পৃষ্ঠাসমূহ

Tuesday, January 13, 2015

যুক্তিবাদী তারুণ্য গড়াই যার অঙ্গীকার



বিতর্ক একটি আলোময় ও বুদ্ধি উদ্ভাসিত জগত্। বিতর্ক মানুষের চেতনাকে জাগিয়ে তুলে, মনকে করে আলোড়িত ও শিহরিত, চিন্তা শক্তিকে করে উদ্দীপ্ত। আর এই উদ্দীপ্ত করার কাজটি নিষ্ঠার সাথে করে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা থেকে মফস্বল শহর তথা ইউনিয়ন পর্যায়ে বিতর্ক জগতের প্রিয় ব্যক্তিত্ব হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। আমাদের এবারের আয়োজনে উঠে এসেছেন প্রজন্মের এ আইকনের জীবনের কথামালা। তাকে নিয়ে লিখেছেন খালেদ আহমেদ

'আমি বিতর্ক নিয়ে বুকের গভীরে অন্য ধরনের এক স্বপ্ন অনুভব করি। এ কারণে যাপিতজীবনের অনেক কিছু তুচ্ছ করে বিতর্ক নিয়ে দৌড়াতে থাকি। এখানে এক অদ্ভুত ভালোলাগা এবং হূদয়গত টান আছে। আছে এক অপূর্ব মায়ার বন্ধন। বিতর্ক শিল্পের বিকাশে যে সময়টা দিই সেটা যদি ব্যবসা বা অন্যখাতে দিতাম তাহলে আর্থিকভাবে আরও লাভবান হওয়া আমার জন্য অসম্ভব কিছু ছিল না। কিন্তু মন টানে না, সে পথে সায় দেয় না। মনে হয় এই শিল্পটাই জীবনের সবকিছুর সাথে জড়িত আছে। স্বভাবতই বিতর্কটাকে ছাড়তে পারি না।' কথাগুলো বলছিলেন, হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিতর্ক সংগঠক হিসেবে যার জনপ্রিয়তা এখন আকাশ ছোঁয়া। বিতর্ক অনুষ্ঠান আয়োজন, পরিচালনা আর নির্মাণে রীতিমতো যিনি আইকনে পরিণত হয়েছেন। এককথায় বললে টেলিভিশন মিডিয়াতে বিতর্ককে জনপ্রিয় করার মূল কারিগর তিনিই। একের পর এক বিতর্ক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যে দিয়ে তিনি এই শিল্পের জনপ্রিয়তা এবং বিস্তার দুটোকে সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের উদ্যোগে দেশের আট হাজার মাধ্যমিক স্কুলের অংশগ্রহণে যে বিশাল বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় সেই 'বিতর্কবিকাশ' আয়োজনের অন্যতম কুশীলব ছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান পরিকল্পনা, সঞ্চালনা ও আয়োজনে অন্যতম ভূমিকা রাখেন। উল্লেখ্য ক'দিন আগে এই প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ডফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় নগরীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। এটিএন বাংলা সরাসরি গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠানটি প্রচার করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ, এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, শিক্ষাসচিব আব্দুল কামাল নাসের চৌধুরীসহ আরও অনেকে। ওইদিন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হয়। সমাজের নানা শ্রেণীপেশার মানুষের উপস্থিতিতে গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। সবাইকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে গ্র্যান্ডফাইনালের শুভসূচনা করেন হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তার চমত্কার এবং নিখুঁত উপস্থাপনায় দারুণ এক উপভোগ্য বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। পক্ষ-বিপক্ষের যুক্তি আর করতালিতে বিতর্কের এক অপরূপ সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ে। আগত অতিথিরাও কিছুক্ষণের জন্যে বিতর্কে নিমগ্ন হয়ে পড়েন। কিরণ বলছিলেন সেই কথা, 'দেখুন গ্রামবাংলার আট হাজার মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ রকম আয়োজন আর কখনোই হয়নি। আমি নিজেই প্রাণভরে এই বিতর্ক আয়োজন উপভোগ করেছি। এই আয়োজনের মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে শহর নয়, গ্রামেও আমাদের সুপ্ত সুন্দর প্রতিভা রয়েছে যারা সুযোগ পেলেই আলো ছড়াতে সক্ষম।' কিরণ আরও বলেন, 'যে সব প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এখানে অংশগ্রহণ করে তাদের অনেকেই মৌলিক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত। এমন অনেকে ছিল যারা একটা ভালো পোশাক পর্যন্ত পরতে পারে না। কিন্তু তারা স্বপ্ন দেখে সুন্দরভাবে বড় হওয়ার। স্বপ্ন দেখে সুন্দর একটি সমাজ নির্মাণের।' পুরো আয়োজনটা সুন্দরভাবে শেষ করার জন্য ব্র্যাককেই সব কৃতিত্ব দিতে চান কিরণ। তার মতে, ব্র্যাকের উদ্যোগ ও সুসমন্বয়, এটিএন বাংলার সহযোগিতা এবং ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির নিরবচ্ছিন্ন সম্পৃক্ততা 'বিতর্কবিকাশ' অনুষ্ঠানকে উচ্চমাত্রায় নিতে সক্ষম হয়। তিনি জানান, 'বিশেষ করে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালক ড. শফিকুল ইসলামের সার্বিক সমন্বয় বছরব্যাপী আয়োজিত এই প্রতিযোগিতাকে আমরা আমাদের প্রত্যাশিত জায়গায় নিতে পেরেছি।'

