পৃষ্ঠাসমূহ

Tuesday, January 13, 2015

পরকাল যে সত্যিই হবে তার যুক্তি



১নং যুক্তি-

মানুষ সাধারণত দুটো কারণে মিথ্যা বলে। যথাঃ

১। মানুষ কোন না কোন লোভ বা স্বার্থের বশীভূত হয়ে-অথবা

২। কোন না কোন ভয়ের কারণে।

এ দুটো জিনিস যখন কারও সামনে থাকে না, তখন সে সত্য কথাই বলে এটাই মানব প্রবৃত্তি। আমরা দেখি দুনিয়ার নবী রাসূল সবাই বলেছেন; পরকাল হবে এবং তাঁরা প্রত্যেকেই এমন ছিলেন যে, কোন প্রকার লোভ বা ভয় তাঁদের স্পর্শ করতে পারেনি। কাজেই তাঁরা যখন সবাই একই কথা বলেছেন, তখন আবশ্যই তা মিথ্যা হতে পারে না।

২নং যুক্তি -

যা সত্য সাক্ষ্য তা যত মানুষেই (সাক্ষ্য) দিক না কেন প্রত্যেকের কথা একই প্রকার হয়। আর যা মিথ্যা সাক্ষ্য তা কখনও একটা সঙ্গের অন্যটার মিল হয় না। যেমন একই অঙ্কের সঠিক উত্তর প্রত্যেকটিই একই প্রকার হয়,কিন্তু ভুল উত্তর কখনও একটার সঙ্গে অন্যটার মিল হয় না। এই যুক্তি মোতাবিক দেখা যায় আল্লাহর প্রত্যেক নবী আল্লাহর একত্ববাদ,রিসালত বা নবী রাসূলগণের কার্যকলাপ ও যৌক্তিকতা এবং পরকাল সম্পর্কে হুবহু একই কথা বলেছেন। এর দ্বারা প্রমাণ হয় যে, একথা মিথ্যা হলে সবার কথা একই প্রকার হতে পারতো না।


৩নং যুক্তি -

আল্লাহতে বিশ্বাসীগণ আমরা আল্লাহকে এভাবে পেয়েছি যে, যা কিছু আমাদের প্রয়োজন তা সবই তিনিই দেন। আর যা কিছু আমাদের মনের মৌলিক দাবী তা সবই তিনিই পূরণ করেন। এর ব্যতিক্রম আমরা পাইনি। আর লক্ষ্য করা গেছে যে, আল্লাহ সবই দেন বটে কিন্তু প্রয়োজনের পূর্বে দেন না। যেমন দুধের যখন প্রয়োজন ছিল তখন দুধ ঠিকই দিয়েছেন। দাঁতের প্রয়োজন ছিল না বলে দাঁত তখন দেননি। কিন্তু যখনই দাঁতের প্রয়োজন হয়েছে তখনই তিনি দাঁত দিয়েছেন।

দেখা যায় আল্লাহর সব কিছু দেয়ার ধারা মোতাবিক ভালো কাজের জন্য ভালো ফল এবং মন্দ কাজের জন্য মন্দ ফল মানব মনের এ দুটি প্রধান দাবী এখনও পূরণ করেননি। কিন্তু এ দাবী অবশ্যই পূরণ করবেন।

বলা বাহুল্য, মানব মনের সব চাইতে জোরালো এই দাবী দুটো পূরণের জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ স্থায়ী জীবনের। যে জীবনের শাস্তি ও পুরস্কার ভোগ করার মত উপযুক্ত সময় পাওয়া যাবে। অর্থাৎ হিরোশিমা ও নাগাসাকির উপর বোমা ফেলে যে লোকটি এক মুহূর্তের মধ্যে কত হাজার হাজার লোককে বোমা বিস্ফোরণ করে মেরে ফেললো তাকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হলে হাজার হাজার বার তাকে মারা দরকার। কিন্তু এই পৃথিবীর জীবনে যেখানে একটা মানুষকে মাত্র একবারই মেরে ফেলা যায়,সেখানে একাধিক ব্যক্তির হত্যাকারীকে উচিৎ শাস্তি দেওয়া সম্ভব নয়,তাই মানব মনের দাবী হচ্ছে এই যে,এমন একটা চিরস্থায়ী জীবন দিতে হবে সেখানে একাধিক ব্যক্তির হত্যাকারীকে একাধিক বার হত্যা করা যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে যাঁরা এ পৃথিবীর উন্নতির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন এবং মানুষের ভালো করতে গিয়ে চরম জুলুম নির্যাতন ভোগ করেছেন তাদের ব্যাপারে একচেটিয়াভাবে প্রত্যেকের মনের দাবী এই যে,তাদের উপযুক্ত পুরস্কার দেয়া হোক এবং সে পুরস্কার ভোগ করার মত একটা দীর্ঘ সময়ও তাকে দেয়া হোক। মানুষের এই যে মৌলিক দাবী এটা পূরণ করার জন্যই আল্লাহকে কিয়ামত দিতে হবে। আর তা যদি আল্লাহ না ই দেন তবে ন্যায় বিচারক হিসেবে গণ্য হতে পারেন না। (নাউযুবিল্লাহ)

এ আলোচনা থেকে বুঝা গেলো পরকাল হতে হবে মানুষের প্রয়োজনেই। কাজেই তা আল্লাহ দিতে ওয়াদা করেছেন যেন তিনি ন্যায় বিচার করে তা কার্যকর করতে পারেন।

যে ধরনের প্রেমিকা স্ত্রী হওয়ার যোগ্য




লাইফস্টাইল ডেস্ক :: অনেকেই প্রেম করছেন আবার অনেকেই প্রেমে পড়েছেন অথচ যখনই বিয়ের কথা ওঠে তখনই বেশ দ্বিধায় ভুগতে শুরু করেন আপনি। কারণ প্রেম করার সময় তো স্বল্প সময় একসাথে থাকছেন, কিন্তু বিয়ে তো অনেকদিনের ব্যাপার।

তাই বুঝতে পারছেন না আপনি সঠিক মানুষটির সাথেই প্রেম করছেন কিনা যে আপনার জীবনসঙ্গিনী হওয়ার যোগ্য। ভাবছেন কী ভাবে বুঝবেন যে আপনার প্রেমিকা আপনার স্ত্রী হওয়ার যোগ্য। জেনে নিন কিছু লক্ষণ যেগুলো মিলে গেলে বুঝতে পারবেন প্রেমিকাই যোগ্য স্ত্রী-

আপনাদের দুজনেরই যদি অভ্যাসে বেশ কিছু মিল থাকে এবং আপনার প্রেমিকা যদি আপনার শখ এবং অভ্যাসগুলোকে যথেষ্ট সম্মান করে তাহলে আপনি সঠিক মানুষটির সাথেই প্রেম করছেন।

আপনার প্রেমিকা কি প্রায়ই আপনার জন্য রান্না করে নিয়ে আসে? আপনার পছন্দের খাবারগুলো সে যদি পরম মমতায় শখ করে রেঁধে নিয়ে আসে তাহলে আপনি বুঝে নিন আপনি সঠিক মানুষটির সাথেই প্রেম করছেন। আপনার প্রেমিকা সত্যিই আপনার প্রতি দায়িত্বশীল এবং আপনাকে মন থেকেই ভালোবাসে।

আপনার প্রেমিকা যদি আপনার ব্যস্ততার সময় কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কাজের সময় অহেতুক বিরক্ত না করে কিংবা হস্তক্ষেপ না করে তাহলে বুঝে নিন আপনার প্রেমিকা একজন আদর্শ স্ত্রী হতে পারবেন।

আপনার প্রেমিকার মন খারাপ থাকলে তার প্রকৃত কারণটা কি তিনি মন খুলে বলেন? যদি না বলে থাকেন তাহলে তিনি চাপা স্বভাবের এবং এক্ষেত্রে সম্পর্ক সুখের হয় না। আর যদি আপনার প্রেমিকা আপনাকে মন খুলে তার সমস্যা ও মন খারাপের কারণ জানিয়ে দেয় তাহলে বুঝে নিন তিনি হতে পারবেন আপনার স্ত্রী হিসেবে যোগ্য।

আপনার প্রেমিকা কি ক্রমাগত আপনাকে বদলে দেয়ার চেষ্টা করছেন নাকি আপনাকে বদলানোর কোনো চেষ্টা আপনার প্রেমিকা করেন না? আপনার প্রেমিকা যদি আপনি যেমন সেটাই গ্রহণ করে নেন এবং অহেতুক আপনাকে বদলে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি না করেন তাহলে তিনি আপনার জীবনসঙ্গী হওয়ার যোগ্য।

আপনার প্রেমিকা যদি হাস্যোজ্জ্বল হয় এবং খুব একঘেয়ে মূহূর্তগুলোকেও রঙিন করে দেয়ার ক্ষমতা তার থাকে তাহলে তাকেই নিজের জীবন সঙ্গী করে নিন। কারণ এধরণের নারীর সাথে জীবনটাকে কখনই একঘেয়ে মনে হয় না।

আপনার প্রেমিকা যদি আপনাকে নিজস্ব কিছু একা সময় কাটাতে দেয় এবং তিনি নিজেও যদি আপনার উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল না হয়ে থাকে তাহলে তিনি আপনার স্ত্রী হওয়ার জন্য যোগ্য একজন নারী। কারণ সুখী মানুষ হতে হলে প্রতিটি মানুষেরই নিজস্ব কিছু সময় প্রয়োজন যা শুধুই নিজের মত করে কাটানো যায়।

আপনার সঙ্গিনী কি বিপদের সময় আপনাকে নানা রকম ইতিবাচক পরামর্শ ও সমাধান দিয়ে থাকে? যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আপনি একজন সৌভাগ্যবান পুরুষ যিনি পেয়েছেন একজন আদর্শ সঙ্গিনী।

ধূমপান ছাড়তে চাচ্ছেন, জেনে নিন কিছু কৌশল



লাইফস্টাইল ডেস্ক :: ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর৷ সবাই আমরা জানি৷ কিন্তু জেনেও জানি না, বুঝেও বুঝি না৷ মানে সব জায়গাতেই এই সাইনবোর্ডটা লাগানো থাকে৷ কিন্তু পড়ে আমরা বিজ্ঞের মতো ব্যাপারটা নিয়ে দু মিনিট ভেবে আবার নতুন উদ্যমে আর একটা সিগারেট ধরাতে থাকি৷আমি-আপনি বললেও এটা সত্যি, আর না বললেও ধ্রুব সত্যি৷ কারণ সিগারেট খাওয়ার ফলে ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, হার্টের রোগের মতো ভয়ংকর ব্যাধি আমাদের জীবনে থাবা বসাতে পারে জেনেও আমরা এর মায়া থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারি না৷ আর পারি না বলেই আমরা চেষ্টাও করি না৷ হোক বা না হোক, নিদেনপক্ষে চেষ্টাটা শুরু তো করা যেতে পারে-

১. আপনি হয়তো একদিনে ১২-১৫ টা সিগারেট খান৷ আর এমতাবস্থায় আপনাকে পুরোটা ছেড়ে দিতে বললে আপনার পক্ষে তা সম্ভব নয়৷ তাই চেষ্টা করুন আস্তে আস্তে সিগারেটের সংখ্যাটা কমিয়ে আনতে৷দিনে দশটা খেলে কমিয়ে আনুন সাতটায়, পনেরোটা খেলে আজ থেকেই এগারোটা খাওয়ার দৃঢ় সংকল্প নিন৷ তাহলে দেখবেন একদিন এমন আসবে, যে সারা দিনে আপনি হয়তো একটা সিগারেট খেয়ে দিব্যি রয়েছেন৷

২. পুরোপুরি যদি নিজেকে ধূমপান থেকে মুক্ত রাখতে চান , তাহলে নিকোটিনের স্বাদ আর গন্ধকে কাছে ঘেঁষতে দেবেন না৷তাই আপনার ঘরে ফার্নিচারের নীচে বা চারপাশে অল্প বেকিং সোডা ছড়িয়ে রাখতে পারেন৷ আশেপাশে কেউ সিগারেট খেলেও নাকে আর নিকোটিনের গন্ধ আসবে না৷

৩. সিগারেট ছাড়ার আর একটা ভালো বিকল্প চুইংগাম৷ মুখে চুইংগাম, ললিপাপ বা লজেন্স রাখুন৷ এতে সবসময় চিবোনোর একটা অনুভূতি থাকবে৷ সিগারেটের দিকে মন ছুক ছুক করবে না৷

৪. যদি ধূমপান ছাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েই থাকেন, তাহেল প্রথমেই সেইসব জায়গায় যাওয়া এক্কেবারে বন্ধ করে দিন যেখানে আপনি একসময় আয়েশ করে সুখটান দিতেন৷ বা প্রথম যেখানে লুকিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সিগারেটে টান দিয়েছিলেন তার দশহাতের মধ্যে পা রাখবেন না৷

৫. সিগারেট না খেয়ে মনটা অশান্ত হয়ে উঠছে? কুছ পরোয়া নেহি৷ পছন্দসই গান চালিয়ে মনটাকে অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন৷

৬. ঘরে রুম ফ্রেশনার বা অন্য সুগন্ধী রাখুন৷ আপনার সিগারেট ছাড়ার সহায়ক হবে৷

৭. সকালে ব্রেকফাস্টের পর, দুপুরে লাঞ্চের পর সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আস্তে আস্তে ছাড়ুন৷ চাইলে ওই সময়ে নিজেকে অন্য কোনও কাজে ব্যস্ত রাখুন৷আর যদি সিগারেটের ধোঁওয়া ছাড়া আপনি কফির কাপের দিকে হাত না বাড়ান, তাহলে সিগারেটের সঙ্গে সঙ্গে কফিটাও বাদ দিয়ে দিন জীবন থেকে৷ চায়ের পেয়ালাতেই আপাতত আপনাকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে৷

৮. অ্যাশ ট্রে, লাইটার, দেশলাই বাক্স, সিগারেটের প্যাকেট নিজের চৌহদ্দি থেকে আস্তে আস্তে সরিয়ে ফেলুন৷ এগুলো চোখের সামনে থাকলেই সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছেটাকে আপনি নিয়ন্ত্রণ না-ও করতে পারেন৷

৯. কাজের ফাঁকে ফাঁকে সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা দ্রুত বদলে ফেলুন৷ না হলে যে একদিন মারণরোগের প্রকোপে আপনার জীবনটাই পালটে যাবে৷ কাজের ফাঁকে ফল বা কোনো স্ন্যাকস খেতে পারেন৷ খেতে ইচ্ছে না করলে খানিকক্ষণ কম্পিউটার গেম খেলুন আর তাতেও যদি বসের চোখরাঙানি থাকে, তাহলে অগত্যা ফোনেই না হয় কথা বলে সময় কাটান৷ মন থেকে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছেটা আস্তে আস্তে চলে যাবে৷

ব্রনের দাগ দূর করার ৮ টি সহজ উপায়


ব্রন খুবই অস্বস্তিকর একটি সমস্যা। কম বেশি সবাই এ সমস্যায় ভোগেন। তবে মুখে ব্রন উঠে যতটা না অস্বস্তিতে ফেলে তার থেকে বেশি অস্বস্থি হয় যখন ব্রনের দাগ মুখে গেড়ে বসে। আর তখনই ভর করে দুশচিন্তার। যার কারনে ব্রনের প্রকপ আরও বেড়ে যায় এবং তার থেকে সৃষ্টি হয় দাগের। তাই ব্রন ও ব্রনের দাগের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য রয়েছে ব্রনের দাগ দূর করার সহজ ৮ টি উপায়। চলুন জেনে নেই ব্রনের দাগ দুর করার উপায়গুলি -

১. ব্রনের দাগ দূর করতে মধু একটি কার্যকারি উপাদান। রাতে ঘুমানোর আগে মুখ ভালো করে ধুয়ে মধু লাগান। সারারাত তা রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে তা ধুয়ে ফেলুন।

২. মধুর সাথে দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে শুধুমাত্র দাগের উপর লাগিয়ে ১ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। চাইলে সারারাতও রাখতে পারেন। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই আপনার মুখের দাগ দূর হয়ে গোছে।

৩. ২-৩ টি এস্পিরিন ট্যাবলেট এর সাথে ২ চামচ মধু ও ২-৩ ফোঁটা পানি মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এস্পিরিন এর স্যালিসাইলিক এসিড ব্রণের দাগ দূরের জন্য খুবই সহায়ক।

৪. ২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও সামান্য পানি একসাথে মিশিয়ে মুখে ২-৩ মিনিট ঘষুন এবং শুকানোর জন্য কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর মুখ ধুয়ে এর উপর কোনও ময়েশ্চারাইজার ক্রিম বা অলিভ অয়েল লাগান। সপ্তাহে অন্তত দু’দিন এটি ব্যাবহার করুন, ভালো ফল পাবেন।

৫. দিনে দুইবার অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগান এবং ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি শুধুমাত্র ব্রণের দাগই দূর করবে না, বরং আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং টানটান হবে।

৬. একটি লাল টমেটোর কিছু অংশ নিয়ে তার রস নিন। এরপর তা শশার রসের সাথে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগান। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ বার এই প্যাকটি লাগান। ব্রণের দাগ দূর তো হবেই সেই সাথে রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

৭. লেবু একটি প্রাকৃতিক ব্লিচ। লেবুর রসের সাথে সামান্য পানি মিশিয়ে একটি তুলার বলের সাহায্যে তা মুখে ৩-৪ মিনিট ঘষুন। যদি সেনসিটিভ স্কিন হয় তাহলে এর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে নিবেন। সম্ভব হলে ১ চামচ লেবুর রসের সাথে ২ চামচ ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।

৮. ১ টেবিল চামচ লেবুর রস, ১ টেবিল চামচ মধু, ১ টেবিল চামচ আমন্ড তেল, ২ টেবিল চামচ দুধ একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। একটানা ৭-১০ দিন এই ফেস প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্রণ থাকা অবস্থায় দুধ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।-সূত্র: উইমেন্স মেকওভার।

ছেলেদের কাছ থেকে যে ৫ টি জরুরী বিষয় শেখা উচিত মেয়েদের

কে বেশি স্বয়ংসম্পূর্ণ তা নিয়ে বিতর্কে জড়ালে ছেলে এবং মেয়ে উভয়য়েই নিজেদের দিকেই আঙুল দেখাবেন। মেয়েরা দাবি করবেন তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং অপরপক্ষে ছেলেরাও দাবি করবেন ছেলেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাই এই ধরণের তর্কে না যাওয়াই ভালো। কারণ আসল কথা হলো কেউই স্বয়ংসম্পূর্ণ নন। নারী-পুরুষ উভয়েই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। প্রত্যেকেরই অনেক কিছু শেখার রয়েছে অন্য মানুষটির কাছ থেকে।

এরই প্রেক্ষিতে, আজকে আপনাদের জন্য রয়েছে ছেলেদের এমন কিছু গুনের কথা যা মেয়েদের আয়ত্ত করা উচিৎ। অনেক মেয়ে ভাবতে পারেন, কী এমন গুন রয়েছে যা শিখতে হবে? কিন্তু মুখ বাঁকা করলে তো হবে না, আসলেই কিছু ব্যপারে ছেলেরা মেয়েদের চাইতে বেশি দক্ষতা রাখেন। এই দেখে আবার কোনো ছেলে নিজেদের সুপারহিরো ভেবে বসবেন না যেন! কারণ পরবর্তী ফিচারে আসবে মেয়েদের কাছ থেকে যে জিনিসগুলো শিখতে পারেন ছেলেরা।
ছেলেদের যুক্তিতর্কের ক্ষমতা

মেয়েরা এই কথা মানুক বা না মানুক, ছেলেরা কিন্তু যুক্তি দেখিয়ে তর্ক করতে বেশি পারদর্শী। তারা কোনো তর্কে জড়ালে অযৌক্তিক কোনো কথা বলা একেবারেই পছন্দ করেন না এবং বলেন না। তাদের কাছে নিজেদের কথার পেছনে যুক্তি দাঁড় করানোটাই থাকে মূল লক্ষ্য। কিন্তু মেয়েরা তর্কের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার যুক্তি মানেন না। মেয়েদের কাছে তর্কে জিতে যাওয়াটা থাকে মূল লক্ষ্য। সে কারণে তারা কী যুক্তি দিচ্ছেন তা নিজেরাই বুঝতে পারেন না ফলে যুক্তি হয়ে যায় অযৌক্তিক। তাই মেয়েদের ছেলেদের কাছ থেকে যৌক্তিক কথা বলার এই গুনটি শিখতে হবে।
অযথা আবেগী না হওয়া

কথায় বলে মেয়েরা মস্তিষ্ক দিয়ে নয় হৃদয় দিয়ে ভাবেন। আসলেই কথাটি সত্য। কিন্তু ছেলেরা মস্তিষ্ক দিয়েই ভাবেন। একারণে ছেলেরা খুব বেশি আবেগী হন না কোনো ব্যাপারে। এটি অবশ্যই একটি ভালো গুন। কারণ আবেগ মানুষকে শুধুমাত্র পেছনে টেনে নেয়। সফলতা আনতে চাইলে জীবনে আবেগের কোনো স্থান নেই। তাই মেয়েদের উচিৎ ছেলেদের মতো অযথা আবেগী না হওয়া। হয়তো দেখা গেল যেখানে কেউ অসুস্থ সেখানে ছেলেরা এগিয়ে এসে সাহায্য করলেন কিন্তু মেয়েরা কাঁদতে শুরু করে দিলেন। হ্যাঁ, মেয়েদের মন নরম হয় কিন্তু সব সময় তো আবেগী হয়ে পরা ঠিক নয়। মাথা খাটিয়ে কাজ করা উচিৎ।
অতিরিক্ত চিন্তা ভাবনা না করা

মেয়েরা অনেকবেশি অনুভূতিপ্রবণ হয়ে থাকেন। এবং অনেক ক্ষেত্রে অনেক বেশি মাত্রায় অনুভূতিপ্রবনতা দেখান। এবং বেশি বেশি চিন্তা করেন। দেখা যায় অনেক সামান্য ব্যাপারে অযথাই বেশি কিছু চিন্তা করে নিয়ে গণ্ডগোল পাকিয়ে বসে থাকেন অনেক মেয়ে। কেউ ফোন ধরছেন না, ভেবে বসবেন তাকে এড়িয়ে চলছেন অথবা কোনো মারাত্মক বিপদে পড়েছেন। কিন্তু হয়তো দেখা গেল আসলে যাকে ফোন করা হয়েছে তিনি ঘুমাচ্ছেন। এই ধরণের অতিরিক্ত চিন্তা করা ছেলেদের একেবারেই পছন্দ নয়। তারা হয়তো এতোটুকুই চিন্তা করবেন যে ‘সে হয়তো ব্যস্ত’। তাই মেয়েরা অযথা চিন্তা না করে কোনো ঘটনাকে সাধারণভাবে ভাবতে শিখুন।
স্বপ্নের দুনিয়ায় বসবাস না করা

ছেলেরা স্বপ্নের দুনিয়ায় বসবাস করতে একেবারেই পছন্দ করেন না। ছেলেদের মতে স্বপ্নের দুনিয়া বলতে কিছুই নেই। নিজের জীবনটাকে স্বপ্নের মতো সাজাতেই তারা ব্যস্ত থাকেন। মেয়েরা সব সময় স্বপ্নের দুনিয়ায় বসবাস করেন। তাদের কাছে বেশীরভাগ জিনিসই স্বপ্নময়। স্বপ্নের রাজপুত্র, স্বপ্নের ঘরবাড়ি সব। কিন্তু এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ হন মেয়েরাই। কারণ স্বপ্ন সব সময় পূরণ হয় না। তাই মেয়েদের বলছি, স্বপ্নের দুনিয়ায় বসবাস না করে ছেলদের মতো বাস্তব দুনিয়ায় থাকা শিখুন।
যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের মানিয়ে নেয়া

ছেলেরা নিজেকে যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারেন। এটি অনেক বড় একটি গুন। অনেকে বলতে পারেন মেয়েদের নিজেদের ঘর ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে মানিয়ে চলাটা কি এর মধ্যে পড়ে না। হ্যাঁ অবশ্যই পড়ে। কিন্তু এটি একটি বাধ্যগত মানিয়ে নেয়া। এটি করতেই হবে। কিন্তু কোথাও ঘুরতে বা বেড়াতে গেলে ‘এখানে থাকবো না, ঐখানে যাবো না, এটা করবো না, ঐটা সমস্যা’ এই ধরণের কথা সব সময় একটি মেয়ের মুখ থেকেই শোনা যায়। বাধ্য না হলে নিজেকে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত নন মেয়েরা। কিন্তু ছেলেরা এই কাজে পারদর্শী। মেয়েরা যদি নিজেকে যে কোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেয়ার এই দক্ষতাটি আগেই আয়ত্ত করতে পারেন তবে পরবর্তীতে শ্বশুরবাড়িতেও আশা করি মানিয়ে নিতে বেশি সমস্যা হবে না।

যে ৬টি কারণে খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত ভাত

যে ৬টি কারণে খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত ভাত


(প্রিয়.কম) অনেকেই এই ধারণা রাখেন যে ভাত খেলে শরীরে পানি জমে, বাতের ব্যথা বাড়ে, ওজন বাড়ে ইত্যাদি। ভাত আসলেই খাওয়া উচিত কি না সেটা নিয়েও রয়েছে নানারকম মতামত। অনেকে মনে করেন ভাত খেলে সহজে ঘুম পায়, মোটা হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। আবার অনেকে মনে করেন ভাত আর রুটির মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তবে বিতর্ক যাই থাকুক না কেন, ভাতের গুণ রয়েছে কিন্ত যথেষ্ট। ভাতের নানা গুণ সম্পর্কে এবং ভাত কীভাবে সঠিক ডায়েটে জায়গা করে নিতে পারে জেনে নিন।
১.লো-ক্যালরি ফুড

একটা ধারণা বেশ ভালোভাবেই প্রচলিত আছে যে, ভাত খেলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু অন্য আর সব খাবারের মতোই ভাত পরিমিত পরিমাণে খেলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা কম। ১০০ গ্রাম ভাতে রয়েছে প্রায় ১০০ ক্যালরি। ফ্যাটের পরিমাণও খুব কম, ভাত্র ০.৪ গ্রাম। আটার রুটির প্রায় সমান ক্যালরি। ময়দা, পরোটা বা তেলে ভাজা পুরির তুলনায় ভাত খাওয়া উপকারী। দিনে দু বার ভাত খেতেই পারেন, তবে আপনার উচ্চতা ও ওজন অনুযায়ী ভাতের পরিমাণ নির্দিষ্ট রাখুন।
২.ভিটামিনের আধার

ভাতে যথেষ্ট পরিমাণে নিয়াসিন, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, আয়রন, থিয়ামিন ও রাইবোফ্লাভিন রয়েছে।
৩.সহজে হজম হয়

কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার হওয়ায় ভাত সহজে হজম হয়। হজমপ্রক্রিয়ার জন্য ভাত খুব উপকারী। বিশেষ করে ডায়রিয়া হলে জাউভাত খুব ভালো কাজে দেয়।
৪.বাওয়েল মুভমেন্টের জন্য উপকারী

ভাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্টার্চ। স্টার্চ স্বাভাবিক বাওয়েল মুভমেন্টের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া নিঃসরণে সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে বা বদহজমের সমস্যা হলে ভাত খাওয়াটাই ভালো।
৫.হাইপারটেনশনে নিরাপদ

ভাতে কোলেস্টেরল ও সোডিয়াম নেই। হাইপারটেনশনের সমস্যা যাদের রয়েছে তারা ডায়েটে ভাত রাখার চেষ্টা করুন।
৬.গ্লুটেন মুক্ত

গম, বার্লি, ওটসে এক ধরনের বিশেষ প্রোটিন রয়েছে 'গ্লুটেন', যা অনেকেই হজম করতে পারে না। ভাতে গ্লুটেন না থাকায় যারা গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট মেনে চলেন তাদের জন্য ভাত উপযোগী। এ কারণেই পেটের সমস্যার সময় জাউভাত খেলে উপকার পাওয়া যায়।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া

তর্ক বিতর্কের প্রতিযোগিতা



স্কুল-কলেজে অনেক ছেলেমেয়েই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। শুধু তর্কের খাতিরে তর্ক না, অনেক জরুরি বিষয় নিয়ে সেখানে আলোচনা সমালোচনা হয়। একপক্ষ আরেকপক্ষকে তর্কে হারিয়ে জিতে যায় এই প্রতিযোগিতায়। এই বিতর্কের প্রতিযোগিতা এখন স্কুল-কলেজের সীমানা পেরিয়ে দেশের বাইরে যেয়ে পোঁছেছে।

কয়েকদিন আগেই জার্মানির বার্লিনে হয়ে গেল ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিজ ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপ। এটি ছিল বিশ্ব বিতর্ক প্রতিযোগিতার ৩৩তম আসর। এই বিতর্কে এবার ৮২ টি দেশের প্রায় ৪০০ টি দল অংশ নেয়। বাংলাদেশ থেকে অংশ নেয় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আকিব ফারহান হোসেন ও রাতিব মুর্তজা আলীর দল। বাংলাদেশের এই দুই বিতার্কিক ‘ইংলিশ এজ সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ ক্যাটাগরির মূল পর্বে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন এবং বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত এই বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন। তাঁদের এই সাফল্য শুধু তাঁদের না, পুরো দেশবাসীর।

তর্কবাগীশ হতে চাইলে-

কথায় আছে, যেই মুলোটা বাড়ে তা পত্তনেই বোঝা যায়। তাই ছোটবেলা থেকেই স্কুলপর্যায়ে যেসব বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় সেগুলোতে অংশগ্রহণ করতে হবে। বিতর্কে অংশগ্রহণের জন্য অনেক বিষয় সম্পর্কে প্রচুর পড়ালেখা করতে হয়। আর যেই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হবে তা সম্পর্কে ভালোভাবে না জানলে প্রতিপক্ষের সাথে সমান তালে তর্ক করা যাবে না। তাই ওই নির্দিস্ট বিষয়ে জ্ঞানের পরিধি আরও ব্যাপক হতে হয়।

আশেপাশে কোথায় কি ঘটছে প্রতিনিয়ত এই ব্যাপারে জানতে হলে অবশ্যই প্রতিদিন সবাদপত্র ও খবর দেখার অভ্যাস করতে হবে। এছাড়াও এখন বাজারে অনেক বই পাওয়া যায় সাধারণ জ্ঞানের। এগুলো পড়লে সহজেই জানা যাবে দেশ ও বিদেশে কখন কি হচ্ছে, কবে কোন আইন টি পাশ হয়েছে, কার সাথে কি চুক্তি হয়েছে ইত্যাদি বিষয়ে। যা একজন তার্কিকের বিতর্কের জন্য অবশ্যই জানা থাকা জরুরি।

এখন আসা যাক বিতর্ক প্রতিযোগিতার আপনি কিভাবে যুক্তি তর্ক খণ্ডাবেন, কোন কোন ব্যাপার মেনে চললে আপনার পারফরমেন্স ভালো হবে সেই বিষয়ে-

*মানুষ খুব বিপজ্জনক হয় যখন তারা সিরিয়াস ব্যাপারে আলোচনায় বসে। অবশ্যই আপনার বিপক্ষে যে থাকবে সে আপনার প্রতিটা কথা নোট করে পাল্টা জবাব খুঁজবে। আর বিচারকদের খুশি করা তো প্রায় দুঃসাধ্য ব্যাপার। তাই আপনাকে সাধারণ কিছু পদ্ধতি মাথায় রাখতে হবে।

*বিতর্কের শুরুতেই বিতর্কের বিষয়ে সংজ্ঞা দিতে হবে। তারপর কোন কোটেশন, কবিতার দুটি লাইন বা এমন কিছু উল্লেখ করুন যা আপনার বিতর্কের বিষয়ের সাথে যায়।

*গভীরভাবে শ্বাস নিয়ে, দর্শক ও বিচারকদের দিকে তাকিয়ে কনফিডেন্টলি আপনার বক্তব্য শুরু করুন। বক্তব্যের শুরুতে আমম...উউউ...এরকম করবেন না।

*বিতর্ক শুরুর ভূমিকাটা বেশি বড় করবেন না। সরাসরি যেই বিষয়ে বিতর্ক সেই পয়েন্টে চলে আসুন। যদি বিতর্কের বিষয় কোন সমস্যা সম্পর্কিত হয় যেমন- ‘বাংলাদেশের যানজট সমস্যা’ তাহলে এই সমস্যার কারণে কোন কোন দিকে সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং এই সমস্যা নিরসনের উপায় নিয়ে বলবেন।

*অবশ্যই উদাহরণ থাকতে হবে আপনার বক্তব্যের মধ্যে। যদি আপনি সমস্যার সমাধান বলতে যান তাহলে আপনাকে সমস্যা অনুযায়ী উদাহরণ, সমীক্ষা ও বিশেষজ্ঞের মত উল্লেখ করতে হবে।

*অপরপক্ষের তার্কিক কি বলেছে সেগুলো লাইন আপ করে রাখবেন বা লিখে রাখবেন এবং এর বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে বোঝাবেন উনার দেখার দিকটা বা সমাধানের উপায়*টা ভুল ছিল, আপনারটা নয়।

*এটা মনে রাখবেন যে যত গুরুগম্ভীর বিষয়ই হোক না কেন, আপনার উপস্থাপনার উপরই দর্শকদের দৃষ্টি থাকবে। তাই যুক্তিতর্কের সময় আপনার উপস্থাপনা ও বচনভঙ্গি যেন সাবলীল কিন্তু জোরালো হয়।

*সবসময় আইকন্টাক্ট মেনে চলবেন। বিশেষ করে বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলীর উপর চোখ রেখে কথা বলবেন। এছাড়াও উপস্থিত দর্শকদের দিকে তাকিয়েও কথা বলবেন। এতে করে আপনার বক্তব্যের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

