পৃষ্ঠাসমূহ

Friday, August 24, 2018

প্রতিটি প্রাণী, প্রতিটি সত্ত্বা, প্রতিটি কণা অস্থায়ী, নশ্বর


সকল ক্ষতিই মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারে। মানুষ পরম অভিযোজন ক্ষমতার একটি প্রাণী। যাকে ছাড়া/যা ছাড়া জীবন কল্পনাও করতে পারেননি, তার বিদায়ের পরে আপনি দিব্যি খাবেন, ঘুমাবেন, হাসবেন। কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। দুঃখ নয়, গ্লানি হয়। এমনকি আনন্দের সময়ও নয়। দুনিয়া নিজেই অস্থায়ী। এর ভেতরের প্রতিটি প্রাণী, প্রতিটি সত্ত্বা, প্রতিটি কণা অস্থায়ী, নশ্বর। এমন কিছুর প্রতি কীসের এত আকাঙ্ক্ষা, এত স্বপ্ন আর কল্পনা-জল্পনা আমাদের যা কিছু সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে শেষ হয়ে যাবে?

Thursday, May 17, 2018

সুখে থাকা দুঃখে থাকা নিজের কাছে

জীবন কতনা অদ্ভূত! কখনও কতইনা সুন্দর আর আনন্দময়, আর কখনও কত কষ্টকর! আমাদের জীবনটাই যে এমন! কেউ তো জানিনা আমার যতি চিহ্ন কোথায়… কী নিয়ে দুঃখ করবো আমি? আজ হয়ত আমি অনেক সুখী, যদি আজই চলে যেতে হয় এই জগত ছেড়ে, তবে আমি কি প্রস্তুত যাওয়ার জন্য? আমি যতটুকু সুখে আছি, অনেকেই তো তার চাইতে খারাপ আছেন, তাইনা? জীবনটাই তো এমন! অনেক পাওয়া আর না পাওয়া দিয়ে ঘেরা… অনেক তৃপ্তি আর অতৃপ্তি মাখানো… তাকে তো আপন করে নিলে চলেনা! তাকে সাথে করে চলতে হতে হয়। এলোমেলো হয়ে গেলেও প্রস্তুত হতে হবে আখিরাতের জন্য… সেটাতে ভুলে গেলে চলবেই না!
একটা কথা শুনেছিলাম :
জীবনে যা ঘটেছে, তা ভালো হয়েছে। যা হচ্ছে, তা-ও ভালো হচ্ছে। আর ভবিষ্যতে যা ঘটবে, তা-ও ভালোই হবে।
ছেলেবেলায় শোনা সেই গল্পের কথা মনে পড়ে গেলোঃ
এক লোক মসজিদ থেকে বের হয়ে দেখেন তার জুতো জোড়া হারিয়ে গেছে। ভীষণ মন খারাপ করে তিনি পথ চলতে শুরু করলেন খালি পায়ে।
কিছুদূর যাবার পর তিনি দেখলেন একজন ভিক্ষুককে যার দু’টো পা-ই নেই…
তখন তার নিজের জুতো হারাবার দুঃখ ঘুচে গেলো… আমার তো অন্ততঃ দু’টো পা অক্ষত আছে! যাক না দু’জোড়া জুতো…
যা হারিয়ে গেছে আমার, তার চাইতে অনেক বেশি কিছু আমার কাছেই আছে। অনেকের কাছে সেটুকুও তো নেই! এটাই হয়ত আত্মিক শান্তি অর্জনের ভাবনা হওয়া উচিত। আর সেই শান্তির খোজেই তো আমরা ছুটে চলেছি জগতময়! যদি মনেই শান্তি পাওয়া যায়, তবে আর ক্ষতি কী?
আজ কিছু টিপস পেলাম ইন্টারনেটে, কীভাবে ভালো থাকা যায় সে বিষয়ে কিছু কথা, কীভাবে মনটাকে ভালো রাখা যাবে সে বিষয়ে কিছু কথা…
নিজেকে কখনও অন্যের সাথে তুলনা করবেন না।
নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা থেকে বিরত থাকুন। সবকিছুকে পজেটিভ ভাবে গ্রহন করতে চেষ্টা করুন।
নিজেকে নিয়ে এবং কাছের মানুষদেরকে নিয়ে অনর্থক বেশি দুঃচিন্তা করবেন না। মনে রাখবেন, দুঃশ্চিন্তা কখনোই সমস্যার সমাধান করবেনা।