বিতর্কবিকাশের চূড়ান্ত লড়াইটা তো বেশ জমে উঠেছিল? কিরণ বলেন, 'নিঃসন্দেহে। এই প্রতিযোগিতা শেষে অনেক দূরদূরান্ত থেকে ফোন পেয়েছি। অনেকে এসএমএস করে অভিনন্দন জানিয়েছে। ওইদিন দুটি দলের শিক্ষার্থীরাই খুব ভালো বিতর্ক করেছিল। তথ্য, উপাত্ত দিয়ে পক্ষ-বিপক্ষের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি দারুণ উপভোগ্য করে তুলেছিল। সঞ্চালক হিসেবে আমি নিজেও গ্র্যান্ড ফাইনালটাকে এনজয় করেছি। কিরণ বলেন, দেখুন যে দুটি দল ফাইনালে উঠেছিল সে দুটি দল একেবারেই গ্রাম পর্যায়ের স্কুল। অথচ এখানকার ক্ষুদে বিতার্কিকরা চমত্কার উপস্থাপনা দিয়ে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়। আসলে বিতর্ক বিকাশের আয়োজনটাই ছিল অন্য রকম। আমার জানামতে, দেশের এতগুলো স্কুল কখনোই একসাথে এত বড় কোনো বিতর্ক প্রতিযোগিতাতে অংশ নেয়নি। আমার মনে হয় দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশেই এত বড় কোনো আয়োজন হয়নি। এ রকম একটি আয়োজনের অংশীদার হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হয়েছে। বিতর্ক বিষয়ক একটি অনুষ্ঠান কোনো চ্যানেল সরাসরি দেখাতে পারে এটাও বোধ হয় আমরাই প্রথম প্রমাণ দিলাম। এটিএন বাংলার সুবাদে 'বিতর্কবিকাশ' অনুষ্ঠানটি লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এবং দেশ-বিদেশের দর্শক টিভি সেটের সামনে বসে উপভোগ করেছে।'

বাংলাদেশে বিতর্ক চর্চাটাকে কীভাবে দেখতে চান জানতে চাইলে কিরণ বলেন, 'দেখুন, বিতর্ক চর্চার প্রসার বৃদ্ধিতে আমরা অনেক দিন ধরে নিরলসভাবে কাজ করছি। কিন্তু আমরা চাই বিতর্কচর্চাটা শিক্ষার মূলস্রোতে অর্ন্তভুক্ত হোক। এখন পর্যন্ত সেটা কিন্তু হয়নি। 'বিতর্কবিকাশ' অনুষ্ঠানের গ্র্যান্ড ফাইনালে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী এসেছিলেন। আমরা কিন্তু তার কাছে কিছুই চাইনি। শুধু বলেছি কো-কারিকুলার হিসেবে বিতর্কটাকে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। আমরা লক্ষ্য করছি এ বছরে পরিমার্জিত বা সংশোধিত পাঠ্যপুস্তকে ব্যবহারিক এবং উন্নয়নমূলক অনেক ধরনের শিক্ষা যুক্ত করা হয়েছে। অথচ ব্যবহারিক শিক্ষার চেয়ে জরুরি বিষয় শিক্ষার্থীর ভেতরের বিকাশ। তার মনন ও চেতনার বিকাশ। তো সেই পটভূমি তৈরি করতে হলে তার চারপাশের পরিবেশ-প্রতিবেশ সম্পর্কে জানতে এবং বুঝতে হবে। নিজের মাঝে বিশ্লেষণ ও বিচারিক ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ এখন তো গোটা বিশ্বেই প্রতিযোগিতার যুগ। তো এখানে বিতর্ক শিক্ষাটা একজন শিক্ষার্থীর মেধামনন বিকাশে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা মন্ত্রীকে সে কথাই বলেছি যে, আপনি পাঠ্যপুস্তকে বিতর্কটাকে অন্তর্ভুক্ত করুন। এটা করা হলে শিক্ষার্থীদের মাঝে এই চর্চাটা আরও অনেক বৃদ্ধি পাবে। মন্ত্রী মহোদয় আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে আগামী শিক্ষাবছরে বিতর্ককে পাঠ্যপুস্তকে অন্তুর্ভুক্ত হবে।'