*সবশেষে আপনার বক্তব্য শেষ করার সময় পুরো বিষয়বস্তুটি আবার সংক্ষিপ্ত আকারে বলুন, বিশেষ বিশেষ পয়েন্টগুলো তুলে ধরুন এবং সমস্যা সমাধানের উপায় বলুন। শেষ করার আগে সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে আপনার বক্তব্য শেষ করুন।

বিতর্কটাকে মজা নিয়ে উপভোগ করুন। কখনোই বেশি মানুষ দেখে নার্ভাস হয়ে যাবেন না বা স্ট্রেস নেবেন না। আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীকে শত্রু ভাবার কোন কারণ নেই। স্টেজের বাইরে এরাই হতে পারে ভালো বন্ধু। নতুন মানুষের সাথে মিশতে পারছেন, নতুন নুতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারছেন, আপনার অভিজ্ঞতা বাড়ছে এসব ভেবে বিতর্ককে ইতিবাচক ও শিক্ষণীয় ভাবুন।

ধর্ম ও মানবসভ্যতা



বিতর্ক কেন করি? এই প্রশ্নের জবাবে মোটামুটি সব বিতার্কিক একটি কথাই বলবেন- আমরা যুক্তি দিয়ে সত্যকে বিচার করতে চাই। আমরা কুসংস্কার ও অজ্ঞতার ঊর্ধ্বে প্রগতিশীল মানুষ হিসেবে নিজেদের দাবি করি। আর তাই যৌক্তিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে সত্যকে বিভিন্ন আঙ্গিকে দেখার প্রয়াস করি। অথচ সভ্যতার শুরু থেকে আজ অবধি সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয় ধর্ম নিয়ে সদা তর্কে লিপ্ত হলেও দেশের বিতর্কের মঞ্চে বিতর্ক করতে খুব বেশি দেখা যায়না। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগবে বলে কিংবা হয়তো ধর্মীয় ইতিহাস সম্পর্কে খুব বেশি জ্ঞান না থাকার কারনে আয়োজক ও বিতার্কিক উভয়েই বিতর্কে ধর্মের প্রসঙ্গ সচেতনভাবে এড়িয়ে চলেন। যদিও বা কখনও ধর্ম নিয়ে বিতর্কের বিষয় নির্ধারন করা হয়, তখন সংজ্ঞায়নের বেড়াজালে ফেলে ধর্মের নেতিবাচকতা নিয়ে কথা না বলার সুকৌশল অবলম্বন করা হয়। অবস্থা দেখে মনে হয়, ধর্ম নিয়ে বিতর্ক করলে যেন জাত চলে যাবে। তবে এটাও ঠিক যে, ধর্ম সম্পর্কে খুব অল্প জ্ঞান নিয়ে বিতর্ক করার চেয়ে এড়িয়ে চলা উত্তম। মানব সভ্যতা ও ধর্মীয় ইতিহাস নিয়ে আমার সীমিত পড়াশুনার ফলে অর্জিত কিছু তথ্য জানানোর জন্যে এই উদ্যোগ, যেন নতুন বিতার্কিকরা ভবিষ্যতে ধর্ম নিয়ে বিতর্ক করতে তথ্যাভাবে অস্বস্তিবোধ না করেন, ধর্মকে ছোট করার জন্যে কিংবা নাস্তিকতাবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে নয়।

ছোটবেলায় সমাজবিজ্ঞান বইয়ের সুবাদে আমরা সবাই জানি যে, আজ থেকে প্রায় ১৪০০০ বছর আগে “মনু” বা “মনা”- অর্থাৎ অতিপ্রাকৃত শক্তির ধারনা থেকে মুলত ধর্মের উদ্ভব। যদিও আব্রাহামীয়(Abraham/ইব্রাহীম(আঃ)এর উত্তরসূরি) ধর্মত্রয়(ইহুদীবাদ, খ্রিস্টবাদ ও ইসলাম) মতে প্রায় ৬৫০০ বছর আগ থেকে ধর্ম ও মানুষের উদ্ভব(আদমকে প্রথম মানুষ মনে করে), তবে বিভিন্ন সভ্যতায় মানুষের উদ্ভব সম্পর্কে ভিন্নমত লক্ষ্যনীয়-যেমন, গ্রীক ও রোমান সভ্যতায় ২৫৮৬৮ খ্রিস্টপূর্বে, মিশরীয় সভ্যতায় ২৮০০০ খ্রিস্টপূর্বে (দেবতাদের ১১৯৮৪ বছর, উপদেবতাদের ২৬৪৬ বছর ও মানুষের ১৭৬৮০ বছর), সুমেরীয় ও ব্যবীলননীয় সভ্যতায় ৪০০০০০ খ্রিস্টপূর্বে, চীনা সভ্যতায় ৩৬০০০ খ্রিস্টপূর্বে মানব সৃষ্টির ধারনা পাওয়া যায়। এছাড়া আধুনিক বিজ্ঞান আদিম মানুষের ফসিল দিয়ে প্রায় দেড় লাখ বছর পূর্বে মানুষের অস্তিত্ব প্রমান করেছে। তবে ঐতিহাসিকরা অন্তত এই বিষয়ে একমত যে, সভ্যতার শুরুর দিকের দেবীপ্রধান বহুঈশ্বরবাদের ধারনা ছিল মূলত মানুষের দুর্বলতা ও অজানার প্রতি ভয় থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ও মাতা প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। রাহুল সংকৃত্যায়নের “ভোলগা থেকে গঙ্গা” থেকে আমরা দেখতে পাই যে, আদিম যাযাবর জাতিগোষ্ঠীর শ্রেষ্ঠ যোদ্ধাকে বলা হত “মনা”-যার ঈশ্বর প্রদত্ত শক্তি ছিল বলে মনে করা হত। যদিও তৎকালীন সমাজব্যবস্থা মাতৃপ্রধান ছিল কিন্তু ক্রমান্বয়ে এই যোদ্ধারা যেহেতু সমাজের নিরাপত্তা তাদের হাতে ছিল, যাযাবর সমাজের নিয়ন্ত্রন নিজেদের কাছে নিয়ে নেয়। ধারনা করা হয়, কালের পরিক্রমায় এভাবেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের আবির্ভাব ঘটে। আর প্যাগান দেবীদের হটিয়ে দেবতারা রাজত্ব শুরু করেন। সুমেরীয় সভ্যতার ইনানা, ব্যবীলনীয় সভ্যতার ইশথার, কানান(বর্তমান ইসরায়েল) সভ্যতার আনাত, মিশরীয় সভ্যতার আইসিস কিংবা গ্রীক সভ্যতার এপ্রোদিত দেবীদের তুলনায় এল, আমুন, রা, ক্যাওস, তিয়ামাত, আপসু, এপোলো, প্রমিথিউস, জিউস, পোসাইডন ও হেইডিসরা মানুষের কাছে অধিক পূজনীয় হয়ে উঠেন। আর পৃথিবীতে তাদের প্রতিনিধিত্ব করেন রাজা বা ভূপতিরা। অনেক ইতিহাস বিশারদ মনে করেন যে, শাসন কার্যের সুবিধার জন্য এবং শাসিত শ্রেণীকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রাচীন সমাজের অধিপতিরা ধর্মকে ব্যবহার করেছেন। মিশরীয় সভ্যতার ফেরাউনরা যার উৎকৃষ্ট প্রমান। যারা জাদুর দেবী আইসিস এর উত্তরসূরি হিসেবে নিজেদের প্রচার করত। যদিও তারা আমুন ও রা এর মত পুরুষ দেবতাদের উপসনা করত। একই ভাবে ভারতীয় উপমহাদেশেও আমরা ধর্মের পুরুষতান্ত্রিকতার প্রভাব দেখতে পাই। সনাতন ধর্মের প্রথম দিকে দেবীদের উপসনা করা হত এবং সমাজে কোন শ্রেনীভেদ ছিলনা। কিন্তু এর পরিবর্তন ঘটে যখন খ্রিষ্টপূর্ব ১৭০০ শতকের দিকে আর্য্যরা ইরান থেকে ইন্দো উপত্যকায় নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করে এবং তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস চাপিয়ে দেয়, যা ঋগবেদে উল্লেখ আছে। রাহুল সংকৃত্যায়নের মতে, আর্য্যরাই প্রথম শ্রেণীপ্রথা(ব্রাক্ষ্মন, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র) চালু করে এবং মানুষকে ত্যাগে উদ্ভুদ্ব করতে পুনর্জন্মের ধারনার প্রচার ঘটায়। আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, বাংলাদেশ ও কলকাতায় যেভাবে দূর্গা, লক্ষী, স্বরস্বতী, কালী দেবীদের পূজা হয়, ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে ঠিক তার বিপরীতভাবে গণেষ, হনুমান, শিব, কার্তিক দেবতাদের পূজা হয়। নৃবিজ্ঞানীদের মতে, বাংলাদেশ ও কলকাতার এই অঞ্চলে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার ব্যবস্থার ফলে মূলত এই পার্থক্য। যেমনটা আজও গারো উপজাতিদের মধ্যে বিদ্যমান। তবে ধর্মে পুরুষতান্ত্রিকতা আরও ব্যাপকতা লাভ করে একেশ্বরবাদ তথা আব্রাহামীয় ধর্মের বিকাশের পরে। বিশেষ করে ১৪৮০ থেকে ১৭৫০ সাল পর্যন্ত ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় ডাইনী শিকার(Witch Hunt) এর নামে যখন ৪০০০০ থেকে ৬০০০০ নারীকে চার্চের নির্দেষে হত্যা করা, তখন ধর্মে পুরুষদের নিয়ন্ত্রনের যুক্তি আরো জোরালো হয়।

ঐতিহাসিকদের মতে সর্বপ্রথম ব্যাপকভাবে গৃহীত একেশ্বরবাদ প্রচার করেন তেরাহ(Terah/আযার) এর পুত্র আব্রাহাম (Abraham/ইব্রাহীম(আঃ))। বাইবেলের জেনেসিস মতে, ১৮৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি ও তার জাতি মেসোপটেমিয়ার হারান(পশ্চিম তুরস্ক) থেকে ভূমধ্যসাগরীয় কানান অঞ্চলে আসেন এবং ‘ইয়াহওয়েহ’ বা ‘এলহিম’ এর ধর্ম প্রচার করেন। আব্রাহাম ফেরাউনদের হাত থেকে রক্ষার জন্য তার সৎবোন সারাহকে বিয়ে করেন এবং তার ১০০ বছর বয়সে আইজ্যাক (Isaac/ইসহাক(আঃ))জন্মলাভ করেন। আমরা কোরবানীর ইতিহাসে ইব্রাহীম (আঃ) এর তার প্রিয় পুত্র ইসহাক(আঃ) এর ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গের ঘটনা সম্পর্কে অবহিত আছি। আইজ্যাক পরবর্তীতে কানানের (বর্তমান ইসরায়েল) পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন করেন। তার পুত্র জ্যাকব(Jacob/ইয়াকুব), যিনি ইতিহাসে ইসরাঈল নামে পরিচিত এবং তার ১২ পুত্রের সম্মিলিত জাতিগোষ্ঠীকে ‘বনী ইসরাঈল’ জাতি বলা হয়। ইসরাঈলীরা নিজেদের শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে মনে করত এবং তাদের ঈশ্বর ‘ইয়াহওয়েহ’ কে সকল দেবতার ঊর্ধ্বে স্থাপন করত। আর ‘ইয়াহওয়েহ’ এর ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে তারা মিশরে প্লেগের বিস্তার ও নীলনদের মহাস্রোতে ফেরাউন ও তাদের দেবতাদের পতনকে চিহ্নিত করে। তবে মিশর থেকে ফেরাউনদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে(কিংবা শাস্তি দিয়ে) যখন জ্যাকবের উত্তরসূরি মূসা(আঃ)(Moses) ও তার দল ইসরায়েলে আসেন, তখন থেকে সমগ্র ইসরায়েল এক ঈশ্বর ও ধর্মীয় চেতনায় আবদ্ধ হয়। আর তার নাম হয় “ইহুদীবাদ”। তবে ইহুদী শব্দের উত্থান মূলত জ়্যাকবের ৪র্থ পুত্র ইয়াহুদ(Judah/Yudah/Yahudh) থেকে। পরবর্তীতে ইয়াহুদ, লেভি, বেঞ্জামিন ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠিকে সম্মিলিতভাবে ইহুদী বলা হত। ইহুদীদের বিশ্বাস ছিল তারাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম জাতি এবং ‘ইয়াহওয়েহ’ তাদের পবিত্র পূণ্যভূমি ইসরায়েল এর রক্ষাকর্তা। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩২ এর দিকে জেরুজালেমকে কেন্দ্র করে একটি স্বতন্ত্র জাতি গড়ে ওঠে। কিন্তু খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকের দিকে বিস্তৃত রোমান সাম্রাজ্যের কাছে ৬ খ্রিস্টাব্দে পরাজিত হয়ে ইসরায়েলীরা জেরুজালেমের কর্তৃত্ব হারায়। আর রোমান সম্রাট আদ্রিয়ান(Hadrian) ১৩৫ খ্রিষ্টাব্দে রাজধানী জেরুজালেমের নাম পরিবর্তন করে রাখেন এলিয়ে ক্যাপিতলিনা(Aelia Capitolina) এবং জুডিয়া(Judea) অঙ্গরাজ্যের নাম পরিবর্তন করে রাখেন সিরিয়া প্যালেস্তাইন(Syaria Palestine)। পরবর্তীতে ৩২৫ খ্রিস্টাব্দে কনস্টান্টিন-I পুনরায় জেরুজালেম নামকরন করেন।

বনী ইসরাঈল জাতিতে পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ নবী আসেন ডেভিড(David/দাঊদ(আঃ))ও সুলেমান(Solomon/সুলায়মান(আঃ)) এর উত্তরসূরি কুমারী মাতা ম্যারী এর পুত্র যীশু(Jesus/ঈসা(আঃ)-খ্রিস্টপূর্ব ৭-২ সন থেকে ৩০-৩৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত)। ইসলাম ও খ্রিস্টধর্ম উভয়েই মনে করেন ঈশ্বরের অতিপ্রাকৃত শক্তির কৃপায় কুমারী ম্যারীর গর্ভে যীশুর আবির্ভাব। তবে অনেক ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট এবং ঐতিহাসিক মনে করেন যে, মিশরীয় জাদুর দেবী কুমারী আইসিস ও তার পুত্র হোরাসের জনপ্রিয় কাহিনী থেকেই ম্যারী ও যীশুর কাহিনীকে ধারন করা হয়েছে। যীশু জেরুজালেমে তার মতবাদ প্রচার করতে থাকেন, কিন্তু ইহুদীরা তাকে অধর্ম প্রচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং রোমান গভর্নর পন্থিয়াস পিলাত (Pontius Pilate) তাকে ক্রুসে বিদ্ধ করার নির্দেষ দেন। যীশুর মৃত্যর পর(কিংবা পুনরুত্থানের পর) তার অনুসারীরা তার মতাদর্শের প্রচার শুরু করেন এবং যা শুরুর দিকে একেশ্বরবাদের ধারনা হিসেবে প্রচারিত হলেও পরবর্তীতে ত্রয়ীবাদ(Trinity-Father, Son & Holly Spirit) হিসেবে ৩২৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে রোমান চার্চ প্রচার শুরু করে। যদিও ত্রয়ীবাদ নিয়ে রোমান ক্যাথলিক, অর্থোডক্স ও প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যে বিরোধ বিদ্যমান, তবে সবাই এ বিষয়ে একমত যে, চার্চের কর্তৃত্ব(পোপ, বিশপ, ক্লার্জি) থাকবে পুরুষদের হাতে। মূলত চার্চের হাতেই ধর্মে পুরুষতান্ত্রিকতা ব্যাপকতা লাভ করে বলে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, যা পরবর্তীতে ইসলাম ধর্মেও লক্ষ্যনীয়।

বনী ইসরাঈল জাতির শেষ নবী হলেন আব্রাহামের ত্যায্যপুত্র(ইহুদী ও খ্রিস্টধর্মমতে) ইসমাঈল এর বংশধর মুহম্মদ(সাঃ)-জন্মসূত্রে প্যাগান, (৫৭০ খ্রিস্টাব্দ-৬৩২ খ্রিস্টাব্দ) । তিনিও অন্যান্য প্রধান নবীদের মত ৪০ বছর বয়সে(!) নবুয়্যত প্রাপ্ত হন এবং ইসলাম ধর্মের প্রচার শুরু করেন। যদিও প্রথমে অন্যান্য আব্রাহামীয় ধর্মের মত ৬২০ খ্রিস্টাব্দ থেকে জেরুজালেমকে পবিত্র ভূমি হিসেবে মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্র(ক্বিবলা) হিসেবে গণ্য করা হত, পরবর্তীতে ৬২০ খ্রিস্টাব্দে মুহম্মদের মিরাজের পরে তা মক্কার ক্বাবাতে পরিবর্তিত হয়। তবে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে, বনী ইসরাঈল জাতিকে ধর্মান্তরিত করতে ব্যর্থ হয়ে এবং ইব্রাহীম ও তার পুত্র ইসমাঈল এর ক্বাবা শরীফ পুনঃনির্মানের কাহিনীতে উদ্ভুদ্ব হয়ে পরবর্তীতে মক্কাকে মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্র নির্ধারন করা হয়। যদিও জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ মুসলিম বিশ্বের প্রধান ৩টি মসজিদের অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয়। মূলত খ্রিস্টধর্ম ও ইসলামের আবির্ভাব বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় সংঘাতকে প্রভাবিত করে। কেননা এতদিন ধরে চলে আসা সনাতন ও ইহুদী ধর্মের অনুসারীরা যথাক্রমে আর্য ও বনী ইসরাঈল জাতি হিসেবে নিজেদের শ্রেষ্ঠতম জাতি মনে করত এবং এজন্যেই অন্য ধর্ম থেকে এই দুটি ধর্মে অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ। কিন্তু খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম উভয় ধর্মই ধর্মান্তরকে প্রাধান্য দেয় এবং এই দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয় যে, তাদের ধর্মই সমগ্র মানব জাতির জন্য। মূলত খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্মের এই দ্বান্দ্বিক অবস্থাই বিশ্বব্যাপী আন্তঃধর্মীয় সংঘাতের জন্ম দেয়, যা আজও বিদ্যমান।

খ্রিস্ট ধর্মের ব্যাপক বিস্তৃতির ফলে রোমান সম্রাট কনস্টান্টিন-I প্যাগান থেকে খ্রিস্টান হন এবং পুরো রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্ট ধর্মকে বৈধতা প্রদান করেন। ৩২৫ খ্রিস্টাব্দে ইহুদীদের জেরুজালেমে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়, শুধুমাত্র বছরে একবার প্রার্থনার কারন ছাড়া। ৩২৬ থেকে ৬২৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চার্চ ধর্ম প্রচারের নামে সকল প্যাগান দেব-দেবীর মূর্তি ভেঙ্গে ফেলে এবং খ্রিস্ট ধর্মের ব্যাপক প্রচার চালায়। ৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে খলিফা ওমর ইয়ারমুকের যুদ্ধে বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের পতন ঘটান এবং জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রন নেন। মুহম্মদ ইবনে জারীর আল তারাবী’র মতে, খলিফা ওমর ও পাট্রিয়ার্ক সাফ্রোনিয়াস ঐকমত্যে পৌছান যে, জেরুজালেমে খ্রিস্টানরা স্বাধীনভাবে থাকতে পারবে কিন্তু ইহুদীদের নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। ইহুদীদের প্রার্থনার জায়গা Temple Mount এর পবিত্র পাথর (Dome of Rock) কে মসজিদ-উল-মুকাদ্দাস এ রুপান্তর করা হয়, কেননা মুসলমানরা মনে করেন যে, এখান থেকেই মুহম্মদ মিরাজ যাত্রা আরম্ভ করেন। ৬৩৬ থেকে ৯৬৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জেরুজালেম, মিশর, সিরিয়া ও তুরস্কে রাশেদীন, উমায়্যাদ ও আব্বাসীদ খিলাফত বহাল থাকে। ৯৬৯ থেকে ১০৯৮ পর্যন্ত ছিল ফাতিমিদ খিলাফতের সময়কাল। এই সময়ের মধ্যে ইসলামী সাম্রাজ্য ব্যাপক বিস্তার লাভ করে, কিন্তু একই সাথে চার্চের সাথেও বিরোধ বাড়তে থাকে।

ইসলাম ও খ্রিস্টধর্মের সবচেয়ে বড় বিরোধ বাধে জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রন নিয়ে, আর ইতিহাসে যাকে ‘ক্রুসেড’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। ১০৯৫ সনে পোপ আরবান-II বাইযেন্টাইন সম্রাট আলেক্সিস কোমনেনস এর আবেদনে সাড়া দিয়ে পবিত্র ভূমি জেরুজালেমকে মুসলিম সাম্রাজ্যের হাত থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য ‘প্রথম ক্রুসেড’এর ডাক দেন। ‘Just War’ তত্ব মূলত ক্রুসেডকে গ্রহনযোগ্যতা দেয়ার জন্য তিনিই প্রথম ব্যবহার করেন। ১২০০০০ ফ্র্যাঙ্ক(ফ্রেঞ্চভাষী পশ্চিমা খ্রিস্টান) ক্রুসেডে অংশ নেয় এবং ১০৯৯ সনে চার্চ জেরুজালেমের দখল নেয়। তারা মসজিদ-উল-মুকাদ্দাসকে চার্চে রুপান্তর করে। ১০৯৯ থেকে ১১৩৭ পর্যন্ত জেরুজালেম চার্চের অধীনে থাকে। তারা জেরুজালেম, এডেসা, এন্টিওক ও ত্রিপলী এই ৪ ভাগে ক্রুসেড রাজ্যকে ভাগ করে। যদিও তারা লেবাননের নিয়ন্ত্রন নেয়ারও চেষ্টা করে, কিন্তু দামেস্কের শাসক জহির আলদীন আতাবেকের কাছে পরাজিত হয়। ১১৩৭ সালে ইমাদ আদ্দীন জেঙ্গী এডেসা দখল করে। আর পুনরায় চার্চের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠার জন্য ১১৪৭-১১৪৯ পর্যন্ত ‘দ্বিতীয় ক্রুসেড’ পরিচালিত হয়। ফরাসী রাজা লুইস-VII ও পশ্চিম জার্মানীর রাজা কনরাড-III ১১৪৭ এ এডেসার উদ্দেশ্যে তার সেনাবাহিনী নিয়ে যাত্রা শুরু করেন, কিন্তু জেঙ্গীর কাছে পরাজিত হয়। তবে এডেসায় ব্যর্থ তারা পর্তুগালের রাজা আফনসো-I এর সাথে যৌথভাবে আক্রমন করে মুসলিমদের কাছ থেকে লিসবন দখল করে নেয়। তবে ক্রমান্বয়ে মুসলিম সাম্রাজ্য শক্তিশালী হতে থাকে এবং ১১৮৭ সনে হাত্তিন(Battle of the Horns of Hattin) এর যুদ্ধে সালাউদ্দীন ইউসুফ ইবনে আইউব চার্চের কাছ থেকে পুনরায় জেরুজালেমের দখল নেয়। তিনি ইহুদী ও অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের সাথে সমঝোতায় আসেন এবং মসজিদ-উল-মুকাদ্দাস পুনরাস্থাপন করেন। ১১৯২ সনে ‘সিংহহৃদয়’ রিচার্ড এর নেতৃত্বে ‘তৃতীয় ক্রুসেড’ পরিচালিত হয়, কিন্তু তারা জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। তবে রিচার্ড ও সালাউদ্দিন রামলা চুক্তির মাধ্যমে পশ্চিমা খ্রিস্টানদের জেরুজালেমে স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চার সুযোগ দেন। কিন্তু চার্চ থেমে থাকেনি। ১২৭২ সাল পর্যন্ত পবিত্র ভূমি পুনরুদ্ধারের নামে সর্বমোট ৯টি ক্রুসেড সংঘঠিত হয়। আর ধর্মের নামে লক্ষাধিক মুসলমান ও ইহুদী হত্যা করা হয়। তবে প্রায় সবকটি ক্রুসেডে পরাজিত হয় চার্চ। পরবর্তীতে ১৩০০ সালে মোঙ্গলীয়রা আর ১৩৮২ সালে মামলূক সাম্রাজ্য জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রন নেয়। তবে পূণ্যভূমির নিয়ন্ত্রনের যুদ্ধ এখানেই শেষ নয়। ১৫১৬ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের(Turkish Empire) সুলতান সেলিম, আলেপ্পো ও গাজা’র যুদ্ধে জেরুজালেমে মামলূক সাম্রাজ্যের পতন ঘটান। ১৭৯৯ সালে নেপলিয়ন বেনাপোর্ড মিশর ও সিরিয়ার মাধ্যমে জেরুজালেম দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে(১৯১৭ সালে), বৃটিশ সেনাবাহিনীর কাছে অটোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। আর ১৯২৪ সাল থেকে শুরু হয় জিওনিস্ট বিদ্রোহ(Zionist Revolution), যা ছিল মূলত ইসরায়েল রাষ্ট্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংঘবদ্ধ ইহুদী আন্দোলন। তবে ১৯৩৩ সালে যখন হিটলারের নাৎসী বাহিনী ক্ষমতায় আসেন, ইহুদীদের নিশ্চিহ্ন করতে ১৯৪৫ পর্যন্ত চলে নৃসংশতম হত্যাকান্ড যা ইতিহাসে ‘হলোকাস্ট’ নামে পরিচিত। এই হত্যাকান্ডে প্রায় ১৭ মিলিয়ন ইহুদীকে হত্যা করা হয়। ইহুদীদের হত্যার পিছনে অনেক ঐতিহাসিক হিটলারের ধর্মীয় অহংবোধকে দায়ী করেন। ধারনা করা করা, ইসরাঈলীদের মত হিটলারও ইন্দো-আর্য জাতিকে(যার একটি ধারা পশ্চিম জার্মানীরা) শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে বিশ্বাস করতেন এবং যার কারনে নাৎসী বাহিনীর প্রতীক ‘সোয়াস্ত্রিকা’-হিন্দুদের(আর্যদের) থেকে অনুপ্রানিত। এছাড়া ইহুদীদের প্রতি রোমান ক্যাথলিক চার্চের বিদ্বেষ্পূর্ণ মনোভাবও তাকে প্রভাবিত করেছে বলে অনেকে মনে করেন। নিজ ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানের জন্য হিটলার হয়তো ইহুদীদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে ফেলতেন যদি না দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্র বাহিনীর কাছে তার পরাজয় না ঘটত। আর দীর্ঘদিনের জিওনিস্ট বিদ্রোহের পর জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে ১৯৪৭ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন ইসরায়েল রাষ্ট্রের পুনর্জন্ম মূলত বনী ইসরাঈল জাতিকে তাদের পূর্বপুরুষদের প্রতিশ্রুত পবিত্র ভূমিতে ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে অনেকে এও মনে করেন যে, ইসরায়েল কখনই শুধুমাত্র বনী ইসরাঈল জাতির ছিলনা। জেরুজালেমে ঐতিহাসিকভাবে ইহুদী, খ্রিস্টান ও পরবর্তীতে মুসলমান, সবারই সহাবস্থান লক্ষ্যনীয়। তাই ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম অনেকেই জাতিসংঘের পক্ষপাতিত্ব বলে মনে করেন। কিংবা অনেকে মনে করেন যে, আপাত দৃষ্টিতে এটি ধর্ম যুদ্ধের অবসান ঘটালেও এটি ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিম সাম্রাজ্যের উপর নিয়ন্ত্রনের জন্য পশ্চিমা শক্তির এক ষড়যন্ত্র। আর এই বর্তমান সময়ে অনেকেই উক্ত ধারনার সত্যতা দেখতে পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দুটি জিনিসের সমাপ্তি ঘটে-১.ধর্মীয় যুদ্ধ ও ২.সাম্রাজ্যবাদের বিস্তার। তবে এরপরেও যে, ধর্ম নিয়ে সংঘাত হয়নি তা নয়। আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব, ইরাকের শিয়া-সুন্নী সংঘাত, রুয়ান্ডার হুতো-তুতসী সংঘাত, গুজরাটের হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, চেচনীয়া-বসনিয়া সংঘাত, তিব্বত-চীন দ্বন্দ্ব কিংবা অতি সাম্প্রতিক মায়ানমারের রোহিঙ্গা-বৌদ্ধ দাঙ্গা ইত্যাদি বিভিন্ন সংঘাত আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয় ধর্মের নামে এখন পর্যন্ত কত নির্দোষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আর খুব দ্রুতই যে, এর থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে-সে ব্যাপারেও অনেকে সন্দিহান। তাদেরই একজন সমাজবিজ্ঞানী স্যামুয়েল পি. হান্টিংটন।

স্নায়ু যুদ্ধের শেষে অনেকের মত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা মনে করেন যে, বিশ্ব ইতিহাসের ক্রান্তিলগ্নে পৌছেচে। তিনি ১৯৯২ সালে তার ‘The End of History and the Last Man’ বইয়ে জার্মান দার্শনিক হেগেলের তত্ত্ব দিয়ে সভ্যতার সংঘাতের সম্ভাবনাকে নাকোচ করে দেন। তবে হান্টিংটন ফুকুয়ামার সাথে একমত হতে পারননি। ১৯৯৩ সালে তিনি ‘সভ্যতার সংঘাত’ (Clash of the Civilization) তত্ত্ব প্রকাশ করেন। হান্টিংটন মনে করেন যে, অধিবিদ্যার(Ideology) যুগের সমাপ্তি ঘটলেও সভ্যতার সংঘাতের সমাপ্তি ঘটেনি। তিনি মনে করেন যে, আগামীর বিশ্ব মূলত সংস্কৃতি ও ধর্মীয় সংঘাতে লিপ্ত হবে। আর এই সংঘাত সংগঠিত হবে মূলত পশ্চিম ও মুসলিম সভ্যতার মধ্যে। রাশিয়া, জাপান ও ভারতকে তিনি Swing Civilization নাম দেন, কেননা তারা যেকোন পক্ষকে সমর্থন করতে পারে। উদাহরনস্বরূপ, রাশিয়া তার দক্ষিণ সীমান্তের মুসলিমদের(চেচনিয়া) সাথে সংঘাতে জড়ালেও অপরদিকে ইরানের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করছে ভবিষ্যত মুসলিম-অর্থোডক্স সংঘাত এড়াতে এবং তেলের প্রবাহ নিশ্চিত করতে। এছাড়া মুসলিম-চীন সম্পর্ক, বিশেষ করে ইরান, পাকিস্তান, সিরিয়ার মত দেশের সাথে চীনের সম্পর্ক এক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। হান্টিংটন মনে করেন যে, ঐতিহাসিকভাবে চলে আসা খ্রিস্টান-মুসলিম দ্বন্দ্ব এবং বিশ্বব্যাপী পশ্চিমা সংস্কৃতির ব্যাপক বিস্তার ও পশ্চিমা সমাজে মুসলিমদের উপর নেতিবাচক আচরন অনেক ক্ষেত্রে মৌলবাদের উত্থান ঘটাতে পারে এবং রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের দিকে ধাবিত করতে পারে। তিনি সভ্যতার দ্বন্দ্বের ৬টি মৌলিক কারন আলোচনা করেন। যেগুলো হলঃ-

১. শতবছর ধরে ইতিহাস, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, প্রথা ও ধর্মের কারনে সৃষ্ট যে সভ্যতার ভেদাভেদ, তা খুব দ্রুত অবসান হবেনা।
২. ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসা পৃথিবীতে সাংস্কৃতিক মিথষ্ক্রিয়ার ফলে প্রতিটি সভ্যতা তার স্বকীয়তা নিয়ে অধিক সচেতন হবে।
৩. অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক পরিবর্তনের ফলে যখন মানুষ তার নিজস্বতা হারিয়ে বিশ্বমানব হয়ে উঠছে তখন ধর্ম মানুষকে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় ও জাতিস্বত্ত্বার পরিচয় দিয়েছে।
৪. একদিকে পশ্চিমা সভ্যতা যেখানে ক্ষমতার শীর্ষে, অন্যদিকে বাকি সভ্যতাগুলো চাইছে মূলে ফিরে যেতে। প্রাচ্য ও পশ্চিমের এই দ্বিমুখী অবস্থান সভ্যতার সংঘাতকে প্রভাবিত করতে পারে।
৫. রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো যত দ্রুত সমাধান করা সম্ভব, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র ও পার্থক্য নিয়ে সমঝোতায় আসা ততই দুরূহ।
৬. আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সভ্যতার সচেতনাকে প্রভাবিত করবে।

হান্টিংটন মনে করেন যে, আন্তঃসভ্যতা দ্বন্দ্ব মূলত দুইভাবে সংঘটিত হবে-১.ফল্ট লাইন সংঘাত ২.কোর লাইন সংঘাত। আর তাই সামরিক বা অর্থনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োগ, অন্য সভ্যতার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরন, সভ্যতার আধিপত্য কিংবা একটি সভ্যতার বিশ্বাস ও মূল্যবোধ জোরপূর্বক অন্য সভ্যতার উপর চাপিয়ে দেয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কারনে সভ্যতার সংঘাত অনিবার্য। আর বর্তমান বিশ্বে পশ্চিমা সভ্যতার আধিপত্য এবং মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরন- হান্টিংটনের ধারনাকে আরও শক্ত করে। তবে অনেকেই আছেন যারা হান্টিংটনের মতবাদের বিরুদ্ধে আপত্তি তোলেন। অমর্ত্য সেন(১৯৯৯) মনে করেন যে, “পশ্চিমা সভ্যতাসহ সকল সভ্যতারই সাংস্কৃতিক বৈচিত্র রয়েছে। তবে তা স্বত্ত্বেও বিংশ শতকে গনতন্ত্রের বিপ্লব শুধই পশ্চিমা ধারনা নয়, প্রাচ্যও এর সাথে একমত। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনেক ইস্যুতে আজ সভ্যতারগুলোর মধ্যে খুব বেশি বিরোধ নেই”। হান্টিংটনের মতবাদের বিপরীত দুটি উল্লেখযোগ্য মতবাদ হল-১.ইরানের রাষ্ট্রপতি মুহাম্মাদ খাতামি’র ২০০১ সালের ‘সভ্যতার সংলাপ’ এবং ২০০৫ সালে জাতিসংঘের সাধারন সভায় উত্থাপিত স্পেনের রাষ্ট্রপতি, হোসে লুইস রদ্রিগুয়েজ ও তুরস্কের প্রধামন্ত্রী, তায়ীপ এর্দোগান এর সম্মিলিত মতাবাদ-‘সভ্যতার মৈত্রী’। উভয় মতবাদই ধারনা করে যে, মুসলিম ও পশ্চিমা সভ্যতার সাথে আলোচনা ও মতৈক্যের মাধ্যমে বিশ্বশান্তি নিশ্চিত হবে।

