পৃষ্ঠাসমূহ

Showing posts with label জীবন বদলে দিতে পারে. Show all posts
Showing posts with label জীবন বদলে দিতে পারে. Show all posts

Saturday, August 25, 2018

কাজের মাঝে বেঁচে থাকতে হবে-- কল্যাণকর কাজ, ভালো কাজ, আনন্দময় কাজ

জীবনটার দৈর্ঘ্য খুবই কম। কেবল একটু পেছনে তাকিয়ে দেখবেন, মনে হবে যেন ৫ বছর আগের ঘটনাটা মাত্র অল্প ক'দিন আগের! আমাদের চারপাশে অনেক খারাপ মানুষ, প্রায়ই অনেক খারাপ ঘটনা ঘটে। আমরা যদি সেসবে আটকে যাই, শংকা-চিন্তা-হতাশা-দুঃখে পড়ে আমরা তখন আমাদের সত্যিকারের লক্ষ্যে পৌঁছতে আমরা বাধাগ্রস্ত হবো। ভালো চিন্তা, হৃদয়জোড়া ভালোবাসা, উচ্ছ্বাসভরা বুকে মানুষকে হাসিমুখ করে দেয়ার মতন কাজের বিকল্প নেই।
জীবনটা খুব ছোট। যে কোন ধরণের ক্ষুদ্র/খারাপ/মন্দ চিন্তা এবং দুশ্চিন্তা/শংকার মাঝে ডুবে থাকার মাঝে কোন ন্যুনতম কল্যাণ নেই। এগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে, কষ্টের মাত্রা, খারাপ লাগার মাত্রা যেমনই হোক না কেন। কাজের মাঝে বেঁচে থাকতে হবে-- কল্যাণকর কাজ, ভালো কাজ, আনন্দময় কাজ

Sunday, March 4, 2018

জীবনের সঠিক সিদ্ধান্ত


স্বাধীন ইচ্ছা হল ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া এক উপহার। এটা না থাকলে আমরা রোবটের মতো হয়ে যেতাম এবং ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারতাম না। কিন্তু, এটা থাকায় আমাদেরকে অনেক কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। স্বাধীন ইচ্ছা থাকায় জীবনে চলার পথে আমাদেরকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

অবশ্য, এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয় যেগুলো খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু অন্যান্য সিদ্ধান্তগুলো যেমন, আমরা কোন্‌ পেশা বেছে নেব, বিয়ে করব নাকি একা থাকব, এগুলো আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের ওপর প্রভাব ফেলে। আবার কিছু সিদ্ধান্ত অন্যদের ওপর প্রভাব ফেলে। যেমন বাবামারা এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেন, যা তাদের সন্তানদের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলে। এছাড়া, এমন অনেক সিদ্ধান্ত আছে যেগুলোর জন্য আমাদেরকে ঈশ্বরের কাছে নিকাশ দিতে হবে।—রোমীয় ১৪:১২.

সাহায্য দরকার

সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে মানুষদের কোন সুনাম নেই। মানুষের সবচেয়ে প্রথম সিদ্ধান্তটাই ছিল ধ্বংসাত্মক। ঈশ্বর স্পষ্টভাবে যে ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন, হবা সেটা খাবে বলে ঠিক করেছিল। স্বার্থপর আকাঙ্ক্ষার জন্য সে যা বেছে নিয়েছিল, তা তার স্বামীকেও তার মতো ঈশ্বরের অবাধ্য হতে পরিচালিত করেছিল আর এর ফলে মানবজাতির জন্য চরম দুঃখকষ্ট এসেছিল। এখনও মানুষ অনেক ক্ষেত্রে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সঠিক নীতিগুলোর ওপর নির্ভর না করে বরং স্বার্থপর আকাঙ্ক্ষাগুলোর ওপর বেশি নির্ভর করে। (আদিপুস্তক ৩:৬-১৯; যিরমিয় ১৭:৯) আর তাই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময় প্রায়ই আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলো সম্বন্ধে সচেতন হয়ে যাই।

তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময় অনেকে সাহায্যের জন্য মানুষদের চেয়ে আরও বড় কোন উৎসের কাছে ছুটে যান। বাইবেলে একটা ঘটনার কথা পাওয়া যায় যখন যুদ্ধের সময় নবূখদ্‌নিৎসরকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। একজন রাজা হওয়া সত্ত্বেও, তিনি “মন্ত্রপূত করিবার” বা আত্মাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার দরকার মনে করেছিলেন। তাই বিবরণ বলে: “সে বাণ সকল সঞ্চালন করিল, ঠাকুরদের কাছে অনুসন্ধান করিল, ও যকৃৎ নিরীক্ষণ করিল।” (যিহিষ্কেল ২১:২১) ঠিক আজকেও, অনেকে গণক ও জ্যোতিষীদের কাছে যান এবং আরও বিভিন্ন উপায়ে আত্মাদের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু, এগুলো ভ্রান্ত করে ও বিপথে নিয়ে যায়।—লেবীয় পুস্তক ১৯:৩১.

কিন্তু এমন একজন আছেন, যাঁর ওপর পুরোপুরি নির্ভর করা যায় এবং ইতিহাস দেখায় যে তিনি মানুষদেরকে সঠিক সিদ্ধান্তগুলো নিতে সাহায্য করেছেন। হ্যাঁ, তিনি যিহোবা ঈশ্বর ছাড়া আর কেউই নন। উদাহরণ হিসেবে, প্রাচীনকালে ঈশ্বর তাঁর জাতি ইস্রায়েলকে ঊরীম এবং তুম্মীম, সম্ভবত পবিত্র বস্তু দিয়েছিলেন যেগুলো সেই জাতি যখন গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছিল, তখন দেওয়া হয়েছিল। ঊরীম এবং তুম্মীমের মাধ্যমে যিহোবা সরাসরি প্রশ্নের উত্তর দিতেন এবং ইস্রায়েলের প্রাচীনদের নিশ্চিত হতে সাহায্য করতেন যে, তাঁর ইচ্ছার সঙ্গে তাদের সিদ্ধান্তগুলোর মিল আছে।—যাত্রাপুস্তক ২৮:৩০; লেবীয় পুস্তক ৮:৮; গণনাপুস্তক ২৭:২১.

আরেকটা উদাহরণ বিবেচনা করুন। গিদিয়োনকে যখন মিদিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইস্রায়েলীয় সৈন্যদেরকে নেতৃত্ব দিতে বলা হয়, তখন তিনি এই মহান সুযোগ গ্রহণ করবেন কি না, সেই বিষয়ে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। যিহোবা যে তাকে সাহায্য করবেন, এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য গিদিয়োন অলৌকিক চিহ্ন চেয়েছিলেন। তিনি প্রার্থনা করেছিলেন যে, সারারাত বাইরে রাখা এক ছিন্ন মেষলোম যেন শিশিরে ভিজে যায় কিন্তু সেটার আশেপাশের মাটি যেন শুকনো থাকে। পরের দিন রাতে তিনি অনুরোধ করেছিলেন যে, ছিন্ন মেষলোম যেন শুকনো থাকে কিন্তু সেটার আশেপাশের মাটি যেন শিশিরে ভিজে যায়। গিদিয়োন যে চিহ্নগুলো দেখতে চেয়েছিলেন যিহোবা তাকে দয়ার সঙ্গে সেই চিহ্নগুলো দেখিয়েছিলেন। এর ফলে গিদিয়োন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং ঈশ্বরের সাহায্যে ইস্রায়েলের শত্রুদেরকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করেছিলেন।—বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ ৬:৩৩-৪০; ৭:২১, ২২.

আজকের দিন সম্বন্ধে কী বলা যায়?