বিতর্ক চর্চা, অনুশীলনকে কিরণ দেখেন সমাজের আয়না হিসেবে। কিরণ মনে করেন, সমাজে যেকোনো বিষয় নিয়ে যত বেশি বিতর্ক হবে তাতে করে সমাজ, রাষ্ট্রই বেশি লাভবান হবে বেশি। সমাজের সবক্ষেত্রে এক ধরনের জবাবদিহিতা উত্তরোত্তর বাড়বে। প্রথাগত চিন্তাভাবনা থেকে তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটবে। তরুণ প্রজন্মের মাঝে মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, সদিচ্ছা তৈরি হবে। কিরণ বলেন, সমাজে-রাষ্ট্র, কী হচ্ছে কেন হচ্ছে তা জানার অন্যতম মাধ্যম—বিতর্ক। যেখানে নানা মতের সম্মিলন ঘটে। যেখানে কবলই যুক্তি দিয়ে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। যেখানে আবেগের চেয়ে বাস্তবতার আলোকে বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়ে থাকে। বিষয়গুলোকে কেবলই তথ্য-উপাত্ত দিয়ে গভীরভাবে তুলে ধরতে হয়। কিরণ দারুণভাবে বিশ্বাস করেন বিতর্ক চর্চার যত প্রসার ঘটবে তত দ্রুতই সমাজ, রাষ্ট্র বদলে যাবে। আর এই বদলানোর বড় কারিগর হচ্ছে তারুণরা। যারা এ দেশের আগামী দিনের সম্পদ। এ কারণেই তিনি বারবার তরুণদের কাছে ফিরে যান। তরুণদের সাথে প্রবীণদের ভাবনার চমত্কার সম্মিলন ঘটিয়ে সুচিন্তার ঐক্য গড়ে তুলতে প্রয়াসী হন। এ জন্য বিতর্কের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের বিষয় বিশেষজ্ঞদের সাথে তরুণদের সেতুবন্ধন তৈরি করেন। এ পর্যন্ত দেশের অসংখ্য বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের তরুণদের পাশে বসিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন তিনি।

তারুণ্যে যাদের সাথে কিরণ বিতর্ক চর্চা শুরু করেছিলেন তাদের অনেকেই এখন আর বিতর্ক জগতের কেউ নন। কেউ কেউ একটু-আধটু জড়িয়ে আছেন। কেউ কেউ আবার একেবারেই লাপাত্তা। কিন্তু কিরণ সেই যে পথচলা শুরু করেছিলেন আর থামেননি। এখনও পথ চলছেন। বিতর্ক চর্চা আর প্রসারটাই তার কাছে মুখ্য বিষয়। বিতর্ক নিয়ে দীর্ঘ পথচলায় তার কোনো ক্লান্তি নেই। কখনও সঞ্চালক, কখনও স্পিকার হিসেবে দর্শকদের শুভ সম্ভাষণ জানান তিনি। কখনও পর্দার আড়ালে থেকে চমত্কার সব আয়োজন তরুণদের সামনে উপস্থাপন করেন। বিতর্ক নিয়ে কেন এই দীর্ঘ পথচলা? কিরণের সহাস্য উত্তর, 'দেখুন, একটা কমিমেন্ট থেকে বিতর্ক চর্চাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বহুবার বলেছি এ দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়তে হলে দায়িত্বশীল তরুণ দরকার। দেশপ্রেমিক তারুণ্য দরকার। যে তরুণরা বদলে দেবে আগামীদিন। আমি নিবিড়ভাবে বিশ্বাস করি যুক্তিশীল তারুণ্য গড়ে তুলতে পারলে আমাদের দেশ সামগ্রিকভাবে লাভবান হবে। আমরা বিতর্ক দিয়েই আলোকিত তরুণ সমাজ গড়ে তুলতে চাই। আর বিতর্ক চর্চাটাকে এগিয়ে নেওয়ার ব্রতে আমি কখনই পেছনে ফিরে তাকাইনি। বরাবরই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নতুন ধারণায়, নতুন উদ্দীপনায় বিতর্কটাকে সবার সামনে হাজির করতে। বিতর্ক মানেই যুক্তির সাধনা। সাধনা মানেই যেটা অন্তরে ধারণ করা হয়। আমি বিষয়টিকে অন্তর দিয়েই ধারণ করি। আর এ কারণেই বিতর্কের সাথে আমার বন্ধন অবিচ্ছেদ্য।'