মানব সভ্যতার শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত ধর্মের উদ্ভব, বিকাশ এবং এর সাথে জড়িয়ে থাকা সভ্যতাগুলোর আচরন আমাদের কতগুলো প্রশ্নের সম্মুখীন করে- কেন মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার বিলোপ ধর্মে পুরুষদের প্রভাব বাড়িয়ে তোলে, কেন বিশ্বের প্রধান তিনটি ধর্মই আব্রাহামের জাতির দ্বারা প্রচারিত, কেন শাসক গোষ্ঠী নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী ধর্মের ব্যাখ্যা প্রদান করে থাকে আর কেনই বা নিজের ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানের জন্য অন্য ধর্মের নিরীহ মানুষদের নিজ ধর্মে রূপান্তর কিংবা হত্যা করতে হবে? চায়ের দোকানে কিংবা মেসের আড্ডায় অনেক তর্ক হয় এই বিষয়ে। কিন্তু একমাত্র বিতার্কিকরাই পারেন গঠনমূলক আলোচনা করতে। বিতর্কের জয় হোক।

তথ্যসূত্রঃ
১. উইকিপিডিয়া
২. ‘ভোলগা থেকে গঙ্গা’, রাহুল সংকৃত্যায়ন
৩. ‘The History of God’, Karen Armstrong
৪. ‘The Chariots of God’, Eric Von Daniken




The Descendents of Abraham
লেখক সানাউল হক হিমেল
সাবেক সভাপতি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ডিবেট ক্লাব

যুক্তিবাদী তারুণ্য গড়াই যার অঙ্গীকার



বিতর্ক একটি আলোময় ও বুদ্ধি উদ্ভাসিত জগত্। বিতর্ক মানুষের চেতনাকে জাগিয়ে তুলে, মনকে করে আলোড়িত ও শিহরিত, চিন্তা শক্তিকে করে উদ্দীপ্ত। আর এই উদ্দীপ্ত করার কাজটি নিষ্ঠার সাথে করে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা থেকে মফস্বল শহর তথা ইউনিয়ন পর্যায়ে বিতর্ক জগতের প্রিয় ব্যক্তিত্ব হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। আমাদের এবারের আয়োজনে উঠে এসেছেন প্রজন্মের এ আইকনের জীবনের কথামালা। তাকে নিয়ে লিখেছেন খালেদ আহমেদ

'আমি বিতর্ক নিয়ে বুকের গভীরে অন্য ধরনের এক স্বপ্ন অনুভব করি। এ কারণে যাপিতজীবনের অনেক কিছু তুচ্ছ করে বিতর্ক নিয়ে দৌড়াতে থাকি। এখানে এক অদ্ভুত ভালোলাগা এবং হূদয়গত টান আছে। আছে এক অপূর্ব মায়ার বন্ধন। বিতর্ক শিল্পের বিকাশে যে সময়টা দিই সেটা যদি ব্যবসা বা অন্যখাতে দিতাম তাহলে আর্থিকভাবে আরও লাভবান হওয়া আমার জন্য অসম্ভব কিছু ছিল না। কিন্তু মন টানে না, সে পথে সায় দেয় না। মনে হয় এই শিল্পটাই জীবনের সবকিছুর সাথে জড়িত আছে। স্বভাবতই বিতর্কটাকে ছাড়তে পারি না।' কথাগুলো বলছিলেন, হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিতর্ক সংগঠক হিসেবে যার জনপ্রিয়তা এখন আকাশ ছোঁয়া। বিতর্ক অনুষ্ঠান আয়োজন, পরিচালনা আর নির্মাণে রীতিমতো যিনি আইকনে পরিণত হয়েছেন। এককথায় বললে টেলিভিশন মিডিয়াতে বিতর্ককে জনপ্রিয় করার মূল কারিগর তিনিই। একের পর এক বিতর্ক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যে দিয়ে তিনি এই শিল্পের জনপ্রিয়তা এবং বিস্তার দুটোকে সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের উদ্যোগে দেশের আট হাজার মাধ্যমিক স্কুলের অংশগ্রহণে যে বিশাল বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় সেই 'বিতর্কবিকাশ' আয়োজনের অন্যতম কুশীলব ছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান পরিকল্পনা, সঞ্চালনা ও আয়োজনে অন্যতম ভূমিকা রাখেন। উল্লেখ্য ক'দিন আগে এই প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ডফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় নগরীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। এটিএন বাংলা সরাসরি গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠানটি প্রচার করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, শিক্ষাসচিব আব্দুল কামাল নাসের চৌধুরীসহ আরও অনেকে। ওইদিন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হয়। সমাজের নানা শ্রেণীপেশার মানুষের উপস্থিতিতে গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। সবাইকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে গ্র্যান্ডফাইনালের শুভসূচনা করেন হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তার চমত্কার এবং নিখুঁত উপস্থাপনায় দারুণ এক উপভোগ্য বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। পক্ষ-বিপক্ষের যুক্তি আর করতালিতে বিতর্কের এক অপরূপ সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ে। আগত অতিথিরাও কিছুক্ষণের জন্যে বিতর্কে নিমগ্ন হয়ে পড়েন। কিরণ বলছিলেন সেই কথা, 'দেখুন গ্রামবাংলার আট হাজার মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ রকম আয়োজন আর কখনোই হয়নি। আমি নিজেই প্রাণভরে এই বিতর্ক আয়োজন উপভোগ করেছি। এই আয়োজনের মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে শহর নয়, গ্রামেও আমাদের সুপ্ত সুন্দর প্রতিভা রয়েছে যারা সুযোগ পেলেই আলো ছড়াতে সক্ষম।' কিরণ আরও বলেন, 'যে সব প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এখানে অংশগ্রহণ করে তাদের অনেকেই মৌলিক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত। এমন অনেকে ছিল যারা একটা ভালো পোশাক পর্যন্ত পরতে পারে না। কিন্তু তারা স্বপ্ন দেখে সুন্দরভাবে বড় হওয়ার। স্বপ্ন দেখে সুন্দর একটি সমাজ নির্মাণের।' পুরো আয়োজনটা সুন্দরভাবে শেষ করার জন্য ব্র্যাককেই সব কৃতিত্ব দিতে চান কিরণ। তার মতে, ব্র্যাকের উদ্যোগ ও সুসমন্বয়, এটিএন বাংলার সহযোগিতা এবং ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির নিরবচ্ছিন্ন সম্পৃক্ততা 'বিতর্কবিকাশ' অনুষ্ঠানকে উচ্চমাত্রায় নিতে সক্ষম হয়। তিনি জানান, 'বিশেষ করে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালক ড. শফিকুল ইসলামের সার্বিক সমন্বয় বছরব্যাপী আয়োজিত এই প্রতিযোগিতাকে আমরা আমাদের প্রত্যাশিত জায়গায় নিতে পেরেছি।'

বিতর্কবিকাশের চূড়ান্ত লড়াইটা তো বেশ জমে উঠেছিল? কিরণ বলেন, 'নিঃসন্দেহে। এই প্রতিযোগিতা শেষে অনেক দূরদূরান্ত থেকে ফোন পেয়েছি। অনেকে এসএমএস করে অভিনন্দন জানিয়েছে। ওইদিন দুটি দলের শিক্ষার্থীরাই খুব ভালো বিতর্ক করেছিল। তথ্য, উপাত্ত দিয়ে পক্ষ-বিপক্ষের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি দারুণ উপভোগ্য করে তুলেছিল। সঞ্চালক হিসেবে আমি নিজেও গ্র্যান্ড ফাইনালটাকে এনজয় করেছি। কিরণ বলেন, দেখুন যে দুটি দল ফাইনালে উঠেছিল সে দুটি দল একেবারেই গ্রাম পর্যায়ের স্কুল। অথচ এখানকার ক্ষুদে বিতার্কিকরা চমত্কার উপস্থাপনা দিয়ে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়। আসলে বিতর্ক বিকাশের আয়োজনটাই ছিল অন্য রকম। আমার জানামতে, দেশের এতগুলো স্কুল কখনোই একসাথে এত বড় কোনো বিতর্ক প্রতিযোগিতাতে অংশ নেয়নি। আমার মনে হয় দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশেই এত বড় কোনো আয়োজন হয়নি। এ রকম একটি আয়োজনের অংশীদার হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হয়েছে। বিতর্ক বিষয়ক একটি অনুষ্ঠান কোনো চ্যানেল সরাসরি দেখাতে পারে এটাও বোধ হয় আমরাই প্রথম প্রমাণ দিলাম। এটিএন বাংলার সুবাদে 'বিতর্কবিকাশ' অনুষ্ঠানটি লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এবং দেশ-বিদেশের দর্শক টিভি সেটের সামনে বসে উপভোগ করেছে।'

বাংলাদেশে বিতর্ক চর্চাটাকে কীভাবে দেখতে চান জানতে চাইলে কিরণ বলেন, 'দেখুন, বিতর্ক চর্চার প্রসার বৃদ্ধিতে আমরা অনেক দিন ধরে নিরলসভাবে কাজ করছি। কিন্তু আমরা চাই বিতর্কচর্চাটা শিক্ষার মূলস্রোতে অর্ন্তভুক্ত হোক। এখন পর্যন্ত সেটা কিন্তু হয়নি। 'বিতর্কবিকাশ' অনুষ্ঠানের গ্র্যান্ড ফাইনালে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী এসেছিলেন। আমরা কিন্তু তার কাছে কিছুই চাইনি। শুধু বলেছি কো-কারিকুলার হিসেবে বিতর্কটাকে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। আমরা লক্ষ্য করছি এ বছরে পরিমার্জিত বা সংশোধিত পাঠ্যপুস্তকে ব্যবহারিক এবং উন্নয়নমূলক অনেক ধরনের শিক্ষা যুক্ত করা হয়েছে। অথচ ব্যবহারিক শিক্ষার চেয়ে জরুরি বিষয় শিক্ষার্থীর ভেতরের বিকাশ। তার মনন ও চেতনার বিকাশ। তো সেই পটভূমি তৈরি করতে হলে তার চারপাশের পরিবেশ-প্রতিবেশ সম্পর্কে জানতে এবং বুঝতে হবে। নিজের মাঝে বিশ্লেষণ ও বিচারিক ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ এখন তো গোটা বিশ্বেই প্রতিযোগিতার যুগ। তো এখানে বিতর্ক শিক্ষাটা একজন শিক্ষার্থীর মেধামনন বিকাশে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা মন্ত্রীকে সে কথাই বলেছি যে, আপনি পাঠ্যপুস্তকে বিতর্কটাকে অন্তর্ভুক্ত করুন। এটা করা হলে শিক্ষার্থীদের মাঝে এই চর্চাটা আরও অনেক বৃদ্ধি পাবে। মন্ত্রী মহোদয় আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে আগামী শিক্ষাবছরে বিতর্ককে পাঠ্যপুস্তকে অন্তুর্ভুক্ত হবে।'

বিতর্ক চর্চা, অনুশীলনকে কিরণ দেখেন সমাজের আয়না হিসেবে। কিরণ মনে করেন, সমাজে যেকোনো বিষয় নিয়ে যত বেশি বিতর্ক হবে তাতে করে সমাজ, রাষ্ট্রই বেশি লাভবান হবে বেশি। সমাজের সবক্ষেত্রে এক ধরনের জবাবদিহিতা উত্তরোত্তর বাড়বে। প্রথাগত চিন্তাভাবনা থেকে তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটবে। তরুণ প্রজন্মের মাঝে মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, সদিচ্ছা তৈরি হবে। কিরণ বলেন, সমাজে-রাষ্ট্র, কী হচ্ছে কেন হচ্ছে তা জানার অন্যতম মাধ্যম—বিতর্ক। যেখানে নানা মতের সম্মিলন ঘটে। যেখানে কবলই যুক্তি দিয়ে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। যেখানে আবেগের চেয়ে বাস্তবতার আলোকে বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়ে থাকে। বিষয়গুলোকে কেবলই তথ্য-উপাত্ত দিয়ে গভীরভাবে তুলে ধরতে হয়। কিরণ দারুণভাবে বিশ্বাস করেন বিতর্ক চর্চার যত প্রসার ঘটবে তত দ্রুতই সমাজ, রাষ্ট্র বদলে যাবে। আর এই বদলানোর বড় কারিগর হচ্ছে তারুণরা। যারা এ দেশের আগামী দিনের সম্পদ। এ কারণেই তিনি বারবার তরুণদের কাছে ফিরে যান। তরুণদের সাথে প্রবীণদের ভাবনার চমত্কার সম্মিলন ঘটিয়ে সুচিন্তার ঐক্য গড়ে তুলতে প্রয়াসী হন। এ জন্য বিতর্কের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের বিষয় বিশেষজ্ঞদের সাথে তরুণদের সেতুবন্ধন তৈরি করেন। এ পর্যন্ত দেশের অসংখ্য বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের তরুণদের পাশে বসিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন তিনি।

তারুণ্যে যাদের সাথে কিরণ বিতর্ক চর্চা শুরু করেছিলেন তাদের অনেকেই এখন আর বিতর্ক জগতের কেউ নন। কেউ কেউ একটু-আধটু জড়িয়ে আছেন। কেউ কেউ আবার একেবারেই লাপাত্তা। কিন্তু কিরণ সেই যে পথচলা শুরু করেছিলেন আর থামেননি। এখনও পথ চলছেন। বিতর্ক চর্চা আর প্রসারটাই তার কাছে মুখ্য বিষয়। বিতর্ক নিয়ে দীর্ঘ পথচলায় তার কোনো ক্লান্তি নেই। কখনও সঞ্চালক, কখনও স্পিকার হিসেবে দর্শকদের শুভ সম্ভাষণ জানান তিনি। কখনও পর্দার আড়ালে থেকে চমত্কার সব আয়োজন তরুণদের সামনে উপস্থাপন করেন। বিতর্ক নিয়ে কেন এই দীর্ঘ পথচলা? কিরণের সহাস্য উত্তর, 'দেখুন, একটা কমিমেন্ট থেকে বিতর্ক চর্চাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বহুবার বলেছি এ দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়তে হলে দায়িত্বশীল তরুণ দরকার। দেশপ্রেমিক তারুণ্য দরকার। যে তরুণরা বদলে দেবে আগামীদিন। আমি নিবিড়ভাবে বিশ্বাস করি যুক্তিশীল তারুণ্য গড়ে তুলতে পারলে আমাদের দেশ সামগ্রিকভাবে লাভবান হবে। আমরা বিতর্ক দিয়েই আলোকিত তরুণ সমাজ গড়ে তুলতে চাই। আর বিতর্ক চর্চাটাকে এগিয়ে নেওয়ার ব্রতে আমি কখনই পেছনে ফিরে তাকাইনি। বরাবরই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নতুন ধারণায়, নতুন উদ্দীপনায় বিতর্কটাকে সবার সামনে হাজির করতে। বিতর্ক মানেই যুক্তির সাধনা। সাধনা মানেই যেটা অন্তরে ধারণ করা হয়। আমি বিষয়টিকে অন্তর দিয়েই ধারণ করি। আর এ কারণেই বিতর্কের সাথে আমার বন্ধন অবিচ্ছেদ্য।'

বিতর্কের সাথে কিরণের যেন এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধন তৈরি হয়েছে। যে বন্ধন কখনই ছেড়া সম্ভব নয়। রবীন্দ্রনাথের সেই গানের ভাষায় বলতে হয়—আমি তোমারও সঙ্গে বেঁধেছি আমারও প্রাণ...। আসলেও তাই। কিরণের বাসায় গেলে দেখবেন বিতর্ক বিষয়ক ছবি, বই ছাড়া আর কিছু নেই। চারিদিকে অসংখ্য বিতর্কের ট্রফি, শুভেচ্ছা স্মারক, সম্মাননা, মেডেল অথবা আরও সব দেশি-বিদেশি সুভেনির। কিরণ বলেন, 'বিতর্ক বরাবরই যেকোনো বিষয়কে গভীরভাবে আত্মস্থ এবং বাস্তবতার নিরিখে বিশ্লেষণের একটা উপকরণ। বিতর্ক মানুষের ভাবনা বা চিন্তার জগতকে সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখে। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক অনেক বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত আমরা রাজনীতিবিদ এবং নীতিনির্ধারকদের কথা শুনছি। গণমাধ্যমগুলোও মতো প্রকাশ করছে। কিন্তু বিতর্কের চর্চামূলক অনুষ্ঠানে আমরা কিন্তু নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের চিন্তাভাবনার কথা শুনতে পাচ্ছি। পরিবর্তিত ধারায় তাদের দৃষ্টিভঙ্গিগুলো বুঝতে পারছি। বিতর্ক অনুষ্ঠান হলো—তরুণ সমাজের মতামত দেওয়ার সবচেয়ে ভালো একটা প্লাটফর্ম। কিরণ আরও বলেন, 'নিজের একটা বিশ্বাস, বোধ আর অফুরন্ত ভালোবাসা থেকেই গত দু দশক ধরে বিতর্ক চর্চার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে রেখেছি। সেই বিশ্বাস কিছু নয়, যুক্তিশীল আলোকিত তারুণ্য গড়ে তোলার নির্ভেজাল বিশ্বাস। আমরা যদি কিছু আলোকিত যুক্তিশীল তরুণ গড়ে তুলতে পারি তাহলে তারাই হবে আগামীতে সমাজ বদলের রূপকার। দেশ ও দশের জন্য তারাই হবে শ্রেষ্ঠ মানুষ। আমরা সেই মানুষ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।'

- See more at: http://archive.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDRfMjlfMTNfNF8zOF8xXzM2ODky#sthash.f1yZ8TQ8.dpuf

Monday, January 12, 2015

দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য ভূমি অফিস

The Daily Vorer Pata
১২ জানুয়ারি ২০১৫, সোমবার


রাজধানীর ডেমরা ভূমি অফিসের দেয়ালে একটি বিজ্ঞপ্তি লেখা আছে- নামজারি ফি বাবদ আবেদন কোর্ট ফি ৫ টাকা, নোটিশ জারির ফি ২ টাকা, রেকর্ড সংশোধন ও পরচা ফি ২২৫ টাকা। আবেদনের ৪৫ দিনের মধ্যে নামজারি সম্পন্ন করার কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে নামজারি করতে গেলে এসব দিনক্ষণ শুধু বিজ্ঞপ্তিতে শোভা পায় বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা। ৪৫ দিন তো দূরের কথা, অনেক ক্ষেত্রে এক বছরেও নামজারির মামলা নিষ্পত্তি হয় না। নামজারি মামলায় সরকার ২৩২ টাকা ফি নির্ধারণ করে দিলেও ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা ঘাটে ঘাটে সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করে নেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ডেমরা ভূমি অফিসে নামজারি করতে আসা জহিরুল ইসলাম শাহীন নামে এক ভুক্তভোগী ভোরের পাতাকে জানান, ‘ভূমি অফিসে প্রতিটি কাজেই নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অধিক বেশি টাকা দিতে হয়। জমির নামজারি, জমা খারিজ, মিস কেসসহ বিভিন্ন কাজে ঘুষ ছাড়া চলে না এ ভূমি অফিসে।’ এসব ক্ষেত্রে খরচের হার সাইন বোর্ডে নির্ধারণ করা থাকলেও তা মানছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সাইন বোর্ডে নির্ধারিত ফির চেয়ে অনেক গুণ বেশি টাকা গুনতে হয় জমির মালিকদের। তারপরও টাকা দিয়ে পার পাওয়া যাবে সে নিশ্চয়তাটুকু নেই এই অফিসে সেবা গ্রহণকারীদের। অফিসে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। আর তাদের ভোগান্তি যেন দেখার কেউ নেই! ৫টি সার্কেল অফিসের হালচাল : দুর্নীতি, অনিয়ম আর ভোগান্তির স্বর্গরাজ্য হয়েছে রাজধানীতে অবস্থিত সহকারী ভূমি কমিশনারের ৫টি সার্কেল অফিস, তহসিল অফিস, জেলা প্রশাসকের আওতাধীন রেকর্ড রুম, ভূমি অধিগ্রহণ শাখা এবং ভূমি জরিপ অধিদফতর। সাধারণ মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানে সেবার পরিবর্তে শিকার হচ্ছেন সীমাহীন ভোগান্তির। তেজগাঁও, ডেমরা, ধানম-ি, মোহাম্মদপুর ও কোতোয়ালি- এ ৫টি সার্কেল অফিস ও জেলার রেকর্ড রুমে দালাল, উমেদার এবং তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের খপ্পরে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ভূমি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র আর পর্চা। টাকা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না। এমন অভিযোগ রয়েছে টাকা দিলে মৃত মানুষের নামেও বের হচ্ছে পর্চা। বিভিন্ন জরিপ, সংশোধন, তদন্তের নামেও হচ্ছে লাখ লাখ টাকার দুর্নীতি। জমা-খারিজ, নামজারি (মিউটিশন), নামজারি সংক্রান্ত বিভিন্ন সংশোধন, মূল দলিল, ভায়া দলিলের সার্টিফাইড কপি, মিস কেইস দায়ের, ভূমি কর পরিশোধ, রেকর্ড সংশোধন, আরএস, এসআর ও মহানগর পর্চা কপি, এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ভুলভ্রান্তি সংশোধন, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি ওয়াশিরদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে দেওয়া মূলত এসি (ল্যান্ড) অফিস ও স্থানীয় তহসিল অফিসের কাজ।
জানা যায়, ঢাকার ৫টি ভূমি সার্কেল অফিসে প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার মানুষ আসে তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। প্রতিটি সার্কেলের প্রধান হলেন একজন সহকারী কমিশনার। এছাড়াও কাগজে-কলমে প্রতিটি সার্কেলে কানুনগো, সার্ভেয়ার, নাজির, মিউটেশন ক্লার্ক, প্রসেস সার্ভেয়ার, পিয়নসহ মোট ১০ থেকে ১২ জন স্টাফ কাজ করছেন। কিন্তু বাস্তবে সার্কেল অফিসগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি অফিসকে ঘিরে আছে কমপক্ষে ৪০/৫০ জন। বাকিরা সরকারি বেতনভুক্ত না হয়েও নিজেদের স্টাফ (ওমেদার) পরিচয় দিয়ে লাগামহীনভাবে চালাচ্ছেন দুর্নীতি আর লুটপাট। এদের জন্য সরকারিভাবে কোনো বেতন-ভাতা না থাকলেও তাদের মাসিক আয় একজন সহকারী কমিশনারের চেয়ে বেশি বলে জানা যায়।
দালালচক্র : অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছত্রছায়ায় প্রতিটি ভূমি অফিসে গড়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ দালালচক্র। এ চক্রটি এমনভাবে ভূমি অফিসগুলোকে ঘিরে রেখেছে যে তাদের অতিরিক্ত টাকা দেওয়া ছাড়া সেখানে কোনো কাজ করিয়ে নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর এভাবেই প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে বছরের পর বছর ধরে ভূমি অফিসের কার্যক্রম। কেউ যদি এ দালালচক্রকে অতিরিক্ত টাকা না দিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে ভূমি অফিস থেকে তার প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে চান তাহলে অবশ্যই তাকে কোনো না কোনো হয়রানির শিকার হতে হবে। ডেমরা ভূমি অফিসের ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভূমি অফিসগুলোতে প্রকাশ্যে দুর্নীতি হয়- এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে ভূমি অফিসকে ঘিরে স্থানীয় কিছু দালালচক্র গড়ে ওঠায় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অফিসের কাজকর্ম মূলত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি।’
টিআইবির জরিপ : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ টিআইবির পরিচালিত এক জরিপে জানা যায়, জমির মিউটেশন, রেজিস্ট্রেশন, ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ বা অনুসন্ধান ও সরকারি জমি বরাদ্দ থেকে শুরু করে আরো অনেক কাজ রয়েছে যেগুলোকে পুঁজি করে এসব দালালচক্র সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। ২০১২ সালে দেশের ৭,৫৫৪টি পরিবারের ওপর টিআইবির পরিচালিত এক জরিপে জানা যায়, এসব পরিবারের ৯২ শতাংশই বলেছে ভূমি অফিসের কাজ সম্পন্ন করতে তাদের অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয়েছে।
জরিপে আরো দেখা গেছে, সময়মত ভূমি অফিসের কাজ আদায় করার জন্য প্রত্যেককে গড়ে ৭,৮০৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। ভূমি অফিসগুলোর এ দ–র্নীতি রোধ করতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। ২০১১ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ নিরসনের লক্ষ্যে ভূমি অফিসের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় ও উপকমিশনারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় ভূমি সচিব মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমানের পক্ষ থেকে দেশের ৭টি বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪টি জেলার উপকমিশনারদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।
কিন্তু এখন পর্যস্ত তৃণমূল পর্যায়ে ভূমি অফিসের কোনো অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপকমিশনারদের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভূমি অফিসের দুর্নীতি নিরসনে ভূমি মন্ত্রণালয় কি ব্যবস্থা নিচ্ছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বলেন, ‘সব ভূমি অফিসের যে কোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং ভূমি অফিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্ দালালচক্রের অপসারণ করা হবে।’
ভূমি অফিসের উর্নীতি নিরসনে মন্ত্রণালয়ের নতুন কোনো নির্দেশনা আছে কিনা তা জানতে চাইলে ভূমি সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, ‘এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি।

কোর্ট ম্যারেজের ফাঁদ: প্রতারিত হচ্ছে মেয়েরা





সীমা ও সুজন আদালতের নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে গিয়ে ‘কোর্ট ম্যারেজ’ করেছিল। কিন্তু তখন তারা বিয়ের কাবিন রেজিষ্ট্রী করেনি। বিয়ের কিছুদিন পরই সুজন সীমার সঙ্গে তার বিয়ের কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে। আর এ অজুহাতে সীমাকে মোহরানা, খোরপোষ ও দাম্পত্য অধিকার দিতেও তিনি রাজি নন। অবশেষে বিষয়টি গড়িয়েছে আদালতে ।

কাবিন রেজিষ্ট্রীর পরিবর্তে কোর্টম্যারেজ অধিকতর শক্তিশালী-এ ভুল ধারণার ফাঁদে পড়ে অনেক নারী তাদের দাম্পত্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আইনের ছদ্মাবরণে একশ্রেণীর নোটারী পাবলিক এ অবৈধ কাজে সহায়তা করে চলেছেন। অথচ বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ‘কোর্ট ম্যারেজের কোন বৈধতা নেই, এমনকি এর কোন অস্তিত্বও নেই।

পঞ্চাশ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে কিংবা একশত পঞ্চাশ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের কার্যালয়ে গিয়ে হলফনামা করাকে বিয়ে বলে অভিহিত করা হয়। অথচ এফিডেভিট বা হলফনামা শুধুই একটি ঘোষণাপত্র।

কাবিন রেজিষ্ট্রী না করে অনেকে বিয়ে সম্পন্ন করছেন। আইনানুযায়ী কাবিন রেজিষ্ট্রী ও আকদ সম্পন্ন করেই কেবল ঘোষণার জন্য এফিডেভিট করা যাবে। কিন্তু এ নিয়ম মানা হয় না। মুসলিম বিবাহ ও বিচ্ছেদ বিধি ১৯৭৫ এর ১৯(৩) ধারা অনুযায়ী ‘নিকাহ রেজিষ্ট্রার ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি যদি বিবাহ করান তাহলে সেই ব্যক্তি ১৫ দিনের মধ্যে ওই নিকাহ রেজিষ্ট্রারের নিকট অবহিত করবেন, যার এলাকায় উক্ত বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে’।

মুসলিম বিবাহ ও বিচ্ছেদ আইন ১৯৭৪-এর ধারা ৫(২) অনুযায়ী বিবাহ রেজিষ্ট্রশন না করার শাস্তি সর্বোচ্চ (তিন) মাসের কারাদ- কিংবা পাঁচশত টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। আকদ বা বিয়ে রেজিষ্ট্রী না করে শুধুমাত্র হলফনামায় ঘোষণা দিয়ে ঘর-সংসার প্রবণতা অমাদের দেশে ক্রমেই বাড়ছে। অথচ এর কোন বৈধতা নেই।

আবেগঘন সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক তরুণ তরুণীর ভুল ধারণা হয় যে, শুধুমাত্র এফিডেভিট করে বিয়ে করলে বন্ধন শক্ত হয়। কাজী অফিসে বিয়ের জন্য বিরাট অঙ্কের ফিস দিতে হয় বলে কোর্ট ম্যারেজকে অধিকতর ভাল মনে করে তারা।
অনেকে এফিডেবিটের মাধ্যমে বিয়ে সম্পাদন করে একাধিক বিয়ের কথা গোপন করার জন্য। কোন মেয়ের অভিভাবককে জিম্মি করে টাকা আদায় কিংবা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যও অনেক সময় এফিডেভিটের মাধ্যমে ভূয়া বিয়ের দলিল তৈরি করা হয়।

এ দলিল তৈরি করা খুব সহজেই সম্ভব এবং এসব ক্ষেত্রে হলফনামা প্রার্থীকে নোটারি পাবলিকের কাছে হাজির হতে হয় না। এর ফলে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়স বাড়িয়ে দেয়ার সুযোগ থাকে। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা থেকে রক্ষার জন্য আসামী পক্ষের এরকম হলফনামা তেরীর প্রবণতা দেখা যায়।
লাইসেন্স বিহীন কাজীর নিকট বিয়ে রেজিষ্ট্রী করলে এর কোন আইনত মূল্য নেই। কাজীর কাছে গিয়ে কাবিন না করলে দু’পক্ষই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কাবিননামা না থাকায় নারীরা তাদের মোহরানাও পায়না। কাবিননামার বদলে কোর্ট ম্যারেজের বিয়েতে ছেলেরা একটা সুযোগ খুঁজে। জোর করে দস্তখত নিয়ে এফিডেভিট করেছে মেয়ে পক্ষ এই অজুহাত অনেক সময় দাঁড় করে ছেলে পক্ষ। আইনানুযায়ী বিয়ের আসরেই বিয়ে রেজিষ্ট্রি করতে হয়। বিয়ের আসরে সম্ভব না হলে বিয়ে অনুষ্ঠানের দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে রেজিষ্ট্রী করতে হয়। কাজীকে বাড়িতে ডেকে এনে অথবা কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে রেজিষ্ট্রী করা যায়।

এছাড়াও কাবিননামার সকল কলাম পূরণ করার পর বর, কনে, উকিল,সাক্ষী ও অন্যন্যা ব্যক্তিগণের স্বাক্ষর দিতে হয়। এদেশের সব ধর্মের বিয়ে বিচ্ছেদের ব্যাপরে পারিবারিক আইন আদালতের নিয়ম মানতে হবে। কোর্ট ম্যারেজের বিয়েতে উৎসাহদানকারী নোটারি পাবলিকদের চিহ্নিত করে শাস্তির বিধান করতে হবে। আইন করে কোর্ট ম্যারেজের বিয়ে বন্ধ করা সময়ের দাবী।

Wednesday, January 7, 2015

বাংলা ব্লগের তালিকা



আপনাদের কাছে এর বেশী তথ্য জানা থাকলে কমেন্টে পোষ্টিং করার অনুরোধ রইল।

Blog Name Link
অনুকাব্য http://www.onukabbo.net/
আমরা বন্ধু http://www.amrabondhu.com/
আমার বাংলা ব্লগ http://www.amarputhia.com/blog/index.php
আমার ঠিকানা http://www.saiftheboss.com/
আনন্দ বাজার ব্লগ http://my.anandabazar.com/blog
আমার ব্লগ http://amarblog.com/
আমার বর্ণমালা http://www.amarbornomala.com/
আদিবাসী বাংলা ব্লগ http://w4study.com/
আড্ডা ব্লগ http://www.addaablog.com/
ওপেস্ট http://www.opest.net/
একুশে ব্লগ http://ekusheyblog.com/
এভারগ্রীণ বাংলা ব্লগ http://banglablog.evergreenbangla.com/
উজারাস ব্লগ http://www.fislam.cz.cc/
কফি হাউজের আড্ডা http://coffeehouseradda.com/
ক্যাডেট কলেজ ব্লগ http://www.cadetcollegeblog.com/
গণিত পাঠাশালা.কম http://www.gonitpathshala.com/
গ্লোবাল ভয়েস অনলাইন http://bn.globalvoicesonline.org/
চতুর্মাত্রিক http://www.choturmatrik.com/
জীবনযাত্রা http://joubonjatra.com/forums/blog.php
টেকটুইটস http://techtweets.com.bd/
টেকটিউনস http://techtunes.com.bd/
টেকনোলজি টুডে ব্লগ http://www.blog.techtodaybd.com/
নাগরিক ব্লগ http://www.nagorikblog.com/
নৃ.ওরগ http://www.nree.org/blog
নীলাঞ্চল বাংলা ব্লগ http://www.nilanchol.com/
পিস ইন ইসলাম http://www.peaceinislam.com/
প্যাঁচালী http://www.pechali.com/
প্রথম আলো ব্লগ http://prothom-aloblog.com/
বকলম http://www.bokolom.com/
বাংলা ইউনিকোড ব্লগ http://banglaunicode.blogspot.com/
বাংলা ব্লগস্ http://www.banglablogs.org/
বাংলা ওয়ার্ড প্রেস http://bn.wordpress.com/
বাংঙ্গালী ব্লগ http://www.banglayblog.com/
বাংঙ্গালী অন লাইন ব্লগ http://bangalionline.com/blog/
বিজ্ঞান প্রযুক্তি http://www.bigganprojukti.com/
বিজ্ঞানী http://biggani.com/
বিবর্তন বাংলা http://bn.biborton.com/
বিডিটিউটোরিয়াল ২৪ http://bdtutorial24.com/
বিডিনিউজ২৪বাংলা ব্লগ http://banglablog.bdnews24.com/
বিসর্গ http://bishorgo.com/
বলতে চাই স্বপ্নের কথা http://boltechai.com/
মুক্তব্লগ http://muktoblog.com/
মুক্তমনা বাংলা ব্লগ http://mukto-mona.com/banga_blog/
মুক্তাঙ্গন: নির্মাণ ব্লগ http://www.nirmaaan.com/blog/
দৃষ্টিপাত http://www.drishtipat.org/bangla/
লোটাকম্বল http://lotakambal.sristisukh.com/
শব্দনীড় http://www.shobdoneer.com/
শৈলী http://shoily.com/
সবুজ বাংলা ব্লগ http://www.sabujbanglablog.net/
সচলায়তন.কম http://www.sachalayatan.com/
সবকিছু http://www.sobkichu.com/
সবুজের কলতান ব্লগ http://blog.sobujerkolotan.net/
সাম হয়ার ইন ব্লগ http://www.somewhereinblog.net/
সরল পথ http://sorolpath.wordpress.com/
সদালাপ http://shodalap.com/
সাহিত্য.কম http://www.sahityo.com/
সোনার বাংলাদেশ ব্লগ http://sonarbangladesh.com/blog/
স্বপ্নবাজ ব্লগ http://shopnobaz.net/

Forum Name Link
আল ইহসান ফোরাম http://www.al-ihsan.net/forum/
আইডি ফোরাম http://www.idbangla.com/forums/?forum
আইটেক বাংলা http://itechbangla.com/
আমাদের প্রযুক্তি http://forum.amaderprojukti.com/
ত্রিভুভ নেটওয়ার্ক http://trivuz.com/bangla/forums/index.php
প্রজন্ম ফোরাম http://forum.projanmo.com/index.php
বাংলা দুনিয়া http://bangladunia.cz.cc/
রংমহল http://www.rongmohol.com/index.php

খনার বচন



বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিতে প্রবাদ-প্রবচনের ব্যবহার ও গুরুত্ব অপরিসীম। অধিকাংশের-ই জনক খনা। এখানে আমার সংগ্রহীত কিছু খনার বচন রেখে দিলাম। আপনাদের যদি এর বাইরে আরও জানা থাকে তাহলে Comment box এ Pasteকরুন। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে হয়ে উঠতে পারে খনার বচনের অসাধারণ আর্কাইভ।

১.