ঠিক আজকেও, যিহোবার দাসদেরকে যখন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয়, তখন তিনি তাদেরকে সাহায্য করেন। কীভাবে? কোন্‌ সিদ্ধান্তটা ঠিক, সেটা দেখিয়ে দেওয়ার জন্য আমরাও কি গিদিয়োনের মতো যিহোবার কাছ থেকে ‘ছিন্ন মেষলোমের পরীক্ষার’ চিহ্ন চাইব? যেখানে রাজ্যের প্রচারকদের বেশি দরকার সেখানে সেবা করতে যাবেন কি যাবেন না, এই নিয়ে এক দম্পতি চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাহায্য পেতে তারা একটা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। একটা নির্দিষ্ট দামে তারা তাদের বাড়িটা নিলামে চড়ান। বাড়িটা যদি নির্দিষ্ট দিনে এবং নির্দিষ্ট দামে বা তারও বেশি দামে বিক্রি হয়, তাহলে তারা সেটাকে একটা চিহ্ন হিসেবে নেবেন যে, যিহোবা চান যেন তারা সেখানে যান। কিন্তু বাড়িটা যদি বিক্রি না হয়, তাহলে তারা মনে করবেন যে ঈশ্বর চান না যে তারা সেখান যাক।

শেষ পর্যন্ত বাড়িটা বিক্রি হয়নি। তাহলে কি এটা বুঝিয়েছিল যে, এই দম্পতি যেখানে বেশি দরকার সেখানে গিয়ে সেবা করুক, তা যিহোবা চান না? অবশ্যই, যিহোবা তাঁর দাসদের জন্য কী করেন বা কী করেন না, তা জোরগলায় বলা দুঃসাহসের কাজ হবে। আমরা বলতে পারি না যে, বর্তমানে যিহোবা আমাদেরকে তাঁর ইচ্ছা সম্বন্ধে জানানোর জন্য কখনও হস্তক্ষেপ করেন না। (যিশাইয় ৫৯:১) কিন্তু, বড় বড় সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময় এইধরনের হস্তক্ষেপ করা হবে বলে আমরা আশা করতে পারি না, আসলে সেটা আশা করার অর্থ হবে যে আমাদের সিদ্ধান্তগুলো যেন ঈশ্বরই নেন। এমনকি গিদিয়োনকেও তার জীবনের বেশির ভাগ সময়ে যিহোবার কাছ থেকে কোন অলৌকিক চিহ্ন ছাড়াই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল!

কিন্তু, বাইবেল বলে যে ঈশ্বরের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়া যায়। এটা আমাদের দিন সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করে: “দক্ষিণে কি বামে ফিরিবার সময়ে তোমার কর্ণ পশ্চাৎ হইতে এই বাণী শুনিতে পাইবে, এই পথ, তোমরা এই পথেই চল।” (যিশাইয় ৩০:২১) আমাদের যখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বেছে নিতে হয়, তখন ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে আমাদের সিদ্ধান্তগুলোর মিল আছে কি না এবং সেগুলো তাঁর মহান প্রজ্ঞাকে প্রকাশ করে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া একেবারে ঠিক। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? তাঁর বাক্য থেকে পরামর্শ নিয়ে এবং সেগুলোকে ‘আমাদের চরণের প্রদীপ, আমাদের পথের আলোক’ হতে দিয়ে আমরা তা করতে পারি। (গীতসংহিতা ১১৯:১০৫; হিতোপদেশ ২:১-৬) তা করার জন্য আমাদেরকে বাইবেল থেকে সঠিক জ্ঞান নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। (কলসীয় ১:৯, ১০) আর যখন কোন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন সেই বিষয়টার ওপর বাইবেলের সমস্ত নীতিগুলো খুব ভাল করে পরীক্ষা করে দেখা দরকার। এইধরনের পরীক্ষা আমাদেরকে “যাহা যাহা ভিন্ন প্রকার [“গুরুত্বপূর্ণ,” NW], তাহা পরীক্ষা করিয়া চিনিতে” সাহায্য করবে।—ফিলিপীয় ১:৯, ১০.