বিতর্কের সাথে কিরণের যেন এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধন তৈরি হয়েছে। যে বন্ধন কখনই ছেড়া সম্ভব নয়। রবীন্দ্রনাথের সেই গানের ভাষায় বলতে হয়—আমি তোমারও সঙ্গে বেঁধেছি আমারও প্রাণ...। আসলেও তাই। কিরণের বাসায় গেলে দেখবেন বিতর্ক বিষয়ক ছবি, বই ছাড়া আর কিছু নেই। চারিদিকে অসংখ্য বিতর্কের ট্রফি, শুভেচ্ছা স্মারক, সম্মাননা, মেডেল অথবা আরও সব দেশি-বিদেশি সুভেনির। কিরণ বলেন, 'বিতর্ক বরাবরই যেকোনো বিষয়কে গভীরভাবে আত্মস্থ এবং বাস্তবতার নিরিখে বিশ্লেষণের একটা উপকরণ। বিতর্ক মানুষের ভাবনা বা চিন্তার জগতকে সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখে। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক অনেক বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত আমরা রাজনীতিবিদ এবং নীতিনির্ধারকদের কথা শুনছি। গণমাধ্যমগুলোও মতো প্রকাশ করছে। কিন্তু বিতর্কের চর্চামূলক অনুষ্ঠানে আমরা কিন্তু নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের চিন্তাভাবনার কথা শুনতে পাচ্ছি। পরিবর্তিত ধারায় তাদের দৃষ্টিভঙ্গিগুলো বুঝতে পারছি। বিতর্ক অনুষ্ঠান হলো—তরুণ সমাজের মতামত দেওয়ার সবচেয়ে ভালো একটা প্লাটফর্ম। কিরণ আরও বলেন, 'নিজের একটা বিশ্বাস, বোধ আর অফুরন্ত ভালোবাসা থেকেই গত দু দশক ধরে বিতর্ক চর্চার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে রেখেছি। সেই বিশ্বাস কিছু নয়, যুক্তিশীল আলোকিত তারুণ্য গড়ে তোলার নির্ভেজাল বিশ্বাস। আমরা যদি কিছু আলোকিত যুক্তিশীল তরুণ গড়ে তুলতে পারি তাহলে তারাই হবে আগামীতে সমাজ বদলের রূপকার। দেশ ও দশের জন্য তারাই হবে শ্রেষ্ঠ মানুষ। আমরা সেই মানুষ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।'

- See more at: http://archive.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDRfMjlfMTNfNF8zOF8xXzM2ODky#sthash.f1yZ8TQ8.dpuf