চাষে মুলা তার



অর্ধেক তুলা তার

অর্ধেক ধান

বিনা চাষে পান

২.

বিপদে পড় নহে ভয়



অভিজ্ঞতায় হবে জয়

৩.

উত্তর দুয়ারি ঘরের রাজা



দক্ষিণ দুয়ারি তাহার প্রজা।

পূর্ব দুয়ারির খাজনা নাই

পশ্চিম দুয়ারির মুখে ছাই।।

৪.

কপালে নাই ঘি,



ঠকঠকালে হবে কি!

৫.

নিজের বেলায় আটিঁগাটি,



পরের বেলায় চিমটি কাটি।

৬.

পুকুরে তে পানি নাই, পাতা কেনো ভাসে



যার কথা মনে করি সেই কেনো হাসে ?

৭.

ভাত দেবার মুরোদ নাই,



কিল দেবার গোসাঁই।

৮.

নদীর জল ঘোলাও ভালো,



জাতের মেয়ে কালোও ভালো

৯.

খাঁদা নাকে আবার নথ !

১০.

থাক দুখ পিতে,(পিত্তে)



ঢালমু দুখ মাঘ মাসের শীতে।

১১.

কি কর শ্বশুর মিছে খেটে



ফাল্গুনে এঁটে পোত কেটে

বেড়ে যাবে ঝাড়কি ঝাড়

কলা বইতে ভাংগে ঘাড়।

১২.

ভাদরে করে কলা রোপন



স্ববংশে মরিল রাবণ।

১৩.

গো নারিকেল নেড়ে রো



আমা টুকরা কাঁঠাল ভো।

১৪.

সুপারীতে গোবর, বাশে মাটি



অফলা নারিকেল শিকর কাটি

১৫.

খনা বলে শুনে যাও



নারিকেল মুলে চিটা দাও

গাছ হয় তাজা মোটা

তাড়াতাড়ি ধরে গোটা।

১৬.

ডাক ছেড়ে বলে রাবণ



কলা রোবে আষাঢ় শ্রাবণ।

১৭.

পূর্ব আষাঢ়ে দক্ষিণা বয়



সেই বছর বন্যা হয়।

১৮.

মংগলে উষা বুধে পা



যথা ইচ্ছা তথা যা।

১৯.

পুত্র ভাগ্যে যশ

কন্যা ভাগ্যে লক্ষী

২০.

উঠান ভরা লাউ শশা

ঘরে তার লক্ষীর দশা

২১.

বামুন বাদল বান



দক্ষিণা পেলেই মান।

২২.

বেঙ ডাকে ঘহন ঘন



শীঘ্র হবে বৃষ্টি জান।

২৩.

আউশ ধানের চাষ



লাগে তিন মাস।

২৪.

যদি বর্ষে গাল্গুনে



চিনা কাউন দ্বিগুনে।
২৫.

যদি হয় চৈতে বৃষ্টি



তবে হবে ধানের সৃষ্টি।

২৬.

চালায় চালায় কুমুড় পাতা



লক্ষ্মী বলেন আছি তথা।

২৭.

আখ আদা রুই



এই তিন চৈতে রুই।


২৮.

চৈত্রে দিয়া মাটি

বৈশাখে কর পরিপাটি।

২৮.

দাতার নারিকেল, বখিলের বাঁশ

কমে না বাড়ে বারো মাস।

২৯.

সোমে ও বুধে না দিও হাত

ধার করিয়া খাইও ভাত।

৩০.

জৈষ্ঠতে তারা ফুটে

তবে জানবে বর্ষা বটে।

৩১.
বাঁশের ধারে হলুদ দিলে

খনা বলে দ্বিগুণ বাড়ে।

৩২.

গাই পালে মেয়ে

দুধ পড়ে বেয়ে।

৩৩.





শুনরে বাপু চাষার বেটা

মাটির মধ্যে বেলে যেটা

তাতে যদি বুনিস পটল

তাতে তোর আশার সফল।

৩৪.

মাঘ মাসে বর্ষে দেবা

রাজ্য ছেড়ে প্রজার সেবা।

৩৫.

চৈতের কুয়া আমের ক্ষয়

তাল তেঁতুলের কিবা হয়।

অর্থ-কুয়াশায় আমের বোল নষ্ট হয়ে যায়

৩৬.

আমে ধান

তেঁতুলে বান।

অর্থ- আম বেশি ফললে ধান বেশি জন্মে। তেঁতুল বেশি ফললে ঝড় বন্যা হয়।

৩৭.

হইবো পুতে ডাকবো বাপ

তয় পুরবো মনর থাপ।

৩৮.

পারেনা .ল ফালাইতে



উইঠা থাকে বিয়ান রাইতে।

৩৯.

যদি বর্ষে মাঘের শেষ৪০.



ধন্যি রাজা পুণ্যি দেশ





৪১.

সূর্যের চেয়ে বালি গরম!!

নদীর চেয়ে প্যাক ঠান্ডা!!

৪২.

সমানে সমানে দোস্তি

সমানে সমানে কুস্তি।

৪৩.

হোলা গোশশা অইলে বাশশা,



মাইয়া গোশশা অইলে বেইশশা

৪৪.

মেয়ে নষ্ট ঘাটে,

ছেলে নষ্ট হাটে।

৪৫.

আল্লায় দিয়া ধন দেখে মন,

কাইড়া নিতে কতক্ষণ।

৪৬.

যদি থাকে বন্ধুরে মন

গাং সাঁতরাইতে কতক্ষন।

৪৭.

কাল ধানের ধলা পিঠা,

মা’র চেয়ে মাসি মিঠা।

৪৮.

পরের বাড়ির পিঠা



খাইতে বড় ই মিঠা।

৪৯.

ঘরের কোনে মরিচ গাছ

লাল মরিচ ধরে,

তোমার কথা মনে হলে

চোখের পানি পড়ে!

৫০.

সোল বোয়ালের পোনা

যার যারটা তার তার কাছে সোনা।

৫১.

ছায়া ভালো ছাতার তল,

বল ভালো নিজের বল।

(বিয়াই’র পুত নিয়া সাত পুত গুণতে নাই।)

৫২.

যা করিবে বান্দা তা-ই পাইবে।



সুই চুরি করিলে কুড়াল হারাইবে।

৫৩.

খালি পেটে পানি খায়



যার যার বুঝে খায়।

৫৪.

তেলা মাথায় ঢালো তেল,



শুকনো মাথায় ভাঙ্গ বেল।

৫৫.

চৈত্রে চালিতা,



বৈশাখে নালিতা,

আষাড়ে………

ভাদ্রে তালের পিঠা।

আর্শ্বিনে ওল,

কার্তিকে কৈয়ের ঝুল

৫৬.

মিললে মেলা।



না মিললে একলা একলা ভালা!

৫৭.

সাত পুরুষে কুমাড়ের ঝি,

সরা দেইখা কয়, এইটা কি?

৫৮.

না পাইয়া পাইছে ধন;

বাপে পুতে কীর্তন।

৫৯.

কাচায় না নোয়ালে বাশ,

পাকলে করে ঠাস ঠাস!

৬০.

যুগরে খাইছে ভূতে

বাপরে মারে পুতে।

৬১.

দশে মিলে করি কাজ

হারি জিতি নাহি লাজ।

৬২.

যাও পাখি বলো তারে



সে যেন ভুলেনা মোরে।

৬৩.

ফুল তুলিয়া রুমাল দিলাম যতন করি রাখিও।

আমার কথা মনে ফইল্লে রুমাল খুলি দেখিও।

৬৪.

একে তে নাচুনী বুড়ি,

তার উপর ঢোলের বারি

৬৫.

চোরের মার বড় গলা



লাফ দিয়ে খায় গাছের কলা

৬৬.

“ভাই বড়ো ধন, রক্তের বাঁধন



যদি ও পৃথক হয়, নারীর কারন।”

৬৭.

জ্যৈষ্ঠে শুকো আষাঢ়ে ধারা।



শস্যের ভার না সহে ধরা।”

৬৮.

যদি হয় সুজন



এক পিড়িতে নয় জন।

যদি হয় কুজন

নয় পিড়িতে নয় জন

*(যদি হয় সুজন,

তেতুল পাতায় ন’জন।)

৬৯.

“হাতিরও পিছলে পাও।



সুজনেরও ডুবে নাও।”

৭০.

গাঙ দেখলে মুত আসে



নাঙ দেখলে হাস আসে (নাঙ মানে – স্বামী)

৭১.

ক্ষেত আর পুত।



যত্ন বিনে যমদূত।।

৭২.

গরু ছাগলের মুখে বিষ।

চারা না খায় রাখিস দিশ ।।



বন্যা, মড়ক, বৃষ্টি ও অনাবৃষ্টি

৭৩.

আকাশে কোদালীর বাউ।



ওগো শ্বশুড় মাঠে যাও।।

মাঠে গিয়া বাঁধো আলি।

বৃষ্টি হবে আজি কালি।।

৭৪.

যদি ঝরে কাত্তি।

সোনা রাত্তি রাত্তি।।

৭৫.

আষাঢ়ের পানি।

তলে দিয়া গেলে সার।

উপরে দিয়া গেলে ক্ষার।।



হল (লাঙ্গল চালনা)



৭৬.

গাঁ গড়ানে ঘন পা।

যেমন মা তেমন ছা।।

থেকে বলদ না বয় হাল,

তার দু:খ সর্ব্বকাল।



গবাদি



৭৭.

যে চাষা খায় পেট ভরে।

গরুর পানে চায় না ফিরে।

গরু না পায় ঘাস পানি।

ফলন নাই তার হয়রানি।।

৭৮.

গরুর পিঠে তুললে হাত।

গিরস্থে কভু পায় না ভাত।।

গাই দিয়া বায় হাল

দু:খ তার চিরকাল।



ধান্যাদি



৭৯.

দিন থাকতে বাঁধে আল।

তবে খায় তিন শাল।।

বারো পুত তেরো নাতি।

তবে করো বোরো খেতি।।



রবি শস্যাদি



৮০.

মেঘ করে রাত্রে হয় জল।

তবে মাঠে যাওয়াই বিফল।।

৮১.

যদি থাকে টাকা করবার গোঁ।

চৈত্র মাসে ভুট্টা দিয়ে রো।।

৮২.

হলে ফুল কাট শনা।

পাট পাকিলে লাভ দ্বিগুণা।।

বাংলা বিভিন্ন বই, পত্রিকা, ব্যক্তির কাছ থেকে সংগৃহীত প্রবাদসমূহ


বাংলা প্রবাদ সমগ্র
প্রবাদ সমগ্র
বিভিন্ন বই, পত্রিকা, ব্যক্তির কাছ থেকে সংগৃহীত প্রবাদসমূহ
================================



অই ছেরা তোর ডাটেঁর কথা- তোর মায় ফিনছে খাইল্যা পাতা।
অকাজে বউড়ী দড়,লাউ কুটতে খরতর।
অকাল গেল সুকাল এল, পাকল কাঁটাল কোষ, আজ বন্ধু ছেড়ে যাও, দিয়ে আমার দোষ।
অকালে খেয়েছ কচু,মনে রেখ কিছু কিছু।
অকালে না নোয় বাঁশ,বাঁশ করে ট্যাঁশ ট্যাঁশ।
অকালে(আকালে) কি না খায়।
অকালের তাল বড় মিষ্টি।
অকেজো নাপিতের বোঝা ভরা খুর।
অকেজো বউ লাউ কুটতে দড়।
অকেজোর তিন কাজ বড়,ভোজন ক্রোধ নিদ্রা দড়।
অগ্নি ব্যাধি ঋণ,তিনের রেখো না চিন(চিহ্ন)।
অঘটির(আদেখলের) ঘটি হল,জল খেতে খেতে প্রাণটা গেল।
অঙ্গারঃ শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি।
অজগরের দাতা রাম(অজগর আহার সংগ্রহে অলস)।
অজ্ঞানে করে পাপ,জ্ঞান হলে সরে, সজ্ঞানে করে পাপ,সঙ্গে সঙ্গে ফেরে।
অজাযুদ্ধে ঋষিশ্রাদ্ধে প্রভাতে মেঘডম্বরে দম্পত্যোঃ কলহে চৈব বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া।
অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার।
অজীর্ণে ভোজনং বিষম্।
অতি আশ সর্বনাশ।
অতি চালাকের গলায় দড়ি অতি বোকার পায়ে বেড়ি।
অতি প্রণয় যেখানে, নিত্য যাবে না সেখানে;যদি যাবে নিত্যি;ঘটবে একটা কীর্তি।
অতি বড় ঘরণী না পায় ঘর; অতি বড় সুন্দরী না পায় বর।
অতি বড় সোদর, তিন দিন করবে আদর।
অতি বুদ্ধির গলায়(বা হাতে)দড়ি,অতি বোকার পায়ে বেড়ি।
অতি বুদ্ধির হা-ভাত। অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।
অতি বাড় বেড়ো নাকো ঝড়ে ভেঙে যাবে;অতি ছোট হয়ো নাকো ছাগলে মুড়াবে।
অতি মন্থনে বিষ ওঠে।
অতি মেঘে অনাবৃষ্টি।
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট।
অতিদর্পে হতা লঙ্কা। অতিদানে বলির পাতালে হইল ঠাঁই।
অদন্তের দাঁত হল, কামড় খেতে প্রাণটা গেল।
অদন্তের হাসি, দেখতে(বড়) ভালবাসি।
অদৃষ্টে করলা ভাতে, বীচি কচ কচ করে তাতে,পড়ল বীচি বুড়োর পাতে। অদৃষ্টের (কপালের) কিল পুতেও(পুত--ছেলে) কিলোয়।
অদৃষ্টের ফল, কে খণ্ডাবে বল?
অধিক (অনেক)সন্যাসীতে গাজন নষ্ট।
অধিক খেতে করে আশা,তার নাম বুদ্ধি নাশা।
অধিকং তু ন দোষায়।
অনটনের দুনো ব্যয়।
অন্তরে এত খলতা, মুখে তোর অতি শীলতা, অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।__দাশু রায়।
অন্ধ জাগো, না, কিবা রাত্রি কিবা দিন।
অন্ধকারে ঢেলা মারা বা ঢিল ছোঁড়া।
অন্ধকারে লাউ কোটা।
অন্ধের কিবা রাত কিবা দিন।
অন্ধের নড়ি, কৃপণের কড়ি।
অন্ন দেখে দেবে ঘি, পাত্র দেখে দেবে ঝি।
অন্ন নাই যার ঘরে,তার মানে কি বা করে।
অন্ন বল নেই,অগ্নিবল আছে।
অন্ন বিনা চর্ম দড়ি,তৈল বিনা গায়ে খড়ি।
অন্নচিন্তা চমৎকারা কাতরে কবিতা কুতঃ।
অন্নচিন্তা চমৎকারা কালিদাস হয় বুদ্ধিহারা।
অন্নচিন্তা চমৎকারা, ঘরে ভাত নাই জীয়ন্তে মরা।
অন্নের জ্বালা বড় জ্বালা এক দিনে লাগে তালা।
অনভ্যাসের ফোঁটা কপালে চড়চড় করে।
অনাথের দৈব সখা।
অনাবৃষ্টে রাজ্য মজে,পাপে মজে ধর্ম;কোটালে গৃহস্থ মজে,আলস্যে মজে কর্ম। অনেক কালের ছি পাপ,ছেলে হল সতীনের বাপ।
অনাহ্বানের নিমন্ত্রণ, না আঁচালে বিশ্বাস নেই।
অনেক খাবে তো অল্প খাও,অল্পখাবে তো অনেক খাও।
অনেক গর্জনে ফোঁটা বৃষ্টি।
অনেক সন্যাসীতে গাজন নষ্ট।
অনেক হল পাপ, এবার ছাড়ো বাপ।
অনেক(অগাধ) জলের মাছ।
অপব্যয়ে লক্ষ্মী ছাড়ে।
অবংশো পতিতো রাজা মূর্খ পুত্রশ্চ পণ্ডিতঃ, অধনশ্চ ধনং প্রাপ্য তৃণবন্মন্যতে জগৎ।
অবুঝে বুঝাব কত,বুঝ নাহি মানে;ঢেঁকিরে বুঝাব কত,নিত্য ধান ভানে। অবোধারে মারে বোধায়,বোধারে মারে খোদায়।
অব্রাহ্মণের দীর্ঘ ফোঁটা।
অবলার মুখে বল।
অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা।
অবাক্ ক‘ল্লে নাকের নথে,কাজ কি আমার কানবালাতে।
অবাক কল্লি ভবি(রাধা),অম্বলে দিলি আদা।
অবাক্ কলির অবতার,ছুঁচোর গলায় চন্ত্রহার।
অবোধের(পাগলের) গোবধে আনন্দ[গো বধ মহাপাপ]।
অবোলা বলে দড়, অফলা ফলে দড়।
অভদ্রা বরষা কাল,হরিণী চাটে বাঘের গাল।
অভ্যাস দোষ না ছাড়ে চোরে, শূন্য ভিটায় মাটি খোঁড়ে।
অভ্যাসে সয়, অনভ্যাসে নয়।
অভাগা চোর যে বাড়ি যায়, হয় কুকুর ডাকে নয় রাত পোহায়।
অভাগা যদ্যপি(যেদিকে) চায়, সাগর শুকায়ে যায়।
অভাগার ঘোড়া মরে, ভাগ্যবানের বউ মরে।
অভাগার নাই যম, বা অভাগার যমও নাই।
অভাগিনীর দুটো(দুই)পুত, একটা দানা একটা ভূত।
অভাবে স্বভাব নষ্ট।
অভাবে স্বভাব নষ্ট মুখ নষ্ট বরণে(ব্রণে),ঝরায় ক্ষেত নষ্ট স্ত্রী নষ্ট মারণে(মারধর) করলে।
অমাবস্যার প্রদীপ টিপ টিপ করে।
অমুকের পোলায় এস পি হইছে- তয় পাওয়ার কম।
অমৃত-বা কি পদার্থ, খেয়ে দেখি জল।
অমৃতং বালভাষিতম্।
অর্থই অনর্থের মূলে।
অরসিকেষু রসস্য নিবেদনম্।
অরাধুনীর হাতে পড়ে রুই মাছ কাঁদে, না জানি রাধুনী মোর কেমন করে রাঁধে। অরুচির অম্বল শীতের কম্বল বর্ষার ছাতি ভট্‌চায্যির পাঁতি(পুথি)।
অলক্ষীর নিদ্রা বেশি, কাঙালের ক্ষুধা বেশি।
অলকা তিলকা(=অঙ্গরাগ) সার। অলক্ষীর দ্বিগুণ ক্ষিদে।
অল্প জলের পুঁটি মাছ ফর ফর করে।
অল্প বৃষ্টিতে কাদা হয়,বেশি বৃষ্টিতে সাদা হয়।
অল্প শোকে কাতর,অধিক শোকে পাথর।
অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী।
অলাভের বাণিজ্যে কচকচি সার।
অশথের ছায়াই ছায়া,মায়ের মায়াই মায়া।
অশ্বত্থামা হত ইতি গজ।
অস্থানে তুলসী,অপাত্রে রূপসী।
অসারে জল সার।
অসারের তর্জনগর্জন সার।
অহংকারে গদগদ ভূমিতে না পড়ে পদ।




আ-লো সোনাভানের মা- কথার পুটুলি জান, কাম জাননা।
আউলে বাঘ জালে পড়ে (আউলে=অস্থির)।
আকাইম্যা মাইনষ্যের কথা বেশি।
আকালে কিনা খায়;পাগলে কিনা কয়।
আকামের মাঝু, কদু কুটনের যম।
আকাঙ্ক্ষার সীমা নাই।
আকাশ পাতাল তফাত।
আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া।
আকাশে থুতু ফেললে নিজের গায়ে পড়ে।
আকাশে ফাঁদ পেতে চাঁদ ধরা।
আগ নাংলা (নাঙ্গলে) যেদিকে যায়,পাছ নাংলা (নাঙ্গলে) সেদিকে ধায়।
আগুন চাপা থাকবার নয়।
আগুন নিয়ে খেলা।
আগুন পোহাতে গেলে ধোঁয়া সইতে হয়।
আগুনের কাছে ঘি। আগু লাথ,পিছু বাত।
আগাছার বড় বাড়।
আগাছে ফল বেশি।
আগে আপন সামাল কর,শেষে পরকে গিয়ে ধর।
আগে গেলে বাঘে খায়।
আগে গেলে বাঘে খায়, পাছে গেলে সোনা পায়।
আগে গেলেও নির্বংশের ব্যাটা,পিছে গেলেও নির্বংশের ব্যাটা।
আগে তিতা, শেষে মিঠা।
আগে দর্শনধারী পরে গুণ বিচারি।
আগে দুঃখ পরে সুখ।
আগে দর্শনধারী পিছে গুণ বিচারি।
আগে দেও কড়ি পিছে দিব বড়ি।
আগে দেখ, পরে লও, শেষে দাও কড়ি।
আগে না বুঝিলে বাছা যৌবনের ভরে,পশ্চাতে কাঁদিতে হবে নয়নের ঝোরে।
আগে ভাল ছিল জেলে জালদড়া বুনে, কি কাজ করিল জেলে এঁড়ে গরু কিনে।
আচরো বিনয়ো বিদ্যা প্রতিষ্ঠা তীর্থদর্শনম্; নিষ্ঠা বৃত্তিস্তপো দানং নবধা কুললক্ষণম্। সদাচার, বিনয়, বিদ্যা, খ্যাতি, তীর্থদর্শন, শাস্ত্রানুমোদিত ধর্মে আসক্তি, ব্রাহ্মণোচিত বৃত্তি(অর্থাৎ বেদাধ্যয়ন প্রভৃতি), তপস্যা এবং দান__ এই নয়টি কুলীনের লক্ষণ।
আচারে বাড়া, বিচারে এড়া।
আছাড় খালি ক্যা?- রাস্তা আগাইলাম।
আজ আমীর, কাল ফকির।
আজ মরলে কাল দু‘দিন হবে।
আঁটুনি কসুনি সার।
আঁটাআঁটি হইলেই লাঠালাঠি।
আটে-পিটে দড়, তবে ঘোড়ার উপর চড়।
আড়াই আঙ্গুল দড়ি,সৃষ্টি জুড়ে বেড়ি।
আড়াই কড়ার কাসুন্দি, হাজার কাকের গোল।
আঁত পাওয়া ভার।
আত্ম রেখে ধর্ম,তবে পিতৃ কর্ম।
আত্মবন্মন্যতে জগৎ।
আত্মানং সতত রক্ষেৎ[আপদার্থে ধনং রক্ষেৎ দারান্ রক্ষেদ্ধনৈরপি;আত্মানং সতত রক্ষেৎ দারৈরপি ধনৈরপি]। আতুরে নিয়মো নাস্তি।
আতি চোর,পাতি চোর,হ‘তে হ‘তে সিঁদেল চোর।
আদ্যিকাণ্ডের কথা, বললে পাবে ব্যথা।
আদ্যিকালের বদ্যি বুড়ো।
আদরে ভোজন কি করে ব্যঞ্জন।
নুন আনতে পান্তা ফুরায়।
আদা শুকালেও ঝাল যায় না।
আদা, ওষুধের আধা।
আদা জল খেয়ে লাগা।
আদার ব্যাপারি জাহাজের খবর ।
আদাড় গাঁয়ে শিয়াল রাজা।
আদায় কাঁচকলায় সম্বন্ধ।
আদার ব্যাপারি, জাহাজের খবরে কাজ কি।
আদি কহিলে মানুষ রুষ্ট।
আন্ কাপাস নে তুলো।
আন্ শুনতে কান।
আন সতীনে নাড়ে চাড়ে,বোন সতীনে পুড়িয়ে মারে।
আনারস বলে কাঁঠাল ভাই তুমি বড় খসখসে।
আপ ভালা তো জগৎ ভালা।
আপ রুচি খানা, পর রুচি পরনা।
আপন কোটে পাই চিঁড়ে কুটে খাই।
আপন কোলে ঝোল সবাই টানে।
আপন গাঁয়ে কুকুর রাজা
আপন গাঁয়ে শিয়াল রাজা।
আপন ঘরে সবাই রাজা।
আপন চরকায় তেল দাও।
আপন চেয়ে পর ভাল,পর চেয়ে জঙ্গল ভাল।
আপন ছিদ্র জানে না, পরের ছিদ্র খোঁজে।
আপন পাঁজি পরকে দিয়ে, দৈবজ্ঞ বেড়ায় পথে পথে।
আপন পাঁঠা লেজে কাটি।
আপন বুদ্ধি ছিল ভাল,পর বুদ্ধিতে পাগল হল।
আপন বুদ্ধিতে তর, পরের বুদ্ধিতে মর।
আপন বুদ্ধিতে ফকির হই, পর বুদ্ধিতে বাদশা নই।
আপন বুদ্ধিতে ভাত, পরের বুদ্ধিতে হাভাত।
আপন বেলা চাপন চোপন,পরের বেলা ঝুরঝুরে মাপন।
আপন বোন ভাত পায় না,শালীর তরে মণ্ডা।
আপন ভালাতো জগত ভালা ।
আপন ভালো পাগলেও বোঝে।
আপন হাত জগন্নাথ, পরের হাত এঁটো পাত।
আপন(আপনার) ঘোল কেউ টক বলে না।
আপন(আপনার) মান আপনি রাখ,কাটা কান চুল দিয়ে ঢাক।
আপন(আপনারা/নিজের) নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ।
আপন(নিজের) বেলায় আঁটিসাটি পরের বেলায় দাঁত কপাটি।
অপনা মাংসেঁ হরিণা বৈরি।
আপনা মাংসে হরিনা বৈরি। - হরিনের শত্রু তার মাংশ।
আপনার আপনি,ডোর আর কপনি।
আপনার কিছু নয়, জগৎ কেবল মায়াময়।
আপনার চেয়ে পর ভাল, পরের চেয়ে জংগল ভাল ।
আপনার ছেলটি খায় এতটি, বেড়ায় যেন লাটিমটি, পরের ছেলেটা খায় এতটা,বেড়ায় যেন বাঁদরটা।
আপনার ধন পরকে দিয়ে,দৈবকী মরে মাথায় হাত দিয়ে[দৈবকী=শ্রীকৃষ্ণের জননী]।
আপনার নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা।
আপনার পায়ে আপনি কুড়ুল মারা।
আপনার বেলায় ছ‘ কড়ায় গণ্ডা,পরের বেলায় তিন গণ্ডা। আপনার মতো জগৎ দেখা।
আপনার(নিজের) পায়ে কুড়ুল মারা।
আপনারটা ষোল আনা,পরেরটা কিছু না।
আপনি খেতে ভাত পায় না শংকরারে ডাক।
আপনি গেলে ঘোল পায় না, চাকরকে পাঠায় দুধের তরে।
আপনি ঠাকুর ভাত পায় না,শংকরাকে ডাকে।
আপনি পায় না, পরকে বিলায়।
আপনি বড় ভাল, তাই লোককে বলে কালো।
আপনি বাঁচলে বাপের নাম।
আপনি শুতে জায়গা পায় না, শংকরাকে ডাক।
আবর তাঁতি গোবর খায়,স্ত্রীর বাক্যে মরতে যায়।
আম না থাকলে আমড়া চোষে।
আম না পেয়ে আঁটি চোষা।
আম না হতে আমসত্ত্ব।
আম শুকোলে আমসি,বয়স গেলে কাঁদতে বসি।
আমড়া কাঠের ঢেকি।
আমড়াতলায় আম পেলে, আমতলায় কেবা যায়।
আমার আমার যত কর,চিনির বলদ হয়ে মর।
আমার কথা শোন্, ঘরদোর ভেঙে ফেলে নটে শাক বোন।
আমার নাম নিতাই, এক খাই এক থিতাই।
আমি কই কি! আমার সারেন্দা বাজায় কি!
আমি করি ভাই ভাই, দাদার কিন্তু মনে নাই।
আমি কি নাচতে জানি নে, মাজার ব্যথায় পারিনে।
আমি ছাড়তে চাইলে কি হইব- কম্বল তো আমারে ছাড়ে না।
আমিও ফকির হলেম, দেশেও আকাল এল।
আমিও রারি(বিধবা) হইলাম- রঙ বিরঙ্গের শাড়িও বাইর হইল।
আমে দুধে এক হয়,আদাড়ের আঁটি আদাড়ে যায়।
আমে বান,তেঁতুলে ধান।
আয় বুঝে ব্যয়।
আর কি নেড়া বেলতলা যায়?
আর গাব খাব না, গাবতলা দিয়ে যাব না,গাব খাব না-- খাব কি গাবের তুল্য আছে কি?
আরগুণ নেই ছাড়গুণ আছে।
আর রাজ্যে বামুন নেই,কাশী ঠাকুর চিঁড়ে খাও।
আরশোলা আবার পাখি।
আরশোলাও পাখি, আছে আর কি দেখতে বাকি।
আলস্য হেন ধন থাকতে দুঃখের অভাব কি?
আশা আর ফুঁ আছে, দুধ আর বাটি নেই।
আশা আর বাসা ছোট করতে নেই।
আশা আর বাসা ছোট করে মরে চাষা।
আশা আশা পরম দুখ,নিরাশাই পরম সুখ।
আশা বৈতরণী নদী।
আশায় আমার পড়ল ছাই,এখন বল কোথায় যাই?
আশায় খেলিছে পাশা।
আশায় বাঁচে চাষা।
আশায় মরে চাষা।
আশার চেয়ে নিরাশা ভাল, হয়ে গেল তো হয়ে গেল।
আশার আর শেষ নাই।
আষাঢ়ে না হলে সূত,হা সূত যো সূত, ষোলতে না হলে পুত, হা পুত যো পুত।
আষাঢ়ে পান চাষাড়ে খায়,গুয়া বনে পান গড়াগড়ি যায়।
আসতেও একা যেতেও একা,কার সঙ্গে বা কার দেখা।
আসর ঘরে মশাল নেই, ঢেঁকিশালে চাঁদোয়া।
আসলের খোঁজ নেই, সুদের খবর। আসেন লক্ষ্মী যান বালাই।
আহ্লাদে আটখানা, ল্যাজা মুড়ো দশখানা।





ইঙ্গিতে বুঝলে মন কাজ হতে কতক্ষণ।
ইচ্ছা থাকে যার উপায় হয় তার।
ইজ্জতের দাম লাখ টাকা।
ইটটি মারলেই পাটকেলটি খেতে হয়।
ইতো ভ্রষ্টস্ততো নষ্টঃ ন পূর্ব ন পর।
ইঁদুর গর্ত খুঁড়ে মরে,সাপ এসে দখল করে।
ইন্দ্রের শচী(যখনি যাহার, তখনি তাহার)।
ইল্লৎ যায় না ধুলে,স্বভাব যায় না মলে।
ইস্তক জুতো সেলাই, নাগাদ চণ্ডী পাঠ।