এছাড়াও, প্রার্থনায় যিহোবার সঙ্গে আমাদের কথা বলা দরকার এবং এই আস্থা রাখা দরকার যে, তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন। আমাদেরকে যে সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং এর বিকল্প যে বিষয়গুলো আমরা চিন্তা করছি, সেগুলো আমাদের প্রেমময় ঈশ্বরের কাছে বলা কত সান্ত্বনাদায়ক! তাহলে, সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা আস্থা রেখে সাহায্য চাইতে পারি। বেশির ভাগ সময়ই, পবিত্র আত্মা আমাদেরকে বাইবেলের সেই নীতিগুলোকে মনে করিয়ে দেয়, যা কাজে লাগানো যায় অথবা এটা আমাদেরকে আমাদের পরিস্থিতির সঙ্গে যে শাস্ত্রপদটা মেলে সেটা আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করে।—যাকোব ১:৫, ৬.

এছাড়া মণ্ডলীতে যিহোবা পরিপক্ব ব্যক্তিদেরকে দিয়েছেন, যাদের সঙ্গে আমরা আমাদের সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি। (ইফিষীয় ৪:১১, ১২) কিন্তু, অন্যদের কাছে পরামর্শ নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের কখনও তাদের মতো হওয়া উচিত নয়, যারা যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের মনমতো কথা বলেন এমন ব্যক্তিদেরকে খুঁজে পান, ততক্ষণ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে যেতে থাকেন। এরপর তারা তার পরামর্শ গ্রহণ করেন। এছাড়া, রহবিয়ামের সতর্কতামূলক উদাহরণও আমাদের মনে রাখা উচিত। তাকে যখন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, তখন তিনি প্রাচীন ব্যক্তিদের কাছ থেকে অপূর্ব পরামর্শ পেয়েছিলেন, যারা তার বাবার সঙ্গে কাজ করতেন। কিন্তু তাদের পরামর্শ না শুনে তিনি সেই যুবকদের কাছে পরামর্শ চেয়েছিলেন, যারা তারই সঙ্গে বড় হয়েছিলেন। তাদের পরামর্শ মতো কাজ করে তিনি বোকার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং এর ফলে তার রাজ্যের এক বিরাট অংশ হারিয়েছিলেন।—১ রাজাবলি ১২:১-১৭.

পরামর্শের জন্য এমন ব্যক্তিদের কাছে যান, যাদের জীবন সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা ও শাস্ত্র সম্বন্ধে খুব ভাল জ্ঞান আছে এবং যারা সঠিক নীতিগুলোর প্রতি গভীর সম্মান দেখান। (হিতোপদেশ ১:৫; ১১:১৪; ১৩:২০) যখন সম্ভব হয়, তখন এর সঙ্গে জড়িত সমস্ত নীতি এবং আপনি যে তথ্যগুলো জোগাড় করেছেন সেগুলোর ওপর ধ্যান করার জন্য সময় করে নিন। বিষয়গুলোকে যখন আপনি যিহোবার বাক্যের আলোয় দেখতে পাবেন, তখন সঠিক সিদ্ধান্তটা হয়তো আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে।—ফিলিপীয় ৪:৬, ৭.

যে সিদ্ধান্তগুলো আমরা নিই

কিছু সিদ্ধান্ত সহজেই নেওয়া হয়। প্রেরিতদেরকে যখন সাক্ষ্য দিতে নিষেধ করা হয়েছিল, তখন তারা জানতেন যে, যীশুর সম্বন্ধে তাদেরকে প্রচার করে যেতে হবে আর তাদের এই সিন্ধান্তের কথা তারা সঙ্গে সঙ্গে মহাসভায় জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তারা মানুষদের চেয়ে বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করবেন। (প্রেরিত ৫:২৮, ২৯) আবার কোন কোন সিদ্ধান্ত খুব ভেবেচিন্তে নিতে হয় কারণ সেই সম্বন্ধে বাইবেলে সরাসরি কোন নির্দেশনা নেই। তবুও সবচেয়ে ভাল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সাধারণত বাইবেলের নীতিগুলো সাহায্য করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আজকে যে বিভিন্ন আমোদপ্রমোদ দেখা যায় তা যদিও যীশুর সময়ে ছিল না কিন্তু বাইবেলের বিবরণ পরিষ্কার করে জানায় যে কী যিহোবাকে খুশি করে এবং কী তাকে তাঁকে অখুশি করে। তাই কোন খ্রীষ্টান যদি এমন কোন আমোদপ্রমোদের সঙ্গে জড়িত থাকেন, যা দৌরাত্ম্য, অনৈতিকতা অথবা বিদ্রোহকে জাগিয়ে তোলে, তাহলে তিনি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।—গীতসংহিতা ৯৭:১০; যোহন ৩:১৯-২১; গালাতীয় ৫:১৯-২৩; ইফিষীয় ৫:৩-৫.