Monday, January 12, 2015

দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য ভূমি অফিস

The Daily Vorer Pata
১২ জানুয়ারি ২০১৫, সোমবার


রাজধানীর ডেমরা ভূমি অফিসের দেয়ালে একটি বিজ্ঞপ্তি লেখা আছে- নামজারি ফি বাবদ আবেদন কোর্ট ফি ৫ টাকা, নোটিশ জারির ফি ২ টাকা, রেকর্ড সংশোধন ও পরচা ফি ২২৫ টাকা। আবেদনের ৪৫ দিনের মধ্যে নামজারি সম্পন্ন করার কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমানে নামজারি করতে গেলে এসব দিনক্ষণ শুধু বিজ্ঞপ্তিতে শোভা পায় বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা। ৪৫ দিন তো দূরের কথা, অনেক ক্ষেত্রে এক বছরেও নামজারির মামলা নিষ্পত্তি হয় না। নামজারি মামলায় সরকার ২৩২ টাকা ফি নির্ধারণ করে দিলেও ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা ঘাটে ঘাটে সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করে নেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ডেমরা ভূমি অফিসে নামজারি করতে আসা জহিরুল ইসলাম শাহীন নামে এক ভুক্তভোগী ভোরের পাতাকে জানান, ‘ভূমি অফিসে প্রতিটি কাজেই নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অধিক বেশি টাকা দিতে হয়। জমির নামজারি, জমা খারিজ, মিস কেসসহ বিভিন্ন কাজে ঘুষ ছাড়া চলে না এ ভূমি অফিসে।’ এসব ক্ষেত্রে খরচের হার সাইন বোর্ডে নির্ধারণ করা থাকলেও তা মানছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সাইন বোর্ডে নির্ধারিত ফির চেয়ে অনেক গুণ বেশি টাকা গুনতে হয় জমির মালিকদের। তারপরও টাকা দিয়ে পার পাওয়া যাবে সে নিশ্চয়তাটুকু নেই এই অফিসে সেবা গ্রহণকারীদের। অফিসে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। আর তাদের ভোগান্তি যেন দেখার কেউ নেই! ৫টি সার্কেল অফিসের হালচাল : দুর্নীতি, অনিয়ম আর ভোগান্তির স্বর্গরাজ্য হয়েছে রাজধানীতে অবস্থিত সহকারী ভূমি কমিশনারের ৫টি সার্কেল অফিস, তহসিল অফিস, জেলা প্রশাসকের আওতাধীন রেকর্ড রুম, ভূমি অধিগ্রহণ শাখা এবং ভূমি জরিপ অধিদফতর। সাধারণ মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানে সেবার পরিবর্তে শিকার হচ্ছেন সীমাহীন ভোগান্তির। তেজগাঁও, ডেমরা, ধানম-ি, মোহাম্মদপুর ও কোতোয়ালি- এ ৫টি সার্কেল অফিস ও জেলার রেকর্ড রুমে দালাল, উমেদার এবং তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের খপ্পরে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ভূমি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র আর পর্চা। টাকা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না। এমন অভিযোগ রয়েছে টাকা দিলে মৃত মানুষের নামেও বের হচ্ছে পর্চা। বিভিন্ন জরিপ, সংশোধন, তদন্তের নামেও হচ্ছে লাখ লাখ টাকার দুর্নীতি। জমা-খারিজ, নামজারি (মিউটিশন), নামজারি সংক্রান্ত বিভিন্ন সংশোধন, মূল দলিল, ভায়া দলিলের সার্টিফাইড কপি, মিস কেইস দায়ের, ভূমি কর পরিশোধ, রেকর্ড সংশোধন, আরএস, এসআর ও মহানগর পর্চা কপি, এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ভুলভ্রান্তি সংশোধন, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি ওয়াশিরদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে দেওয়া মূলত এসি (ল্যান্ড) অফিস ও স্থানীয় তহসিল অফিসের কাজ।
জানা যায়, ঢাকার ৫টি ভূমি সার্কেল অফিসে প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার মানুষ আসে তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। প্রতিটি সার্কেলের প্রধান হলেন একজন সহকারী কমিশনার। এছাড়াও কাগজে-কলমে প্রতিটি সার্কেলে কানুনগো, সার্ভেয়ার, নাজির, মিউটেশন ক্লার্ক, প্রসেস সার্ভেয়ার, পিয়নসহ মোট ১০ থেকে ১২ জন স্টাফ কাজ করছেন। কিন্তু বাস্তবে সার্কেল অফিসগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি অফিসকে ঘিরে আছে কমপক্ষে ৪০/৫০ জন। বাকিরা সরকারি বেতনভুক্ত না হয়েও নিজেদের স্টাফ (ওমেদার) পরিচয় দিয়ে লাগামহীনভাবে চালাচ্ছেন দুর্নীতি আর লুটপাট। এদের জন্য সরকারিভাবে কোনো বেতন-ভাতা না থাকলেও তাদের মাসিক আয় একজন সহকারী কমিশনারের চেয়ে বেশি বলে জানা যায়।
দালালচক্র : অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছত্রছায়ায় প্রতিটি ভূমি অফিসে গড়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ দালালচক্র। এ চক্রটি এমনভাবে ভূমি অফিসগুলোকে ঘিরে রেখেছে যে তাদের অতিরিক্ত টাকা দেওয়া ছাড়া সেখানে কোনো কাজ করিয়ে নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর এভাবেই প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে বছরের পর বছর ধরে ভূমি অফিসের কার্যক্রম। কেউ যদি এ দালালচক্রকে অতিরিক্ত টাকা না দিয়ে স্বাভাবিক নিয়মে ভূমি অফিস থেকে তার প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে চান তাহলে অবশ্যই তাকে কোনো না কোনো হয়রানির শিকার হতে হবে। ডেমরা ভূমি অফিসের ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভূমি অফিসগুলোতে প্রকাশ্যে দুর্নীতি হয়- এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে ভূমি অফিসকে ঘিরে স্থানীয় কিছু দালালচক্র গড়ে ওঠায় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অফিসের কাজকর্ম মূলত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি।’
টিআইবির জরিপ : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ টিআইবির পরিচালিত এক জরিপে জানা যায়, জমির মিউটেশন, রেজিস্ট্রেশন, ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ বা অনুসন্ধান ও সরকারি জমি বরাদ্দ থেকে শুরু করে আরো অনেক কাজ রয়েছে যেগুলোকে পুঁজি করে এসব দালালচক্র সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। ২০১২ সালে দেশের ৭,৫৫৪টি পরিবারের ওপর টিআইবির পরিচালিত এক জরিপে জানা যায়, এসব পরিবারের ৯২ শতাংশই বলেছে ভূমি অফিসের কাজ সম্পন্ন করতে তাদের অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয়েছে।
জরিপে আরো দেখা গেছে, সময়মত ভূমি অফিসের কাজ আদায় করার জন্য প্রত্যেককে গড়ে ৭,৮০৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়। ভূমি অফিসগুলোর এ দ–র্নীতি রোধ করতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। ২০১১ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ নিরসনের লক্ষ্যে ভূমি অফিসের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় ও উপকমিশনারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় ভূমি সচিব মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমানের পক্ষ থেকে দেশের ৭টি বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪টি জেলার উপকমিশনারদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।
কিন্তু এখন পর্যস্ত তৃণমূল পর্যায়ে ভূমি অফিসের কোনো অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপকমিশনারদের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভূমি অফিসের দুর্নীতি নিরসনে ভূমি মন্ত্রণালয় কি ব্যবস্থা নিচ্ছে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ বলেন, ‘সব ভূমি অফিসের যে কোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং ভূমি অফিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্ দালালচক্রের অপসারণ করা হবে।’
ভূমি অফিসের উর্নীতি নিরসনে মন্ত্রণালয়ের নতুন কোনো নির্দেশনা আছে কিনা তা জানতে চাইলে ভূমি সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, ‘এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি।