ঈদের চাঁদ।
ঈশ্বর ঈশ্বর করে যেই, তার ঘরে ভাত নেই।
ঈশ্বর মঙ্গলময়।
ঈশ্বর যদি করেন, কর্তা যদি মরেন,তবে ঘরে বসে কেত্তন শুনবো।
ঈশ্বর যা করেন মঙ্গলের জন্য।
ঈশ্বরে করে কাম মানুষের বদনাম।
ঈশান কোণের মেঘে ঝড় ওঠে বেগে(উত্তর ও পুব দিকের মাঝে
ঈশানকোণ, )।





উই ইন্দুর কুজন,ভাল ভাঙ্গে তিনজন;ছুচ সোহাগা সুজন,ভাল করে তিন জন।
উঁচান বাড়ি বড় ভয়,পড়লে বাড়ি সয়ে যায়।
উচিত কথা কইতে গেলে, তেলে বেগুনে ওঠে জ্বলে।
উচিত কথার ভাত নাই।
উচিত কথায় দেবতা তুষ্ট,উচিত কথায় মানুষ রুষ্ট।
উচিত কথায় বন্ধু বেজার, গরম ভাতে বিলাই বেজার।
উচিত কথায় বন্ধুও বিগড়ায়।
উঁচু হবে তো নিচু হও।
উচোট খেয়ে প্রণাম।
উজাড় বনে শিয়াল রাজা।
উঠন্ত বৃক্ষ পত্তনেই চেনা যায়।
উঠতি মুলো পত্তনে চেনা যায়।
উঠল বাই তো কটক যাই।
উড়তে না পেরে পোষ মানা।
উড়তে পারে না ফুরফুর করে।
উড়ে এসে জুড়ে বসা।
উড়ো খই গোবিন্দায় নমঃ।
উদ খেতে খুদ নেই, নেউলে বাজায় শিঙে।
উদুখলে খুদ নাই চাটগাঁয় বরাত।
উদ্যমেন হি সিদ্ধ্যন্তি কার্যাণি ন মনোরথৈঃ;নহি সুপ্তস্য সিংহস্য প্রবিশন্তি মুখে মৃগাঃ।
উদ্যোগিনং পুরুষসিংহমুপৈতি লক্ষ্মীঃ।
উদারচরিতানাং তু বসুধৈব কুটুম্বকম্।
উদে মাছ ধরে,খটাশে তিন ভাগ করে।
উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে।
উপদেশো হি মূর্খানাং প্রকোপায় না শান্তয়ে।
উপোসে যাবে দিন,ধার করলে হবে ঋণ।
উপকারী গাছের ছাল থাকে না।
উপর থেকে পড়ে গেল জনপাঁচ সাত,যার যেখানে ব্যথা তার সেখানে হাত[যার যেখানে স্বার্থ]।
উপরে বাবুয়ানা ভিতরে খড়ের বেনা।
উপরোধে ঢেঁকি গেলা।
উপায়ং চিন্তয়ন্ প্রাজ্ঞস্ত্বপায়মপি চিন্তয়েৎ[উপায়ং চিন্তয়েৎ প্রাজ্ঞঃ অপায়মপি চিন্তয়েৎ]।
উপোস করলে যাবে দিন, ধার করলে হবে ঋণ।
উপোসের কেউ নয়, পারণার গোঁসাই(উপোস ভাঙার পারণের সময় ভাল খাদ্য খেতে হাজির)।
উল্টা বুঝলি রাম।
উল্টে চোরা মশান গায়(চোর উলটে উপদেশ দেয়)।
উলুবনে মুক্তো ছড়ানো।






ঊনপাঁজুরে বরাখুরে (লক্ষ্মীছাড়া)।
ঊনো বর্ষা দুনো শীত।
ঊনোভাতে দুনো বল, অতি ভাতে রসাতল।





ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ।
ঋণকর্তা পিতা শত্রু। [ঋণকর্তা পিতা শত্রুর্মাতা চ ব্যভিচারিণী;ভার্যা রূপবতী শত্রুঃ পুত্র শত্রুরপণ্ডিতঃ।(অপণ্ডিত)]।





এ কূল ও কূল দুকূল গেল।
এ কি বিধির লীলা খেলা,কাকের গলায় তুলসিমালা।
এই ডুমুরের গুমোর কর,পাকলে ডুমুর পড়ে মর।
এই ফুরালে খাবে কি,ঘরে তো নেই(বা আছে)আইবুড়ো ঝি(কন্যার বিয়েতে টাকা দাবির ইঙ্গিত)।
এই দোষ না হেই দোষ- মাগী তুই ঘুইরা শোছ।
এই বএই লা নাও ঘর ছেয়ে,আকাশে মেঘ দেখ চেয়ে।
এই বিড়াল বনে গেলে বনবিড়াল(বাঘ)হয়।
এই যদি গোরাচাঁদ তবে কালাচাঁদ কেমন।
এক আঙুলে তুড়ি লাগে না।
এক আঁচড়ে চেনা যায়।
এক কড়ার মুরোদ নেই, ভাত মারবার গোঁসাই।
এক করতে আর হয়।
এক কলসি জল তুলে কাঁকালে দিলে হাত,এই মুখে খাবে তুমি বাগদিনীর ভাত। এক কাটে ভারে আর এক কাটে ধারে।
এক ক্ষুরে মাথা কামানো।
এক কাঠি বাজে না।
এক কান কাটা শহরের বার দে যায়,দু‘কান কাটা শহরের ভিতর দে যায়।
এক কানে শোনে অন্য কানে বেরোয়।
এক কাল ঠেকেছে তিনকাল গিয়ে, তবু আবার করবে বিয়ে?
এক কেঁড়ে দুধে এক ছিটে চোনা।
এক খায়,এক থিতায়।
এক ঢিলে দুই পাখি মারা।
এক গাছের ছাল অন্য গাছে জোড়া লাগে না।
এক গাঁয়ে ঢেঁকি পড়ে,আর গাঁয়ে মাথা ব্যাথা।
এক গাঁয়ের কুকুর আর গাঁয়ের ঠাকুর।
এক গালে চুন, এক গালে কালি।
এক গোয়ালে বিয়াইছে গাই- সেই রিস্তায় খালাতো ভাই।
একশ্চন্দ্রস্তমো হন্তি ন চ তারাগণা অপি।
এক চাঁদে জগৎ আলো।
এক চোখে কাঁদা, অন্য চোখে হাসা।
এক ছেলে তার ফুলের শয্যে,পাঁচ ছেলে তার কাঁটার শয্যে।
এক ছেলের মা, ভয়ে কাঁপে গা। [জনসংখ্যা বাড়ুক সেই ইঙ্গিতও]
এক জায়গায় খাল কেটে আরেক জায়গায় খাল ভরায়।
এক জায়গায় থাকলে হাঁড়িতে হাঁড়িতে ঠোকাঠুকি হয়।
এক ঝিকরে মাছ বেঁধে না সে-ই বা কেমন বড়শি,এক ডাকেতে সাড়া দেয় না সে-ই বা কেমন পড়শি।
এক ঢিলে দুই পাখি।
এক দোর বন্ধ হাজার দোর খোলা।
এক পুতের আশ নদীকূলে বাস।
এক পয়সা নাই থলিতে,লাফিয়ে বেড়ায় তবু গলিতে।
এক পা জলে, এক পা স্থলে।
এক পাগলে রক্ষা নেই সাত পাগলের মেলা।
এক পাঁঠা তিন বারে কাটা।
এক পোলা যার- হাজার নান্নত তার।
এক বুড়ির নানা দোষ,নাকের উপরে হল খোস।
এক ব্যঞ্জন ভাত তাও আবার নুনে পোড়া।
এক ভস্ম আর ছার,দোষগুণ কব কার।
এক মুখ সোনা দিয়ে ভরা যায়,পাঁচ মুখ ছাই দিয়েও ভরে না।
এক মুখে তিন কথা শুনে লাগে মনে ব্যথা।
এক মুখে দুই কথা।
একতাই বল।
এক মুরগি ক‘বার জবাই?
এক মুরগি সাত জায়গায় জবাই।
এক মাঘে শীত যায় না।
এক মায়ের এক পুত, খায়দায় যমের দূত।
এক মায়ের এক পুত- মইরা গেলে কুক্কুরুত।
এক যাত্রায় পৃথক ফল।
এক রত্তি দড়ি সকল ঘর বেড়ি।
এক লাউ-এর বীচি, কেউবা করে কচর কচর কেউবা আছে কচি।
এক সের জিনিসে পাঁচ সের ঠকানো।
এক হাটে কিনে আর এক হাটে বেচতে পারে।
এক হাতে তালি বাজে না।
এক হেঁসেলে তিন রাঁধুনি,পুড়ে মরে তার ফ্যান গালুনি।
একচোখো মাসি কারে ভালোবাসি।
একটি ইঁদুর যদি নড়ে চোরের প্রাণ ধড়ফড়ে।
একটি ভাত টিপলে, হাঁড়িসুদ্ধ ভাতের খবর মেলে।
একতাই বল।
একদিন ঘি-রুটি,একদিন দাঁত-ছিরকুটি।
একবার রাজাকার আজীবন রাজাকার, একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয়।
একবারের রোগী, আরবারের রাজা[রাজা=চিকিৎসক]।
একলা ঘরের গিন্নি হব চাবি কাঠি ঘুরিয়ে যাব।
একা ঘরের একা বউ খেতে বড় সুখ,মারতে এলে ধরতে নাই তাই বড় দুখ।
একা রামে রক্ষা নেই, সুগ্রীব দোসর।
একাই একশো।
একাদশে বৃহস্পতি।
একি ছেলের হাতে মোয়া।
একুশ কোঁড়া গুণে খান, ফুলের ঘায়ে মুচ্ছো যান।
একে তো মধুপর্কের বাটি তায় আবার কাত।
একে তো হনুমান,তায় আবার রামের বাণ।
একে মনসা তায় ধুনোর গন্ধ।
একে মিনমিন দুয়ে পাঠ, তিনে গোলমাল চারে হাট।
এখন না শুনলে বঁধু যৌবনের ভরে,পশ্চাতে কাঁদিতে হবে নয়নের নীরে।
এখনই রসগোল্লা খেয়েছি, চা‘য়ে আর চিনি দিও না, ব্লাডসুগার আছে।
এখান হতে মারলেম তির লাগল কলা গাছে,উরুত বেয়ে রক্ত পড়ে চোখ গেল রে বাবা(অসংলগ্ন কথা)।
এগুলে রাম পেছুলে রাবণ।
এগুলেও নির্বংশের বেটা,পেছুলেও নির্বংশের বেটা।
এঁটে ধরলে চিঁচিঁ করে, ছেড়ে দিলে লঙ্কা মারে।
এঁটো খায় মিঠার লোভে,যদি এঁটো মিঠা লাগে।
এঁটো পাত কখনো স্বর্গে যায় না।
এঁড়ে গরু, না টেনে দো।
এত সুখ যদি কপালে তবে কেন তোর কাঁথা বগলে।
এদিক নেই ওদিক আছে।
এমনি যায় না মাস,আবার দুদিন বেশি।
এমনি নাচুনি বুড়ি, তার উপর ঢোলের বাড়ি।
এমনেই নাচুনে বুড়ি, তার ওপর ঢোলের বাড়ি।
এমনিতে ছাই- তার উপর বাতাস।
এ্যাং যায় ব্যাং যায়,খলসে বলে আমিও যাই।
এয়সা দিন নেহি রহেগা।
এর মুণ্ডু ওর ঘাড়ে।
এরন্ডোঽপি দ্রুমায়তে।
এস্পার কি ওস্পার।





ঐ দিন আর নাইরে নাতু, খাবলা খাবলা পায়রার ছাতু।





ওজন বুঝে চলা।
ওঝার ঘাড়ে ভূতের বোঝা।
ওঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে[অমনি হল বিয়ে]।
ওরে পাগল খাবিনে, না, হাত ধোব কোথা?
ওল খেয়ে গোল।
ওষুধ ধরেছে।
ওস্তাদের মার শেষ রাতে। / ওস্তাদের মাইর শেষ রাইতে।





ঔষধার্থে সুরা পান, পান না বাড়ালেই থাকে মান।





ক অক্ষর গোমাংস।
ক‘টি ছেলে, না, পুড়িয়ে খাব[বধিরদের অসংলগ্ন কথা]।
কংস মামার আদর।
কই মাছের প্রাণ অল্পেতে না যান।
কই হইল আগরতলা, আর, কই চৌকিরতলা।
কইতে কইতে মুখ বাড়ে,খাইতে খাইতে পেট বাড়ে।
কইতে জানলে ঠকি না,বসতে জানলে উঠি না।
কইলাম কথা সবার মধ্যে; যার কথা তার গায়ে যায় বিন্দে
কুকুর রাজা হলেও জুতো খায়।
কুকুরকে নাই দিলে মাথায় ওঠে।
কুকুরের কামড় হাঁটুর নীচে।
কুকুরের পেটে ঘি হজম হয় না।
কুকুরের মুগের পথ্যি কুকুর বলে মোর এ কি বিপত্তি।
কুকুরের লেজে ঘি ঢালেলও সোজা হয় না।
কচু কাটতে কাটতেই ডাকাত।
কচু পোড়া খাওয়া।
কচুর বেটা ঘেচু,বড় বাড়েন তো মান।
কচি খুকি, কুলোয় শুয়ে তুলোয় দুধ খান।
কুঁজী, না, ঐ তো পুঁজি।
কুঁজোর ইচ্ছা চিত হয়ে শোয়।
কুত্তা হাগে না ক্ষিদার ডড়ে।
কুত্তার পেটে ঘি সয় না।
কুত্তার, দৌড় ছারা হাডা নাই, বাইত গা ( ঘরে গিয়া ) দেহে কাম নাই।
কুত্তারে যাই তেলুই দিতে- কুত্তায় যায় গু খাইতে।
কড়ি থাকলে বেয়াইয়ের বাপের শ্রাদ্ধ হয়, না থাকলে নিজের বাপের শ্রাদ্ধও হয় না।
কড়ি দিয়ে কানা গরু কেনা।
কড়ি দিয়ে কিনব দই গোয়ালিনী মোর কিসের সই?
কড়ি দিয়ে খাই দই,কি করবে মোর গোয়ালা সই?
কড়ি দিয়ে হেঁটে নদী পার।
কড়ি লবে গুণে, পথ চলবে জেনে [গুরু করবে জেনে,জল খাবে ছেনে,কড়ি লবে গুণে, পথ চলবে জেনে]।
কড়ি হলে বাঘের দুধ মেলে।
কড়িকাঠ গোণা।
কড়ির জিনিস পড়িস না?
কুঁড়ে কৃষাণ অমাবস্যা খোঁজে।
কুঁড়ে গরুর এঁটুলি সার।
কুঁড়ে ঘরে বাস খাট পালঙ্কের আশ।
কুঁড়ে পাটুনির মুখে আঁটুনি।
কণ্টকেনৈব কণ্টকম্।
কত ধানে কত চাল।
কত ব্রত করলি যশী,(এখন)বাকি ভূমি-একাদশী।
কত রঙ্গ দেখালি মাসি।
কত রবি জ্বলে রে, কেবা আঁখি মেলে রে?
কত সাধ যায় রে চিতে, বেগুন গাছে আঁকশি দিতে।
কতই সাধ হয় রে চিতে,ফোগলা দাঁতে মিশি দিতে।
কতইবা দেখব আর ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার।
কতক্ষণ রহে শিলা শূন্যেতে মারিলে?
কথা টলার চেয়ে পা টলা ভালো।
কথায় কথা বাড়ে, ক্রোধে হয় ঝড়, কথা না বাড়িয়ে সখি যাও এবে ঘর।
কথায় চিঁড়ে ভেজে না।
কথার গুণে বার্তা নষ্ট।
কথার নেই মাথা, গরমে গায়ে কাঁথা।
কনের ঘরের মাসি, বরের ঘরের পিসি।
কনের মা কাঁদে, আর টাকার পুঁটুলি বাঁধে।
কপট প্রেমে লুকোচুরি,মুখে মধু প্রাণে ছুরি।
কৃপণের ধন বর্বরে খায়, কৃপণ করে হায় হায়।
কুপুত্র যদ্যপি হয়,কুমাতা কখন নয়।
কপাল গুণে গোপাল ঠাকুর।
কপাল ভাঙলে জোড়া লাগে না।
কপাল সাথে সাথে ফেরে।
কপালে নেইকো ঘি ঠকঠকালে হবে কি?
কপালের লিখন না যায় খণ্ডন।
কম্বলের লোম বাছতে গাঁ উজাড়।
কুমিরের সঙ্গে বিবাদ করে জলে বাস করা।
কয়লা ছাড়ে না ময়লা।
কয়লা ধুলে ছাড়ে না ময়লা।
কুয়ো হয়,আমের ভয়,তাল তেঁতুলের কিছুই নয়[কুয়ো=কুয়াশা]।
কর গোবিন্দ বাপের শ্রাদ্ধ আরও বামুন আছে।
কর যদি তাড়াতাড়ি, ভুলের হবে বাড়াবাড়ি।
করছে কীসের জাঁক, ময়না টিয়ে উড়িয়ে দিয়ে খাঁচায় পোষে কাক।
কর্তা পান না, তাই খান না।
কর্তা যে ঘি খান তা এক আঁচড়েই মালুম।
কর্তার ইচ্ছায় কর্ম,উলু বনে কেত্তন।
কর্মণ্যেবাধিকারস্তে না ফলেষু কদাচন।
কলসির জল গড়াতে গড়াতেই শেষ।
কলা গাছ কাটতে কাটতে ডাকাইত।
কলার ভেলায় সাগর পার।
কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না।
কষতে কষতে বাঁধন ছেঁড়ে।
ক্ষুদ খেয়ে পুঁজি করে দু-পুরুষে খরচ করে।
ক্ষমার বড় গুণ নাই, দানের বড় পুণ্য নাই।
ক্ষিদের চোটে পাটকেলে কামড়।
ক্ষেত্রে কর্ম বিধিয়তে।
ক্ষেতের চাষে দুঃখ নাশে।
কা কস্য পরিবেদনা।
কাক কোকিল একই বর্ণ, কিন্তু স্বরে ভিন্ন ভিন্ন।
কাক খায় কাঁঠাল,বকের মুখে আঠা।
কাক মনে করে আমি বড় সেয়ানা।
কাক সকলের মাংস খায়,কাকের মাংস কেউ খায় না।
কাকের উপর কামানের চোট।
কাগের ছা, বগের ছা(লেখা)।
কাকের ডিম সাদা হয়, বিদ্বানেরও ছেলে গাধা হয়।
কাকের পিছে ফিঙে লাগা।
কাকের বাসায় কোকিলের ছা,জাত স্বভাবে কাড়ে রা।
কাকের মাংস কাকে খায় না,জোঁকের গায়ে জোঁক বসে না।
কাঙলা আপনা সমালা।
কাঙালকে শাকের ক্ষেত দেখাতে নেই।
কাঙালের কথা বাসি হলে মিঠে।
কাঙালের ঘোড়া রোগ।
কাঙালের ঠাকুর ব্যাধি।
কাঙালের রাংতা-ই সোনা।
কাচঃ কাচো মণির্মণিঃ।
কাচায় না নোয়ালে বাশ পাকলে করে ঠাস ঠাস।
কাঁচপোকার আরশোলা ধরা।
কাঁচা খাই,ডাসা খাই, আর খাই পাকা।
কাঁচা গাথুনি, দুনো খাটুনি।
কাঁচা বাঁশ ঘুণ ধরা।
কাঁচা বাঁশে ঘুণ ধরলে, রক্ষা নাই তার কোনও কালে।
কাঁচা বাঁশে ঘুণ ধরা।
কাঁচা মাটিতে পা দেওয়া।
কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে টাঁশ টাঁশ।
কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ...।
কাছা দেয়ার কাপড় নাই মাথার ওপর ঘোমটা চাই।
কাছা দিতে কোঁচা আঁটে না,কোঁচা দিতে কাছা আঁটে না।
কাজ নেই কাজ করে, ধানে চালে এক করে।
কাজ সেরে বসি, শত্রু মেরে হাসি।
কাজও নেই, কামাইও নেই।
কাজীর গাই কিতাবে আছে- গোয়ালে নাই।
কাজে এড়া ভোজনে দেড়া।
কাজে কুঁড়ে ভোজনে দেড়ে,বচনে মারে তেড়ে ফুঁড়ে।
কাজে কম খেতে যম।
কাজের বেলায় কাজী, কাজ ফুরোলে পাজি।
কাজের বেলায় ভাগে খাবার বেলায় আগে।
কাজের মধ্যে চাষ, রোগের মধ্যে কাশ।
কাজের মধ্যে দুই খাই আর শুই।
কাজের সময় কাজী, কাজ ফুরালেই পাজী!
কাটতে কাটতে নির্মূল।
কাটলে রক্ত নেই, কুটলে মাংস নেই।
কাটা কান চুল দিয়ে ঢাকি।
কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে।
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা।
কাঁটা বিনা কমল নাই, কলঙ্ক বিনা চাঁদ নাই।
কাঠবিড়ালীর সেতুবন্ধন।
কাঠের বিড়াল হোক তাতে কিবা আসে যায়, ইঁদুর ধরে কিনা সেটাই বিষয়।
কাঠের বিড়াল হোক, ইঁদুর ধরতে পারলেই হল।
কাঁড়ানো চালে তিন ঘা পাড়।
কাঁধে কুড়ুল বনময় খোঁজা।
কানু ছাড়া গীত নাই।
কান টানলে মাথা আসে।
কানা ক‘বার নড়ি(যষ্টি) হারায়?
কানা গরু বামুনকে দান।
কানা গরুর ভিন'ন গোঠ।
কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন।
কানা পুতে পোষে, রাজা বেটি(ঝিয়ে/বৌয়ে) শোষে।
কানা পুতের নানা রোগ।
কানা মেঘের বৃষ্টি সর্বত্র নয় দৃষ্টি।
কানে কলম গুঁজে দুনিয়ায় খোঁজা।
কানে দিয়েছ তুলো, পিঠে বেঁধেছ কুলো।
কানে হাত না দিয়েই বলে কান নিয়ে গেল চিলে
কানের জল, জল দিলেই বেরোয়।
কানের পোকা বের করা।
কাপড় দিয়ে আগুন ঢাকা।
কাপড় হলে পচা,আঙ্গুল হয় খোঁচা।
কাপড়ের দাগ যায় ধুলে, মনের দাগ যায় ম‘লে।
কাম নাই কুত্তার, আইলে আইলে দৌড়।
কামারের দুহানে কুরান শরীফ পরুমনি?
কামাতে না পারেন নাপিত ধামা ভরা ক্ষুর।
কামানো মাথায় ক্ষুর বোলানো।
কামারের কাছে লোহা জব্দ।
কার কপালে কেবা খায়।
কার শ্রাদ্ধ কে বা করে, খোলা কেটে বামুন মরে।
কার শ্রাদ্ধ, বামুনের হদ্দ।
কার সাধ্য মারে তারে,খোদা যারে রাজি।
কারও ঘর পোড়ে, কেউ আগুন পোহায়(খই খায়)।
কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ।
কারও শাকে বালি, কারও দুধে চিনি।
কারে পড়লে আল্লার নাম।
কাল রাম রাজা হবে আজ বনবাস।
কাল হাঁড়ি, কেয়া পাত, তবে দেখবি জগন্নাথ।
কালনেমির লঙ্কা ভাগ।
কালস্য কুটিলা গতিঃ।
কালা পুরুত, তোতলা যজমান।
কালা বলে গায় ভালো, কানা বলে নাচে ভালো।
কালা শোনে ঢাকের বাদ্যি,কালা বলে মোর বিয়ের বাদ্যি।
কালি কলম পাত, তবে লেখার হাত।
কালি কলম মন,লেখে তিন জন।
কালির অক্ষর নাইকো পেটে, চণ্ডী পড়ে কালীঘাটে।
কালে কত দেখব আর, ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার।
কালে কালে কতই হল, পুলি পিঠের লেজ গজালো।
কালের আবার কালাকাল।
কালো জগত আলো।
কালোয় কালোয় ধলো হয় না।
কালো কাপড় রুখু মাথা, লক্ষ্মী বলেন থাকব কোথা?
কাশীধামে কাক মরেছে কুমিল্লাতে হাহাকার।
কি অপূর্ব সৃষ্টি না তিত না মিষ্টি।
কি দেব, কি দেব খোঁটা, গয়ায় মরেছে (তার) বাপ-বেটা।
কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে, কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।
কিনতে পাগল, বেচতে ছাগল।
কিবা জ্যেষ্ঠ কি কনিষ্ঠ,যেই বুঝে সেই শ্রেষ্ঠ।
কিমাশ্চর্যমতঃপরম্।
কিল খেয়ে কিল চুরি।
কিলিয়ে কাঁঠাল পাকানো।
কিয়ের মইধ্যে কী পান্তাভাতে ঘি।
কিসে নেই কী, পান্তাভাতে ঘি।
কী জামানা আইলো রে নানী; বাঘের খাচায় ছাগল ঢুইকা করে কত মস্তানি
কীর্তিযস্য স জীবতি[চলচ্চিত্তং চলদ্বিত্তং চলজ্জীবনযৌবনম্। চলাচলমিদং সর্বং কীর্তিযস্য স জীবতি]।
কেউ মরে, কেউ হরি হরি বলে।
কেউ মরে বিল সেচে কেউ খায় কই।
কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরুলো।
কেঁচো দিয়ে কাতলা ধরা।
কোথা রাম রাজা হবে, না কোথা রাম বনে যাবে।
কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
কোদাল পাড়লেই হয় না চাষ।
কোন্ আক্কেলে কয় সংসার আমার নয়?
কোন কালে নাইকো গাই, চালুনি নিয়ে দুইতে যাই।
কোন্ বা বিয়ে তার দুপায়ে আলতা।





খঞ্জনের নাচ দেখে চড়ুইয়ের নাচ।
খুঁট আখুরে গাঁয়ের বালাই(অল্প শিক্ষিত)।
খুঁটির জোরে মেড়া লড়ে।
খড়ম পায়ে দিয়ে গঙ্গা পার।
খড়ের আগুন যেমন জ্বলে তেমন নেভে।
খাই দাই বাঁশি বাজাই, রগড়ের ধার ধারি না।
খাই দাই ভুলিনি, তত্ত্ব কখন ছাড়িনি।
খাইতে পায় না খুদের ভাত, পুটকি দিয়া দেয় ম্যারা পিঠা।
খাওয়াবে হাতির ভোগে, দেখবে বাঘের চোখে।
খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি
খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে,কাল কাল হল তার এঁড়ে গরু কিনে।
খাঁচায় পুরে খোঁচা মারা।
খাট ভাঙ্গলে ভূমিশয্যে।
খাটে খাটায় লাভের গাঁতি,তার অর্ধেক মাথার ছাতি;ঘরে বসে পুছে বাত,তার কপালে হা-ভাত।
খাতায় নাম লেখানো।
খাঁদা নাকে তিলক পরা।
খাঁদা নাকে নথ আর গোদা পায় মল।
খাবার আছে চা‘বার নেই, দেবার আছে নেবার নেই।
খাবার বেলায় মস্ত হাঁ, উলু দেবার বেলায় মুখে ঘা।
খাবার বেলায় ন‘বার মা, ছেলে ধরতে কেউ না।
খাবার সময় শোবার চিন্তা।
খায় দায় পাখিটি,বনের দিকে আঁখিটি।
খায় না খায় সকালে নায়,হয় না হয় দুবার যায়;তার কড়ি কি বৈদ্যে খায়?
খায় মালকোঁচা মেরে ওঠে হাঁটু ধরে।
খাল কেটে কুমির আনা।
খাল পার হয়ে কুমিরকে কলা দেখানো।
খালি কলসি বাজে বেশি।
খিড়কি দিয়ে হাতি গলে, সদরে বাধে ছুঁচ।
খেঁকি কুকুরের ঘেউ ঘেউ সার।
খেতে খেতে লোভ বাড়ে, কাঁদতে কাঁদতে শোক বাড়ে।
খেতে পায় না পচা পুঁটি, হাতে পরে হিরের আংটি।
খেতে পেলে শুতে চায়।
খেদাই না, তোর উঠোন চষি।
খেয়ে দেয়ে একাদশী।
খোঁড়ার পা খানায় পড়ে।
খোদর ওপর খোদকারি।
খোদার নাও দোয়ায় চলে।
কাদায় পড়লে হাতি, চামচিকেতে মারে লাথি।
খোশ খবরের ঝুটাও ভাল।
খোসে তেল নেই, কলাবড়ার সাধ।





গঙ্গা গঙ্গা না জানি কত রঙ্গা-চঙ্গা।
গঙ্গা জলে গঙ্গা পূজা।
গঙ্গার জল গঙ্গায় র‘ল, পিতৃপুরুষ উদ্ধার হল।
গজভুক্তকপিত্থবৎ[এখানে গজ=কয়েৎবেলের ভিতরের ক্ষুদ্র পোকা, কপিত্থ=কয়েৎবেল]।
গুটি পোকা গুটি করে, নিজের ফাঁদে নিজে পড়ে।
গড়তে চায় ঠাকুর, হয়ে যায় কুকুর।
গুণে নুন দিতে নেই/গুণের ঘাট নেই(গুণহীনকে ব্যঙ্গ)।
গুণের বালাই নিয়ে মরি।
গতর নেই চোপায় দড়,মেঙ্গে খায় তার পালি বড়।
গতস্য শোচনা নাস্তি।
গদাইলসকরি চাল।
গুনে কড়ি জলে ফেলা।
গব্য থাকলে আগে পাছে,কি করবে তার শাকে মাছে।
গুবরে পোকার পদ্মমধু খেতে সাধ।
গভীর জলের মাছ।
গরু জরু ধান রাখ বিদ্যমান/গরু জরু ধান না দেখলেই যান।
গুরু বোবা, শিষ্য কালা(কালা=বধির)।
গুরু মারা বিদ্যে।
গরু মেরে জুতো দান।
গরজ বড় বালাই।
গর্জায় কিন্তু বর্ষায় না।
গর্তের সাপ খুঁচিয়ে বার করা।
গ্রহণ লাগলে সাবই দেখে(গ্রহণ = বিপদ)।
গ্রামের নাম তেঘরে, তার আবার উত্তর পাড়া দক্ষিণ পাড়া।
গরিবের কথা বাসি হলে মিঠে লাগে।
গরিবের ঘোড়া রোগ।
গরীবের বৌ হগ্গলের ভাবি।
গরিবের রাঙতাই সোনা।
গরু গোয়ালের পাশের ঘাস খায় না।
গলা টিপলে এখনও দুধ বেরোয়।
গলায় কাঁটা ফুটলে বেড়ালের পায়ে ধরে।
গলার নীচে গেলে আর মনে থাকে না।
গৃহ স্থির আগে কর, গৃহিনী স্থির তার পরে।
গৃহিনী গৃহমুচ্যতে।
গাঁ বড়, তার মাঝে পাড়া, নাক নেই তার নথ নাড়া।
গাঁয়ে মানে না, আপনি মোড়ল।
গাই কিনবে দুয়ে বলদ কিনবে বেয়ে।
গাই ছিল না হল গাই,চালুনি নিয়ে দুইতে যাই।
গাই নেই তো বলদ দো।
গাই বাছুরে ভাব থাকলে মাঠে গিয়ে দুধ দেয়।
গাইতে গাইতে গায়েন, বাজাতে বাজাতে বায়েন।
গাঙ্গে গাঙ্গে দেখা হয়, বোনে বোনে নয়।
গাছ থেকে পড়ে গেল জন পাঁচ সাত, যার যেখানে ব্যথা তার সেখানে হাত।
গাছে উঠতে পারে না বড় আমটি আমার।
গাছে ওঠে পড়তে, জামিন দেয় মরতে।
গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল।
গাছে তুলতে সবাই আছে।
গাছে তুলে মই কেড়ে নেওয়া।
গাছে/গাছ না উঠতেই এক কাঁদি।
গাছের পরিচয় ফলে।
গাছেরও খায় তলারও কুড়ায়।
গাজনের নেই ঠিক ঠিকানা, ডেকে বলে বাজনা বাজা।
গাধা জল ঘোলা করে খায়।
গাধা পিটিয়ে ঘোড়া করা।
গায়ে ওড়ে খড়ি, কলপ দেওয়া দাড়ি।
গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল।
গায়ের কালি ধুলে যায় মনের কালি ম‘লে যায়।
গায়ের গন্ধে ভূত পালায়,মাথায় ফুলেল তেল।
গিন্নির উপর গিন্নিপনা ভাঙা পিঁড়েয় আলপনা।
গিন্নির পাপে গেরস্থ নষ্ট।
গেঁয়ো যোগীর ভিখ মেলে না।
গোঁগা(গোঁ গোঁ করে কথা বলে, অর্থাৎ বোবা) ছেলের নাম তর্কবাগীশ।
গোজন্ম ঘুচে গন্ধর্ব জন্ম।
গোড়া কেটে আগায় জল।
গোদা পায়ে মল।
গোদের উপরে বিষফোঁড়া।
গোঁফ দেখলেই শিকারী বেড়াল চেনা যায়।
গোঁফ নেই কোনও কালে,দাড়ি রেখেছেন তোবড়া গালে(অনভিজ্ঞ প্রয়াস)। গোঁয়ারের মরণ খোঁয়ারে।
গোভাগ্য নেই,এঁটুলি ভাগ্য আছে।
গো-মড়কে মুচির পার্বণ।
গোলে হরিবোল।