কখনও কখনও দুটো সিদ্ধান্তই ঠিক হতে পারে। যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে গিয়ে কাজ করা অনেক ভাল সুযোগ এবং তা অনেক আশীর্বাদ নিয়ে আসে। কিন্তু কোন কারণে একজন ব্যক্তি যদি তা না করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তিনি নিজের মণ্ডলীতে থেকেও ভাল কাজ করতে পারেন। কখনও কখনও আমাদেরকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যা আমাদের অন্তর থেকে যিহোবার প্রতি ভক্তি অথবা আমাদের জীবনে কোন্‌টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা দেখানোর সুযোগ করে দেয়। এভাবে, আমাদের স্বাধীন ইচ্ছাকে ব্যবহার করতে দিয়ে যিহোবা দেখেন যে আমাদের হৃদয়ে আসলে কী রয়েছে।

প্রায়ই, অন্যেরা আমাদের সিদ্ধান্তগুলো দ্বারা প্রভাবিত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টানরা ব্যবস্থার অনেক বিধিনিষেধ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন বলে আনন্দ করেছিলেন। এর অর্থ হল, ব্যবস্থার মধ্যে যেটা অশুচি ছিল সেই খাবার তারা খেতেও পারতেন আবার না-ও খেতে পারতেন। তবুও, তাদেরকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছিল যে এই স্বাধীনতাকে তারা কাজে লাগাবে কি না, সেটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তারা যেন অন্যদের বিবেকের কথা ভেবে দেখেন। আমরা এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিই, যেগুলোর বেলায় পৌলের এই কথাগুলো খাটে: “কাহারও বিঘ্ন জন্মাইও না।” (১ করিন্থীয় ১০:৩২) অন্যদের বিঘ্ন না জন্মানোর ইচ্ছা হয়তো আমাদেরকে অনেক সিদ্ধান্ত ঠিকভাবে নিতে সাহায্য করবে। এছাড়া প্রতিবেশীকে প্রেম করা হল, দ্বিতীয় মহান আজ্ঞা।—মথি ২২:৩৬, ৩৯.

আমাদের সিদ্ধান্তগুলোর ফল

উত্তম বিবেক এবং বাইবেলের নীতিগুলোর ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিলে, তা পরিশেষে ভাল ফল নিয়ে আসে। এটা ঠিক যে, অল্প সময়ের জন্য একজনকে হয়তো ব্যক্তিগতভাবে কিছু ত্যাগস্বীকার করতে হয়। প্রেরিতরা যখন যীশু সম্বন্ধে প্রচার করে যাবেন বলে তাদের সিদ্ধান্তের কথা মহাসভায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, তখন তাদেরকে ছাড়ার আগে চাবুক দিয়ে মারা হয়েছিল। (প্রেরিত ৫:৪০) তিন ইব্রীয় অর্থাৎ শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্‌-নগো যখন নবূখদ্‌নিৎসরের তৈরি সোনার প্রতিমার সামনে প্রণিপাত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন তারা তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছিলেন। তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার জন্য তারা মরতেও প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তারা জানতেন যে, তাদের প্রতি ঈশ্বরের অনুমোদন এবং আশীর্বাদ আছে।—দানিয়েল ৩:১৬-১৯.

