পৃষ্ঠাসমূহ

Saturday, August 12, 2017

কিভাবে আমি নিজেকে দক্ষ করলাম?

কেন আমি আজকে এ জায়গাতে, সবাই কষ্ট করে পড়ে দেখবেন। নিজের সাথে মিলিয়ে দেখবেন। লেখাটি সবার জন্য উপদেশ হিসেবে দেখার অনুরোধ রইল। আমার নিজের ব্যপারে অহংকার করে কিছু লিখছিনা। একদম নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে খুজে বের করে লিখলাম সবার জন্য। বিজয় সবার হবেই, বিজয়ের জন্য অনেক গুণ থাকতে হবে।

দক্ষতা অর্জনের নেশা:

দক্ষতা অর্জনের নেশাটা অনেক বেশি ছিল, এখনও আছে। কারও কাছ থেকে কিছু শিখতে পারলে, তার প্রতি সবসময় কৃতজ্ঞ থাকি। কিছু শিখার নেশাটাই আজকে আমাকে এ জায়গাতে এনেছে। এখনও নিজেকে অনেকে অজ্ঞ একজন মনে হয়। মনে হয় যেন, এ অনলাইন জগতে ভালভাবে কাজ করার মত যোগ্য এখনও হয়ে উঠতে পারিনি। আর এ কারনে প্রতিদিন প্রচুর সময় ব্যয় করি নতুন নতুন বিষয় শিখার জন্য। হার্ডওয়্যার, নেটওয়ার্কিং শিখে ক্যারিয়ার গড়েছিলাম। গ্রাফিক ডিজাইন শিখে টুকটাক কাজ করেছিলাম। অ্যানিমেশন শিখে নেশার মত অনেক কাজ করেছিলাম। ওয়েবডিজাইন শিখে প্রচুর ইনকাম করেছি। এসইও শিখে কাজ করছি অনেকদিন। অনেক ব্যস্ততার জন্য প্রবল ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও মোবাইল অ্যাপস শিখার কয়েকবার প্রস্তুতি নেওয়ার পরও শিখা ধরতে পারিনি। এবং এ বিষয়টি শিখতে পারছিনা, সেই আফসোস খুব বেশি কুড়ে কুড়ে খায় আমাকে। শিখার এ নেশাটা থাকার জন্য আল্লাহকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ভাল নেশাটির জন্যই এটুকু দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছি।

অসম্ভব শব্দটিকে ঘৃণা করেছি:

কোন কাজ দেখে মাথাতে আনিনি, এটা কি আমাকে দ্বারা সম্ভব হবে? সবসময় মাথাতে ছিল, অন্য কেউ যদি পেড়ে থাকে, আমার দ্বারাও সেটি করা সম্ভব হবে।  অন্যরাও কেউ জন্ম থেকে কোন কিছু পেরে আসেনি। চেষ্টা , পরিশ্রম, সাধনার পরেই সব কিছু পেরেছে।  বিশ্বাস ছিল, আমিও সাধনা এবং পরিশ্রম করলে এবং বিষয়টি নিয়ে লেগে থাকলে অবশ্যই যেকোন বিষয়ে সফল হবই। এ বিশ্বাসটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করি এখন। আমার ডিকশেনারীতে সবচাইতে ঘৃণিত শব্দ হচ্ছে, ”অসম্ভব”।  লেখালিখিটাকেও অসম্ভব ভাবলে এখন লিখতে পারতাম না।  শুরুর দিকে অনেকেই আমার লেখাকে নিয়ে কটাক্ষ করত। সেগুলোকে সহ্য করে হারিয়ে যাইনি।  চ্যালেঞ্জ নিয়েছি, একদিন আমার লিখা সবার কাছে প্রিয় হবে। যারা আমার লেখাকে ভুল ধরে কটাক্ষ করতো, তারাও আজকে আমার লেখাকে সেরা হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

ব্যর্থতার জন্য নিজেকে দায়ি:

যেকোন কিছু অর্জনের ব্যপারে কারও উপর নির্ভরের চাইতে আমার নিজের উপরই বেশি নির্ভর করেছি। আর সেজন্য কারও ব্যপারে কখনও অভিযোগটা মাথাতে আসেনি। অভিযোগটা আসলে আমার নিজের উপরই সবসময় ছিল। চাইলে অনেকের উপরই অভিয়োগ করার ছিল। অন্যের কাছ থেকে যা পেয়েছি, সেটি হিসেব করলে সবচাইতে বেশি অভিযোগ আমার হওয়ার কথা। কিন্তু সবার বিন্দু পরিমান অবদানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। আমার নিজের ব্যপারেই অনেক অভিযোগ আমার। আর সেজন্যই নিজের দুর্বল দিকগুলোকে সবসময় পরিবর্তন করতে পেরেছি। এখনও এ কাজটি করি। আমার টীম মেম্বারদের অনেকে সক্রিয়ভাবে কাজ না করলে তাদের লিডাররা, সেসব মেম্বারদের ব্যপারে অভিয়োগ করলে আমি বলি, সবকিছুর জন্য আমি দায়ি। কারণ আমি ভাল নেতৃত্ব দিতে পারিনি, সেজন্য টীম মেম্বারদের হতে ভাল কাজ আদায় করতে পারিনি। সেটার জন্য মেম্বাররা দায়িনা। নিজেকে এভাবে দায়ি করতে পারার কারনে নিজের নেতৃত্বের গুণকে আপডেট করার দিকে নজর দিতে পারছি।