ঘটি ডোবে না নামে তালপুকুর।
ঘুঘু দেখেছ ফাঁদ দেখনি।
ঘট গড়তে পারে না মেটের বায়না নেয়(মেটে=বড় জালা)।
ঘটকালি করতে গিয়ে বিয়ে করে আসা।
ঘুঁটে কুড়ুনির ব্যাটার নাম চন্দনবিলাস।
ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে, তোমার একদিন আছে শেষে।
ঘন দুধের ফোঁটা, বড় মাছের কাটা(ভাল জিনিসের অল্পও ভালো)।
ঘন্টা বাজিয়ে দুর্গোৎসব, ইতু পুজোয় ঢাক।
ঘুমন্ত বাঘে শিকার ধরে না।
ঘ্যান ঘেনে যে খোকা, বের করে কান-পোকা।
ঘর কন্না করতে গেলে ঘটি বাটির সঙ্গে ঝগড়া হয়।
ঘর চোরে পার নেই।
ঘর থাকতে বাবুই ভেজা।
ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখে ডরায়।
ঘর ফাঁদবে ছাইবে না, ধার দেবে চাইবে না।
ঘর ভেদেই রাবণ নষ্ট।
ঘর সন্ধানী বিভীষণ।
ঘর-জ্বালানো,পর ভুলানো।
ঘরজামাইয়ের পোড়া মুখ, মরা বাঁচা সমান সুখ।
ঘরদোর নেই যার আগুনে কি ভয় তার।
ঘরমুখো বাঙালি, রণমুখো সেপাই।
ঘরামির ঘর ছেঁদা।
ঘরে ছুঁচোর কেত্তন, বাইরে কেঁচোর পত্তন।
ঘরে নেই ঘটিবাটি, কোমরে মেলাই চাবি কাঠি।
ঘরে নেই ভাত কোঁচা তিন হাত।
ঘরে নেই যা, বাছা মাগে তা।
ঘরে বসিয়ে মাইনে দেয় এমন মনিব কোথোয় পাব?
ঘরে বসে রাজা উজির মারা।
ঘরে বসে রাজার মাকে ডাইনি বলা।
ঘরে বাইরে এক মন তবে হয় কৃষ্ণ ভজন।
ঘরে ভাত না থাকলে শালগ্রামের সোনা বেচে খায়।
ঘরে ভাত নেই দোরে চাঁদোয়া।
ঘরে ভাত নেই, যত্নে ঘাট নেই।
ঘরের ইঁদুর বাঁশ কাটলে ধরে রাখে কে?
ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো।
ঘরের ঢেঁকিই কুমির।
ঘরের ভাত দিয়ে শকুনি পোষে, গোয়ালের গরু টেঁকে কীসে?(নীচকে উপকার করার ফল)।
ঘরের মা ভাত পায় না, পরের জন্য মাথা ব্যথা।
ঘরের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা।
ঘরের শত্রু বিভীষণ।
ঘরের ষাঁড় পেট ফাঁড়ে।
ঘষতে ঘষতে পাথরও ক্ষয়ে যায়।
ঘষে মেজে রূপ, আর ধরে বেঁধে প্রেম।
ঘষে মেজে সুন্দরী।
ঘায়ো কাঠালের মুচি খদ্দর।
ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে গেল।
ঘি আদুড়, ঘোল ঢাকা।
ঘি দিয়ে ভাজ নিমের পাতা, তবু যায় না জাতের জাতা।
ঘি ভাত খেতে ঠোঁট পুড়লো।
ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া।
ঘোড়া থাকলে চাবুকের ভাবনা?
ঘোড়া দেখলেই খোঁড়া।
ঘোড়া ভেড়ার এক দর।
ঘোড়ার কামড় ছাড়তে জানে না।
ঘোড়ার গোয়ালে ভেড়া ঢোকা।
ঘোড়ার ঘাস কাটা।
ঘোড়ার পেট গাধার পিঠ,খালি থাকে কদাচিৎ।
ঘোমটার ভিতর খ্যামটা নাচা।
ঘোমটার তলে খেমটা নাচ।







চক চক করলেই সোনা হয় না।
চক্রবৎ পরিবর্তন্তে দুঃখানি চ সুখানি চ।
চক্রবৎ পরিবর্তন্তে দুঃখানি সুখানি চ।
চক্ষু কর্ণের বিবাদ ভঞ্জন।
চক্ষে চক্ষে যত ক্ষণ, প্রাণ পোড়ে ততক্ষণ।
চক্ষে দেখলে শুনতে চায় এমন বোকা আছে কোথায়?
চক্ষের আড়াল হলেই মনের আড়াল।
চড় মেরে গড় করা।
চড় মেরে চড় খাওয়া।
চূড়ার উপর ময়ূর পাখা।
চণ্ডীচরণ ঘুঁটে কুড়োয়, রামা চড়ে ঘোড়া।
চতুরের সঙ্গে চতুরালি।
চন্দনং ন বনে বনে।
চন্দ্র সূর্য অস্ত গেল, জোনাকি ধরে বাতি;মোগল পাঠান হদ্দ হল ফারসি পড়ে তাঁতি।
চরণামৃত চরণামৃত, না জানি কি অমৃত,খেয়ে দেখি না জল।
চুরি বিদ্যে বড় বিদ্যে যদি না পড়ে ধরা, যদি পড়ে ধরা তবে হাতে পায়ে দড়া। চুল থাকে তো বাঁধি, গুণ থাকে তো কাঁদি।
চলতে পারে না তার বন্দুক ঘাড়ে।
চল্লেই চল্লিশ বুদ্ধি, না চল্লেই হতবুদ্ধি।
চুলোর উপর ক্ষীর মন নয় স্থির।
চাকরি তালপাতার ছাউনি।
চাকরি মেঘের ছায়া,মিছে কর তার মায়া।
চাচা আপন প্রাণ বাঁচা।
চাচাই বল কাকাই বল,কলাটি পাঁচ কড়া।
চাঁদে কলঙ্ক আছে, গোলাপে কণ্টক।
চাঁদের কাছে জোনাকি পোকা,ঢাকের কাছে টেমটেমি।
আকাশে থুতু ফেললে নিজের গায়ে পড়ে।
চাপ পড়লেই বাপ।
চাল কি দর, না মামার ভাতে আছি।
চাল নাই ধান নাই,গোলাভরা ইঁদুর।
চাল নেই তার ধুচুনি নাড়া,নাক নেই তার নথ নাড়া।
চালুনি বলে ছুঁচ তোর পিছনে ফুটো।
চালুনি বলে ধুচুনি ভাই তুমি বড় ফুটো।
চালে খড় নেই,ঘরে বাতি, বিছানা নেই পোহায় রাতি।
চালের দর কত, না মামার ভাতে আছি।
চালের বাতায় মাণিক থুয়ে উলু বনে হাতড়ানো।
চিঁড়ের বাইশ ফের।
চিন্তা জ্বরো মনুষ্যানাম্।
চিন্তের মায়ের চিন্তে হাটের লোক শোয় কোথা।
চিৎপাতের কড়ি উৎপাতে যায়।
চিল পড়লে কুটোটাও নিয়ে ওঠে।
চিলে কান নিয়ে গেল।
চেটায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন।
চেনা বামুনের পৈতে লাগে না।
চোখ থাকতে কানা।
চোখ বন্ধ করলে কি প্রলয় বন্ধ হয়?
চোখের দোষে সব হলদে।
চোর চায় ভাঙা বেড়া।
চোর ছেঁচড় চোপায় দড়, আগে দৌড়ায় ঠাকুর ঘর।
চোর দিয়ে চোর ধরা।
চোর ধরতে চোরকে লাগানো।
চোর গেলে বুদ্ধি বাড়ে।
চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে।
চোর ভাল তো বেকুব ভালো না।
চোরকে বলে চুরি করতে গেরস্তকে বলে সজাগ থাকতে।
চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী।
চোরে উপর বাটপাড়ি।
চোরে কামারে দেখা নেই সিঁধ কাঠি গড়া।
চোরে চোরে মাসতুতো ভাই।
চোরের উপর বাটপারি।
চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়া।
চোরের শতেক রাত গেরস্থের এক রাত।
চোরের গরু গোয়ালে বাঁধা।
চোরের দশদিন, গেরস্থের এক দিন।
চোরের মনে বোঁচকা।
চোরের মা'র বড় গলা।
চোরের রাত্রিবাসও লাভ।
চোরের সাক্ষী গাঁট কাটা, শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল।
চোরের সাক্ষী গাইদ কাটা।
চোরের সাক্ষী মাতাল।
চৌকিদারি কি ঝকমারি।





ছুঁচ হয়ে ঢোকে ফাল হয়ে বেরোয়।
ছুঁচো মেরে হাতে গন্ধ।
ছুঁচোয় যদি আতর মাখে তবু কি তার গন্ধ ঢাকে।
ছুঁচোর গোলাম চামচিকে,তার মাইনে চৌদ্দ সিকে।
ছল করে জল আনা।
ছাই চাপা কি আগুন রয়?
ছাই পায় না, মুড়কি জলপান।
ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো।
ছাগল দিয়ে ধান মাড়ানো।
ছাগল বলে আলুনি খেলাম,গেরস্ত বলে প্রাণে ম‘লাম।
ছাগলে কি না খায়, পাগলে কি না কয়?
ছাগলের তৃতীয় সন্তান[বঞ্চিত]
ছাঁচের ঘরে খাবি খায়, সমুদ্রপার হতে চায়।
ছাতুর হাঁড়িতে বাড়ি পড়া।
ছাতা দিয়ে মাথা রাখা।
ছায়াতে ভূত দেখা।
ছাল নেই কুত্তার বাঘা নাম।
ছাল নাই কুত্তার বাঘা ফাল।
ছিকলি কাটা টিয়া।
ছিঁড়ল দড়া তো ছুটল ঘোড়া।
ছিঁড়ে ছিঁড়ে কাটুনি, পুড়ে পুড়ে রাঁধুনি।
ছিলাম রোগী হলাম রোজা।
ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকা স্বপ্ন দেখা।
ছেড়ে দিয়ে তেড়ে ধরা।
ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।
ছেঁদো কথার মাথায় জটা, খুলতে গেলে বিষম ল্যাঠা।
ছেলের চেয়ে ছেলের মাথা ভারী।
ছেলের হাতের মোয়া।
ছোট কাঁটাটি ফোটে পায়,তুলে ফেল নইলে দায়।
ছোট মুখে বড় কথা।
ছোট সরাটি ভেঙে গেছে, বড় সরাটি আছে, নাচ-কোঁদ কেন বউ, আমার আন্দাজ আছে।





জগৎ জুড়ে জাল ফেলেছে, পালিয়ে বাঁচবি কোথা?
জঙ্গলা কখন পোষ না মানে, মন সদা তার সোঁদর বনে।
জুতো মেরে গরু দান।
জুতো মেরেছে অপমান তো করেনি?
জন জামাই ভাগনা এ তিন নয় আপনা।
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী।
জন্ম মৃত্যু বিয়ে__ তিন বিধাতা দিয়ে।
জন্মে দেখেনি লোহা, কোদালকে বলে গুণছুঁচ।
জন্মের মধ্যে কর্ম নিমুর চৈত্র মাসে রাস(সামান্য কাজ করে অকর্মণ্য লোকের অহংকার)।
জপ নেই তপ নেই ভস্মমাখা গায়।
জপতপ কর কি মরতে জানলে ডর কি?
জমি অভাবে উঠোন চষা।
জুয়াচোরের বাড়ি ফলার, না আঁচালে বিশ্বাস নেই।
জ্যান্ত মাছে পোকা পড়ানো।
জল খেয়ে জলের বিচার(জাত জিজ্ঞাসা)।
জল ছিটালে লগির খোঁচা খেতে হয়।
জল জল বৃষ্টির জল, বল বল বাহুবল।
জলে কুমির ডাঙায় বাঘ।
জলে তেলে মিশ/খাপ খায় না।
জলে পাথর পচে না।
জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে বিবাদ।
জলের কুমির ডাঙ্গায় এল।
জলের ছিটে দিয়ে লগির গুঁতো খাওয়া।
জলের শত্রু পানা, মানুষের শত্রু কানা।
জাগন্ত ঘরে চুরি নেই।
জাতও গেল পেটও ভরল না।
জাতের পোলা আববা কয়..কুকখেনের পোলা শালা কয়।
জানিবে শমন ভয়, দুর্জনের আশ্রয়।
জামায়ের জন্য মারে হাঁস গুষ্টি সুদ্ধ খায় মাস।
জামের খোসা ফেলে খাওয়া।
জাল ছেঁড়া পলো ভাঙা(দুর্ধর্ষ লোক)।
জিব পুড়ল আত্মদোষে, কি করবে মোর হরিহর দাসে।
জীব দিয়েছেন যিনি আহার দেবেন তিনি।
জেলের পরনে টেনা, মাছ বেচুনির কানে।
জোছনাতে ফটিক ফোটে, চোরের মায়ের বুক ফাটে।
জোয়ার মাত্রেই ভাঁটা আছে।
জোয়ারের জল কতক্ষণ।
জোর যার মুল্লুক তার।





ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামৎ বাড়ে।
ঝাঁকের কই ঝাঁকে ফিরে যায়।
ঝাঁঝরি বলে ছুঁচকে তুই বড় ফুটো।
ঝাঁটা দিয়ে বিষ ঝাড়ানো।
ঝি জব্দ কিলে, বউ জব্দ শিলে, পাড়াপড়শি জব্দ হয় চোখে আঙুল দিলে।
ঝিকে মেরে বৌকে শেখানো।
ঝি রে মাইরা বউরে বুঝায়।
ঝির ঝি করবে কি(অনাবশ্যাক আশা)?
ঝোলে ঝালে অম্বলে, সব ঠাঁই বেগুন চলে।









টক টেশো আঁটিসারা, শাঁসশূন্য আঁশ ভরা, এই আম বিলাবার ধারা।
টকের জ্বালায় দেশ ছাড়লাম তেঁতুল তলায় বাস।
টাক, প্রকৃতি, গোদ মরণে হয় শোধ।
টাকা তুমি যাচ্ছ কোথা? পিরিত যথা; আসবে কবে? বিচ্ছেদ যবে(টাকা ধার চাইলে বন্ধু বিচ্ছেদ)।
টাকা যার মামলা তার।
টাকায় টাকা আনে।
টান দিয়ে বাঁধলে সট করে ছেঁড়ে।
টেনে বাঁধতে কুলোয় না।





ঠক/ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়।
ঠকঠকালে হবে কি, কপালে তোর নেই কো ঘি।
ঠগ বাছতে গাঁ উজোড়।
ঠাকুর ঘরে কে, না আমি তো কলা খাই না।
ঠাট ঠমকে বিকোয় ঘোড়া।
ঠেকবি যখন শিখবি তখন।
ঠেলার নাম বাবাজী।
ঠেলায় পড়ে ঢেলায় সেলাম।
ঠেলার নাম বাবাজি।





ডুব দিয়ে খাই পানি আল্লা জানে আর আমি জানি।
ডুব দিয়ে জল খেলে অমাবস্যার বাপেও জানে না।
ডুবেছি না, ডুবতে আছি, দেখি পাতাল কত দূর?
ডুমুরের ফুল, সাপের পা।
ডাইনে আনতে বাঁয়ে কুলোয় না।
ডাইনের কোলে পুত্র সমর্পণ।
ডাইলের মধ্যে মুশুরি, সাগাইর (আত্মীয়) মধ্যে শ্বাশুড়ি।
ডাকলে ডাক, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ।
ডাঙায় বাঘ জলে কুমির।
ডানের মায়া বোঝা ভার।
ডান্ডা মেরে ঠান্ডা।
ডোবা দেখলেই ব্যাঙ লাফায়।
ডোল ভরা আশা, কুলো ভরা ছাই।





ঢাক বাজিয়ে ইঁদুর ধরা।
ঢাকী সুদ্ধ বিসর্জন।
ঢাকের কাছে ট্যামটেমি।
ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রি।
ঢাকের বাদ্যি থামলে মিষ্টি।
ঢাল নাই, তরোয়াল নাই, নিধিরাম সর্দার।
ঢিল দিয়ে ঢিল টেনে আনা।
ঢিলটি মারলেই পাটকেলটি খেতে হয়।
ঢেঁকি কেন গাঁ বেড়াক না, গড়ে পড়লেই হল।
ঢেঁকি ভজে‘(ভজনা করে) স্বর্গে যাওয়া যায় না।
ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে।
ঢেঁকির কচকচি আর ঢাকের বাদ্যি চুপ করলেই ভাল।
ঢেঁকিশাল দিয়ে কটক যাওয়া।
ঢেঁকিশালে যদি মানিক পাই, তবে কেন পর্বতে যাই।
ঢেউ দেখে লা‘[লা‘=না=নৌকো] ডুবিও না।








তুক তাক ছয় মাস, কপালে যা বারো মাস।
তৃণবন্মন্যতে জগৎ[জগৎকে তৃণের মতো দেখে]।
তপ্ত জলে ঘর পোড়ে না।
তপ্ত ভাতে নুন জোটে না, পান্তা ভাতে ঘি।
তুফানে ছেড়ো না হাল, নৌকা হবে বানচাল।
তুফানে যে হাল ধরে না, সেই বা কেমন নেয়ে, কথা পাড়লে বুঝতে পারে না, সেই বা কেমন মেয়ে।
তুমি খাও ভাড়ে জল আমি খাই ঘাটে।
তুমি ফের ডালে ডালে আমি ফিরি পাতায় পাতায়।
তুলো যেমন শুনতে নরম,বুনতে তেমন নয়।
তৃষ্ণা এগোয় না জল এগোয়(কার গরজ বেশি?)।
তস্মিন্ তুষ্টে জগৎ তুষ্টম্।
তাত সয়,তবু বাত সয় না।
তাঁতী রাগে কাপড় ছেঁড়ে, আপনার ক্ষতি আপনি করে।
তাঁতীকুলও গেল, বৈষ্ণবকুলও গেল।
তাপ বাড়ে ঝোপে আর খেজুর বাড়ে কোপে।
তাল প্রমাণ বাড়ে, তিল প্রমাণ কমে।
তাল, তেঁতুল, মাদার, তিনে দেখায় আঁধার।
তালগাছের আড়াই হাত।
তালৈর চে পুতরা ভারি।
তাস, তামাক, পাশা, এ তিন কর্ম/সর্ব নাশা।
তিন জন জানে তো ত্রিশ জন জানে।
তিন নকলে আসল খাস্তা।
তিন মাথা যার, বুদ্ধি নেবে তার।
তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকা।
তিল কুড়িয়ে তাল।
তিলক কাটলেই বৈষ্ণব হয় না।
তিলকে তাল করা।
তীর্থের কাকের মতো বসে থাকা।
তীরে এসেও হাল ছেড়ো না।
তে হি নো দিবসা গতাঃ[সেই (সুখের) দিন চলে গেছে]।
তেল দাও, সিঁদুর দাও, ভবি ভোলবার নয়।
তেলা মাথায় ঢাল তেল, রুখু মাথায় ভাঙ্গ বেল।
তেলা মাথায় তেল দিতে সবাই পারে।
তেলাপোকা আবার পাখি, ভেরেণ্ডা আবার গাছ।
তেলে জলে মিশ খায় না।
তেলে জলেই মানুষের শরীর।
তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠা।
তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে।
তোর গোয়ালে মোর বিয়াইছে গাই সেই সুত্রে তালতো ভাই।
তোর শিল, তোর নোরা, তোরই ভাঙি দাঁতের গোড়া।





থলির মধ্যে হাতি পোরা।
থাক রে কুকুর আমার পাশে(মনের আশে), ভাত দেব সেই পৌষ মাসে।
থাকলে সোনার মান হয় না, হারালে সোনার মান।
থাকে যদি চুড়ো বাঁশি, মিলবে রাধা হেন কত দাসী।
থোড় বড়ি খাড়া, খাড়াবড়ি থোড়।
থোঁতা মুখ ভোঁতা।





দু‘ নৌকায় পা দিলে পড়বে শেষে অগাধ জলে।
দই খাবে মেধো, কড়ি দেবে সেধো।
দুই স্ত্রী যার, বড় দুখ তার।
দুই সতীনে ঘরকন্না, ঘরের গিন্নি ভাত পান না(গিন্নি=এখানে শাশুড়ি)।
দুই হাড়ি একত্র থাকলেই ঠোকাঠুকি।
দক্ষিণদ্বারী ঘরের রাজা, পূর্বদ্বারী তার প্রজা, পশ্চিমদ্বারীর মুখে ছাই, উত্তরদ্বারীর খাজনা নাই।
দুধ কলা দাও যত, সাপের বিষ বাড়ে ততো।
দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা।
দুধ মেরে ক্ষীরটুকু।
দুধকে দুধ জলকে জল।
দধির অগ্র ঘোলের শেষ।
দুধের স্বাদ কি ঘোলে মেটে।
দুধের সাধ(তৃষ্ণা) কি ঘোলে মেটে।
দুনিয়াদারি মুসাফিরি, সেরেফ আনাগোনা।
দু-নৌকায় পা।
দয়া আছে মায়া আছে, গলা ধরে কাঁদি;আধ পয়সায় আটটি কলা পরাণ গেলে না দি‘।
দয়া করে দেয় নুন, ভাত মারে তিনগুণ।
দরকার পড়লে খোঁড়াও লাফায়।
দুর্গা বলে ঝুলে পড়।
দুর্জনঃ প্রিয়বাদী চ নৈতদ্‌বিশ্বাসকারণম্; মধু তিষ্ঠতি জিহ্বাগ্রে হৃদয়ে তু হলাহলম।
দুর্জনেরে পরিহরি, দূরে থেকে নমস্কারি।
দুর্ভিক্ষ অল্পকাল স্মরণ থাকে চিরকাল।
দল ভাঙলে যে, কৈ খাবে সে(দল=জলজ তৃণস্তূপ)।
দশ দিন চোরের একদিন গেরস্থের।
দশচক্রে ভগবান ভূত।
দশপুত্র সম কন্যা যদি পাত্রে পড়ে।
দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ।
দশে যারে বলে ছি, তার প্রাণে কাজ কি?
দশের মোড় গাছের মোড়।
দশের মুখে জয়, দশের মুখে ক্ষয়।
দশের লাঠি একের বোঝা।
দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।
দুষ্ট লোকের মিষ্ট কথা,ঘনিয়ে বসে পাশে, কথা দিয়ে কথা লয়, প্রাণে বধে শেষে।
দাঁ এর চেয়ে আছাড় বড়।
দাঁড়ালে পোয়া, বসলে ক্রোশ, পথ বলে মোর কিসের দোষ?
দাঁড়িকে মাঝি করা, মরা গাঙে ডুবে মরা।
দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বোঝে না।
দাদারও চিঁড়ের ফলার।
দান যেমন দক্ষিণাও তেমন।
দারোগায় বলছে চাচি, আমি কি আর আছি!!!
দায়ে পড়লে শালগ্রামের পৈতা বেচেও খায়।
মিয়া বিবি রাজি তো কি করবে কাজি?
দায়ে পড়ে দা‘ঠাকুর।
দা‘-এ বালি, কুড়ুলে শিল, ভাল মানুষকে ভাল কথা বজ্জাতকে কিল। দারিদ্র্যদোষো গুণরাশিনাশী।
দিও কিঞ্চিৎ না কোরো বঞ্চিৎ।
দিন কাটে তো রাত কাটে না।
দিন গেল আলে ডালে, রাত হলে চেরাগ জ্বালে।
দিন যাবে রবে না।
দিন যায় তো ক্ষণ যায় না।
দিন যায়, কথা থাকে।
দিনগত পাপক্ষয়।
দিনে তারা দেখা।
দিনে বাতি যার ঘরে, তার ভিটায় ঘুঘু চরে।
দিল্লিকা লাড্ডু, যো খায়া সো পস্তায়া, যো ন খায়া সো ভি পস্তায়া।
দীয়তাং ভুজ্যতাম।
দেখ দেখ কর্ম শিখ শিখ ধর্ম।
দেখ্ তোর, না দেখ্ মোর।
দেখছি কত দেখব আর, ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার।
দেখতে পেলে শুনতে চায় না।
দেখব কত কালে কালে গোঁফ রেখেছে তোবড়া গালে।
দেখাদেখি চাষ, লাগালাগি বাস।
দেখে শেখে আর ঠেকে শেখে।
দেদোর মর্ম দেদোয় জানে(দুঃখী)।
দেব ধন, বুঝব মন, কেড়ে নিতে কতক্ষণ।
দেবতার বেলা লীলাখেলা, পাপ লিখেছে মানুষের বেলা।
দেবা ন জানন্তি কুতো মনুষ্যাঃ(নারীর মন অস্থিরমতি)।
দেয় থোয় রেখে মান তারে বলি যজমান।
দেশগুণে বেশ।
দেশে নাই যা, ছেলে চায় তা।
দেহের গুমর করো না ভাই এই আছে এই নাই।
দৈবজ্ঞ যদি বলে ঠিক তবে কেন মাগে ভিখ?
দোয়া গাইয়ে চাট সই।
দোষেগুণে সৃষ্টি, ঝড়ে জলে বৃষ্টি।





ধুকড়ির ভিতর খাসা চাল।
ধন জন যৌবন জোয়ারের জল কতক্ষণ?
ধন থাকলেই সিঁধের ভয়।
ধন নাই, কড়ি নাই নিধিরাম পোদ্দার।
ধন সোহাগী মরেন কুড়োর জাউ খেয়ে।
ধন, জন, পরিবার, কেহ নহে আপনার।
ধনীর চিন্তা ধন ধন, নিরেনব্বুইয়ের ধাক্কা, যোগীর চিন্তা জগন্নাথ,ফকিরের চিন্তা মক্কা।
ধনীর মাথায় ধর ছাতি, নির্ধনের মাথায় মার লাথি।
ধনে ধন দেখে, পুতে পুত দেখে।
ধনে সুখ নয়, মনে সুখ।
ধর কাছি তো ধরেই আছি।
ধরতে ছুঁতে কিছুই নেই।
ধর্ম হয় না করলেই উপাস।
ধর্মস্য সূক্ষ্মা গতিঃ।
ধর্মেণ হীনাঃ পশুভিঃ সমানাঃ।
ধর্মের কল বাতাসে(আপনি)নড়ে, পাপ করলে ধরা পড়ে।
ধর্মের ঢাক আপনি বাজে।
ধর্মের ভরা ভেসে উঠে, পাপের ভরা তল যায়।
ধর্মো রক্ষতি ধার্মিকম্।
ধরলে কোঁ কোঁ করে,ছেড়ে দিলে পাকসাট মারে[পাকসাট=পাখার ঝাপট, তথা আস্ফালন]।
ধরি মাছ না ছুঁই পানি।
ধরে আনতে বললে বেঁধে আনে।
ধুলো মুঠা ধরতে সোনা মুঠা হয়।
ধান একগুণ, ঘাস শতগুণ।
ধান খায় কাকে, ব্যাঙের পায়ে দড়ি।
ধান নাই চাল নাই, আন্দিরাম মহাজন।
ধান ভানতে শীবের গীত।
ধানের আগে উড়ি ফোলে[’উড়ি‘ একপ্রকার ধান]।
ধার করে খায়, হেঁট মাথায় যায়।
ধারে কাটে আর ভারে কাটে।
ধীর জ্বাল, ঘন কাটি, তবে বলি দুধ আউটি।
ধীর ধীর বোনে তাঁতি সকল জিনে।
ধীর পানি পাথর কাটে।
ধীরে রাঁধে ধীরে খায়, তবে খাওয়ার মজা পায়।
ধোঁয়া আর প্রেম চেপে রাখা যায় না






ন চ দৈবাৎ পরং বলম্।
ন দেবায়, ন ধর্মায়।
ন নিম্বো মধুরায়তে।
ন ভূতো, ন ভবিষ্যতি।
ন যযৌ, ন তস্থৌ।
ন স্ত্রী স্বাতন্ত্র্যমর্হতি। পিতা রক্ষতি কৌমারে, ভর্তা রক্ষতি যৌবনে ;পুত্রশ্চ স্থবিরে ভাবে, ন স্ত্রী স্বাতন্ত্র্যমর্হতি। নারী বাল্যে পিতার, যৌবনে ভর্তার এবং বার্ধক্যে পুত্রের অধীনে থাকিবেন। স্ত্রীগণের পক্ষে স্বাধীন হওয়া উচিত নয়। এখানে স্বাধীন বলতে যথেচ্ছাচারী বোঝাচ্ছে।
ন সন্তোষাৎ পরং সুখম্।
ন হি সুপ্তস্য সিংহস্য প্রবিশন্তি মুখে মৃগাঃ।
নই কাজ তো খই ভাজ।
নখে কাটে কচি কালে, ঝুনো হলে দাঁত না চলে।
নখের ছিদ্রে কুড়াল লাগানো।
নটে খেটে আড়াই মাস, সজনে ফলে বার মাস।
নড়তে পারে না কামান ঘাড়ে।
নুন ছাড়া ঘি মাটি
নূতন নূতন ন‘কড়া, পুরানো হলে ছ‘কড়া।
নদী শুকোলেও রেখা থাকে।
নদী, নারী, শৃঙ্গধারী_ এ তিনে না বিশ্বাস করি।
নদীকূলে বাস ভাবনা বারোমাস।
নদীর এক কূল ভাঙ্গে আর এক কূল গড়ে।
নদীর পানি ঘোলা ভালো, জাতের মেয়ে কালো।
নদীর মুখে বালির বাঁধ।
নুন আনতে পান্তা ফুরায়।
নুন খাই যার গুণ গাই তার।
ননদেরও ননদ আছে(ননদ, ননদিনী, ননদী=স্বামীর বোন, নন্দাই=ননদের স্বামী, ভাজ= ভ্রাতার পত্নী, ভ্রাতৃ জায়া। সব কটি মেয়েদের দিক থেকে সম্পর্ক)।
নবাব আর কি? নবাব খাঞ্জা খাঁ(মুর্শিদকুলি খাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী খান্ জাহান খান্)।
নয় মণ তেলও পুড়বে না, রাধাও নাচবে না।
ন্যাড়া ক‘বার বেলতলা যায়?
নরক তো গুলজার।
নরুনে তালগাছ কাটা।
নরম কাঠে ছুতোরের বল।
নরম মাটিতে বেড়াল আঁচড়ায়।
নরানাং মাতুলক্রমঃ।
নরের মন নারায়ণ জানেন।
না আঁচালে বিশ্বাস নেই।
না আছে আয়োজন, পাড়া ভরে নিমন্ত্রণ।
না খেলে যাবে দিন, ধার করলে হবে ঋণ।
না চাইতে ছাতাটা পাই, চাইলে বুঝি ঘোড়াটা পাব।
না দেখে চলে যায়, পায়ে পায়ে হোঁচট খায়।
না পড়েই পণ্ডিত।
না পাইয়া পাইছে ধন বাপে পুতে করে কিত্তন।
না বুঝে ছিলাম ভাল, আধেক বুঝে পরান গেল।
না বিয়িয়েই কানা‘য়ের মা।
না মরতেই ভূত?
নাই কাজ তো খই ভাজ।
নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল।
নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানো।
নাকে সরষের তেল দিয়ে ঘুমানো।
নাকের উপরে এক বিঘৎ আর এক হাত!
নাকের জলে চোখের জলে হওয়া।
নাকের বদলে নরুন।
নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা।
নাচতে নেমে ঘোমটা টানা।
নাচে ভাল পাক দেয় উল্টো।
নাড়া বনে কেত্তন।
নাতি-খাতি বেলা গেলু শুতি পারলাম না।
নাতির নাতি স্বর্গের বাতি।
নাদা পেটা হাঁদা রাম।
না-দেওয়া কাঁঠালের শাওনে পাক(না দিতে চাইলে কাঁঠাল শ্রাবণে পাকে)।
না-দেওয়ার চাল, আজ না কাল।
নানা মুনির নানা মত।
নাপিত দেখলে নখ বাড়ে।
নাপিতের আসি, ধোপার বাসি।
নাপিতের ষোল চোঙা বুদ্ধি।
নামে ডাকে গুরু মশাই,লেজা মুড়োর জ্ঞান নাই।
নামে তালপুকুর ঘটি ডোবে না।
নামে ধর্মদাস, ধর্মের নাম নেই।
নারীর বল চোখের জল।
নাস্তিকের মুখে ধর্ম কথা।
নাহংকারাৎ পরো রিপু।
নিকুলে চুকুলে ঘর, কামালে(গোঁফহীন পরিচ্ছন্ন হলে) বর।
নিকামায়ে(কামাই বা আয় করে না, কাজহীন) দর্জি ছেলের মুখ সেলাই করে।
নিজে বাচলে বাপের নাম।
নিজের কোলে ঝোল টানা।
নিজের চরকায় তেল দাও।
নিজের দই কেউ টক বলে না।
নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ।
নিজের পাঁটা যায় লেজে কাটা।
নিজের পায়ে কুড়ুল মারা।
নিজের পোলায় খায় কম।
নিজের ভাই ভাত পায় না শালীর তরে মণ্ডা।
নিত্য চাষির ঝি বেগুন ক্ষেত দেখে বলে এ আবার কি?
নিত্য ভিক্ষা তনু রক্ষা।
নিত্য রোগী দেখে কে, নিত্য নেই দেয় কে?
নিতে পারি খেতে পারি, দিতে পারি নে, বলতে পারি কইতে পারি, সইতে পারি নে।
নিদান কালে হরিনাম।
নিদানের বিধান নেই।
নিবৃত্তরাগস্য গৃহং তপোবনম্।
নিম তিত নিসিন্দে তিত,তিত মাকাল ফল;তার চেয়ে অধিক তিত বোন সতীনের ঘর।
নিম তিত, নিশিন্দে তিত, তিত মাকাল ফল, তার চেয়ে তিত কন্যে বোন সতীনের ঘর।
নিম তিত, নিসিন্দে তিত, তিত নিমের ফুল, তার চেয়ে তিত অধিক দুই সতীনের কুল।
নিম নিসিন্দে যেথা, মানুষ মরে না সেথা।
নিমক খেয়ে নিমক হারামি।
নিমতলা দিয়ে যাওনি, নিমফল খাওনি?
নিয়তিঃ কেন বাধ্যতে।
নির্গুণ পুরুষের ভোজন সার, করেন সদাই মার মার।
নির্গুণ পুরুষের তিনগুণ ঝাল।
নির্ধনের ধন হলে দিনে দেখে তারা।
নির্ধনের ধন, অথর্বের যৌবন।
নীচ যদি উচ্চভাষে, সুবুদ্ধি উড়ায় হেসে।
নীরোগ শরীর যার বৈদ্যে করবে কি; পরের ভাতে বেগুন পোড়া, পান্তা ভাতে ঘি।
নুন আনতে পান্তা ফুরায়।
নুন খাই যার গুন গাই তার ।
নেই নাক তার গোঁফের বাহার।
নেই-মামার চেয়ে কানা মামা ভালো।
নেকা আদুরে চালশে কানা, জল বলে খায় চিনির পানা।
নেকা, বোকা, ঢিলে কাছা, তিনে প্রত্যয় করো না বাছা।
নেঙটা নেই বাটপারের ভয়।
নেড়া আর কি বেলতলায় যায়?
নেবু কচলাবে যত, হবে তেত ততো।
নেবার কুটুম দেবার নয়।
নেবার বেলায় পরিপাটি, দেবার বেলায় ফাটাফাটি।
নেভবার আগে ক্ষণেক তরে, দীপ জ্বলে দপ করে।
নেয়ের এক নাও, নিনেয়ের(যার নৌকো নেই) শতেক নাও।
নেশাতে বুক ফাটে, কুকুরে মুখ চাটে।
নেংটার নাই চোরের ভয়।
ন্যাড়া বেলতলায় একবারেই যায়।