সমস্ত কিছু বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও আমরা যদি সমস্যায় পড়ি, তাহলে এইরকম মনে করার কোন কারণ নেই যে সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। এমনকি ভাল উদ্দেশ্য নিয়ে করা সিদ্ধান্তগুলো ‘কাল ও দৈবের’ কারণে চরম দুর্দশা নিয়ে আসতে পারে। (উপদেশক ৯:১১) এছাড়া, আমাদের প্রতিজ্ঞার গভীরতা পরীক্ষা করার জন্য যিহোবা কখনও কখনও দুর্দশা ঘটার অনুমতি দেন। আশীর্বাদ পাওয়ার আগে যাকোবকে সারারাত দূতের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল। (আদিপুস্তক ৩২:২৪-২৬) এমনকি ঠিক কাজ করলেও আমাদেরকে হয়তো সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে হতে পারে। তবুও, আমাদের সিদ্ধান্তগুলো যখন ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল থাকে, তখন আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, তিনি আমাদেরকে ধৈর্য ধরতে সাহায্য করবেন এবং তিনি আমাদেরকে আশীর্বাদ করবেন।—২ করিন্থীয় ৪:৭.

তাই, কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় নিজের বুদ্ধির ওপর নির্ভর করবেন না। বাইবেলের সেই নীতিগুলোকে খুঁজে বের করুন, যেগুলো কাজে লাগানো যায়। প্রার্থনায় বিষয়টা যিহোবাকে জানান। যখনই সম্ভব বিষয়টা নিয়ে পরিপক্ব সহ খ্রীষ্টানদের সঙ্গে আলোচনা করুন। এরপর সাহস করুন। ঈশ্বরের দেওয়া স্বাধীন ইচ্ছাকে দায়িত্বের সঙ্গে ব্যবহার করুন। সঠিক সিদ্ধান্ত নিন এবং যিহোবাকে দেখান যে আপনার হৃদয় তাঁর প্রতি একাগ্র।