নিছক আড্ডা দিয়ে সময়ের অপচয় করবেন না।
শত্রুতা এবং অন্যের প্রতি ঘৃণা বজায় রাখবেন না। এতে কেবল দুঃশ্চিন্তা বাড়ে এবং মানসিক শান্তি নষ্ট হয়, যা আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
নিজের এবং অন্যের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিন, শিক্ষাকে মনে রাখুন, ভুলকে ভুলে যান। অতীতের ভুল নিয়ে অতিরিক্ত ঘাটাঘাটি করে তিক্ততা বাড়িয়ে বর্তমানের সুন্দর সময়কে নষ্ট করবেন না।
মনে রাখবেন, জীবন একটি বিদ্যালয় যেখানে আপনি শিখতে এসেছেন। জীবনের যত সমস্যা তা এই বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত, এ নিয়ে তাই চিন্তা না করে বীজগণিতের মত সমাধানের চেষ্টা করুন।
প্রচুর পরিমাণে হাসুন এবং সবসময় হাসিখুশী থাকার অভ্যাস করুন। সেই সাথে অন্যদেরকেও হাসিখুশী রাখতে চেষ্টা করুন।
জীবনের সব ক্ষেত্রে জয় লাভ করা অসম্ভব। তাই হার মেনে নিতে প্রস্তুত থাকুন। এটাও আপনার একটা মানসিক বিজয়।
অন্যের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করুন।
অন্যেরা আপনাকে নিয়ে কি ভাববে তা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। নিজের কাজ করে যান আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
সময়ের কাজ সময়ে করুন, কিছুতেই এখনকার কাজ পরে করার জন্যে ফেলে রাখবেন না।
যেসব জিনিস চিত্তাকর্ষক ও আকর্ষণীয়, কিন্তু ও উপকারী নয়, তা থেকে দূরে থাকুন।
সুসময় বা দুঃসময় যাই হোক না কেন, সবই বদলাবে, এটাই চিরন্তন নিয়ম, তাই কোনো কিছুতেই অতিরিক্ত উৎফুল্ল বা অতিরিক্ত দুঃখিত হবেন না।
অনেক তো শুনলাম… এবার শুধু একটা কথা বলতে চাই… মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেছেনঃ
তোমরা ধৈর্য্য ও সালাতের সাহায্যে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে আছেন। (সূরা বাকারা: ১৫৩)
আর আরেকটা কথা বলেই শেষ করতে চাই আজকের মতন… এটাও পবিত্র কুরআন থেকে নেয়া। আমরা মানুষ। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চেষ্টার পর আর কিছুই করার থাকেনা আমাদের… হৃদয়ে একটা শূণ্যতা সৃষ্টি হয় চাওয়া-পাওয়া নিয়ে। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সেই জায়গায় কত সুন্দর করে তার অভিভাবকত্বের নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন!
… এতদ্দ্বারা যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। (সূরা তালাক: ২)
এই স্বল্প সময়ের পৃথিবীতে যেন আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে বিদায় নিতে পারি সেই প্রার্থনা আমার সবার জন্য রইলো। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন, সঠিক পথ প্রদর্শন করুন। সঠিক পথ তো সে-ই পায়, যে তার জন্য স্বপ্ন দেখে, চেষ্টা করে, হৃদয় যার লালায়িত থাকে মুক্তির প্রত্যাশায়……