কোর্ট ম্যারেজের ফাঁদ: প্রতারিত হচ্ছে মেয়েরা





সীমা ও সুজন আদালতের নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে গিয়ে ‘কোর্ট ম্যারেজ’ করেছিল। কিন্তু তখন তারা বিয়ের কাবিন রেজিষ্ট্রী করেনি। বিয়ের কিছুদিন পরই সুজন সীমার সঙ্গে তার বিয়ের কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে। আর এ অজুহাতে সীমাকে মোহরানা, খোরপোষ ও দাম্পত্য অধিকার দিতেও তিনি রাজি নন। অবশেষে বিষয়টি গড়িয়েছে আদালতে ।

কাবিন রেজিষ্ট্রীর পরিবর্তে কোর্টম্যারেজ অধিকতর শক্তিশালী-এ ভুল ধারণার ফাঁদে পড়ে অনেক নারী তাদের দাম্পত্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আইনের ছদ্মাবরণে একশ্রেণীর নোটারী পাবলিক এ অবৈধ কাজে সহায়তা করে চলেছেন। অথচ বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ‘কোর্ট ম্যারেজের কোন বৈধতা নেই, এমনকি এর কোন অস্তিত্বও নেই।

পঞ্চাশ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে কিংবা একশত পঞ্চাশ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের কার্যালয়ে গিয়ে হলফনামা করাকে বিয়ে বলে অভিহিত করা হয়। অথচ এফিডেভিট বা হলফনামা শুধুই একটি ঘোষণাপত্র।