Sunday, August 13, 2017

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করুন। ।

১. ভয়ের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই । এর উৎস হচ্ছে অতীত আর নির্মম শিকার হচ্ছে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ।
২. সফল মানুষ বিশ্বাসকে গুরুত্ব দেন আর ব্যর্থরা বাস্তবতার দোহাই দেয় ।
৩. প্রস্তুতি ছাড়া যাত্রা পথের কষ্টকে বাড়িয়ে দেয়। স্বপ্ন ও বিশ্বাস পথ চলার সে প্রস্তুতিরই সূচনা করে ।
৪. জীবন থেকে সত্যকে শিখুন। আর বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়া কোনো সত্যই নিজস্ব হয় না ।
৫. আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যা কিছু নিয়ে অহংকার করা হয়েছে, তা-ই তার পতনের কারণ হয়েছে ।
৬. আত্মা সবসময় ভাবে, ‘আমি কী দিতে পারি’। আর অহম ভাবে ‘আমি কী পেতে পারি’ বা ‘আমি কী পেলাম’ ।
৭. প্রতিটি কাজ করার আগে অন্তত একবার নিজেকে জিজ্ঞেস করুন- কাজটি আপনি কেন করবেন ।
৮. একটি কাজ না করার পেছনে হাজারটি অজুহাত দেখানো যায়, কিন্তু কাজটি করার জন্যে একটি কারণই যথেষ্ট ।
৯. প্রতিটি কাজ শুরু হয় শূন্য থেকে। ধাপে ধাপে তা পূর্ণতা পায় ।
১০. করতে না পারা আর না করে কাজ ফেলে রাখার মধ্যে ব্যবধান হচ্ছে- প্রথমটি পারিপার্শ্বিক প্রভাবে প্রভাবিত আর দ্বিতীয়টি ব্যক্তির খেয়ালিপনা ।
১১. নিজের কাছে নিজে সৎ থাকুন । প্রতিটি কাজে আপনার পক্ষে যা করা সম্ভব, আন্তরিকতার সঙ্গে করুন ।
১২. বুদ্ধিমানরা সবসময় কথা বা কাজের আগে চিন্তা করে। আর বোকারা চিন্তা করে (পস্তায়) কাজের পরে ।
১৩. নিখুঁত ও বাস্তবানুগ পরিকল্পনা যেকোনো কাজ সুসম্পন্নের অর্ধেক ।
১৪. দায়িত্ব নিতে ভয় পাবেন না । তাহলেই নতুন কিছু শিখতে পারবেন ।
১৫. আনন্দের অনুভূতি মনের শক্তিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজে লাগায় ।
১৬. শোকর হলো আনন্দে স্নাত হয়ে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন । আর সবর হলো প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নীরব সংগ্রাম ।
১৭. আজ পর্যন্ত কোনো ভিক্ষুক দাতা বা স্বাবলম্বী হতে পারে নি । যে হাত নিতে অভ্যস্ত সে হাত কখনো দিতে পারে না ।
১৮. যে বলার পেছনে অনুশীলন নেই তা ক্ষণিকের জন্যে মোহিত করলেও শ্রোতাকে অনুপ্রাণিত করতে পারে না ।
১৯. একজন জ্ঞানী জানেন যে তিনি কী জানেন না। আর একজন মূর্খ নিজেকে সবসময় সবজান্তা মনে করে ।
২০. ‌প্রতিটি মানুষ বড় হতে পারে তার জীবনের মনছবি বা স্বপ্নের সমান ।
২১. যে স্বপ্ন দেখতে জানে, প্রতীক্ষা করতে পারে, সে প্রতীক্ষার কষ্টও হাসিমুখে সইতে পারে ।
২২. সুযোগ হাতছাড়া করবেন না । অতীতের দিকে তাকালে দেখবেন, কাজ করে অনুতাপ করার চেয়ে সুযোগ হাতছাড়া করে আপনি বেশি অনুতপ্ত হয়েছেন ।
২৩. যেকোনো ঘটনাকে সহজভাবে গ্রহণ করাই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ।
২৪. বই-কিতাব পড়ে তাত্ত্বিক বা তার্কিক হওয়া যায়, আত্ম আবিষ্কারক হওয়া যায় না। আত্ম আবিষ্কারের জন্যে প্রয়োজন আত্মনিমগ্নতা ।
২৫. প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি হয় । আর মানুষের মেধা বিকশিত হয় সযত্ন প্রয়াসের মধ্য দিয়ে ।
২৬. কাজে উদ্যোগী না হলে প্রতিটি কাজই অসম্ভব মনে হয় ।
২৭. ভয় বা আশঙ্কা হচ্ছে শয়তানের ছায়া আর বিশ্বাস হচ্ছে স্রষ্টার নূরের ছটা ।
২৮. নেতৃত্বকে অনুসরণ করুন। তাহলে আপনিও নেতা হতে পারবেন ।
২৯. সত্যিকার যোদ্ধা সে-ই, যে জানে কখন অস্ত্র সংবরণ করতে হয় ।
৩০. আহাম্মক বিশ্রাম খোঁজে। বুদ্ধিমান খোঁজে শুধু কাজ ।