Tuesday, May 15, 2018

ভালবাসার শেষ কথা


প্রিয়তমা,
"বেদনার বালুচরে দাড়িয়ে বুক ভরা হাহাকার আর আর্তনাদ নিয়ে বড় জানতে ইচ্ছে করছে,তুমি কেমন আছো? "
তেমনি আছো কি, যেমনটি ছিলে? নাকি চন্দ্র সূর্যের দিন রাত্রির চির আবর্তনে পাল্টে গেছে তোমার অবস্থান? তুমি কি শরতের নীল আকাশের তুলো মেঘের মত মাথার ঠিক উপরে যেভাবে ছিলে সেভাবেই আছো, না কি কুয়াশায় ঢাকা কোন হাড় কাঁপানো শীতের মধ্য দুপুরে সূর্য হয়ে দক্ষিন গোলার্ধ ঘেষে এগিয়ে যাচ্ছ অনাগত গ্রীষ্মের দিকে? সত্যিই খুব জানতে ইচ্ছে করছে।
জানো সোনা,
আজ আমার মনের আকাশটা বিরহের অমাবস্যার ঘুটঘুটে আঁধারে ঢাকা।স্বপ্নের জোনাকি গুলো ডানা ভেঙে লুটিয়েছে জমিনে। কষ্টের ঝিঝিপোকা গুলো আর্তনাদ করে চলেছে স্মৃতি গুলোর বুক জুড়ে।আমি না পেরেছি তাদের বুঝাতে, না পারি নিজেকে বুঝাতে।ব্যর্থতার এহেন পরিস্থিতিতে আমি আজ বোবা-কালা কিংবা, অন্ধ কিছু একটা হব হয়ত।
জানো,আর তাই
ভালোবাসার যে আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে তুমি ছিলে তা আজ আঁধারে ঢাকা। । ছোট ছোট স্বপ্ন আর সুখের স্মৃতিগুলো রাতের আকাশে যে তারা হয়ে জ্বলত,তারাও আজ নিভে গেছে প্রায়।অশরীরী স্বপ্নেরা মাঝে মাঝে সামনে এসে ভীর করে বটে,কিন্তু তাদের ধরা যায় না,ছোয়া যায় না।
সত্যি তুমি ছাড়া আমি আজ অসহায়। সত্যি আজ আমি সেই আমি আর নেই।।আমি মরে গেছি মন থেকে, শুধু অর্ধ মৃত খাঁচাটা পরে আছে মানুষের মাঝে একটা নাম নিয়ে!
আজ তুমি বললে,"কিছু একটা লিখো তো,তোমার লেখা কতদিন হল পড়িনা।"
আমি বললাম,"লেখার ভাষা হারিয়েছে তোমার সাথে সাথে।"
তবুও তোমার অনুরোধে মোবাইলের ডিসপ্লের উপর ঘন্টা চার কেটে গেলো শুধুই তাকিয়ে তাকিয়ে! কিন্তু
শেষ পর্যন্ত অনেক চিন্তাভাবনা করে একটা শব্দ বেরুলো না যা লিখা যায়। একটা বাক্য এলো না, যা দিয়ে মনের কথা গুলো তোমাকে জানাতে পারি। তাই এলোমেলো শব্দের বিন্যাসে অনর্থক কিছু কথা বলে গেলাম,যার হয়ত কোন মানে হয়না! তবুও লিখলাম, হয়ত এরই মধ্যে কোন শব্দের আড়ালে আমার লুকোনো বেদনার ছাপ তুমি খুঁজে পাবে বলে।হয়ত কোন অনর্থক শব্দের আড়ালে লুকিয়ে থাকা তোমাকে পাবার তীব্র বাসনা তুমি বুঝবে বলে।
আচ্ছা,
তুমি কি খুঁজে পেয়েছ সেরকম কোন কিছু? বুঝেছ কি শব্দের আড়ালে হৃদয়ের তীব্র আর্তনাদ??
জানিনা।
আর জানতেও চাই না।
লক্ষীটি,
শুধু একটা কথাই জানতে চাই,
তুমি কি এখনো ভালবাসো আমাকে? এখনো কি অমাবস্যার আধার ঠেলে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে আমার আকাশে উদিত হওয়ার তীব্রতা অনুভব কর তুমি? যেমনটি করতে!
এখনো কি মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে গেলে মোবাইলের ডায়াল প্যাডে আমার নাম্বার তুলো আনমনে? একলা ঘরে ভয়ে কাঁচুমাচু হয়ে, এখনো কি ইচ্ছে করে শক্ত করে জরিয়ে ধরে থাকতে?
হয়তবা!!
যদি এখনো হৃদয়ের কোন এক কোণে স্মৃতিগুলো জ্বলে উঠে হঠাৎ হঠাৎ, কিংবা চোখের কার্নিশে জমা হয় বিরহী লোনা জল, তবে চলে এসো।
চলে এসো চির উন্মুক্ত হৃদয়ের দরজা ঠেলে।আমি অপেক্ষায় থাকবো এভাবেই ।।
ভালো থেক।খুব বেশি মিস করলে আয়নায় নিজেকে দেখো।স্পর্শ গুনো একটা একটা করে। সেখানেই আমাকে খুঁজে পাবে!
#সেইলকুফিশ