ধৈয্য শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা:

ধৈয্য শক্তি বৃদ্ধির জন্য সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছি। কোন নতুন কিছু ফলাফল না পেলে আমিও হতাশ হয়ে পড়ি। তখন লেগে থাকার ধৈয্য শক্তিটা অর্জনের চেষ্টাটা বাড়ানো চেষ্টা করে যাচ্ছি। কারণ বিশ্বাস করি, একটা বিষয় নিয়ে অনেকদিনের গবেষণা, এবং ধৈয্য ধরে লেগে থাকলে সেটাতে দক্ষ অবশ্যই হবই। প্রচুর ব্যর্থতা, প্রচুর ক্ষতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে সবসময়। মানুষের বাটপারির কারনে বিশাল বিশাল লসের মধ্য দিয়েও যেতে হয়েছে। কিন্তু এরপরও নিজের ধৈয্য চ্যুতি ঘটাইনি, ট্র্যাক হারায়নি। লক্ষ্য আমার স্থির ছিল, ধৈয্য ধরে লক্ষ্য পানে এগিয়ে চলেছি।

কিছু অর্জনের জন্য ব্যাপক সেক্রিফাইস:

কোন কিছু অর্জন এত সহজ নয়। বিশাল সেক্রিফাইস করেই কিছু অর্জন করা সম্ভব। নিজে যখন দক্ষ হওয়ার চেষ্টা শুরু করি, তখন থেকে প্রচুর পরিমানে মানুষের কাজ ফ্রিতে করে দিয়ে নিজেকে দক্ষ এবং একই সাথে দক্ষতাকে মানুষের কাছে প্রচারের চেষ্টা চালিয়ে যাই। সেটার সুফল এখন পাচ্ছি। এখন কোন কিছুর জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছেনা। বরং আমার সার্ভিসের জন্যই অনেকে অপেক্ষা করছে। এ অর্জনটির জন্য অনেক সেক্রিফাইস এবং কষ্ট করতে হয়েছে।

পরিশ্রমই আসল কথা

আমার সকল অর্জন আমার নিজের পরিশ্রমের জন্য। পরিশ্রমের সংজ্ঞা কাকে বলে সেটা আমার টীম মেম্বাররা সবসময় কাছ থেকে আমাকে দেখে শিখে। ২৪ঘন্টাতে ২০ঘন্টা পযন্ত কাজ করি। যখন ১ম ক্যারিয়ার শুরু করি, তখন পরিশ্রম করতে গিয়ে একসময়ে এমন অবস্থা হয়ে গিয়েছিল, ৩মাসের বেড রেস্টে চলে যেতে হয়েছিল। ঘরের ভিতরেও ২জনের কাধে ভর করে টয়লেটে যেতে হয়েছিল। এখনও নতুন কোম্পানী চালাতে গিয়ে অফিসের কমপক্ষে ৫জনের কাজ একা করে যাচ্ছি। এ পরিশ্রমটাই করেই সফলতা বের করে নিয়ে আছি। পরিশ্রম করার পরের দিনই কিছু পাওয়ার স্বপ্ন দেখিনা। কিন্তু জানি, পরিশ্রমের ফল কিছুনা কিছু পাবই।

ব্যর্থতার জন্য উছিলা

কোন ধরনের বাধাকেই উছিলা হিসেবে ব্যবহার করিনি। কোথাও কোর্স করার মত টাকা ছিলনা, কিন্তু সেটা আমার শিখার জন্য বাধা হতে পারেনি। নিজে নিজে কষ্ট করে শিখেছি সব। কোন এক অজানা কারনে কোন বিপদে খুব কমই মানুষকে পাশে পাই। কিন্তু সেটা নিয়ে মনের ভিতর অল্প স্বল্প দু:খ থাকলেও বিষয়টাকে উছিলা দেইনি। পরিবারের সকল দায়িত্বটুকু আমার উপরই ছিল। বাসাতে কাজ করার মত পরিবেশটাও ছিলনা। সেটিকে কোন ধরনের উছিলা হিসেবে ধরিনি। কোন ধরনের উৎসব কিংবা নিজের অসুস্থতাকে উছিলা ধরেও নিজেকে দমিয়ে রাখিনি। বিয়ের আগের রাতেও কাজ করেছি। বিয়ের ২দিন পর থেকে কাজ শুরু করেছি। নিজের কোন ধরনের ব্যর্থতার জন্য কোন কিছুকে উছিলা হিসেবে ধরিনি। শুধু বলেছি, নিজের আলস্যতার জন্যই সবকিছুকে ম্যানেজ করতে পারছিনা।
এ গল্পটা শুধু আমার না। আজকে যাদের সফলতা দেখে হিংসা করছেন, সবার গল্পটাই একই রকম। সবাই সবার এ যোগ্যতা দিয়েই আজকের এ অবস্থানে এসেছে। আর আপনি যদি আশা করেন, খুব সহজেই এ জায়গাতে এসে পড়বেন। আর ব্যর্থ হলে বলে ফেলবেন, আপনার কপাল খারাপ !! আসলে কি কপাল খারাপ নাকি এখন পযন্ত পাওয়ার মত কিছুই করতে পারেননি, সেটা সবার ভেবে দেখার দরকার।

No comments:

Post a Comment