৩১. ভয়ের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই । এর উৎস হচ্ছে অতীত আর নির্মম শিকার হচ্ছে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ।
৩২. মানুষ যখন অবৈজ্ঞানিক ও প্রকৃতি-বিরুদ্ধ জীবন যাপন করেছে তখনই তার দুঃখ ও দুর্ভোগ এসেছে ।
৩৩. নিজের পরিবর্তন না এনে আমরা অন্যের পরিবর্তন দেখতে চাই । তাই আমাদের সত্যিকার পরিবর্তন আসে না ।
৩৪. অন্যকে সে-ই অনুপ্রাণিত করতে পারে যে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয় না ।
৩৫. সামাজিক মুখোশ নয়, অন্তর্গত শক্তিই হচ্ছে ব্যক্তিত্ব ।
৩৬. রাগ ও অভিমান করে বোকা ও দুর্বলরা । বুদ্ধিমানরা কৌশলে পরিস্থিতি বদলে দেয় ।
৩৭. নতুন বন্ধুত্ব করুন । কিন্তু পুরনো বন্ধুত্বকেও গুরুত্ব দিন ।
৩৮. যে সম্পর্ককে ছেদ করা যায় না, সে সম্পর্কের মাঝে দেয়াল রচনা করবেন না । সেখানে মমতার বন্ধন তৈরি করুন ।
৩৯. সংশয় হলো বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের মধ্যবর্তী অবস্থান । বিশ্বাস থেকে বিচ্যুতির প্রথম ধাপই হলো সংশয় ।
৪০. কাম শৃঙ্খলিত করে । আর প্রেম জীবনকে শৃঙ্খল মুক্ত করে ।
৪১. আপনার পরিচিত বলয়ের ঈর্ষাকারী ও পরচর্চাকারীদের সাথে মানসিক সম্পর্ক ছেদ করুন । তাহলেই তারা আর আপনার প্রশান্তি নষ্টের কারণ হবে না ।
৪২. প্রতিপক্ষের সাথে সংলাপের পথকে কখনো বন্ধ করবেন না। কারণ বিশ্বাস নিয়ে মোকাবেলা করলে পৃথিবীর কোনো প্রতিপক্ষই অজেয় নয় ।
৪৩. পথে নামলে পথই পথ দেখায় ।
৪৪. প্রতিযোগীর যেকোনো বক্তব্য বা সমালোচনাকে মূল্যায়ন করুন । সে-ই বিজয়ী হয়, যে প্রতিপক্ষের কৌশল সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান রাখে ।
৪৫. আন্তরিক প্রার্থনায় প্রার্থনা, প্রার্থনাকারী ও প্রার্থনা কবুলকারী একাকার হয়ে যান ।
৪৬. দক্ষতা ছাড়া সততা শক্তিহীন ।
৪৭. প্রতি মুহূর্তের হাজারটি বিকল্প কর্মপন্থার মধ্য থেকে সর্বোত্তমটি বেছে নেয়ার স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষমতাই প্রজ্ঞা ।
৪৮. আত্মবিশ্বাস এবং অহংকারের মধ্যে পার্থক্য হলো- আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি আত্মজ্ঞান আর অহংকারের ভিত্তি জৈবিক চেতনা ।
৪৯. ক্ষোভ হচ্ছে এমন এক বিষ যা আপনি নিজে পান করছেন আর ভাবছেন মারা যাবে আপনার প্রতিপক্ষ ।
৫০. জৈবিক আমিত্ব বিপন্নবোধ করলেই আমরা দুর্ব্যবহার করি। দুর্ব্যবহার আমাদের পশু সত্তার স্বরূপ প্রকাশ করে ।
৫১. সবলের অহম প্রকাশ পায় শক্তির মদমত্ততায়। আর দুর্বলের অহম প্রকাশ পায় ঘৃণায় ।
৫২. কর্ম ছাড়া প্রার্থনা কবুল হয় না ।
৫৩. মানুষ যখনই সীমালঙ্ঘন করেছে- মন্দ কাজে, এমনকি ভালো কাজেও- তখনই তার জীবনে বিপর্যয় এসেছে ।
৫৪. আত্মিক সম্পর্ককে গুরুত্ব দিন। আত্মিক সম্পর্ক ভালো কাজে অনুপ্রাণিত করে ।
৫৫. প্রয়োজন আর অভাববোধ এক নয়। অভাববোধ হলো প্রয়োজন মেটার পরও আরো বেশি পাওয়ার জন্যে অস্থিরতা ।
৫৬. সময়কে নিয়ন্ত্রণে রাখুন, অনেক কিছুই আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে ।
৫৭. সময়ের যোগফলই জীবন। সে মানুষই সফল, যে পরিকল্পিতভাবে সময়কে কাজে লাগায় ।
৫৮. কোনো পরাজয়ই ব্যর্থতা নয়, যদি সে পরাজয় মানসিকভাবে আপনাকে পরাজিত করতে না পারে ।
৫৯. বস্তুর সীমাবদ্ধতা হলো- তা পাওয়ার আগ পর্যন্ত অস্থিরতা কাজ করে। কিন্তু পাওয়া হয়ে গেলেই তা তৃপ্তি দেয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে ।
৬০. মুক্তির পথে অন্তরায় হলো অনিশ্চয়তাবোধ এবং ঝুঁকি নেয়ার সাহসের অভাব ।
৬১. আত্মবিকাশের অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। তা আদায় করে নিতে হয় ।
৬২. বিনাশ্রমে অর্থলাভের প্রতিশ্রুতি দেয়া প্রতারকদের একটি সাধারণ টোপ ।