কাবিন রেজিষ্ট্রী না করে অনেকে বিয়ে সম্পন্ন করছেন। আইনানুযায়ী কাবিন রেজিষ্ট্রী ও আকদ সম্পন্ন করেই কেবল ঘোষণার জন্য এফিডেভিট করা যাবে। কিন্তু এ নিয়ম মানা হয় না। মুসলিম বিবাহ ও বিচ্ছেদ বিধি ১৯৭৫ এর ১৯(৩) ধারা অনুযায়ী ‘নিকাহ রেজিষ্ট্রার ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি যদি বিবাহ করান তাহলে সেই ব্যক্তি ১৫ দিনের মধ্যে ওই নিকাহ রেজিষ্ট্রারের নিকট অবহিত করবেন, যার এলাকায় উক্ত বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে’।

মুসলিম বিবাহ ও বিচ্ছেদ আইন ১৯৭৪-এর ধারা ৫(২) অনুযায়ী বিবাহ রেজিষ্ট্রশন না করার শাস্তি সর্বোচ্চ (তিন) মাসের কারাদ- কিংবা পাঁচশত টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। আকদ বা বিয়ে রেজিষ্ট্রী না করে শুধুমাত্র হলফনামায় ঘোষণা দিয়ে ঘর-সংসার প্রবণতা অমাদের দেশে ক্রমেই বাড়ছে। অথচ এর কোন বৈধতা নেই।

আবেগঘন সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক তরুণ তরুণীর ভুল ধারণা হয় যে, শুধুমাত্র এফিডেভিট করে বিয়ে করলে বন্ধন শক্ত হয়। কাজী অফিসে বিয়ের জন্য বিরাট অঙ্কের ফিস দিতে হয় বলে কোর্ট ম্যারেজকে অধিকতর ভাল মনে করে তারা।
অনেকে এফিডেবিটের মাধ্যমে বিয়ে সম্পাদন করে একাধিক বিয়ের কথা গোপন করার জন্য। কোন মেয়ের অভিভাবককে জিম্মি করে টাকা আদায় কিংবা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যও অনেক সময় এফিডেভিটের মাধ্যমে ভূয়া বিয়ের দলিল তৈরি করা হয়।

এ দলিল তৈরি করা খুব সহজেই সম্ভব এবং এসব ক্ষেত্রে হলফনামা প্রার্থীকে নোটারি পাবলিকের কাছে হাজির হতে হয় না। এর ফলে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়স বাড়িয়ে দেয়ার সুযোগ থাকে। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা থেকে রক্ষার জন্য আসামী পক্ষের এরকম হলফনামা তেরীর প্রবণতা দেখা যায়।
লাইসেন্স বিহীন কাজীর নিকট বিয়ে রেজিষ্ট্রী করলে এর কোন আইনত মূল্য নেই। কাজীর কাছে গিয়ে কাবিন না করলে দু’পক্ষই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কাবিননামা না থাকায় নারীরা তাদের মোহরানাও পায়না। কাবিননামার বদলে কোর্ট ম্যারেজের বিয়েতে ছেলেরা একটা সুযোগ খুঁজে। জোর করে দস্তখত নিয়ে এফিডেভিট করেছে মেয়ে পক্ষ এই অজুহাত অনেক সময় দাঁড় করে ছেলে পক্ষ। আইনানুযায়ী বিয়ের আসরেই বিয়ে রেজিষ্ট্রি করতে হয়। বিয়ের আসরে সম্ভব না হলে বিয়ে অনুষ্ঠানের দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে রেজিষ্ট্রী করতে হয়। কাজীকে বাড়িতে ডেকে এনে অথবা কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে রেজিষ্ট্রী করা যায়।

এছাড়াও কাবিননামার সকল কলাম পূরণ করার পর বর, কনে, উকিল,সাক্ষী ও অন্যন্যা ব্যক্তিগণের স্বাক্ষর দিতে হয়। এদেশের সব ধর্মের বিয়ে বিচ্ছেদের ব্যাপরে পারিবারিক আইন আদালতের নিয়ম মানতে হবে। কোর্ট ম্যারেজের বিয়েতে উৎসাহদানকারী নোটারি পাবলিকদের চিহ্নিত করে শাস্তির বিধান করতে হবে। আইন করে কোর্ট ম্যারেজের বিয়ে বন্ধ করা সময়ের দাবী।