পুকুর চুরি।
পচা আদা, ঝালের গাদা/পচা আদায় ঝাল বেশি।
পচা শামুকে পা কাটে।
পরের পোলা মোটাই থাকে।
পূজায় মন নেই নৈবিদ্যে চোখ।
পূজার সঙ্গে খোঁজ নেই, কপাল জোড়া ফোঁটা।
পুঁজি নেই তার পাঁজি আছে।
পুঁজি ভেঙে খেতে ভাল, ভেটেন[ভাঁটি] গাঙে যেতে ভাল।
পট্টবস্ত্রে গুঞ্জফল মূল্য নাহি হয়, ছিন্ন বস্ত্রে মোতির মূল্য নাহি হয় ক্ষয় [গুঞ্জফল=কুঁচ]।
পুঁটি মাছের প্রাণ দেখতে দেখতে যান[অতি দুর্বল প্রাণ]।
পড়ুক না পড়ুক পো‘ সভায় নে‘ গে‘ থো।
পড়ল কথা সভার মাঝে, যার কথা তার গায়ে বাজে।
পড়শী না বঁড়শি।
পড়শীর মুখ না আরশির মুখ।
পড়িলে ভেড়ার শৃঙ্গে ভাঙ্গে হিরার ধার।
পড়ে গেলে ছাগলেও চাট মারে।
পুড়ে ঝুড়ে রাঁধুনি, ছিঁড়ে ছুঁড়ে কাটুনী।
পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা।
পড়ে পাওয়া টাকা, ষোল আনাই লাভ।
পড়েছি তাফালে, যা থাকে কপালে[তাফাল=গুড় তৈরির উনুন]।
পড়েছি মোগলের হাতে খানা খেতে হবে সাথে।
পতির পায়ে থাকে মতি তবে তারে বলে সতী।
পতির মরণে সতীর মরণ।
পথ চলবে জেনে, কড়ি নেবে গুণে।
পথে পাইছ কামার , দাও ধারানি আমার।
পথি নারী বিবর্জিতা [পথের অপরিচিতা নারী দুর্জ্ঞেয়]।
পথে পেলাম কামার, দা গড়ে দে আমার।
পুনর্মূষিকো ভব।
পুবে হাঁস, পশ্চিমে বাঁশ; উত্তরে কলা, দক্ষিণে খোলা।
পর কখনও আপন হয় না।
পর তরফে খায় ঘি, তার আবার খরচ কি?
প্রদীপের কোলেই অন্ধকার/চেরাগের নীচেই অন্ধকার।
পরপ্রত্যাশী, দু‘পহর উপোসী।
পর্বতের মুষিক প্রসব।
পুরুষের দশ দশা, কখনও হাতি কখনও মশা।
পরহস্তং গতা গতা। লেখনী পুস্তিকা জায়া পরহস্তং গতা গতা;যদি মা পুনরায়াতি ভ্রষ্টা নষ্টা চ মর্দিতা।
পরহস্তগতং ধনম্। পুস্তকস্থ তু যা বিদ্যা পরহস্তগতং ধনম্;কার্যকালে সমুৎপন্নে ন সা বিদ্যা ন তদ্ধনম।
প্রহারেণ ধনঞ্জয়।
প্রাণ বড় না মান বড়?
পুরান পাগলের ভাত নাই, নতুন পাগলের আমদানি।
পুরানো চাল ভাতে বাড়ে, পুরানো ঘিয়ে মাথা ঘাড়ে।
পুরানো বসন ভাতি, অবলাজনের জাতি।
পরিতে হইবে শাঁখা তবে কেন মুই বাঁকা?
পরের কথায় লাথি চাপড়, নিজের কথায় ভাত কাপড়[পরচর্চা না করে নিজের কাজে মন দাও গে।
পরের ঘরে খায় দায়, আঠারো মাসে বছর যায়।
পরের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার করা।
পরের ঘি পেলে, প্রদীপ দেয় দুয়ারে মেলে।
পরের ঘোল খাবার লোভে নিজের গোঁফ কামানো।
পরের চাল,পরের ডাল, নদে করেন বিয়ে।
পরের ছেলে খায় এতটা, বেড়ায় যেন বাঁদরটা;নিজের ছেলেটি খায় এতটি, বেড়ায় যেন লাটিমটি।
পরের জন্য গর্ত খোঁড়ে, আপনি তাতে পড়ে মরে।
পরের জন্য ফাঁদ পাতে, আপনি পড়ে মরে তাতে।
পরের দুধে দিয়ে ফুঁ, পুড়িয়ে এলেন নিজের মু(মুখ)।
পরের দেখে তোল হাই, যা আছে তাও নাই।
পরের ধনে পোদ্দারি লোকে বলে লক্ষ্মীশ্বরী।
পরের ধনে বরের বাপ।
পরের পুতে বরের বাপ।
পরের পিঠে বড় মিঠে।
পরের ভাতে কুকুর পোষা।
পরের মুখে ঝাল খাওয়া।
পরের মন আঁধার কোণ।
পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙা।
পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙে নিজের গোঁফে তেল।
পরের মাথায় দিয়ে হাত, কিরা করে নির্ঘাত।
পরের মাথায় হাত বুলানো।
পরের লেজে পড়লে পা তুলো পানা ঠেকে, নিজের লেজে পড়লে পা ক্যাঁক করে ওঠে।
পরের সোনা দিও না কানে, কেড়ে নেবে হেচকা টানে।
পরের হাতে ধন পেতে অনেক ক্ষণ।
পা না ভিজল যার বড় কৈ(মাছ) তার।
পাকা ঘুঁটি কাঁচানো।
পাকা ধানে মই দেওয়া।
পাখি পড়ানোর মতো পড়ানো।
পাখির প্রাণ অল্পেই যান।
পাগল কি গাছে ফলে, আক্কেলেতে পাগল বলে।
পাগলা ভাত খাবি, না হাত ধোব কোথায়?
পাগলা সাঁকো নাড়িস নে, ভাল মনে করে দিয়েছিস।
পাগলা নাও ঝুলাইস না।–ক্যা।–আমি বাতায় খাড়া।
পাগলে কি না কয়! ছাগলে কি না খায়!
পাগলের গোবধে আনন্দ [গো বধ মহাপাপ]।
পাঁচ দিন চোরের এক দিন সাধুর।
পাঁচ পাগলের ঘর, খোদায় রক্ষা কর।
পাঁচ শ‘ জুতো গুণে খায়, ফুলের ঘায়ে মুচ্ছো যায়।
পাঁঠার ইচ্ছেয় ঘাড়ে কোপ।
পাতা চাপা কপাল, আর পাথর চাপা কপাল।
পাতের ভাত কেড়ে নাওয়া।
পাতের ভাতে পুষলাম যুগী, উলটে বলে পরবাস কি?
পাতের ভাতে পালে কুকুর, কুকুর ওঠে মাথার উপুর।
পাথরে ঘুণ ধরে না।
পাথরে পাঁচ কিল।
পাথরে লেখা মুছলেও যায় না।
পান পান্তা ভক্ষণ, ঐ তো পুরুষের লক্ষণ; আমি অভাগী তপ্ত খাই, কোন দিন বা মরে যাই।
পান সাজতে জানে না, দু পায়ে আলতা।
পান হতে চুন খসে না।
পান্তা ভাত ফুঁ দিয়ে খাওয়া।
পান্তা ভাতে নুন জোটে না, বেগুন পোড়ায় ঘি।
পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায়/উৎপাতের কড়ি চিৎপাতে যায়।
পায়ের কাজ[লাথি] কি হাতে হয়?
পার হ‘লে পাটনি শালা।
পারা(পারদ) আর পাপে কার সাধ্য চাপে।
পালাতে না পেরে মোড়লের বেহাই।
পি পু ফি শু/ কত রবি জ্বলে রে, কে বা আঁখি মেলে রে।
পিঠা খায় মিঠার জোরে, হাত নাড়ে নানীর[=পিতামহী] জোরে।
পিঠে বেঁধেছি কুলো, কানে দিয়েছি তুলো।
পিতল সরা জাঁকে ভরা।
পিতলের কাটারি, কাজে নেই ধার, ঝকমকই সার।
পিন্ডি পায় না, কেত্তন চায়।
পিপীলিকার পাখা ওঠে মরিবার তরে।
পিসি বলো মাসি বলো, মার বাড়া নাই; পিঠে বলো মিঠা বল, ভাতের বাড়া নাই।
পেট জ্বলে ভাতের তরে, সোনার আংটি হাতে পরে।
পেট মোটা হইলেই চেয়ারম্যান হয় না।
পেটে খেলে পিঠে সয়, মরা পেটে বড় ভয়।
পেটে নাই গু, জিলাপী হাগনের সখ হইছে!!
পেটের আগুনে বেগুন পোড়ে।
পেটের বাছা বাড়ির গাছা[গাছ]।
পেঁয়াজও গেল, পয়জারও হল/পেঁয়াজ পয়জার দুই হল।
পৈতা পুড়িয়ে সন্ন্যাসী/ব্রহ্মচারী।
পোড়া কপালে সুখ নাই, বিয়ে বাড়িতে ভাত নাই।
পোলা হওয়ার খবর নাই- হাজামের লগে দোস্তি।
পোলার বুদ্ধি গলায়।
পোষের শীত মোষের গায়, মাঘের শীত বাঘের গায়।
প্রেমের মরা জলে ডুবে না







ফকিরে ফকিরে ভাই ভাই, ফকিরের রাজত্ব সব ঠাঁই।
ফুটনির মামা, ভিতরে ক্লেদ, উপরে জামা।
ফরসা কাপড়ে মান বাড়ে।
ফুরালো বাগানের আম কি খাবিরে হনুমান?
ফুললো আর মলো।
ফলেন পরিচীয়তে।
ফুলের ঘায়ে মুচ্ছো যায়।
ফুলের শোভা ভোমরা, গাই-এর শোভা চামড়া।
ফাঁক পেলে সবাই চোর।
ফোঁপরা ঢেঁকির শব্দ বেশি।
ফাগুনে আগুন, চৈতে মাটি, বাঁশ রেখে বাঁশের পিতামহকে কাটি।
ফ্যান দিয়ে ভাত খায়, গল্পে মারে দই, মেটে হুঁকোয় তামাক খায়, গুড়গুড়িটা কই?
ফেল কড়ি মাখ তেল তুমি কি আমার পর?
ফোতো বাবুর গালগল্প সার।





বউ উঠতে ঠাঁই পায় না, উঠান জোড়া দাসী।
বউ কয় না হড়ি (শাশুড়ী)…টিলিক পাইরা মরি।
বউ জব্দ শিলে, ঝি জব্দ কিলে, পাড়াপড়শী জব্দ হয় চোখে আঙুল দিলে।
বউ ভাঙলে সরা গেল পাড়া পাড়া, গিন্নি ভাঙলে নাদা [কলসি], ও কিছু নায় দাদা।
বউ-এর রাগ বিড়ালের উপর, বিড়ালের রাগ বেড়ার উপর।
বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না।
বকঃ পরমধার্মিকঃ/ বক ধার্মিক।
বুকে ব‘সে দাড়ি ওপড়ানো।
বগলে কাস্তে দেশময় খোঁজে।
বগলে ছুরি মুখে রাম নাম।
বচনে জগৎ তুষ্ট, বচনে জগৎ রুষ্ট।
বজ্র আঁটুনি ফস্‌কা গেরো।
বজ্রাদপি কঠোরাণি মৃদুনি কুসুমাদপি। বজ্রাদপি কঠোরাণি মৃদুনি কুসুমাদপি, লোকোত্তরাণাং চেতাংসি কোহি বিজ্ঞাতুমীশ্বরঃ।
বুঝতে পারি সেকরার ঠার, বলে এক করে আর।
বড় গাছেই ঝড় লাগে।
বড় গাছের তলায় বাস, ডাল ভাঙলেই সর্বনাশ।
বড় ঘর বড় কথা, গরিবের ছেঁড়া কাঁথা।
বড় ঘর বড় কথা, বললে কাটা যায় মাথা।
বড় বড় বানরের বড় বড় পেট লংকায় যেতে তারা মাথা করে হেঁট।
বড় বিয়ে তার দুপায়ে আলতা।
বড় লোকের আঁস্তাকুড়ও ভালো।
বড় মুখ ছোট হওয়া।
বড় মাছের কাঁটা আর ঘন দুধের ফোঁটা।
বড় হবে তো ছোট হও।
বড়র পিরিতি বালির বাঁধ, ক্ষণে হাতে দড়ি, ক্ষণে চাঁদ।
বড়র বড় গুন- শুয়ে ঘাস খায়, গায়ের গুমানে ছাগল লরলরি বায়।
মড়া মেরে খুনের দায়।
বুড়ো শালিক পোষ মানে না।
বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ।
বুড়ো হল বক চেনে না।
বুদ্ধিগুণে হা ভাত, বুদ্ধিগুণে খা ভাত।
বৃদ্ধস্য বচনং গ্রাহ্যমাপৎকালে হ্যপস্থিতে।
বন পোড়ে সবাই দেখে, মন পোড়ে কেউ না দেখে।
বনগাঁয়ে শেয়াল রাজা।
বন্ধ্যা নারীর অন্ধ পুত্র চাঁদ দেখতে পায়।
বন্ধ্যা নারীর পুত্র শোক।
বনের রক্ষক বাঘ, বাঘের রক্ষক বন।
বুনলাম ধান, হল তিল, ফলল রুদ্রাক্ষ, খেলাম কিল।
বয়সে চুল পাকে, কিন্তু বুদ্ধি পাকে না।
বরকনের দেখা নেই বুধবারে বিয়ে।
বরমেকোগুণীপুত্রো ন চ মুখ শতান্যপি;একশ্চন্দ্রস্তমো হন্তি ন চ তারাগণা অপি।
বর্ষণ নেই গর্জন সার।
বরের ঘরের মাসি, কনের ঘরের পিসি।
বল বুদ্ধি ভরসা, তিন তিরিশে ফরসা।
বল মা তারা দাঁড়াই কোথা?
বলা সহজ, করা কঠিন।
বলীর ঘাম, নির্বলীর ঘুম।
বলে দুধ, বেচে ঘোল।
বসতে জায়গা পেলে, শোবার জায়গা মেলে।
বসতে পেলে শুতে চায়।
বসুধৈব কুটুম্বকম্।
বসে খেলে কুলোয় না, করে খেলে ফুরোয় না।
বসে না থাকি বেগার খাটি।
বসে বসে লেজ নাড়া।
বহু সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট।
বহ্বারম্ভে লঘু ক্রিয়া।
বাইরে হাশিখুশি ভিতরে গরল রাশি।
বাউলের ঘরে গরু।
বাঘ-ভালুকের রাজ্যে থাকি মনের কথা মনেই রাখি।
বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা।
বাঘে বলদে এক ঘাটে জল খায়।
বাঘে সিংহে যুদ্ধ হয়, উলু খাগড়ার প্রাণ যায়।
বাঘের আবার গোবধ[অর্থাৎ গো বধ করে পাপ!]।
বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা।
বাঘের দেখা সাপের লেখা।
বাঘের যোগ্য বাঘিনী
বাঘেরও চক্ষু লজ্জা আছে।
বাঁচলে কত দেখব আর, ছুঁচোর গলায় চন্দ্রহার;বিড়ালের কপালে টিকে, বাঁদর বেড়ায় হলুদ মেখে।
বাছার আমার এত বাড়, ছ‘আনার কাপড়ে ন‘আনার পাড়।
বাজাতে বাজাতে বাইন, গাইতে গাইতে গাইন।
বাড়িতে পায় না শাক সজিনা, ডাক দিয়ে বলে ঘি আন না।
বাড়ির গরু কোলার ঘাস খায় না।
বাড়ির মধ্যে এক ঘর, তার আবার সদর অন্দর।
বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মীস্তদর্ধং কৃষি-কর্মণি;তদর্ধং রাজসেবায়াৎ ভিক্ষায়াৎ নৈব নৈব চ।
বানরের গলায় মুক্তার মালা।
বাপ জানে না, মা জানে না, হোগল বনে বিয়ে।
বাপ না গোতে, চোঙ্গায় চোঙ্গায় মোতে।
বাপকা বেটা সিপাই কা ঘোড়া, কুছ নেহি তো থোড়া থোড়া।
বাপের জন্মে (কালে) চড়িনি ডুলি, ভেঙে গেল মোর পাছার খুলি, নামা ডুলি নামা ডুলি।
বাপের জন্মে নেইকো চাষ, ধানকে বলে দুব্বো ঘাস।
বাপের নাম কুদ্দুস- পোলায় করে দুধ রোজ।
বাবু মরেন শীতে আর ভাতে।
বাবা পেটে, মা হাটে, আমি তখন বছর আটে।
বাবার কালে নেইকো গাই, চালুনি নিয়ে দুইতে যাই।
বাবার কালে ছিল না গাই- চালন খান দোহাই খাই।
বাবারও বাবা আছে।
বামুন গেল ঘর তো লাঙল তুলে ধর।
বামন হয়ে চাঁদে হাত।
বামুনের গরু খায় অল্প, নাদে বেশি, দুধ দেয় কলসি কলসি।
বামুনের ভাতে থাকা(কম পরিশ্রম)।
বার কাঁদি নারিকেল, তের কাঁদি কলা;আজ আমাদের রানির উপোসের পালা। বারটা ঝাড়লুম তেরটা ম‘ল, তুই না মরে অপযশ হল(হাতুড়ে চিকিৎসক)।
বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এইবার তোমার আমি বধিব পরাণ।
বার মাসে তের পার্বণ।
বার রাজপুতের তের হাঁড়ি,কেউ খায় না কারও বাড়ি।
বার হাত কাঁকুড়ের তের হাত বিচি।
বাঁশ বনে ডোম কানা(সিদ্ধান্ত নিতে পারে না)।
বাঁশ মরে ফুলে, মানুষ মরে ভুলে।
বাঁশি হারিয়ে শিঙায় ফুঁ।
বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়।
বাঁশের চেয়ে কঞ্চি মোটা।
বাহিরে কেঁচোর পত্তন ভিতরে ছুঁচোর কীর্তন।
বিচার মানি তালগাছ আমার।
বিড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়া।
বিলাইর মুতে আছার খাওয়া।
বিদ্বান্ সর্বত্র পূজ্যতে।
বিদ্যা দদাতি বিনয়ম্।
বিদ্যারত্নং মহাধনম্। জ্ঞাতিভির্বণ্ট্যতে নৈব, চৌরেণাপি ন নিয়তে;দানেন ন ক্ষয়ং যাতি বিদ্যারত্নং মহাধনম্।
বিধি যদি বিপরীত, কেবা করে তার হিত।
বিধির লিখন না যায় খণ্ডন।
বিন্দু বিন্দু বৃষ্টি পুকুরের সৃষ্টি।
বিনা দানে মথুরা পার।
বিনা মেঘে বজ্রাঘাত।
বিপদ কখনও একা আসে না।
বিপদে শিবের গোঁড়া, সম্পদে শিব তো নোড়া।
বিমাতা বিষের ঘর।
বিয়ে ফুরুলে ছাঁদলায় লাথি।
বিয়ে ফুরুলে বাজনা, কিস্তি ফুরুলে খাজনা।
বিলম্বে কার্য সিদ্ধি।
বিশ্বকর্মা কত কারিগর তা জগন্নাথেই প্রকাশ।
বিশ্বাসে মিলায় বস্তু(কৃষ্ণ) তর্কে বহু দূর।
বিশ্বাসো নৈব কর্তব্যঃ স্ত্রীষু রাজকুলেষু চ।
বিষ খেয়ে বিশ্বম্ভর।
বিষ নেই কুলোপানা চক্কর।
বিষকুম্ভং পয়োমুখম্। পরোক্ষে কার্য-হন্তারং প্রত্যক্ষে প্রিয়বাদিনম্; বর্জয়েৎ তাদৃশং বন্ধুং বিষকুম্ভং পয়োমুখম্।
বিষবৃক্ষোঽপি সংবর্ধ্য স্বয়ং ছেত্তুমসাম্প্রতম্।
বিষে বিষ ক্ষয়।
বে-আক্কেলে কয় সংসার আমার নয়।
বেকারের চেয়ে বেগার ভাল।
বেগুন গাছে আঁকশি।
বেগারের দৌলতে গঙ্গাস্নান।
বেচা গরুর চর্বি বেশি।
ব্যাঙ বলে সাপকে_ কারও কড়ি ধারি না[নিষ্ফল আস্ফালন]।
ব্যাঙের আবার সদির্‍?
ব্যাঙের নাকে মিনের নোলক।
ব্যাঙের মাথায় ছাতি।
বেদেয় চেনে সাপের হাঁচি।
বেদের মরণ সাপের হাতে।
বেঁধে মারে সয় ভাল।
বেনা বনে মুক্তা ছড়ানো।
বেনের কাছে মেকি চালানো।
বেনো জল ঢুকিয়ে খরো‘ জল বের করা।
বেল কুড়িয়ে রাঈ।
বেল পাকলে কাকের কি?
বেহায়ার নাহি লাজ, নাহি অপমান;সুজনকে এক কথা মরণ সমান।
বৈষ্ণব হইতে বড় হয়েছিল সাধ, তৃণাদপি শুনে মনে লেগে গেছে তাক।
বোঝার উপরে শাকের আঁটি।
বৌ না বোবা, বৌ না বাবা।
বৃক্ষ তোমার নাম কি?- ফলে পরিচয়।





ভক্তিহীন ভজন আর লবণহীন ব্যঞ্জন।
ভগবানের মার দুনিয়ার বার।
ভজনের সঙ্গে খোঁজ নেই, ভোজন ছত্রিশ জাতে।
ভূতের আবার গঙ্গাস্নান।
ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ।
ভূতের বেগার খাটা।
ভূতের বোঝা বওয়া।
ভূতের মুখে রাম নাম।
ভবি ভোলবার নয়।
ভবিতব্যং ভবত্যেব।
ভবের খেলা সাঙ্গ হল।
ভরাডুবির মুঠা লাভ।
ভস্মে ঘি ঢালা।
ভাই বড় ধন রক্তের বাধঁন পৃথক যদি হয় নারীর কারন ।
ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই।
ভাগ্যং ফলতি সর্বত্র, ন চ বিদ্যা ন পৌরুষম্।
ভাগ্যবানের বোঝা ভগবানে বয়।
ভাগাড়ে মড়া পড়ে, শকুনির টাক নড়ে।
ভাগের ভাগ পেলে, না খেয়েও চিবিয়ে ফেলে।
ভাগের মা গঙ্গা পায় না।
ভাঙ্গবে তবু মচকাবে না।
ভাঙ্গা ঘরে জোছনার আলো, যে দিন যায় সে দিন ভালো।
ভাঙ্গা ঘরে বাস ভাবনা বারো মাস।
ভাঙ্গা ঘরে ভূতের বাসা।
ভাঙ্গা পা খানায় পড়ে।
ভাজা মাছ উলটে খেতে জানে না।
ভাঁড়ে নেই ঘি, ঠকঠকালে হবে কি?
ভাত কখনও পেট খোঁজে না।
ভাত কাপড়ের কেউ নয়, কিল মারার গোঁসাই।
ভাত খাই কাঁসি বাজাই, রগড়ের ধার ধারি না।
ভাত খাইতে বাসন নাই, থালের গড়াগড়ি।
ভাত খাও ভাতারের, গুণ গাও নাঙ্গের।
ভাত ছড়ালে কাকের অভাব নেই।
ভাত ছড়ালে কাকের অভাব?
ভাত জোটে না- দুধ রোজ।
ভাত দেবার ভাতার নয়, কিল মারার গোঁসাই।
ভাত পায় না কুঁড়ের নাগর, আমানি খেয়ে পেটটা ডাগর।
ভাত পায় না চা খায়, হোন্ডা নিয়া হাগতে যায়।
ভাত পায় না- ছালুন ছালুন করে।
ভাত রোচে না, রোচে মোয়া, মণ্ড রোচে পোয়া পোয়া।
ভাতও ভালো , চিড়াও মন্দ না।
ভাতের খিদে কি অন্য কিছুতে মেটে।
ভাবিতে উচিত ছিল প্রতিজ্ঞা যখন।
ভাবে ডগমগ তেলাকুচো, হেসে ম‘লো রে ভুঁই-ছুঁচো।
ভাল করতে পারি না, মন্দ করতে পারি।
ভাল লোকের কিল চুরি।
ভালুক চেনে শালুক ফুল
ভিক্ষা চাইনা মা তোর কুত্তা সামলা।
ভিক্ষার চাল কাঁড়া আর আকাঁড়া।
ভিক্ষুকের এক দোর বন্ধ, শত দোর খোলা।
ভিক্ষায়াৎ নৈব নৈব চ।
ভিন্নরুচির্হি লোকাঃ।
ভীষ্ম,দ্রোণ,কর্ণ গেল শল্য হল রথী, চন্দ্র সূর্য অস্ত গেল জোনাকির পাছে বাতি।
ভূত দিয়ে ভূত ছাড়ানো।
ভেক না নিলে ভিখ মেলে না।
ভেরেণ্ডাও বৃক্ষ।
ভেড়ার গোয়ালে বাছুর মোড়ল।
ভেলায় সাগর পার।
ভোজনং যত্র কুত্রাপি শয়নং হট্ট মন্দিরে;মরণং গোমতীতীরেঽপরং বা কিং ভবিষ্যতি।





মক্কার মানুষ হজ্ব পায়না।
মুখ না থাকলে শেয়ালে খেত।
মুখ পুড়িয়ে লঙ্কায় আগুন।
মুখচোরা বামুন, কেশোরোগী চোর।
মুখটি যেন ভাজার খোলা, খই ফুটছে ফোলা ফোলা।
মুখে খুব মিঠে, নিম নিসিন্দে পেটে।
মুখে মধু হৃদে ক্ষুর, সেইত হয় বিষম ক্রূর।
মুখে রামনাম বগলে ছুরি।
মুখেন মারিতং জগৎ।
মুখের চোটে গগন ফাটে।
মঘা, এড়াবি ক‘ ঘা?
মুচি হয়ে শুচি হয় যদি হরি ভজে, শুচি হয়ে মুচি হয় যদি হরি ত্যজে।
মুচির নাই নাক (চামড়ার গন্ধ), শুঁড়ির নাই কান(মাতালের কদর্য উক্তি)।
মটরের চাপে মুসুরি চেপ্টা।
মুড়া কোদালে দিঘি কাটা।
মড়া মেরে খুনের দায়।
মড়ার উপরে খাড়ার ঘা।
মুড়ি মিছরির এক দর।
মুড়ি[মাথা] আর ভুঁড়ি সকল রোগের গুঁড়ি।
মুণ্ডমালার দাঁত কপাটি সার।
মদ খায় না, মদে খায়?
মদ্দ বড় তেজী, ধরবেন বনের বেজি।
মধুপান করতে পারি, মাছির কামড় সইতে নারি।
মধ্বভাবে গুড়ং দদ্যাৎ।
মধুরেণ সমাপয়েৎ।
মন চায় বাদশা হতে, খোদার দোয়া মেগে খেতে।
মন ভাল নয় তীর্থ করে, মিছে কাজে ঘুরে মরে।
মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন।
মনবো ঠাকুর দেব না, আমার পিত্যেশ কোরো না।
মনিব গেলে ঘোল পায় না, বিশেকে পাঠায় দুধের তরে।
মুনীনাঞ্চ মতিভ্রমঃ।
মনে বড় সাধ, চড়ব বাঘের কাঁধ।
মনে মনে লঙ্কা ভাগ।
ময়না টিয়ে উড়িয়ে দিয়ে খাঁচায় পোষে কাক।
ময়রার ছেলে গুড় খায় না।
মূর্খ লোকে কেনে বই, জ্ঞানবানে পড়ে;ধনবানে কেনে ঘোড়া,বুদ্ধিমানে চড়ে। মূর্খস্য নাস্ত্যৌষধম।
মরণকালে হরিনাম।
মরণের বাড়া গাল নাই।
মরবে মেয়ে উড়বে ছাই, তবে মেয়ের গুণ গাই।
মরা কাকের আবার মড়কের ভয়?
মরা মালঞ্চে ফুটল ফুল, টাকে আবার উঠল চুল।
মরি তাহে খেদ নাই, কাঁটা বন দিয়ে না টানে।
মূলা চোরের ফাঁসি।
মূলে নেই লক্ষ্মী পূজো, একেবারে দশভুজো।
মশা মারতে কামান দাগা।
মশা মেরে হাত কাল।
মশালচী আপনি কানা।
মশালের কাছে চেরাগের আলো।
মহাজনো যেন গতঃ স পন্থাঃ।
মা কুরু ধনজনযৌবনগর্বম্।
মা ডাকলে খেলাম না, বাবা ডাকলে খেলাম না, সাত পুরুষের ঢেঁকি বলে, পান্তা খা, পান্তা খা।
মা পায় না কাঁথা-সেলাইয়ের সুতো, ব্যাটার পায়ে চৌদ্দ সিকের জুতো।
মা বলেছে আমার নাকি মাথা ধরেছে।
মা লক্ষ্মী ভিক্ষা মাগে।
মাইরের উপর ওষুধ নাই।
মাইরের নাম বাবাজী।
মা'র জ্বলে না- মাসীর জ্বলে!
মা'র থেকে যার দরদ বেশী - সে হইল ডাইনী।
মা’র পরনে ছেড়া ত্যানা পুতে করে বাবু আনা
মা‘য় কয় খা, বাপে কয় ল্যাখ, নামটি আমার আবদুল খালেক।
মাছের কাঁটা গলায় বাঁধলে বিড়ালের পায়ে গড়।
মাছের তেলে মাছ ভাজা।
মাছের মায়ের পুত্রশোক।
মাতৃবৎ পরদারেষু পরদ্রব্যেষু লোষ্ট্রবৎ; আত্মবৎ সর্বভূতেষু যঃ পশ্যতি স পণ্ডিতঃ।
মাতা শত্রুঃ পিতা বৈরী, যেন বালো ন পাঠিতঃ।
মাথা নেই তার মাথা ব্যথা।
মাথায় লাথি মেরে পায়ে গড়।
মাথার ঘায়ে কুকুর পাগল।
মানুষ গড়ে, বিধাতা ভাঙে।
মানুষে মানুষ চেনে, শুয়োরে চেনে কচু।
মামা কানা আমি চোখে দেখিনে।
মায়ের গলায় দিয়ে দড়ি, বউকে পরাই ঢাকাই শাড়ি।
মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি।
মায়ের চেয়ে দরদ বেশি তারে বলি ডান।
মায়ের পোড়ে না মাসির পোড়ে, পাড়া পড়শীর কেতন ওড়ে।
মারি তো গণ্ডার, লুটি তো ভাণ্ডার।
মারের চোটে ভূত পালায়।
মারো আর ধরো পিঠে দিয়েছি কুলো, বকো আর ঝকো কানে দিয়েছি তুলো।
মিছরির ছুরি।
মিছে কর আম্বা, যা করেন জগদম্বা।
মিষ্টান্নমিতরে জনাঃ।(বিবাহকালে) কন্যা কাময়তে রূপং, মাতা বিত্তং, পিতা শ্রুতম্[বিদ্যা];বান্ধবাঃ কুলমিচ্ছন্তি, মিষ্টান্নমিতরে জনাঃ।
মিষ্টি কথায় চিঁড়ে ভেজে না।
মেও ধরবে কে?
মেগে এনে বিলিয়ে খায় হাতে হাতে স্বর্গ পায়।
মেঘ না চাইতেই জল।
মেজে ঘষে হল ক্ষয়, কালো কি তবু ধলো হয়।
মেয়েদের শ্বশুর বাড়ি বলে কিছু নেই, সেটাই তার বাড়ি; বাপের বাড়ি বেরু বাড়ি।
মেয়ের মায়ের পাঁচটা প্রাণ।
মেরে তুলোধোনা করা।
মোগল পাঠান হদ্দ হল ফারসি পড়ে তাঁতি।
মোগল পাঠান হদ্দ হল, ফারসি পড়েন তাঁতি, বাঘ পালাল বিড়াল এল, শিকার করতে হাতি।
মোল্লার দৌড় মসজিদ অবধি/পর্যন্ত/তক।
মৌনং সম্মতি লক্ষনম্।





