ করতে পারেন। কখনও কখনও আমাদেরকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যা আমাদের অন্তর থেকে যিহোবার প্রতি ভক্তি অথবা আমাদের জীবনে কোন্‌টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা দেখানোর সুযোগ করে দেয়। এভাবে, আমাদের স্বাধীন ইচ্ছাকে ব্যবহার করতে দিয়ে যিহোবা দেখেন যে আমাদের হৃদয়ে আসলে কী রয়েছে।

প্রায়ই, অন্যেরা আমাদের সিদ্ধান্তগুলো দ্বারা প্রভাবিত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টানরা ব্যবস্থার অনেক বিধিনিষেধ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন বলে আনন্দ করেছিলেন। এর অর্থ হল, ব্যবস্থার মধ্যে যেটা অশুচি ছিল সেই খাবার তারা খেতেও পারতেন আবার না-ও খেতে পারতেন। তবুও, তাদেরকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছিল যে এই স্বাধীনতাকে তারা কাজে লাগাবে কি না, সেটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তারা যেন অন্যদের বিবেকের কথা ভেবে দেখেন। আমরা এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিই, যেগুলোর বেলায় পৌলের এই কথাগুলো খাটে: “কাহারও বিঘ্ন জন্মাইও না।” (১ করিন্থীয় ১০:৩২) অন্যদের বিঘ্ন না জন্মানোর ইচ্ছা হয়তো আমাদেরকে অনেক সিদ্ধান্ত ঠিকভাবে নিতে সাহায্য করবে। এছাড়া প্রতিবেশীকে প্রেম করা হল, দ্বিতীয় মহান আজ্ঞা।—মথি ২২:৩৬, ৩৯.

আমাদের সিদ্ধান্তগুলোর ফল

উত্তম বিবেক এবং বাইবেলের নীতিগুলোর ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিলে, তা পরিশেষে ভাল ফল নিয়ে আসে। এটা ঠিক যে, অল্প সময়ের জন্য একজনকে হয়তো ব্যক্তিগতভাবে কিছু ত্যাগস্বীকার করতে হয়। প্রেরিতরা যখন যীশু সম্বন্ধে প্রচার করে যাবেন বলে তাদের সিদ্ধান্তের কথা মহাসভায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, তখন তাদেরকে ছাড়ার আগে চাবুক দিয়ে মারা হয়েছিল। (প্রেরিত ৫:৪০) তিন ইব্রীয় অর্থাৎ শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্‌-নগো যখন নবূখদ্‌নিৎসরের তৈরি সোনার প্রতিমার সামনে প্রণিপাত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন তারা তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছিলেন। তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার জন্য তারা মরতেও প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তারা জানতেন যে, তাদের প্রতি ঈশ্বরের অনুমোদন এবং আশীর্বাদ আছে।—দানিয়েল ৩:১৬-১৯.

সমস্ত কিছু বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও আমরা যদি সমস্যায় পড়ি, তাহলে এইরকম মনে করার কোন কারণ নেই যে সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। এমনকি ভাল উদ্দেশ্য নিয়ে করা সিদ্ধান্তগুলো ‘কাল ও দৈবের’ কারণে চরম দুর্দশা নিয়ে আসতে পারে। (উপদেশক ৯:১১) এছাড়া, আমাদের প্রতিজ্ঞার গভীরতা পরীক্ষা করার জন্য যিহোবা কখনও কখনও দুর্দশা ঘটার অনুমতি দেন। আশীর্বাদ পাওয়ার আগে যাকোবকে সারারাত দূতের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল। (আদিপুস্তক ৩২:২৪-২৬) এমনকি ঠিক কাজ করলেও আমাদেরকে হয়তো সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে হতে পারে। তবুও, আমাদের সিদ্ধান্তগুলো যখন ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল থাকে, তখন আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, তিনি আমাদেরকে ধৈর্য ধরতে সাহায্য করবেন এবং তিনি আমাদেরকে আশীর্বাদ করবেন।—২ করিন্থীয় ৪:৭.

তাই, কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় নিজের বুদ্ধির ওপর নির্ভর করবেন না। বাইবেলের সেই নীতিগুলোকে খুঁজে বের করুন, যেগুলো কাজে লাগানো যায়। প্রার্থনায় বিষয়টা যিহোবাকে জানান। যখনই সম্ভব বিষয়টা নিয়ে পরিপক্ব সহ খ্রীষ্টানদের সঙ্গে আলোচনা করুন। এরপর সাহস করুন। ঈশ্বরের দেওয়া স্বাধীন ইচ্ছাকে দায়িত্বের সঙ্গে ব্যবহার করুন। সঠিক সিদ্ধান্ত নিন এবং যিহোবাকে দেখান যে আপনার হৃদয় তাঁর প্রতি একাগ্র।