যঃ পলায়তি স জীবতি।
যকের চোখে ঘুম নাই।
যখন আদর জুটে, ফুটকলাই দিয়ে ফুটে; যখন আদর টুটে, ঢেঁকি দিয়ে কুটে। যখনকার যা তখনকার তা।
যখন তখন করে পাপ, সময় বুঝে ফলে পাপ।
যখন বিধি মাপায়, তখন উপরি উপরি মাপায়।
যখন যার কপাল ধরে শুকনো ডাঙায় ডিঙি সরে।
যখন যার তখন তার।
যখন যার পড়তা হয়, ধুলোমুঠো ধরে সোনামুঠো হয়।
যখন যেমন তখন তেমন।
যজমানী বামুনের অন্নাভাব নেই।
যত কর তাড়াতাড়ি, খেয়াঘাটে গড়াগড়ি।
যত কর পুতু পুতু, ততো হয় ছোলার ছাতু।
যত গর্জে ততো বর্ষে না।
যত দোষ নন্দ ঘোষ।
যত পাই ততো খাই।
যত বড় মুখ নয়, ততো বড় কথা।
যত মত, ততো পথ।
যত সয় ততো রয়।
যত হাসি ততো কান্না, বলে গেছে রামশর্মা।
যতই কর শিব সাধনা, কলঙ্কিনী নাম যাবে না।
যতই করিবে দান ততো যাবে বেড়ে[বিদ্যা]।
যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ।
যতন নহিলে নাহি মিলয়ে রতন।
যম জামাই ভাগনা এ তিন নয় আপনা।
যতো ধর্ম স্ততো জয়ঃ।
যথারণ্যং তথা গৃহম্।
যদ্ দৃষ্টং তল্লিখিতম্।
যদু ধোপা, মধু ধোপা, সব ধোপারই এক চোপা।
যুদ্ধের পরে সেপাই হাজির।
যদি থাকে আগে পিছে, কি করে শাকে মাছে(আগে ঘি শেষে দুধ থাকলে)।
যদি থাকে নসিবে- আপনি আপনি আসিবে।
যদি থাকে বন্ধুর মন- গাং পাড় হইতে কতক্ষন।
যদি দেখে আঁটা আঁটি কাঁদিয়া ভিজায় মাটি।
যদি বরে পৌষে – কড়ি বিকায় তুষে।
যদি বরে মাঘে- সোনা ফলে বাগে।
যদি বরে মাঘের শেষ- ধন্য রাজার পূণ্য দেশ।
যদি বর্ষে আগনে, রাজা যায় মাগনে।
যদি হয় সুজন, তেঁতুল পতায় ন‘জন।
যদি হয় সুজন, তেতুল পাতায় নয়জন।
যদি হয় সোনার ভাগারি,তবু ধরে লোহার কাটারি।
যস্মিন্ দেশে যদাচারঃ।
যা নেই ভারতে তা নেই ভারতে।
যাকে রাখ সেই রাখে।
যার মনে যা - ফালদা ওঠে তা।
যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা।
যাদৃশী ভাবনা যস্য সিদ্ধির্ভবতি তাদৃশী।
যাবজ্জীবেৎ সুখং জীবেৎ ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ; ভস্মীভূতস্য দেহস্য পুনরাগমনং কুতঃ।
যার আছে মাটি,তারে নাহি আঁটি।
যার কাজ তারেই সাজে, অন্য লোকের লাঠি বাজে।
যার কেউ নেই তার ভগবান আছে।
যার গলা ধরে কাঁদি, তার নাহি পানি।
যার ছেলে যত পায়, তার ছেলে ততো চায়।
যার জন্য করি চুরি সে-ই বলে চোর।
যার দৌলতে চুয়া চন্দন, তারি পাতে খোলার ব্যঞ্জন।
যার ধন তার ধন নয়, নেপোয় মারে দই।
যার নুন খাই তার গুণ গাই।
যার বিয়া তার খবর নাই, পাড়াপড়শির ঘুম নাই।
যার বিয়ে তার মন নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই।
যার যা রীত,ছাড়ে কদাচিৎ।
যার শিল, যার নোড়া, তারই ভাঙি দাঁতের গোড়া।
যারে না বামুন বলি তার গায়ে নামাবলী।
যারে নিন্দে, তারে পিন্দে।
যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা।
যারে বললে ছি, তার রইল কি?
যাহা বাহান্ন তাহা তিপ্পান্ন।
যে কুকুর ঘেউ ঘেউ করে সে কুকুর কামড়ায় না।
যে কথা রটে, তার কতক বটে।
যে মুলোটা বাড়ে তা পত্তনেই বুঝা যায়।
যে বাতাসে দাবানল বাড়ে, সেই বাতাসেই প্রদীপ নেভে।
যে যায় লঙ্কায় সে-ই হয় রাবণ।
যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে।
যে সহে সে রহে।
যেই গরু দুধ দেয়- তার লাথি খাওয়াও ভাল।
যেই ছাও ওড়ে, ঘরের ভিতরেই ওড়ে।
যেই না মাইয়ার চেয়ারা, নাম রাইখছে ফেয়ারা।
যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধে হয়।
যেখানেই আঁটাআঁটি, সেখানেই লাঠালাঠি।
যেন তেন প্রকারেণ।
যেমন কর্ম তেমনি ফল, মশা মারতে গালে চড়।
যেমন সরা, তেমনি হাঁড়ি, গড়ে রেখেছে কুমোর বাড়ি।
যোগ্যং যোগ্যেন যুজ্যতে।





রুক্ষ মাথায় তেল দেয় না, তেলা মাথায় তেল।
রক্ষকে ভক্ষণ করে, কে তারে রাখতে পারে?
রঙ থাকলে রাঙা কড়ি, রঙ ফুরোলে গড়াগড়ি।
রতনে রতন চেনে।
রথ দেখা আর কলা বেচা।
রূপে ঢল ঢল গুণে পশরা, কেঁদে ম‘ল যত ভুঁইছুঁচোরা।
রাই কুড়িয়ে বেল।
রাখে কৃষ্ণ মারে কে, মারে কৃষ্ণ রাখে কে?
রাজা থাকতে কোটালের দোহাই।
রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলুখাগড়ার প্রাণ যায়।
রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট, স্ত্রীর দোষে স্বামীর কষ্ট।
রাজার রাজপাট যোগী মুনির কাঁথা।
রাজার রানি কানার কানী।
রাজারও রায়ত নয়, সাধুরও খাতক নয়।
রাত উপোসে হাতি পড়ে।
রাঁধতে দেরি সয়, বাড়তে দেরি সয় না।
রান্না খেতে কান্না পায়।
রাম না হতে রামায়ণ।
রাম ভজি কি রহিম ভজি?
রাম লক্ষণ দুটি ভাই, রথে চড়ে স্বর্গে যাই।
রামের ভাই লক্ষণ আর কি!
রোগ মুড়িতে[মাথায়] আর ভুঁড়িতে।
রোগের শেষ, আগুনের শেষ, শত্রুর শেষ, ঋণের শেষ, এ সবের শেষ রাখতে নেই।
রোজার[ওঝা] ঘাড়ে বোঝা।





লক্ষ্মীর ঘরে কাল পেঁচা।
লক্ষ্মীর পো ভিখ মাগে গো।
লুকিয়ে খেলে শুকিয়ে যায়।
লঙ্কায় রাবণ ম‘ল, বেহুলা কেঁদে রাঁড়ী হল।
লজ্জা নেই যায়, রাজা হারে তায়।
লম্বা কোঁচায় নমস্কার।
ললাটলিপি খণ্ডন করা যায় না।
লাই কুত্তার পাতে ভাত।
লাউশাকের বালি, আর অন্তরের কালি।
লাখ কথার ওপর এক কথা।
লাখ টাকা লাখ টাকা, দুকুড়ি দশ টাকা।
লাখ টাকা লাখ টাকা, তিন কুড়ি তিন টাকা
লাখ টাকায় বামুন ভিখারি।
লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন।
লাগে তুক্ না লাগে তাক্।
লাজে বউ খান না, চালতা হেন গ্রাস।
লাজের মাথায় পড়ুক বাজ, সাধ গিয়ে আপন কাজ।
লাট সাহেব আর কি!
লাথ সয় তো বাত সয় না।
লাথির কাজ কি চড়ে হয়?
লাথির ঢেঁকি কি চড়ে ওঠে?
লাথির ঢেঁকি মাথয় চড়ে।
লাভে লোহা বয়।
লাভের গুড় পিঁপড়েয় খায়।
লিখিব পড়িব মরিব দুঃখে, মৎস্য মারিব খাইব সুখে।
লেখা নয় যেন আরশোলার পায়ের ছাপ।
লেখা পড়া করে যেই, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সেই।
লেগে থাকলে মেগে খায় না।
লেঙটার নাই বাটপারের ভয়।
লোকে বলে আছে ভাল, শালুক খেয়ে দাঁত কালো।
লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।
লোম বাছতে কম্বল উজাড়।
লোহা পাথরে যুদ্ধ করে, শোলা দিদি পুড়ে মরে।





শংকরাকে খেলে বাঘে, অন্যেরা কোথায় লেগে?
শকুন যতই উপ্রে উঠুক তার নজর নিচেই থাকে।
শকুনের দোয়ায় গরু মরে না।
শক্ত মাটিতে বিড়াল আঁচড়ায় না।
শক্তের তিনকুল মুক্ত।
শক্তের ভক্ত নরমের যম/বাঘ।
শুকনো ডাল ভাঙলেও নোয় না।
শুকনো কাঠে ব্রহ্মশাপ।
শুকনো গাছে জল সেঁচা।
শুকনো ডাঙায় আছাড় খাওয়া।
শঠে শাঠ্যং সমাচারেৎ।
শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল।
শতং বদ মা লিখ।
শতং মাড়িং ভবেৎ বৈদ্যঃ, সহস্র মাড়িং চিকিৎসকঃ[মাড়িং=ঘোঁটানো]।
শত্রুর মুখে ছাই দেওয়া।
শত্রুর শেষ রাখতে নাই।
শুকাইলেও আদার ঝাঝ যায় না।
শুধু কথায় চিঁড়ে ভেজে না।
শুধু গৌর নয়, গৌরহরি।
শুধু মেঘে মাটি ভেজে না।
শুয়োরের কপালে সিন্দুর লাগে না।
শূন্য কলসি বাজে বেশি।
শনির দৃষ্টি হলে পোড়া শোলও পালায়।
শনৈঃ পর্বত লঙ্ঘনম্।
শ্বশুর বাড়ি মধুর হাঁড়ি, তিন দিন পরে ঝাঁটা বাড়ি।
শ্বা যদি ক্রিয়তে রাজা, স কিং নাশ্নাত্যুপানহম্।
শ্বেত চামর আর কোষ্টা পাট(এক নয়)।
শুভস্য শীঘ্রম্ অশুভস্য কালহরণম্।
শমন-দমন রাবণ রাজা, রাবণ-দমন রাম।
শ্যাম রাখি না কুল রাখি?
শুয়ে শুয়ে লেজ নাড়ে সেই বাঘে মানুষ মারে।
শুয়োরের কপালে গঙ্গামাটির ফোঁটা।
শ্রদ্ধার যা পাই হাত পেতে খাই।
শরীরং খলু ব্যাধিমন্দিরম্।
শরীরমাদ্যং খলু ধর্মসাধনম্।
শরীরের নাম মহাশয়, যা সওয়াবে তাই সয়।
শসাবেচুনি বেচে শশা, তার হয়েছে সুখের দশা।
শাক অম্বল পান্তা, তিন ওষুধের হন্তা।
শাক দিয়ে মাছ ঢাকা।
শাক-চোরকে শূলে।
শাঁখাহাতী শাখা নাড়ে, বেড়াল ভাবে ভাত বাড়ে।
শাঁখের করাত আসতেও কাটে যেতেও কাটে।
শানকির উপরে বজ্রাঘাত।
শাপে বর হওয়া।
শামুক দিয়ে সাগর সেঁচা।
শাল চোরকে শূলে দেওয়া।
শালুক চিনেছেন গোপাল ঠাকুর।
শালগ্রাম পোড়ায়ে খেয়ে নুড়ি দেখে ভয়।
শালগ্রামের শোয়া বসা সমান।
শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢোকা।
শিকল কাটা টিয়া পোষ মানে না।
শিকারি বেড়ালের গোঁফ দেখলে চেনা যায়।
শিখলি কোথা, না দেখলাম যেথা।
শিখেছ কোথায়, ঠেকেছি যেথায়।
শিব গড়তে বাঁদর হল।
শিবের কন্যা শিবকে দান।
শিবের সঙ্গে খোঁজ নেই গাজনের ঘটা।
শিয়রে রাজা, কোটালের দোহাই।
শিরে কৈলে সর্পাঘাত তাগা বাঁধবি কোথা?
শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা।
শেয়ানা ঘুঘুর ছা, ফাঁদে দেয় না পা।
শেয়ানে শেয়ানে কোলাকুলি।
শেয়ালের বাড়ি নিমন্ত্রণ, না আঁচালে বিশ্বাস নেই।
শেষ রক্ষাই রক্ষা।





ষট্‌কর্ণে মন্ত্রভেদ।
ষাঁড়ের শত্রু বাঘে মারে।
ষেঠের বাছা ষষ্ঠীর দাস।
ষোল আনা বাজিয়ে নেওয়া।
ষোল আনাই ভুয়ো, ষোল কড়াই কানা।
ষোল আনাই লাভ।





স‘য়ে থাকলে র‘য়ে যায়।
সংসর্গজা দোষগুণা ভবন্তি।
সংসার আনন্দময় যার মনে যা লয়।
সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে ।
সকল নোড়াই শালগ্রাম হলে হলুদ বাটি কিসে?
সকল পাখিতেই মাছ খায়, নাম পড়ে মাছরাঙার।
সকল ব্রতই করলে যশী, বাকি আছে ভীম একাদশী।
সকালে পেঁয়াজ খাইলে বৈকালেও ঢেউক আইয়ে।
সখা যার সুদর্শন[কৃষ্ণ] তার সঙ্গে কি সাজে রণ?
সখি লো সখি আপনার মান আপনি রাখি।
সুখে থাকতে ভূতে কিলোয়।
সুখের ঘরে রূপের বাসা।
সুখের চেয়ে স্বস্তি ভাল।
সুখের প্রাণ গড়ের মাঠ।
সঙ্গ দোষে কি না হয়, ছুঁচো ছুঁলে গন্ধ হয়।
সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে।
সজনে শাক বলে আমি সকল শাকের হেলা, আমার খোঁজ কেবল টানাটানির বেলা।
সজনে শাকে নুন জোটে না, মসুর ডালে ঘি।
সুঁচ গড়তে জানে না, বন্দুকের বায়না নেয়।
সুঁচ গলে না কোদাল চালায়।
সুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরোনো।
সুঁচ, সোহাগা, সুজন, ভাঙ্গা গড়ে তিনজন।
সুজন-পিরিত সোনা, ভেঙে গড়া যায়;কুজন-পিরিত কাচ, ভাঙিলে ফুরায়। সুদিনের বারো ভাই, কুদিনের কেউ নাই।
সূর্যের চেয়ে বালু গরম।
স্ত্রিয়াশ্চরিত্রং পুরুষস্য ভাগ্যং দেবা ন জানন্তি কুতো মনুষ্যাঃ।
স্ত্রী ভাগ্যে ধন, পুরুষ ভাগ্যে জন।
স্ত্রী রত্নং দুষ্কুলাদপি।
স্ত্রীবুদ্ধি প্রলয়ংকরী।
সতী হল কবে, সে মরেছে যবে(মৃত্যুর পরে সতীত্বের নিশ্চয়তা প্রাপ্তি)। সত্যের দ্বারে আগড় নাই।
সদরে সূঁচ চলে না, মফস্‌সলে[মফঃস্বল] হাতি চলে।
সন্দেশের খোসা ফেলে খাওয়া।
সন্ন্যাসীর অল্প ছিদ্র গায় সর্বজন, শুভ্রবস্ত্রে মসীবিন্দু দেখায় যেমন।
সন্নেসি চোর, না বোঁচকায় ঘটায়।
স্পষ্ট কথায় কষ্ট নাই।
সফরী ফর্ফরায়তে। অগাধজলসঞ্চারী বিকারী ন চ রোহিতঃ; গণ্ডূষজলমাত্রেণ সফরী ফর্ফরায়তে।
সব কাজে যার হুঁশ, তারে কয় মানুষ।
সব জন্তু মোট বয় ধরা পড়েছে গাধা।
সব ঝিনুকে মুক্তা নেই।
সব ভালো যার শেষ ভালো।
সব রসুনের একই কোয়া।
সব শিয়ালের এক রা।
সব শেয়ালে কাঁটাল খেলে বকের মুখে আঠা।
স্বদেশের ঠাকুর, বিদেশের কুকুর।
স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ।
স্বনামা পুরুষো ধন্যঃ।
স্বভাব যায় না ম‘লে, ইল্লত যায় না ধুলে।
স্বভাবে করে না অভাবে করে।
স্বর্গ হতে পাওয়া।
স্বর্গে তুলে দেওয়া।
স্বর্গে দাসত্ব অপেক্ষা নরকে রাজত্ব ভাল।
সবুরে মেওয়া ফলে।
স্বল্পা বিদ্যা ভয়ংকরী।
সবাই কৃষ্ণের নাম করে আমি বললেই মারে।
সবাইকে পারা যায়, পায়ে পড়াকে পারা যায় না।
স্বর্ণকারের খুটখাট কামারের এক ঘা!
স্বামী নাই, পুত্র নাই, কপালভরা সিঁদুর, ধান নাই, চাল নাই, গোলাভরা ইঁদুর।
স্বামীর কিবা সুখ, পৌষমাসে ভাতের দুখ।
স্বামীর মা শাশুড়ি, তারে বড় মানি, কোথা হতে এলেন আমার খুড় শাশ-ঠাকুরানী।
স্রোতে ঘা ঢালা।
সবে কলির সন্ধে।
সবে ধন নীলমণি।
সমুদ্রে পাতিয়া শয্যা শিশিরে কি ভয়?
সমুদ্রে পাদ্য অর্ঘ্য।
সমুদ্রের জল বাড়েও না কমেও না।
সম্পূর্ণকুম্ভো ন করোতি শব্দম্।
সময় কারও হাতে ধরা নয়।
সময়গুণে আপন পর, খোঁড়া গাধার ঘোড়ার দর।
সময়ে না দেয় চাষ, তার দুঃখ বারোমাস।
সময়ের এক কথা অসময়ে শত।
সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়।
সর্বঃ কান্তমাত্মীয়ং পশ্যতি।
সর্বমত্যন্তগর্হিতম্।
সৎসঙ্গে স্বর্গবাস অসৎসঙ্গে সর্বনাশ।
সস্তার তিন অবস্থা।
স-সে-মি-রা[চারটি সংস্কৃত শ্লোকের প্রথম অক্ষর]।
সাজতে গুজতে দোল ফুরাল।
সাত কুঁড়ের ঘর গোঁসাই রক্ষা কর।
সাত কাণ্ড রামায়ণ পড়ে সীতা রামের পিসি।
সাত খুন মাফ।
সাত ঘাটের জল একঘাটে করা।
সাত ঘাটের জল খাওয়া।
সাত ঘাটের জল খাওয়ানো।
সাত চড়ে মশা মারা।
সাত চড়ে রা‘ কাড়ে না।
সাত নকলে আসল খাস্তা।
সাত পাঁচ খতিয়ে মনে, চাষ করে না সোনার বেনে।
সাত বার খেয়ে একাদশী।
সাত মন তেলও পুড়বে না রাধাও নাচবে না।
সাত রাজার ধন এক মানিক।
সাত সতীনে ঘরকন্না, বাড়ির গিন্নি ভাত পান না।
সাত সতীনে নড়ি চড়ি, বেড়া আগুনে পুড়ে মরি।
সাত সমুদ্র তের নদী পার।
সাঁতার দিয়া সিন্ধু পার।
সাঁতার না জানলে বাপের পুকুরেও ডুবে মরে।
সাতেও না পাঁচেও না।
সাধ কত ছিল রে চিতে, মলের আগে চুটকি দিতে।
সাধুনাং দর্শনং পুন্যম্।
সাধলে জামাই কাঁটাল খান না, শেষে জামাই খোসা পান না।
সাধলে জামাই খায় না কাঁঠাল, ভোতা[কাঁঠালের দণ্ড] নিয়ে টানাটানি।
সাধে কি আর বাবা বলি গুঁতোর চোটে বাবা বলায়।
সাধের কমল তুলতে গিয়ে হাতে ফুটল কাঁটা।
সাধের কাজল পরতে গিয়ে চক্ষু হল কানা।
সানাইয়ের পোঁ ধরা।
সাপ ম‘লেই সোজা।
সাপ মারলে শিবের লাগে।
সাপ যেখানে নেউল সেখানে।
সাপ হয়ে দংশে ওঝা হয়ে ঝাড়ে।
সাপও মরে লাঠিও না ভাঙে।
সাপকে দুধ খাওয়ালেও বিষ কমে না।
সাপে ডরায় ব্যাঙাকে, ব্যাঙা ডরায় সাপকে।
সাপের ছুঁচো গেলা।
সাপের পাঁচ পা দেখেছ?
সাপের লেখা বাঘের দেখা।
সাপের লেজে পা দেওয়া।
সাপের হাঁচি বেদেয় চেনে।
সাবধানের মার নেই।
সারা দিন থাকব নায়, কখন দিব খড়ম পায়?
সারা দিন বঁড়শি হাতে, সন্ধেবেলা আমড়া ভাতে।
সারা দিন যায় হেসে খেলে, সন্ধেবেলা বৌ কাপাস(কার্পাস তুলো) ডলে।
সারা রাইত মারলাম সাপ- জাইগ্যা দেখি দড়ি।

সিংহের বেটা শেয়াল হয় না।
সিংহের ভাগ শেয়ালে খায়।
সিধে আঙুলে ঘি ওঠে না।
সিন্দুকের কাছে ধার করা।
সিন্নি দেখে এগোয়, কোঁৎকা দেখে পিছোয়।
সে কহে বিস্তর মিছা, যে কহে বিস্তর।
সে কাল গেছে বয়ে, এঁটে কচু খেয়ে।
সে গুড়ে বালি।
সে বড় কঠিন ঠাঁই গুরু শিষ্যে দেখা নেই।
সে রামও নাই, সে অযোধ্যাও নাই।
সেই কড়ি ক্ষয় তবু বৌ সুন্দর নয়।
সেই গাধা জল খায়, তারে ঘুলিয়ে ঘুলিয়ে নেয়।
সেই তো মল খসালি, তবে কেন লোক হাসালি?
সেই ধানে সেই চাল, গিন্নি বিনে আলথাল।
সেই বুড়ি নাচে কত কাচা কাচে।
সেকরা বাড়ির বিড়াল ঠুকঠুকুনিতে ভয় পায় না।
সেকরার ঠুকঠাক কামারের এক ঘা।
সেধে পেড়ে ভাব, আর মেজে ঘষে রূপ।
সেধো ভাত খাবি, না হাত ধুয়ে বসে আছি।
সেয়ানে ঠকলে বাপকেও বলে না।
সোজা আঙুলে ঘি ওঠে না।
সোঁদর বনের বাঁদর রাজা।
সোনা ফেলে আঁচলে গেরো।
সোনা বলে জ্ঞান ছিল, কষিতে পিতল হল।
সোনার আংটি আবার ব্যাকা-সুজা।
সুনার আংটি আবার ব্যাকা-সুজা।
সোনার উপর মিনের কাজ।
সোনার ওজন কুঁচের সহিত।
সোনার থালে ক্ষুদের জাউ।
সোনার দাঁড়ে কাক বসানো।
সোনার লঙ্কা ছারখার।
সোমে বুধে ধানের গোলায় না দিও হাত, ধার করে খেও ভাত।
সৌরভে ভ্রমর মজে।





হংসমধ্যে বকো যথা।
হাঁ কর তুমি, বত্রিশ নাড়ি গুনি আমি।
হওয়া ভাতে কাঠি।
হক কথা বলব, বন্ধু বেগড়ায় বেগড়াবে, পেট ভরে খাব, লক্ষ্মী ছাড়ে ছাড়বে। হক কথার মার নেই।
হক কথাতে আহাম্মক রুষ্ট।
হবু ছেলের অন্নপ্রশান।
হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী।
হয় না হয় বিয়ে, ঢাক বাজাও গিয়ে।
হয় যদি তিলটা, কয় তবে তালটা।
হয়কে নয়, নয়কে হয় করা।
হ্যাঁপায় পড়ে ট্যাপা ভাসে স্রোতে।
হরি ঘোষের গোয়াল।
হরি বড় দয়াময়, কথায় বটে কাজে নয়।
হরি বাঁচান প্রাণ বৈদ্যের বাড়ে মান।
হরির খুড়ো মাধাই দাস(সম্পর্কহীন)।
হরে দরে হাঁটু জল।
হলুদ জব্দ শিলে, ঝি/বউ জব্দ কিলে, পাড়াপড়শি জব্দ হয় চোখে আঙুল দিলে।
হলুদ গুঁড়ো, নুনের গুঁড়ো(সকল কাজে হস্তক্ষেপ করা লোক)।
হা‘ল ছেড়ে দেওয়া।
হা‘ল যদি ধরে ঠেসে, যায় কি তরী তুফানে ভেসে?
হা‘লে পানি পায় না।
হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়ে না।
হাগা নাই গোয়ার ডাক কত!
হাগুন্তির লাজ নাই, দেখুন্তির লাজ।
হাজার টাকা দিলেও কাটা কান জোড়া লাগে না।
হাঁটবার আগে হামাগুড়ি।
হাটে কলা নৈবেদ্যায় নমঃ।
হাটে কি দর চাল, না মামার ভাতে আছি।
হাটে গেল কার মা, দেখে এল বাঘের পা।
হাটে হাঁড়ি ভাঙা।
হাড় এক ঠাঁই মাস এক ঠাঁই করা।
হাড় খাব মাস খাব, চাম দিয়ে ডুগডুগি বাজাব।
হাঁড়ির ভাত একটা টিপলেই সবার খবর মেলে।
হাড়ে ভেলকি খেলে।
হাত ঝাড়লে পর্বত।
হাত দিয়ে জল গলে না।
হাতি কাদায় পড়লে চামচিকেও লাথি মারে।
হাতি পড়লে আড়ে চামচিকেতেও লাথি মারে।
হাতি ঘোড়া গেল তল, ভেড়া বলে কত জল?
হাতি চড়ে ভিক্ষে মাঙি, ইচ্ছেয় না দাও ঘর ভাঙি।
হাতি দিয়ে হাতি ধরা।
হাতি পড়েছে দকে, ঠোকর দিচ্ছে বকে।
হাতি পাঁকে পড়লে হাতিই উদ্ধার করে।
হাতি মরলেও গাধার চেয়ে উচা থাকে।
হাতি মরলেও লাখ টাকা।
হাতি মলে‘ও ঘোড়ার দুনো।
হাতির কাঁধে আসে যায়, হাম্বারবে মুচ্ছো যায়।
হাতির দম্ভ চূর্ণ হয় পাহাড়ের কাছে।
হাতে কড়ি পায়ে বল, তবে যাই নীলাচল।
হাতে কালি মুখে কালি বাছা আমার লিখে এলি?
হাতে দই পাতে দই, তবু বলে কই কই?
হাতে না মেরে ভাতে মারা।
হাতে নেই কানাকড়ি, করে বেড়ায় বাড়াবাড়ি।
হাতে পাঁজি মঙ্গলবার।
হাতে মাথা কাটা।
হাতে যদি নাই ধন, পাঁচে হও এক মন।
হাতে যদি ফল পাই, তবে কি আঁকশি চাই।
হাতের পাঁচ আঙুল সমান হয় না।
হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা।
হাতের শাঁখা দর্পণে দেখা।
হাতেরও যাবে পাতেরও যাবে।
হাভেতে যবে ফকির হল, দেশেও মন্বন্তর এল।
হাভেতের দুনো গ্রাস।
হায় রে আমড়া, কেবল আঁটি আর চামড়া।
হারিয়ে তারিয়ে কাশ্যপ গোত্র।
হারিলে ঘরের ভাত, জিতিলেও তাই।
হালে বয় না, তেড়ে গুঁতোয়।
হিঁদু যদি মুসলমান হয়, মুরগি খেতে কম নয়।
হিঁদু মোছলমান হলে গরু খায় গিলে গিলে।
হিসেবের গরু বাঘে খায় না।
হেলায় কর্ম নষ্ট, বুদ্ধি নষ্ট নির্ধনে, যাচনে মান নষ্ট, ভোজন নষ্ট দই বিনে।
হেলে ধরতে পারে না কেউটে ধরতে যায়।
হেলে যায় চষতে, বামুন যায় বসতে।
হেলে যায় হাল নিয়ে, বিধাতা যায় তুল[তুলাদণ্ড] নিয়ে।
হেসে হেসে কথা কয় সে হাসি তো ভালো নয়।
হোদল বনে শিয়াল রাজা




প্রবাদ-প্রবচন
বাংলা-ইংরেজি প্রবাদ সংগ্রহ।


অ-1| অকারনে কিছুই ঘটে না।
No smoke without fire.
Nothing can come out of nothing.
Where there is smoke, there is fire.
অ-2| অঙ্গারঃ শতধৌতেন মলিনত্বং ন মুঞ্চতি।
Black will take no other hue.
An Ethiopian will not change his skin.
One’s own nature remains unchanged.
অ-3| অগভীর জলে সফরী ফরফরায়তে।
An empty vessel sounds much.
অ-4| অতি আদরে সন্তান নষ্ট।
Too much indulgence, spoils a child.
Spare the rod, spoil the child.
অ-5| অতি চালাকের গলায় দড়ি।
Every fox must pay his skin to the furrier.
Too much cunning overreaches itself.
Too much cunning undoes.
অ-6| অতি দর্পে হত লঙ্কা।
Pride goeth (goes) before destruction.
Pride will have a fall.
Pride has its fall.
অ-7| অতি বাড় বেড়না ঝড়ে ভাঙবে মাথা।
অতি বাড় বেড়ো নাকো ঝড়ে পড়ে যাবে।
Pride will have a fall.
High winds blow on high hills.
অ-8| অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।
Too much courtesy, too much craft.
Too much courtesy, full of craft.
অ-9| অতি যত্নে মরণ ফাঁদ।
Care killed the cat.
অ-10| অতি লোভে তাতি নষ্ট।
To kill the goose that lays the golden eggs.
Grasp all, loose all.
All covet, all lost.
অ-11| অতীত সুধরানো যায় না।
What is done, cannot be undone.
Bygone is bygone.
Past is past.
অ-12| অতীতের কথা তুলে দুঃখ করে লাভ নেই।
It is no use crying over spilt milk.
অ-13| অতীতের কথা (দুঃখ) ভুলে যাও।
Let bygones be bygones.
Past is past.
অ-14| অর্থই অনর্থের মূল।
Money is the root of all evils.
অ-15| অধিক আড়ম্বরে কাজ হয় না।
Barking dogs seldom bite.
Penny wise, pound foolish.
অ-16| অধিক সন্যাসীতে গাজন নষ্ট।
Too many cooks spoil the broth.
What is everybody’s business is nobody’s business.
অ-17| অধিকন্তু ন দোষায়।
The more, the merrier.
অ-18| অধ্যবসায়ের ফলেই সাফল্য লাভ ঘটে।
Slow and steady wins the race.
Perseverance begets success.
অ-19| অর্ধ সত্য মিথ্যা অপেক্ষা ভয়ঙ্কর।
Half truth is more frightening than falsehood.
অ-20| অনভ্যাসের ফোঁটা কপালে চড় চড় করে।
Every shoe fits not every foot.
It takes time to get used to things.
অ-21| অনিশ্চিতের আশায় নিশ্চিত পরিত্যাগ করিও না।
Quit not certainty for hope.
Don’t exchange substance for shadow.
অ-22| অনুশীলনে সিদ্ধ হস্ত।
Practice makes a man perfect.
অ-23| অনুগত বন্ধুদ্বয়।
David and Jonathon.
Pair of devoted friend.
অ-24| অন্তরঙ্গ বন্ধুদ্বয়।
Pair of devoted friend.
David and Jonathon.
অ-25| অন্ধকারে কিবা রাত্রি কিবা দিন।
Day and night are alike to a blind man.
Day and night must be alike to the blind.
অ-26| অন্ধের কাছে দিবা রাত্রি সমান।
Day and night are alike to a blind man.
Day and night must be alike to the blind.
অ-27| অন্ধের দেশে কানা রাজা।
A figure among cyphers.
অ-28| অপচয় করো না, অভাবে পড়ো না।
Waste not, want not.
অ-29| অপরের বিষয়ে নাক গলাইও না।
Don’t poke your nose into the affairs of others.
অ-30| অবলার মুখই বল।
Arthur could not tame a woman’s tongue.
None can control a woman’s tongue.
অ-31| অবস্থা বুঝে ব্যাবস্থা কর।
Cut your coat according to your cloth.
অ-32| অভাবে স্বভাব নষ্ট।
Necessity knows no law.
অ-33| অভিজ্ঞ লোক সহজে বোকা বনে না।
An old bird is not to be caught with chaff.
অ-34| অভ্যাসই স্বভাবে দাঁড়ায়।
Habit is the second nature.
অ-35| অযথা বিপদের মধ্যে যাওয়া যুক্তিযুক্ত নয়।
Discretion is the better part of valour.
অ-36| অরণ্যে রদন করা।
To cry in the wilderness
অ-37| অলস মস্তিষ্ক শয়তানের আড্ডাখানা।
Let us enjoy while in liesure.
অ-38| অলসতা দারিদ্রের কারন / লক্ষণ।
Indolence is the mother of poverty.
The indolent can never thrive.
A sleeping fox catches no poultry.
অ-39| অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করি।
A little learning is a dangerous thing.
Shallow knowledge turns one’s head.
অ-40| অল্প শোকে কাতর আর অধীক শোকে পাথর।

অ-41| অসৎ পথে আয় অসৎ পথেই যায়।
Ill got ill spent.
অ-42| অসময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু।
A friend in need is a friend indeed.
অ-43| অসারের তর্জন গর্জন সার।
Empty vessels sound much.
Too much talk ends nothing.
অ-44| অসি অপেক্ষা মসী শক্তিশালী।
The pen is mightier than the sword.
অ-45| অস্রদ্ধার ঘি-ভাতের চেয়ে স্রদ্ধার শাকান্নও ভাল।


অ-46| অহংকার ধ্বংসের মূল।
Pride goeth (goes) before destruction.
Obaidul Haque 6th June 2013 মিনিট আগে পোস্ট করেছেন
0
একটি মন্তব্য জুড়ুন

লোড হচ্ছে
Dynamic Views টেমপ্লেট. দ্বারা প্রস্তুত Blogger.